রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার
মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত যাতে দ্বিপক্ষীয় প্রত্যাবর্তন ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে সে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মধ্যেই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিহিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তার জন্য রাখাইন রাজ্যে কর্মসূচি বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।
সোমবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ক মহাসচিবের বিশেষ দূত ড. নোলিন হাইজারের ব্রিফিংয়ের পর বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত হলেন রাবাব ফাতিমা
রাষ্ট্রদূত বলেন, জীবন বাঁচাতে নিজভূমি থেকে রোহিঙ্গাদের পলায়নের পর পাঁচ বছর কেটে গেছে, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ জোরপূর্বক নির্বাসনের ঘটনা। কিন্তু তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি অপূর্ণই রয়ে গেছে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা এক দশমিক পাঁচ মিলিয়ন রোহিঙ্গা গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। যে সকল রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছেড়ে যেতে পারেনি তারা হয় আইডিপি ক্যাম্পে আশ্রয় পেয়েছে অথবা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও নিরাপত্তাহীনতার অব্যাহত হুমকির মধ্যে রয়েছে।
সঙ্কটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের মাধ্যমে এর পুনরাবৃত্তি রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা যাতে এই সমস্যর সমাধান হয়। রোহিঙ্গাদের খাদ্য, আশ্রয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা দিয়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি প্রত্যাবাসন উপযোগী সঠিক পরিস্থিতি সৃষ্টিতে আরও এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
রাবাব ফাতিমা বলেন, শুধু আমাদের একক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে মর্যাদাপূর্ণভাবে নিজ ভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজন যথোপযুক্ত পদক্ষেপ ও কর্মসূচি। আর এটাই সবচেয়ে কাঙ্খিত টেকসই সমাধান যা রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিনের লালিত আকাঙ্খা।
তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মিয়ানমারের সমস্ত লঙ্ঘন ও অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং ওআইসির পক্ষে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার করা চলমান মামলার প্রেক্ষিতে উক্ত আদালত জারিকৃত অস্থায়ী ব্যবস্থার বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমার সরকার সবকিছুই করছে। আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ওআইসি) এবং মিয়ানমারের স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়ার (আইআইএমএম) সকল প্রচেষ্টায় পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ন্যয়বিচার নিশ্চিত এবং এই ঘটনার ভবিষ্যৎ পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সকল দেশকে, বিশেষ করে আঞ্চলিক দেশগুলোকে এ সংক্রান্ত চলমান জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থায় সহযোগিতা দেয়া ও তাদের প্রবেশাধিকার দিতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
আসিয়ান ও মিয়ানমারের মধ্যে সমাপ্ত পাঁচ দফা ঐক্যমত্যের দ্রুত ও পূর্ণ বাস্তবায়নসহ মিয়ানমারের সংকটের সমাধান খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা গ্রহণের জন্য আসিয়ানের প্রশংসা করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য আসিয়ান সদস্য দেশ এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার জন্য মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ: রাবাব ফাতিমা
বিশেষ দূত তার ব্রিফিংয়ে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই পরিস্থিতি রোহিঙ্গা মুসলিমসহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদারতার স্বীকৃতি জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের প্রতি তাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি মিয়ানমারে তার ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন যার মাধ্যমে শান্তি, উন্নয়ন এবং মানবিক কাজের সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষকে এই সঙ্কটের সমাধানে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাবেন মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
২ বছর আগে
বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা সর্বসম্মতিক্রমে ২০২২ সালের জন্য জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে (১ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে পিবিসির চেয়ার ও ভাইস-চেয়ারদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা হলেন পিবিসির প্রথম নারী সভাপতি।
পিসবিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের একটি আন্ত:রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সংস্থা। এই সংস্থা সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি বিনির্মাণের জন্য কাজ করে, যাতে সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়। সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) থেকে নির্বাচিত সদস্যসহ ৩১ জন সদস্যের সমন্বয়ে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিবিসি। জাতিসংঘে শীর্ষ অর্থ প্রদানকারী ও শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোও কমিশনের সদস্য।
