সাক্ষাৎকার
৭১–এর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে ২৪ বারবার ফিরে আসবে: অধ্যাপক কামরুল আহসান
১৬ ডিসেম্বর—বাঙালি জাতির গৌরব, আত্মপরিচয় ও বিজয়ের দিন। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দিনে জন্ম নেয় একটি স্বাধীন রাষ্ট্র—বাংলাদেশ। তবে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও গণতন্ত্র, ইতিহাসের বস্তুনিষ্ঠ চর্চা ও শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।
মহান বিজয় দিবসে এমন বাস্তবতা নিয়ে ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। সাক্ষাৎকারে উপাচার্য বিজয় দিবসের তাৎপর্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা, ২০২৪-পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতা, শিক্ষাব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ এবং তরুণ প্রজন্মের করণীয় নিয়ে তার মতামত তুলে ধরেছেন।
সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইউএনবির জাবি প্রতিনিধি যোবায়ের হোসেন জাকির।
বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তিতে এ দিনের তাৎপর্য আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
এই দিনের সবচেয়ে বড় তাৎপর্য হলো, বাংলাদেশ একটি গণতন্ত্রমনা রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রধান প্রতিরোধের জায়গা ছিল জনগণের নির্বাচনি ম্যান্ডেটকে অস্বীকার করা। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা স্বাধিকার, গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব—এই তিনটি বিষয়ের মধ্যেই নিহিত। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই ছিল আমাদের প্রধান অঙ্গীকার।
বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে?
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত বছরের মতো এবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রশাসনিক ভবন ও আবাসিক হলসহ বিভিন্ন দপ্তরে আলোকসজ্জা, উন্নত খাবারের ব্যবস্থা।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ও নথিবদ্ধকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিশেষ উদ্যোগ কি আছে?
আমরা চব্বিশের চেতনাকে ধারণ করে একটি আর্ট গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করেছি। একইসঙ্গে ওরাল আর্কাইভে ২৪–এর ঘটনাবলী সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি। চব্বিশের জন্ম হয়েছে একাত্তরের মধ্য দিয়েই। ১৯৭১–এর পর যে অপূর্ণতা ছিল, সেখান থেকেই ২৪–এর আবির্ভাব। তাই ২৪–কে ধারণ করার পাশাপাশি লালন করাও জরুরি। ৭১–এর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে ২৪ বারবার ফিরে আসবে।
পাঠক্রমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে শক্তিশালী করতে নতুন কোনো কোর্স বা উদ্যোগ কি নেওয়া হচ্ছে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ তাদের কোর্স কনটেন্ট পর্যালোচনা করবে। বিশেষ করে ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস না জানার কারণে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছে। আমাদের আনুভূমিক ও উল্লম্ব—দুই ধরনের ইতিহাস রয়েছে। ঔপনিবেশিক বাংলায় মুসলমানদের বঞ্চনার ইতিহাস কিংবা উপমহাদেশের মুসলিম চিন্তাবিদদের অবদান যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।
ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নতুন কোনো প্রকল্প আছে কি?
আমাদের ক্যাম্পাসে অমর একুশে, শহীদ মিনার, সংশপ্তকসহ ৫২, ৭১ ও ২৪–কে ধারণ করা বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। সম্প্রতি ২৪–এর স্মরণে ‘অদম্য–২৪’ উদ্বোধন করেছি। তবে এগুলো যথেষ্ট নয়। ৭১ ও ২৪–কে স্মরণে রাখতে আরও দৃশ্যমান উদ্যোগ প্রয়োজন। অতীত স্মরণে ব্যর্থতার ফলেই আমরা দীর্ঘ স্বৈরশাসন দেখেছি।
আপনার মূল্যায়নে শিক্ষার্থীরা কি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানছে?
আমার মনে হয়, খুব সীমিতসংখ্যক শিক্ষার্থী ছাড়া অধিকাংশই সঠিক ইতিহাস জানে না। বিভিন্ন সরকার নিজেদের মতাদর্শ অনুযায়ী ইতিহাস উপস্থাপন করেছে। আমরা চাই, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের পুনরাবৃত্তি না হয়। ইতিহাসে যার যতটুকু অবদান, তাকে ততটুকুই ন্যায্যভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। তা না হলে আবারও ২৪–এর মতো পরিস্থিতির জন্ম হতে পারে।
নতুন প্রজন্ম ইতিহাস থেকে যথেষ্ট শিক্ষা পাচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?
