নাটকের গল্প, অভিনয়
অনেকবার বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি: বান্নাহ
ঈদে টিভি চ্যানেলগুলোতে কয়েকশ নাটকের প্রচার হয়ে থাকে। সাত দিনব্যাপী প্রচারিত এই নাটকের সংখ্যা ও মান নিয়ে প্রতিবারই বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হয়। এ নিয়ে নাট্য নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রতি বছর ঈদে নাটকের সংখ্যাটা বাড়ছে। কিন্তু মান নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকছে। এতো সংখ্যক নাটকের মধ্যে মান ঠিক রাখাটা সম্ভব হয়ে উঠছে কি-না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: সংখ্যার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে কাজটা ঠিকঠাক হচ্ছে কি-না। কারণ নাটকের গল্প, অভিনয়, প্রোডাকশনসহ অন্যান্য বিষয়ে মানের দিকে নজর দিলে কাজটা ভালো হবে। যেমন আমি কিন্তু সংখ্যায় অনেক কাজ করি। কিন্তু সার্বিক মানের বিষয়টি আমি নিশ্চিত রাখার চেষ্টা করি। আমার দর্শকদের কাছ থেকেও এমন প্রতিক্রিয়া পাই। তবে সব কাজ যে শতভাগ ভালো হয় তেমনটাও না। সারাবছর হলিউডে কত কনটেন্ট তৈরি হয়, সবগুলোর কথা কী আমরা জানি। নেটফ্লিক্সে প্রতি সপ্তাহে একশর মতো নতুন কনটেন্ট মুক্তি পায়। সবগুলো কিন্তু আমরা দেখি না বা সবগুলো জনপ্রিয়তাও পায় না। আমরা সেগুলোর সম্পর্কেই জানি যেগুলোর মান ভালো এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই বলব, যেহেতু এটা ব্যক্তিগত পেশাদার জায়গা। সেক্ষেত্রে সংখ্যা যাই হোক যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে নজর দিতে পারি তাহলে মান ঠিক থাকবে মনে করি।
মান কমে যাওয়ার বড় একটা কারণ বাজেট সংকট। সংশ্লিষ্টরা এমটাই বলছেন। এক্ষেত্রে কী নাটকের সংখ্যার চেয়ে বাজেটের দিকে নজর দেয়া যায় না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: বিষয়টা আমরা যত সহজে দেখি, ততটা সহজ নয়। কারণ আমাদের টেলিভিশন চ্যানেল বেড়েছে যার সঙ্গে এখন ইউটিউব যোগ হয়েছে। সেই হিসেবে আমার তো মনে হয় এই পরিমাণ নাটক হওয়ার কথাই ছিল। কারণ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সাত দিনব্যাপী ঈদের অনুষ্ঠান প্রচার করে। যার মধ্যে অন্যতম নাটক। এক্ষেত্রে নির্মাতাদের বাজেটের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। আমরা যদি মানের দিকে শক্তভাবে নজর দিয়ে কাজ করি তাহলে পরিস্থিতি বদলাবে। আর বাজেট বেশি হলে প্রোডাকশনের মানও পাল্টে যাবে। কিন্তু সংখ্যা কমানোটা সহজ হবে না। বরং আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা অভিনেত্রী জেসিকা চ্যাস্টেইন
নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক প্রযোজকদের কাজটি নিয়ে বিভিন্ন প্রত্যাশা থাকে। নির্মাতা হিসেবে আপনারও নিজস্ব একটা ভাবনা থাকে। এই জায়গায় কখনও দ্বন্দ্ব হয় কি-না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: যখন নবীন নির্মাতা ছিলাম তখন এমনটা অনেক সময় হয়েছে। দিন দিন সেটি কমেছে। এখন একবারেই যে হয় না তেমনটাও না। বিষয়টা এমন পর্যায়ও গেছে যে কাজ পর্যন্ত হয়নি। আসলে আমাদের এখানে টেলিভিশনগুলো চাহিদা থাকে। সেগুলোই প্রযোজকরা চায়। আমার মনে হয় তাদেরও জায়গাটা বুঝতে হবে। আমাদের তারকা নির্ভর কাজ প্রয়োজন। কিন্তু সব কাজ যদি তারকাদের নিয়ে হয় তাহলে নতুনরা কীভাবে সুযোগ পাবে। একুশটি শর্টফিল্ম নিয়ে 'বাইশে একুশ' নামে একটা প্রজেক্ট হচ্ছে। যেখানে আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন এমন নির্মাতা বানিয়েছেন। এটির প্রযোজক আল ফাই। তাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ নতুনদের সুযোগ দিলে সেখান থেকে আগামীর তারকারা বের হবেন।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আপনার কাজে অনেক নতুন মুখ দেখা যায়। তাদের অনেকে এখন জনপ্রিয়। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে কেমন পড়তে হয়েছে?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: নতুনদের নিয়ে কাজ করাটা সবসময় চ্যালেঞ্জের। একপ্রকার বাজি ধরতে হয়। অনেক প্রযোজক ও টিভি চ্যানেলে সাপোর্ট পাওয়া যায় না। তবে আমি বোঝাতে চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয় বোঝালে বোঝে। সেক্ষেত্রে নির্মাতার সেই দায়িত্বটা নিতে হয়। বোঝানের দক্ষতা তার থাকা উচিত মনে করি। আর আমি সেই প্রমাণ দিয়েছি। যারা এক সময় নতুন ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন দেশের জনপ্রিয় তারকা। ভালো কাজ করছেন। হ্যাঁ, আমি বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি।
এবার আপনার কাজের প্রসঙ্গে আসি। দর্শকরা ঈদে আপনার কোন নাটকগুলো পাচ্ছে?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: বেশ কয়েকটি নাটক এবার আসছে। সেগুলোর মধ্যে জোভান ও সাফা কবিরকে নিয়ে 'লাভ জার্নি', ইরফান সাজ্জাদ ও সাফা কবির জুটির 'অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ', তাহসান খান ও বিদ্যা সিনহা মিমের 'আদার হাফ' রয়েছে। এছাড়াও ঈদের আগে আরও কয়েকটি নাটকের কাজ শেষ করতে হবে। অন্যদিকে ১৪টি শর্টফিল্ম নিয়ে একটা বিশেষ প্রজেক্ট করেছি। নাম 'ত্রিপল এস'। এটা আমার এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট। পোস্ট প্রোডকশনের কাজ চলছে। প্রজেক্টটি আমার ফেসবুক পেজ থেকে দেখানো হবে।
আরও পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম 'ড্রাইভ মাই কার'
ওটিটিতে এখন অনেক নির্মাতাই কাজ করছেন। ধারণা করা হচ্ছিল আপনাকেও এরসঙ্গে পাওয়া যাবে। যদিও সময়টি এখনও আসেনি। এর কারণ কী বলবেন?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: আসলেই সময়টা এখনও আসেনি। আর আমার কোনো তাড়াহুড়ো নেই। মূল কথা ওটিটিতে আমি যেই কাজটি দর্শককে দেখাতে চাই সেই সুযোগ এখনও পাইনি। সবাই করছে, দেখেও ভালো লাগছে।
২ বছর আগে