দায়িত্বগ্রহণের পর বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, যখন কোভিড-১৯ অতিমারি শান্তি বিনির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে ঠিক তেমনই এক চ্যালেঞ্জিং সময়ে পিবিসি পরিচালনার জন্য সদস্যরাষ্ট্রসমূহ বাংলাদেশের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে বাংলাদেশকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছে, সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ও শান্তি বিনির্মাণের ক্ষেত্রে কোভিড অতিমারি যে প্রভাব ফেলেছে তা প্রশমিত করতে আমরা বৈশ্বিক সংহতি এগিয়ে নিতে বিশেষ মনোযোগ দেব।’
আরও পড়ুন: ইউএন উইমেন’র নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি রাবাব ফাতিমা
সংঘাতপূর্ণ দেশ বা অঞ্চলে শান্তিবিনির্মাণ সক্ষমতাসমূহের উন্নয়নে শান্তিরক্ষীগণ যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে এবং শান্তিবিনির্মাণ কাজে যুক্ত অন্যান্য অংশীজনকে সংঘাতের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় যেভাবে সহায়তা করছে তা স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এ প্রেক্ষিতে তিনি শান্তিরক্ষা এবং শান্তি বিনির্মাণ কার্যক্রমের আন্ত:সম্পর্ককে শক্তিশালী করার উপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, শান্তিরক্ষীরা যে সকল দেশে নিয়োজিত সেই দেশসমূহের উন্নয়নে তারা যে অবদান রেখে চলেছে, শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময়ই তা গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করে।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শান্তিবিনির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত ও টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে পিবিসি সদস্য ও অন্যান্য অংশীজনের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। জাতীয় পর্যায়ে শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘সাউথ-সাউথ ও ট্রায়েঙ্গুলার কো-অপারেশন থেকে অনেক কিছুই অর্জন করা যেতে পারে, যেমন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদসমূহের সঞ্চালন এবং উত্তম অনুশীলন ও উত্তম ধারণাসমূহ ভাগাভাগি করে নেয়ার একটি প্লাটফর্ম তৈরি করা।’
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল: রাবাব ফাতিমা
শান্তি বিনির্মাণে নারী ও যুবকদের পূর্ণ, সমান এবং অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তা’ (ডব্লিউপিএস) এবং ‘যুব শান্তি ও নিরাপত্তা (ওয়াইপিএস) এজেন্ডাকে অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, ও ইকোসককে সংযুক্ত করা এবং জাতিসংঘের গোটা ব্যবস্থাপনার সমন্বয় ও তা সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে সমন্বয়কারী ও মতামত প্রধানকারী হিসেবে পিবিসি’র ভূমিকা আরও সুসংহত করার ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে সুসংহত ও কার্যকর শান্তিবিনির্মাণ প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে যে সকল সংস্থা, তহবিল, কর্মসূচি এবং জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম কাজ করছে তাদের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল রাখতে আমরা অব্যাহতভাবে কাজ করে যাব।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানকাল থেকেই পিবিসি’র সদস্য। এর আগে ২০১২ সালে বাংলাদেশ পিবিসি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ইউএন উইমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।
এর আগে এলডিসি-৫ প্রস্তুতিমূলক কমিটির কো-চেয়ার, ইউনিসেফ এক্সিকিউটিভ বোর্ড প্রেসিডন্ট, ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ এবং ইউএনওপিএস এর ভাইস প্রেসিডন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ হোক সকল নারীর অনুকরণীয়: রাবাব ফাতিমা
২ বছর আগে
জাতিসংঘে ঢাকা উত্থাপিত শান্তির সংস্কৃতি রেজুলেশন গৃহীত
জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশের রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সংস্থাটিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, এই বছর রেজুলেশনটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক ও জরুরি কারণ বিশ্বব্যাপী আমরা কোভিড-১৯ অতিমারির নজীরবিহীন ও বহুমূখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম বারের সরকারের সময় ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রেজুলেশনটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ হোক সকল নারীর অনুকরণীয়: রাবাব ফাতিমা
এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন এবং এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি ফোরামের আয়োজন করে আসছে।
এই বছর রেজুলেশনটিতে কোভিড-১৯ কালীন বাস্তবতাসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। এতে উঠে এসেছে আয়, সুযোগ, তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ভ্যাকসিনের নতুন চ্যালেঞ্জসমূহের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যসমূহ।
এ বছর ৭ সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমগুলো সকলের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ অর্জনের বিষয়টি আরও এগিয়ে নিতে শান্তির সংস্কৃতি যে রূপান্তরধর্মী ভূমিকা পালন করতে পারে তা ফোরামটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