এ বিষয়ে আমার যথেষ্ট সংশয় আছে। বস্তুনিষ্ঠতার অভাবই এর মূল কারণ। ভুক্তভোগী ও শহীদ পরিবারের সাক্ষাৎকার, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, ওরাল আর্কাইভ এবং স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইতিহাস জানার সুযোগ তৈরি করা গেলে সচেতনতা বাড়বে।
স্বাধীনতার মূল চেতনা আপনার দৃষ্টিতে কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে?
আমরা এখনো বিভাজনের রাজনীতিতে ব্যস্ত। ২৪ সংঘটিত হয়েছে দেড় বছর হলো, অথচ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে পরস্পরের প্রতি বিষোদগার থামেনি। এতে করে আমরা ৭১ ও ২৪—দুটোকেই হারানোর ঝুঁকিতে আছি। বিভাজনের হাজার কারণ থাকলেও ঐক্যের একটি কারণ থাকলে সেটিকেই গ্রহণ করতে হবে। ৭১ ও ২৪–এর মতো জাতি–ধর্ম–বর্ণ–লিঙ্গ নির্বিশেষে আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও শিক্ষাব্যবস্থার বড় চ্যালেঞ্জ কী?
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় মাধ্যমভিত্তিক বিভাজন রয়েছে—বাংলা, ইংরেজি, মাদ্রাসা ও কারিগরি। এগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি করতে হবে। শিক্ষাখাতে বাজেট অত্যন্ত কম। আন্তর্জাতিকভাবে যেখানে ৪–৬ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়, সেখানে আমরা দিচ্ছি ১–২ শতাংশ। শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান ও আর্থিক নিরাপত্তা না থাকায় মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসতে আগ্রহী হচ্ছে না। শিক্ষা কমিশন গঠন ও আমূল সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
একাডেমিক উন্নয়ন ও গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছি এবং ভালো গবেষকদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি। আন্তর্জাতিক গবেষণায় আমাদের অবস্থান শক্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়েও আমরা একাধিকবার দেশের শীর্ষে ছিলাম। এখন শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্যও বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিজয় দিবসে শিক্ষার্থী ও তরুণদের উদ্দেশে আপনার বার্তা কী?
ইতিহাস বলে, গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের প্রতিটি সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণরা। অভিভাবকদের অভিজ্ঞতা ও তরুণদের উদ্যম—এই দুইয়ের সমন্বয়েই দেশ এগিয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ ও পাঠকক্ষে বেশি সময় দিয়ে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে, যেন ভবিষ্যতে তারা দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে।
৬ দিন আগে
খাতা থেকে বাড়ির দেয়াল সবখানেই আঁকাআঁকি করতাম: কনক চাঁপা চাকমা
চলতি বছর শিল্পকলায় অবদানের জন্য একুশে পদক পেয়েছেন চিত্রশিল্পী কনক চাঁপা চাকমা। পদকপ্রাপ্তি উপলক্ষে সম্প্রতি গ্যালারি কসমসের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। তার আঁকা কয়েকটি চিত্রকর্ম নিয়ে একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয় গ্যালারি কসমসে। সেখানে ইউএনবিকে সাক্ষাৎকার দেন এই শিল্পী।
সাক্ষাৎকারটি ইউএনবির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
ইউএনবি: এর আগে দেশে-বিদেশে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু এবার মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক পেয়েছেন। এই অনুভূতি কেমন?
কনক চাঁপা চাকমা: এটা বিশাল একটা ব্যাপার। এটার জন্য আমার সামনে এগিয়ে যাওয়ার যে দায়িত্ব আছে তা আরও বেড়ে গেছে।
ইউএনবি: কাপড়ে মায়ের করা নকশা দেখেই উদ্বুদ্ধ হওয়া। কিন্তু বুনন শিল্পে না গিয়ে রঙ-তুলি বেছে নেওয়ার পেছনে কি কোনো বিশেষ কারণ ছিল?
