পড়ালেখা
কলেজে ভর্তির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পড়ালেখার মান নিশ্চিত করা: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন, ‘আমাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত ও যোগ্য শিক্ষক রয়েছে। তাই ভর্তি প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কলেজগুলোতে অনেক আসন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলাম, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা ঠিকমতো করলো কি না। তারা যেনো খারাপ ভুল পথে চলে না যায়, মা-বাবা সেদিকে সঠিকভাবে নজর রাখেন। আমরা সবাই যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি, তাহলে তারা তাদের ভবিষ্যত গড়তে পারবে।’
সোমবার দুপুরে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে আয়োজিত মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা-২০২২ এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, ‘এ বছর যে পরিমাণ শিক্ষার্থী এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে, তার চেয়ে ৭ লাখের বেশি আসন (সিট) রয়েছে এইচএসসির জন্য। এইচএসসির ভর্তি পরীক্ষা সুনির্দিষ্ট নিয়মে বরাবরের মতো অনুষ্ঠিত হবে। তাই তাদের ভর্তি পরীক্ষার প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলো এ দেশের একেবারে সেরা মেধাবীদের ছেঁকে নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে। মেধাবী শিক্ষার্থীগুলো যখন সবাই এক জায়গায় যায়, তখন তাদের প্রচেষ্টায়, বাবা-মায়ের প্রচেষ্টায় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টায় আরও ভালো ফলাফল করে। সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের খুব মহত্ব রয়েছে বলে আমি মনে করি না।’
এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ অকৃতকার্য ৫০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তিনি বলেন, কি কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে এমন খারাপ ফলাফল হয়েছে তা খতিয়ে দেখে সহযোগিতা করা হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে তারা ব্যর্থ না হয় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।
দীপু মনি বলেন, আমাদের এই বিজয়ের মাসে দেশে নানান রকম রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বীর বাঙালি স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে, গণতন্ত্র ছিনিয়ে এনেছে। এখন আমরা বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে আছি। দেশবাসী চায় সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। সেখানে যেন কোন প্রকার অস্থিরতা, অরাজকতা সৃষ্টি না হয়। ২০১৩-১৪ সালের মত কোন ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস আবার দেখতে চাই না। জনগণ শান্তি চায়, সমৃদ্ধি চায়, সামনে এগিয়ে যেতে চায়। যারা দেশে অস্থিতরা চালানোর চেষ্টা করছে, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গনি পাটোয়ারী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইউসুফ গাজী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মহাসচিব হারুন আল রশিদ।
এর আগে তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিজয় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা করলেই কঠোর ব্যবস্থা: শিক্ষামন্ত্রী
পাঠ্যবই ছাপার কাজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু: দীপু মনি
২ বছর আগে
মেডিকেলে চান্স পাওয়া আল্পনার পড়ালেখার দায়িত্ব নিলেন চেয়ারম্যান
ভ্যানচালক বাবার মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাওয়া মেয়ে আল্পনা আক্তারের পড়ালেখার দায়িত্ব নিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম জুয়েল।
সোমবার রাতে উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ধারিয়া বেলসাড়া গ্রামে সেই ভ্যানচালকের বাসায় গিয়ে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানকালে তিনি পরবর্তী সময়ের আল্পনার পড়ালেখার দায়িত্বভার নেয়ার ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসলাম জুয়েল জানান, মেডিকেলে চান্স পাওয়া আল্পনা আক্তারের বাবা আফতাবর রহমান সামান্য একজন ভ্যানচালক। নিজস্ব জমি জমা না থাকলেও একমাত্র রিকশা ভ্যান চালিয়ে তিনি তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নে এগিয়ে চলেছেন। তার একমাত্র ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়ানোর পাশাপাশি এবার তার এক মেয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এটি আমার এলাকার একটি গর্বের বিষয়। এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের দায়িত্ববোধ থেকে মেয়েটির মেডিকেল কলেজে তার পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আল্পনা আক্তারের বাবা আফতাবর রহমান জানান, ভিটেমাটি আর ভ্যান গাড়ি ছাড়া আমার আর কোন সহায় সম্পদ নেই। চার সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে মুন্না আলী বাংলা বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন কয়েক বছর যাবত। সে এখন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। এদিকে মেয়ে আল্পনা আক্তারের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ হয়েছে। এছাড়া বড় মেয়ের বিয়ে দিয়ে পাত্রস্থ করেছেন আর ছোট মেয়ে পড়ছে উচ্চ মাধ্যমিকে।
একমাত্র ছেলেকে এতদিন পড়ালেখার খরচ নিয়মিত নিয়ে আসছেন রিক্সা ভ্যান চালিয়ে। ছেলে মুন্না আলীর ঢাবিতে ভর্তির সময় ২৫ শতক আবাদি জমির মধ্যে ৫ শতক জমি বিক্রি করে ভর্তির খরচ বহন করি। পরবর্তীতে তার পড়ালেখা খরচ যোগাতে গিয়ে অবশিষ্ট ২০ শতক জমিও বিক্রি করতে হয়েছে। এছাড়াও প্রতিমাসে ৩-৪ হাজার টাকা ঢাকায় ছেলেকে পাঠানো, অন্য দুই মেয়ের পড়ালেখা খরচ এবং সাংসারিক ব্যয় বহনের একমাত্র মাধ্যম আমার ভ্যানটি।
একদিন ভ্যান নিয়ে বের না হলে সংসারে চুলায় তার হাড়ি উঠেনা। এবার মেয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগের খবরে আনন্দের পাশাপাশি খরচের চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। এখন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসলাম জুয়েল মেয়ের মেডিকেলে ভর্তির টাকাসহ তার পড়ালেখার দায়িত্বভার নেওয়ার আশ্বাস দেয়ায় তিনি এখন অনেকটা দুশ্চিন্তামুক্ত।
আরও পড়ুন: মেডিকেলে চান্স পাওয়া মেয়ের ভর্তির খরচের চিন্তায় ভ্যানচালক বাবা
তিনি বলেন, আজ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমার মেয়ে আল্পনার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ হয়েছে। ডাক্তারি পড়ালেখার অনেক খরচ। এই নিয়ে অনেক চিন্তিত ছিলাম। এই নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর মেয়ের ভর্তির যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিতে চেয়েছেন অনেকে।
সদ্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থী আলপনা আক্তার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কুশডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
আল্পনা আক্তার বলেন, এই সফলতায় আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। যার অনুপ্রেরণায় আমার এ সফলতা তিনি হলেন আমার বাবা। যিনি সারাদিন ভ্যান চালিয়ে রোজগার করেন। আর আমাকে স্বপ্ন দেখান ডাক্তার হওয়ার। আমার মা এবং আমার শিক্ষকরা আমাকে অনেকভাবে সহযোগিতা করেছেন। চিকিৎসক হয়ে বাবা-মাসহ অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবো। বাবার স্বপ্ন পূরণে সকলের কাছে দোয়া চান তিনি।
আরও পড়ুন: মেডিকেলে চান্স পাওয়া জেলে পল্লীর মেয়ে মারুফার পাশে র্যাব-৬
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা মীম ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলেন!
২ বছর আগে