বোরো চাষ
বরগুনায় বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
বরগুনায় বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। মৃদু শীতে বেড়েছে কৃষকদের কর্মব্যস্ততা। জমি তৈরি, হালচাষ, চারার বীজতলা থেকে উঠানো ইত্যাদি। এসব শেষে এবার চারা জমিতে রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধান আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে কেউ কেউ ট্রাক্টর আবার কেউ কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে হাল চাষ করছেন। কেউ কেউ স্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ বা ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠাচ্ছেন। বেশকিছু জমিতে আবার অনেকে চারা রোপণ করেছেন।
আরও পড়ুন: ফটিকছড়িতে চাষ হচ্ছে বিশাল আকৃতির জাপানি মুলা
কৃষক বারেক মিয়া জানান, তিনি তিন একর জমিতে চারা রোপণ করেছেন। নিজেই ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠিয়েছেন।
আরেক কৃষক আ. খালেক দুই একর জমিতে চারা রোপণ করেছেন। বীজতলা থেকে চারা উঠানোসহ তিনি শ্রমিকদের দিয়েছেন তিন হাজার হাজার টাকা।
উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের কৃষক কুদ্দুস আকন বলেন, আমরা পাঁচজন করে দলবদ্ধ হয়ে ভাটিয়ালি গান গাইতে গাইতে চারা রোপণ করি। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই একর জমিতে চারা রোপণ করতে পারি, এতে আমাদের ৪০০-৫০০ টাকার মতো ইনকাম করতে পারি। আবার অনেক দিন কাজ থাকেও না। সর্বশেষ মৌসুমে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা বেশ লাভের মুখ দেখেছেন, সেজন্য এবার বোরো ধানের চাষাবাদ বেশি হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, এবার তুলনামূলক বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে। এ বছর বরগুনা বোরো ধানের চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার হেক্টর। এখন পর্যন্ত ৫০০ হেক্টর রোপণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল চাষ
১ বছর আগে
পাইকগাছায় ইঁদুরে কাটছে ধান গাছ, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
খুলনা জেলার পাইকগাছায় চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষমাত্রার তুলনায় বেশি জমিতে ধানের আবাদ হলেও ইঁদুরের উৎপাতে ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় ধানের জমিতে ইঁদুরের উৎপাত চরম আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইঁদুর ধান খেতের মাঝে গিয়ে শিষ আসা ধান গাছ কেটে ফেলছে। কৃষকেরা ইঁদুর নিধনে নানা ধরনের ফাঁদ পাতলেও সেগুলো কোনো কাজে আসছে না বলেও জানান বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইঁদুরের উৎপাতে ধান ক্ষেত পরিচর্যায় কিছুটা বেশি সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা।
কাশিমনগর এলাকার ধান চাষি হুমায়ূন কবির জানান, প্রতি রাতেই ইঁদুর তার জমির ধান কেটে নষ্ট করছে। ইঁদুর মারতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েও সেগুলো কোনো কাজে আসছে না বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: দেশে এই মুহূর্তে সারের কোনো সংকট নেই: কৃষিমন্ত্রী
কপিলমুনি এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, আমার দুই বিঘা জমিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান ভালো হয়েছে। তবে ধান গাছে শিষ ধরার শুরুতেই ইঁদুর ধান গাছের গোড়া থেকে কেটে ফেলে মারাত্মক ক্ষতি করছে। জমির আইলে বা ধান ক্ষেতের কোথাও ইঁদুরের গর্ত না থাকলেও জমির মাঝখানে গিয়ে তারা ধান কাটছে। এ সময় ধানের গাছ নরম ও মিষ্টি হয়, সে কারণে ইঁদুর ধান গাছ কেটে নরম অংশ খেয়ে ফেলছে বলে জানান তিনি।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পাইকগাছায় চলতি বোরো মওসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি এক হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও এর বিপরীতে ৫ হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উফশী ৪ হাজার ৫০ হেক্টর ও ১ হাজার ৫৭২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ হয়েছে। হরিঢালী ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ৯৪৫ হেক্টর, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১ হাজার ৩০ হেক্টর, লতা ইউনিয়নে ১ হেক্টর, সোলাদানা ইউনিয়নে ১ হেক্টর, গদাইপুরে ১ হাজার ২৪০ হেক্টর, রাড়ুলী ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৫ হেক্টর, চাঁদখালী ইউনিয়নে ১ হাজার হেক্টর, দেলুটি ইউনিয়নে ৭০ হেক্টর, গড়ইখালী ইউনিয়নে ২০ হেক্টর ও পৌরসভায় ১৮০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৬ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের মাধ্যমে ইঁদুরের উপদ্রবের ব্যাপারে জেনেছেন। আর প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছে।
নিয়মিত মাঠে গিয়ে তারা কৃষকদের ইঁদুর মারার পদ্ধতি দেখিয়ে দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইঁদুর খুবই সুচতুর প্রাণী।’ তাই এদের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদেরকে জমির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
এ সময় কৃষকদেরকে জমিতে পাখি বসার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
২ বছর আগে