কনক চাঁপা চাকমা: মাকে দেখেছি ভেজিটেবল ডাই করতে। হলুদ, খয়ের, গাছের বাকল, গাছের পাতা থেকে রং করতেন। এগুলো আমার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। হয়তো ছোটবেলায় আমার মনের মধ্যে প্রথিত হয়েছিল এসব রং, ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা। সেই ভালো লাগার বহিপ্রকাশ দরকার। তারপর আমি ছবি আঁকা শুরু করলাম। হোম ওয়ার্কের খাতা থেকে বাড়ির দেয়াল সবখানেই আঁকাআঁকি করতাম। স্কুল জীবন শেষে বুঝতে পারলাম ভালোলাগা, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার এটায় জায়গা। এরপর আমি বাবা-মাকে বলি আমি শিল্পী হব। এভাবেই পথ চলা শুরু।
আরও পড়ুন: একুশে পদক ২০২৩ বিজয়ী কনক চাঁপাকে গ্যালারি কসমসের সংবর্ধনা
৭৯৪ দিন আগে
ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দেওয়া নাফিজকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার
গত ৩ এপ্রিল ডয়চে ভেলের একটি ডকুমেন্টারিতে র্যাব সম্পর্কে সাক্ষাৎকার দেওয়া নাফিজ মোহাম্মদ আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ইউএনবিকে জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় দায়ের করা মামলায় নাফিজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এছাড়া আরও একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি ওসি।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে নারীকে বেত্রাঘাত ও পাথর মারার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৪
গ্রেপ্তারের ৩ ঘন্টার মধ্যে ছাড়া পেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মুক্তাদির
৯৮৭ দিন আগে
অনেকবার বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি: বান্নাহ
ঈদে টিভি চ্যানেলগুলোতে কয়েকশ নাটকের প্রচার হয়ে থাকে। সাত দিনব্যাপী প্রচারিত এই নাটকের সংখ্যা ও মান নিয়ে প্রতিবারই বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হয়। এ নিয়ে নাট্য নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রতি বছর ঈদে নাটকের সংখ্যাটা বাড়ছে। কিন্তু মান নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকছে। এতো সংখ্যক নাটকের মধ্যে মান ঠিক রাখাটা সম্ভব হয়ে উঠছে কি-না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: সংখ্যার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে কাজটা ঠিকঠাক হচ্ছে কি-না। কারণ নাটকের গল্প, অভিনয়, প্রোডাকশনসহ অন্যান্য বিষয়ে মানের দিকে নজর দিলে কাজটা ভালো হবে। যেমন আমি কিন্তু সংখ্যায় অনেক কাজ করি। কিন্তু সার্বিক মানের বিষয়টি আমি নিশ্চিত রাখার চেষ্টা করি। আমার দর্শকদের কাছ থেকেও এমন প্রতিক্রিয়া পাই। তবে সব কাজ যে শতভাগ ভালো হয় তেমনটাও না। সারাবছর হলিউডে কত কনটেন্ট তৈরি হয়, সবগুলোর কথা কী আমরা জানি। নেটফ্লিক্সে প্রতি সপ্তাহে একশর মতো নতুন কনটেন্ট মুক্তি পায়। সবগুলো কিন্তু আমরা দেখি না বা সবগুলো জনপ্রিয়তাও পায় না। আমরা সেগুলোর সম্পর্কেই জানি যেগুলোর মান ভালো এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই বলব, যেহেতু এটা ব্যক্তিগত পেশাদার জায়গা। সেক্ষেত্রে সংখ্যা যাই হোক যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে নজর দিতে পারি তাহলে মান ঠিক থাকবে মনে করি।