এই বছর রেজুলেশনটিতে কোভিড-১৯ কালীন বাস্তবতাসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। এতে উঠে এসেছে আয়, সুযোগ, তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ভ্যাকসিনের নতুন চ্যালেঞ্জসমূহের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য ব্যাপকতর হয়েছে; ঘৃণাত্মক বক্তব্য, কালিমা লেপন, বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষ অর্থাৎ যে সমস্ত বিষয় শান্তিকে বিপন্ন করে তোলে তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এটি সহনশীলতা, অ-বৈষম্য, বহুত্ববাদ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার মূল্যবোধের প্রচারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় এবং ঘৃণাত্মক বক্তৃতা বর্ণনাকেও মোকাবিলা করে।
রেজুলেশনটিতে সহনশীলতা, বৈষম্য বিলোপ, বহুত্ববাদ, মত প্রকাশ ও কথা বলার স্বাধীনতাসহ ঘৃণাত্মক বক্তব্য মোকাবিলা করার মতো বিষয়গুলো আরও এগিয়ে নেয়ার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ কামালের ভূমিকা যুব সমাজের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ: রাবাব ফাতিমা
বাংলাদেশের জনসংযোগ সংস্থা বলেছে, রেজুলেশনটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রাসঙ্গিকতা বহুগুণে বেড়েছে, এর ফলে জাতিসংঘের প্রধান প্রধান কার্যাবলীতে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি বৃহত্তর পদচিহ্ন রাখতে পেরেছে এবং একটি প্রভাব সৃষ্টিকারী রেজুলেশনে পরিণত হতে পেরেছে।
‘দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এটি একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত যা বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘ সনদের দায়বদ্ধতার পরিপূরক হিসেবেও ভূমিকা রেখে চলেছে।’
এই বছর ১০৯ দেশ বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণা এগিয়ে নিতে একটি ব্যাপক সমর্থন। রেজুলেশনটির প্রতি অব্যাহত এই সমর্থন এবং প্রতিবছর সর্বসম্মতভাবে এটি গ্রহণ- শান্তির প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশাল আস্থারই সাক্ষ্য বহন করে।
৩ বছর আগে
শেখ কামালের ভূমিকা যুব সমাজের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ: রাবাব ফাতিমা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং দেশের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ভূমিকা যুব সমাজের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, একজন দক্ষ সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, সঙ্গীত শিল্পী, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে শহীদ শেখ কামাল তার নিজস্ব চিন্তাধারা ও সৃজনশীলতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে জাতি গঠনে যে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন তা যুব সমাজের জন্য এক অনন্য উদাহরণ।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ: রাবাব ফাতিমা
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
রাবাব ফাতিমা বলেন, আবাহনী ক্রীড়াচক্র, ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীন বাংলাদেশে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আন্দোলনের একজন পুরোধা এবং স্পন্দন শিল্পগোষ্ঠী নামে সঙ্গীত সংগঠনসহ অসংখ্য উদ্যোগের সাথে যুক্ত শেখ কামাল ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে দেশের যুবসমাজকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে হবে: রাবাব ফাতিমা
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেটে জাতির পিতার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যগণের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
৩ বছর আগে
জাতিসংঘে বাংলাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক রেজুলেশন উত্থাপন
প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্বের শিকার বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষকে ২০৩০ সালের মধ্যে চক্ষু স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ করে দিবে জাতিসংঘ। এই অঙ্গীকার নিয়েই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো ‘সকলের জন্য দৃষ্টি: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ’ শীর্ষক দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক প্রথম রেজুলেশন।
শুক্রবার ‘ফ্রেন্ডস অব ভিশন’ এর পক্ষে রেজুলেশনটি সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব নিরাময়ে সর্বসম্মতভাবে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাল। বিভিন্ন পর্যায়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতার শিকার বিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মানুষের চক্ষু স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে সুযোগের নিশ্চিতে জাতিসংঘে অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে দৃষ্টি বা ভিশন বিষয়ক এই ফ্রেন্ডস অব ভিশন।
সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত রাবার ফাতিমা রেজুলেশনটিকে বিশ্বের সকল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য উৎসর্গ করেন। তিনি সকল দেশের প্রতি আহবান জানান, যাতে দেশগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের সকল জনগণকে চক্ষু স্বাস্থ্য সেবায় পূর্ণ প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফায় জাতিসংঘের মহাসচিব হলেন গুতেরেস
