ঈদের নাটক
এবারের ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় ১০টি নাটক
ঈদ উৎসবের সঙ্গে এবার থাকছে ঝড়-বৃষ্টির আমেজ। তাই ঘরে থাকার আনন্দটা বেশ ভালো জমে উঠবে ঈদ নাটকের সঙ্গে। ঈদুল ফিতর ২০২৪ এ এই আবহকে কেন্দ্র করে চাঁদ রাত থেকে শুরু করে পুরো সপ্তাহজুড়ে জড়ো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নাটক। উৎসবমুখরতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোমান্টিক ও কমেডির মিশেলে প্রস্তুতি নিয়েছে ছোট পর্দার ঈদ নিবেদন। পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ কিছু নাটকীয়তাও স্থান পেয়েছে নাট্যপ্রেমীদের ভিন্ন স্বাদ দিতে। চলুন, সেগুলোর মধ্যে থেকে আসন্ন ঈদের সেরা ১০টি নাটকের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
আসন্ন ঈদুল ফিতর ২০২৪ এ যে ১০টি নাটক দর্শকনন্দিত হওয়ার অপেক্ষায়
.
জাদুর শহর
ধনী পরিবারের সন্তান মাদকের টাকার জন্য জড়িয়ে পড়ে ছিনতাইয়ে। এমনকি সেই ছিনতাইয়ে একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। কাহিনী সামনে এগোনোর সঙ্গে উন্মুক্ত হতে থাকে এই ঘটনার সঙ্গে নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোর এক বিস্ময়কর যোগসূত্র।
এমনি গল্প নিয়ে নাটকটি পরিচালনা করেছেন তুহিন হোসেন। চিত্রনাট্যে ছিলেন নাহিদ হাসনাত। শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন ফারহান আহমেদ জোভান এবং সাফা কবির। এছাড়া অন্যান্য ভূমিকায় রয়েছেন হিন্দোল রয়, দিশা এবং আখি আক্তার।
‘জাদুর শহর’ দেখা যাবে এনটিভির পর্দায় এবং তারপর মুক্তি পাবে এনটিভি নাটক ইউটিউব কন্টেন্ট হিসেবে।
আরও পড়ুন: আম্বানিপুত্রের রাজকীয় বিবাহ-পূর্ব অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি তারকা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলা
প্রেম এসেছিল একবার
রামিম একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্মকর্তা। একটি বিজ্ঞাপনে ভয়েজ ওভার দেওয়ার সুবাদে নীলিমার সঙ্গে পরিচয় হয় রামিমের। তাদের দুজনের মধ্যেই একটি সাধারণ ব্যাপার হচ্ছে- দুজনেই কবিতাপ্রেমী। আর এর ভিত্তিতেই পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এবং সে বন্ধুত্ব পরিণত হয় পরিণয়ে।
এই মিষ্টি প্রেমের গল্প নিয়ে চিত্রনাট্য বানিয়েছেন মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। আর সেই চিত্রনাট্যকে নাটকে রূপ দিয়েছেন পরিচালক রুবেল হাসান।
নাটকে রামিমের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান এবং নীলিমা চরিত্রে রয়েছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। অন্যান্যদের মধ্যে আছেন- মিলি বাশার, শম্পা নিজাম, নিজাম উদ্দিন তামুর এবং আনন্দ খালিদ।
প্রযোজনা সংস্থা সিএমভি’র ব্যানারে নির্মিত নাটকটি মুক্তি পাবে সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
শেষমেশ
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিক-খ্যাত পরিচালক কাজল আরেফিন অমি এবার দেখাতে চলেছেন পারিবারিক গল্প। ‘শেষমেশ’ শিরোনামের এই নাটকে পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে ফুটিয়ে তোলা হবে হাস্যরসের মাধ্যমে।
নাটকে বিভিন্ন ধরনের অযাচিত অথচ কষ্টসাধ্য কাজের মাধ্যমে একটি ছেলে তার পরিবারকে খুশী করার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষমেশ তা কতটুকু সুখের আর কতটুকু বিড়ম্বনাপূর্ণ হয় তারই হিসেব চলে গোটা নাটক জুড়ে।
বরাবরের মতো এবারও অমির পুরনো নাট্যগ্রুপ থেকে থাকছেন মনিরা মিঠু, জিয়াউল হক পলাশ, পারসা ইভানা, পাভেল, চাষি আলম এবং শিমুল শর্মা। পাশাপাশি আরও দেখা যাবে সুমন পাটোয়ারী, সাদিয়া তানজিন, ইশরাত জাহিন এবং তানজিম হাসান অনিককে।
নাটকটি এই ঈদে ক্লাব ইলিভেন এন্টারটেইনমেন্টের ইউটিউব কন্টেন্ট হিসেবে থাকছে।
