জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক
বরিশালে শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদককে কুপিয়ে জখম
বরিশালে প্রতিমন্ত্রী সমর্থক জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুমন মোল্লাকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে উঠেছে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর রুপাতলীর বসুন্ধরা হাউজিং এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতের স্বজনদের অভিযোগ, রুপাতলী বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্দে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় সুমনের সহযোগী আলামিনকেও কুপিয়ে জখমসহ তার তিনটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
আহত দুইজনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে এসআইকে কুপিয়ে জখম
আহত সুমন মোল্লার স্ত্রী আইরিন বেগম বলেন, রুপাতলী বাস টার্মিনালের কতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। সুমন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখের অনুসারী এবং জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। রুপাতলী বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব নিয়ে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকির, সোহেল মোল্লা, মইন সিকদার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান মাছুম, সাধারণ সম্পাদক রনিসহ প্রায় ৫০ জনের একটি দল সুমনের ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে। আলামিন নামে একজন এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। এছাড়াও সুমনের ঘরসহ তিনটি ঘরও ভাঙচুর করে। পরে পুলিশের সহায়তায় সুমন ও আলামিনকে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সুমনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসক তাকে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা বলেন, বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা। কারো ওপর কোনো হামলা চালাইনি আমরা। তাছাড়া সকাল থেকে আমি ঘর থেকেই বেরব হইনি। ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে গুজব রটানো হচ্ছে।
২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকির বলেন, ঝামেলার খবর শুনে আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমার উপস্থিতিতে বা নেতৃত্বে তো কোনো হামলার প্রশ্নই ওঠেনা। ওটা গুজব।
মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ সমর্থক বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস বলেন, আমরা কারো ওপর হামলা চালাইনি। আমাদের ওপর প্রতিনিয়ত হামলার চেষ্টা চলছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব বিরোধের জেরে এমন হামলা হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
আরও পড়ুন: মোবাইলে গেম খেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব, কিশোরকে কুপিয়ে জখম
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ সমর্থক বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনি য়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহামুদের অফিসে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ ওঠে মেয়র সমর্থক শ্রমিক ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছেন অপর কমিটির সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস। হামলা পাল্টা হামলায় ছয়জন আহত হয়। এছাড়া শনিবার দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল দখল নিয়ে মেয়র ও প্রতিমন্ত্রী সমর্থক শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিল। প্রতিদিনই পাল্টা পাল্টি অবস্থান নিতো দুই গ্রুপ, তবে সোমবার শুধু মেয়র সমর্থকদের বাস টার্মিনালে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
২ বছর আগে