মান কমে যাওয়ার বড় একটা কারণ বাজেট সংকট। সংশ্লিষ্টরা এমটাই বলছেন। এক্ষেত্রে কী নাটকের সংখ্যার চেয়ে বাজেটের দিকে নজর দেয়া যায় না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: বিষয়টা আমরা যত সহজে দেখি, ততটা সহজ নয়। কারণ আমাদের টেলিভিশন চ্যানেল বেড়েছে যার সঙ্গে এখন ইউটিউব যোগ হয়েছে। সেই হিসেবে আমার তো মনে হয় এই পরিমাণ নাটক হওয়ার কথাই ছিল। কারণ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সাত দিনব্যাপী ঈদের অনুষ্ঠান প্রচার করে। যার মধ্যে অন্যতম নাটক। এক্ষেত্রে নির্মাতাদের বাজেটের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। আমরা যদি মানের দিকে শক্তভাবে নজর দিয়ে কাজ করি তাহলে পরিস্থিতি বদলাবে। আর বাজেট বেশি হলে প্রোডাকশনের মানও পাল্টে যাবে। কিন্তু সংখ্যা কমানোটা সহজ হবে না। বরং আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা অভিনেত্রী জেসিকা চ্যাস্টেইন
নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক প্রযোজকদের কাজটি নিয়ে বিভিন্ন প্রত্যাশা থাকে। নির্মাতা হিসেবে আপনারও নিজস্ব একটা ভাবনা থাকে। এই জায়গায় কখনও দ্বন্দ্ব হয় কি-না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: যখন নবীন নির্মাতা ছিলাম তখন এমনটা অনেক সময় হয়েছে। দিন দিন সেটি কমেছে। এখন একবারেই যে হয় না তেমনটাও না। বিষয়টা এমন পর্যায়ও গেছে যে কাজ পর্যন্ত হয়নি। আসলে আমাদের এখানে টেলিভিশনগুলো চাহিদা থাকে। সেগুলোই প্রযোজকরা চায়। আমার মনে হয় তাদেরও জায়গাটা বুঝতে হবে। আমাদের তারকা নির্ভর কাজ প্রয়োজন। কিন্তু সব কাজ যদি তারকাদের নিয়ে হয় তাহলে নতুনরা কীভাবে সুযোগ পাবে। একুশটি শর্টফিল্ম নিয়ে 'বাইশে একুশ' নামে একটা প্রজেক্ট হচ্ছে। যেখানে আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন এমন নির্মাতা বানিয়েছেন। এটির প্রযোজক আল ফাই। তাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ নতুনদের সুযোগ দিলে সেখান থেকে আগামীর তারকারা বের হবেন।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আপনার কাজে অনেক নতুন মুখ দেখা যায়। তাদের অনেকে এখন জনপ্রিয়। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে কেমন পড়তে হয়েছে?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: নতুনদের নিয়ে কাজ করাটা সবসময় চ্যালেঞ্জের। একপ্রকার বাজি ধরতে হয়। অনেক প্রযোজক ও টিভি চ্যানেলে সাপোর্ট পাওয়া যায় না। তবে আমি বোঝাতে চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয় বোঝালে বোঝে। সেক্ষেত্রে নির্মাতার সেই দায়িত্বটা নিতে হয়। বোঝানের দক্ষতা তার থাকা উচিত মনে করি। আর আমি সেই প্রমাণ দিয়েছি। যারা এক সময় নতুন ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন দেশের জনপ্রিয় তারকা। ভালো কাজ করছেন। হ্যাঁ, আমি বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি।
এবার আপনার কাজের প্রসঙ্গে আসি। দর্শকরা ঈদে আপনার কোন নাটকগুলো পাচ্ছে?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: বেশ কয়েকটি নাটক এবার আসছে। সেগুলোর মধ্যে জোভান ও সাফা কবিরকে নিয়ে 'লাভ জার্নি', ইরফান সাজ্জাদ ও সাফা কবির জুটির 'অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ', তাহসান খান ও বিদ্যা সিনহা মিমের 'আদার হাফ' রয়েছে। এছাড়াও ঈদের আগে আরও কয়েকটি নাটকের কাজ শেষ করতে হবে। অন্যদিকে ১৪টি শর্টফিল্ম নিয়ে একটা বিশেষ প্রজেক্ট করেছি। নাম 'ত্রিপল এস'। এটা আমার এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট। পোস্ট প্রোডকশনের কাজ চলছে। প্রজেক্টটি আমার ফেসবুক পেজ থেকে দেখানো হবে।
আরও পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম 'ড্রাইভ মাই কার'
ওটিটিতে এখন অনেক নির্মাতাই কাজ করছেন। ধারণা করা হচ্ছিল আপনাকেও এরসঙ্গে পাওয়া যাবে। যদিও সময়টি এখনও আসেনি। এর কারণ কী বলবেন?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: আসলেই সময়টা এখনও আসেনি। আর আমার কোনো তাড়াহুড়ো নেই। মূল কথা ওটিটিতে আমি যেই কাজটি দর্শককে দেখাতে চাই সেই সুযোগ এখনও পাইনি। সবাই করছে, দেখেও ভালো লাগছে।
১৩৪৪ দিন আগে