আরও পড়ুন: একই প্ল্যাটফর্মে দুই তারকা শাকিব-সাকিব
আমরণ বিয়েশন
সেরনিয়াবাত শাওনের রচনা ও পরিচালনায় অদ্ভূত শিরোনামের এই নাটকটি সম্পূর্ণ কমেডি ঘরানার। ফাহাদকে বিয়ে করার জন্য সরাসরি বাসায় এসে হাজির হয় তার প্রেমিকা মারিয়া। ফাহাদ বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে তার বাসাতেই আমরণ অনসন শুরু হয় মারিয়ার। এমন অদ্ভূত কাণ্ডে বাসায় সাংবাদিকরাও এসে জড়ো হয়। বিয়ের জন্য অনসনকে এখানে নাম দেওয়া হয়েছে বিয়েশন।
এখানে ফাহাদ হিসেবে থাকছেন উদীয়মান তারকা জুনায়েদ বুকদাদি। আর মারিয়া চরিত্রে আছেন এ সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী তানজিন তিশা।
নাটকের সহশিল্পীরা হলেন শিল্পী সরকার অপু, মেহেদী হাসান পিয়াল, দিলু মজুমদার, তিশা চৌধুরী, এবং নীলা ইস্রাফিল। ‘আমরণ বিয়েশন’ এনটিভি থেকে সম্প্রচারণের জন্য নির্ধারিত। অতঃপর এটি এনটিভি নাটক ইউটিউব কন্টেন্ট হিসেবেও মুক্তি পাবে।
আরও পড়ুন: সুপারশী: যে দ্বীপে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
বুনোফুল ও ভাঙা ফুলদানি
জনপ্রিয় জুটি খায়রুল বাশার ও সাদিয়া আয়মানের এই রোমান্টিক নাটকটি পরিচালনা করেছেন সেলিম রেজা। গল্প, সংলাপ ও চিত্রনাট্যে ছিলেন নাসির খান।
ইমতিয়াজ ও রানু পরস্পরকে ভালবাসে। কিন্তু রানু পরিবার এই সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। কারণ ইমতিয়াজের একটি পা খোঁড়া। এই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তাদের প্রণয় আদৌ আলোর মুখ দেখতে পারবে কিনা তারই গল্প বলেছে এই নাটকটি।
অন্যান্য অভিনয়শিল্পীর হলেন তুতিয়া ইয়াসমিন পাপিয়া, আনিকা তাবাসসুম হায়াত, নাবিলা আলম পলিন এবং নুসরাত মেঘলা।
আরও পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
৭ মাস আগে
অনেকবার বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি: বান্নাহ
ঈদে টিভি চ্যানেলগুলোতে কয়েকশ নাটকের প্রচার হয়ে থাকে। সাত দিনব্যাপী প্রচারিত এই নাটকের সংখ্যা ও মান নিয়ে প্রতিবারই বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হয়। এ নিয়ে নাট্য নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রতি বছর ঈদে নাটকের সংখ্যাটা বাড়ছে। কিন্তু মান নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকছে। এতো সংখ্যক নাটকের মধ্যে মান ঠিক রাখাটা সম্ভব হয়ে উঠছে কি-না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: সংখ্যার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে কাজটা ঠিকঠাক হচ্ছে কি-না। কারণ নাটকের গল্প, অভিনয়, প্রোডাকশনসহ অন্যান্য বিষয়ে মানের দিকে নজর দিলে কাজটা ভালো হবে। যেমন আমি কিন্তু সংখ্যায় অনেক কাজ করি। কিন্তু সার্বিক মানের বিষয়টি আমি নিশ্চিত রাখার চেষ্টা করি। আমার দর্শকদের কাছ থেকেও এমন প্রতিক্রিয়া পাই। তবে সব কাজ যে শতভাগ ভালো হয় তেমনটাও না। সারাবছর হলিউডে কত কনটেন্ট তৈরি হয়, সবগুলোর কথা কী আমরা জানি। নেটফ্লিক্সে প্রতি সপ্তাহে একশর মতো নতুন কনটেন্ট মুক্তি পায়। সবগুলো কিন্তু আমরা দেখি না বা সবগুলো জনপ্রিয়তাও পায় না। আমরা সেগুলোর সম্পর্কেই জানি যেগুলোর মান ভালো এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই বলব, যেহেতু এটা ব্যক্তিগত পেশাদার জায়গা। সেক্ষেত্রে সংখ্যা যাই হোক যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে নজর দিতে পারি তাহলে মান ঠিক থাকবে মনে করি।