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘আজকের এই রেজুলেশনটি চক্ষু সেবার বৈশ্বিক প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। রেজুলেশনটিতে নেতৃত্ব দিতে পেরে বাংলাদেশ সম্মানিত বোধ করছে।’
৩ বছর আগে
জাতিসংঘের ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ পেলেন বাংলাদেশি ৮ শান্তিরক্ষী
ঢাকা, ২৭ মে (ইউএনবি)- আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের আট জন শান্তিরক্ষীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রদান করেছে জাতিসংঘ।
আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এই পদক দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের সব দাপ্তরিক ভাষায় ৭ মার্চের ভাষণ বিষয়ক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
আমেরিকান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের আটজনসহ বিশ্বের ৪৪ দেশের ১২৯ জন শান্তিরক্ষীকে এই পদক প্রদান করা হয়েছে। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ প্রত্যেক দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে নিজ নিজ দেশের মেডেল তুলে দেন। এই পদক বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার মহৎ উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত জীবনের শক্তি, বিশুদ্ধতা ও নশ্বরতাকেই বার বার স্মরণ করছে।
বাংলাদেশের আট পদকপ্রাপ্তরা হলেন- মালির (মিনুস্মা) নিয়োজিত মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার আব্দুল মো. হালিম, কঙ্গোর (মনুস্কো) নিয়োজিত মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইমাম ভূঁইয়া, সার্জেন্ট মো. জিয়াউর রহমান, সার্জেন্ট এমডি মোবারক হোসেন ও ল্যান্স কর্পোরাল মো. সাইফুল ইসলাম; সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত (মিনুস্কা) মিশনের ল্যান্স কর্পোরাল মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সার্জেন্ট মো. ইব্রাহীম এবং দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত (আনমিস্) মিশনের ওয়াসারম্যান নুরুল আমিন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার গ্রেপ্তারে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানটিতে আরও অংশগ্রহণ করেন মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ছাদেকুজ্জামান।
৩ বছর আগে
বহুমুখী দায়িত্বের বাস্তবায়নে প্রয়োজন টেকসই শান্তিরক্ষা বাজেট: রাষ্ট্রদূত ফাতিমা
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, বহুমুখী দায়িত্বের বাস্তবায়নে প্রয়োজন টেকসই শান্তিরক্ষা বাজেট।
তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের উপর অর্পিত বহুমুখী দায়িত্ব যথাযথভাবে পরিপালনের জন্য পর্যাপ্ত ও টেকসই শান্তিরক্ষা বাজেট প্রয়োজন এবং মিশনসমূহ যথোপযুক্ত বাজেট পেল কিনা তাও নিশ্চিত করা জরুরি।’
সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের বাজেট সেশনে তিনি এই সব কথা বলেন।
শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য ও পুলিশ প্রেরণকারী দেশগুলো যাতে তাদের শান্তিরক্ষী ও সাজ-সরঞ্জাম মোতায়েনের অর্থ যথাসময়ে পায় তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ বর্তমানে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বিশ্বের ৭টি মিশনে বাংলাদেশের প্রায় ৭ হাজার শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিজিএমইএ সভাপতির সাথে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনা
কোভিড-১৯ অতিমারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সংঘাত প্রবণ অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অব্যাহত ও নিবেদিতভাবে যে প্রচেষ্টাসমূহ চালিয়ে যাচ্ছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তাই এ বাজেট বরাদ্দকালে যাতে কোভিড-১৯ অতিমারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় সে বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপসমূহের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির বিষয়টি বাংলাদেশের ‘নারী, শান্তি ও সুরক্ষা’ বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনার মূল কৌশলের একটি। শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিশেষ করে এর উচ্চ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ কম থাকার বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন: সৌদি হজ্জ বিষয়ক মন্ত্রীর সাথে রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীর বৈঠক
তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সকল স্তরে নারীর পূর্ণ, কার্যকর এবং অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অবশ্যই আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বাজেট বরাদ্দের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ পরিষদের পঞ্চম কমিটির সভা প্রতিবছর মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
৩ বছর আগে
২৫ জুলাইকে ‘বিশ্ব ডুবে-মৃত্যু রোধ প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা
পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ বিষয়ক ঐতিহাসিক এক রেজুলেশন বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এ ধরণের রেজুলেশন এটাই প্রথম।
প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে গৃহীত এই রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। রেজুলেশনটিতে পানিতে ডুবে মৃত্যু-কে একটি ‘নীরব মহামারি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের তিন সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের সহসভাপতি নির্বাচিত রাবাব ফাতিমা