মান কমে যাওয়ার বড় একটা কারণ বাজেট সংকট। সংশ্লিষ্টরা এমটাই বলছেন। এক্ষেত্রে কী নাটকের সংখ্যার চেয়ে বাজেটের দিকে নজর দেয়া যায় না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: বিষয়টা আমরা যত সহজে দেখি, ততটা সহজ নয়। কারণ আমাদের টেলিভিশন চ্যানেল বেড়েছে যার সঙ্গে এখন ইউটিউব যোগ হয়েছে। সেই হিসেবে আমার তো মনে হয় এই পরিমাণ নাটক হওয়ার কথাই ছিল। কারণ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সাত দিনব্যাপী ঈদের অনুষ্ঠান প্রচার করে। যার মধ্যে অন্যতম নাটক। এক্ষেত্রে নির্মাতাদের বাজেটের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। আমরা যদি মানের দিকে শক্তভাবে নজর দিয়ে কাজ করি তাহলে পরিস্থিতি বদলাবে। আর বাজেট বেশি হলে প্রোডাকশনের মানও পাল্টে যাবে। কিন্তু সংখ্যা কমানোটা সহজ হবে না। বরং আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা অভিনেত্রী জেসিকা চ্যাস্টেইন
নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক প্রযোজকদের কাজটি নিয়ে বিভিন্ন প্রত্যাশা থাকে। নির্মাতা হিসেবে আপনারও নিজস্ব একটা ভাবনা থাকে। এই জায়গায় কখনও দ্বন্দ্ব হয় কি-না?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: যখন নবীন নির্মাতা ছিলাম তখন এমনটা অনেক সময় হয়েছে। দিন দিন সেটি কমেছে। এখন একবারেই যে হয় না তেমনটাও না। বিষয়টা এমন পর্যায়ও গেছে যে কাজ পর্যন্ত হয়নি। আসলে আমাদের এখানে টেলিভিশনগুলো চাহিদা থাকে। সেগুলোই প্রযোজকরা চায়। আমার মনে হয় তাদেরও জায়গাটা বুঝতে হবে। আমাদের তারকা নির্ভর কাজ প্রয়োজন। কিন্তু সব কাজ যদি তারকাদের নিয়ে হয় তাহলে নতুনরা কীভাবে সুযোগ পাবে। একুশটি শর্টফিল্ম নিয়ে 'বাইশে একুশ' নামে একটা প্রজেক্ট হচ্ছে। যেখানে আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন এমন নির্মাতা বানিয়েছেন। এটির প্রযোজক আল ফাই। তাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ নতুনদের সুযোগ দিলে সেখান থেকে আগামীর তারকারা বের হবেন।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আপনার কাজে অনেক নতুন মুখ দেখা যায়। তাদের অনেকে এখন জনপ্রিয়। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে কেমন পড়তে হয়েছে?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: নতুনদের নিয়ে কাজ করাটা সবসময় চ্যালেঞ্জের। একপ্রকার বাজি ধরতে হয়। অনেক প্রযোজক ও টিভি চ্যানেলে সাপোর্ট পাওয়া যায় না। তবে আমি বোঝাতে চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয় বোঝালে বোঝে। সেক্ষেত্রে নির্মাতার সেই দায়িত্বটা নিতে হয়। বোঝানের দক্ষতা তার থাকা উচিত মনে করি। আর আমি সেই প্রমাণ দিয়েছি। যারা এক সময় নতুন ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন দেশের জনপ্রিয় তারকা। ভালো কাজ করছেন। হ্যাঁ, আমি বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি।
এবার আপনার কাজের প্রসঙ্গে আসি। দর্শকরা ঈদে আপনার কোন নাটকগুলো পাচ্ছে?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: বেশ কয়েকটি নাটক এবার আসছে। সেগুলোর মধ্যে জোভান ও সাফা কবিরকে নিয়ে 'লাভ জার্নি', ইরফান সাজ্জাদ ও সাফা কবির জুটির 'অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ', তাহসান খান ও বিদ্যা সিনহা মিমের 'আদার হাফ' রয়েছে। এছাড়াও ঈদের আগে আরও কয়েকটি নাটকের কাজ শেষ করতে হবে। অন্যদিকে ১৪টি শর্টফিল্ম নিয়ে একটা বিশেষ প্রজেক্ট করেছি। নাম 'ত্রিপল এস'। এটা আমার এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট। পোস্ট প্রোডকশনের কাজ চলছে। প্রজেক্টটি আমার ফেসবুক পেজ থেকে দেখানো হবে।
আরও পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম 'ড্রাইভ মাই কার'
ওটিটিতে এখন অনেক নির্মাতাই কাজ করছেন। ধারণা করা হচ্ছিল আপনাকেও এরসঙ্গে পাওয়া যাবে। যদিও সময়টি এখনও আসেনি। এর কারণ কী বলবেন?
মাবরুর রশীদ বান্নাহ: আসলেই সময়টা এখনও আসেনি। আর আমার কোনো তাড়াহুড়ো নেই। মূল কথা ওটিটিতে আমি যেই কাজটি দর্শককে দেখাতে চাই সেই সুযোগ এখনও পাইনি। সবাই করছে, দেখেও ভালো লাগছে।
২ বছর আগে