নীরব এই বৈশ্বিক মহামারির বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন গত ২০১৮ সালে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের পাশাপাশি রেজুলেশনটিতে সহ-নেতৃত্ব দেয় আয়ারল্যান্ড আর এতে সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে ৮১টি দেশ।
পানিতে ডুবে মৃত্যু বিশ্বের প্রতিটি জাতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে রেজুলেশনটিতে। পাশাপাশি অগ্রহণযোগ্য উচ্চহারের এই মৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে একটি কর্ম-কাঠামোও প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:মানবাধিকার সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ: রাবাব ফাতিমা
রেজুলেশনটিতে আরও বলা হয়েছে, পানিতে ডুবে-মৃত্যুর মতো প্রতিরোধযোগ্য কারণেও বিভিন্ন দেশে শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। পানিতে ডুবে-মৃত্যু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, জাতীয় পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা এবং এ বিষয়ক সর্বোত্তম অনুশীলন ও সমাধানসমূহ পারষ্পরিকভাবে ভাগ করে নেয়ার লক্ষ্যে ২৫ জুলাইকে ‘বিশ্ব ডুবে-মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ পরিষদ।
রেজুলেশনটি উত্থাপনের সময় দেয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বৃহত্তর বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্যে একটি জাতিসংঘ রেজুলেশন গ্রহণের তাগিদ অনুভব করেছিল বাংলাদেশ।আর সে কারণেই এই প্রচেষ্টায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছে।’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে হবে: রাবাব ফাতিমা
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাপী শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছি, আমরা যদি পানিতে ডুবে মৃত্যুহারকে শুণ্যের কোটায় না আনতে পারি তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের সাফল্য অর্থাৎ এসডিজি-৩ অর্জন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’
পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণের মতো ঘটনার ৯০ ভাগ সংঘটিত হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে এবং এশিয়াতে এই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মর্মে উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যু কেবল দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি বৈষম্য।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, যেহেতু পানিতে ডুবে-মৃত্যুর ঘটনাগুলি দরিদ্র পরিবারকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তাই এটি প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ এসডিজি-১ সহ আরও কয়েকটি এসডিজি অর্জনেও ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৮ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করছে মর্মে উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আর যাতে কোনো মূল্যবান জীবনের পানিতে ডুবে মৃত্য না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে শিক্ষা, নারী ও শিশু, সমাজকল্যাণ, যুব ও ক্রীড়া এবং ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সসহ ১২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এই টাক্সফোর্স ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু হ্রাস সংক্রান্ত জাতীয় কৌশল’ প্রণয়ণে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে প্রতি বছর ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করছে। বিশ্বেও বেশ কয়েকটি দেশে পানিতে ডুবে-মৃত্যু শিশু মৃত্যু বিশেষ করে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
রেজুলেশনটিতে পানিতে ডুবে-মৃত্যু রোধ পদক্ষেপটির সাথে টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত বৈশ্বিক কাঠামোগুলোর সংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে জাতিসংঘ গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বেশ কয়েকটির অর্জনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটি তাৎপর্যপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
রেজুলেশনটির অপারেটিভ অনুচ্ছেদে পানিতে ডুবে-মৃত্যু প্রতিরোধে জাতীয় ফোকাল পয়েন্ট নিয়োগ, জাতীয় প্রতিরোধ পরিকল্পনা ও কর্মসূচি উন্নয়ন, জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়ন, সচেতনতা তৈরি করা, আন্তর্জাতিক পদক্ষেপকে সহযোগিতা করা এবং এ বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে সদস্য দেশসমূহকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘে ৭৫ বছরের ইতিহাসে তুলে ধরা হয়নি ।
৩ বছর আগে
শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা, সুরক্ষায় বৃহত্তর প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান বাংলাদেশের
জাতিসংঘের অধীনে বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় বৃহত্তর প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
৩ বছর আগে
জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ তহবিলে আরও অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের
জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের গভীর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
৩ বছর আগে