ঘুষ লেনদেন
এনামুল বাছিরের সাজা কেন বাড়ানো হবে না, জানতে হাইকোর্টের রুল
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক এনামুল বাছিরকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতের দেয়া পাঁচ বছরের সাজা কেন বাড়ানো হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আরও পড়ুন: কোন কোন দেশে টাকা পাচার করেছেন পিকে হালদার, জানতে চান হাইকোর্ট
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিচারিক আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ৬ এপ্রিল খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন এনামুল বাছির। পাশাপাশি তার সাজা বাড়াতে দুদক গতকাল সোমবার হাইকোর্টে আপিল করেন। ওই আপিলের ওপর মুনানি নিয়ে আজ রুল দেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি তথ্যপাচার ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানের তিন বছর ও দুদকের তৎকালীন পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের আট বছর (তথ্যপাচারে তিন ও ঘুষ লেনদেনে পাঁচ বছর) কারাদণ্ডের রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেন মিজান।
৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
আরও পড়ুন: পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারে ভারতকে ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ: হাইকোর্ট
সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে দুদক
২ বছর আগে
ডিআইজি মিজানের দণ্ড বাড়াতে হাইকোর্টের রুল, আপিলে জামিন বহাল
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে তিন বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পুলিশের বরখাস্তকৃত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের দণ্ড কেন বৃদ্ধি করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ রুল জারি করেছেন।
অন্যদিকে মিজানুর রহমানকে দণ্ডপ্রাপ্ত এই মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এছাড়া ডিআইজি মিজানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুবব শফিক। আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বিশেষ জজ আদালত দণ্ডবিধি অনুসারে মিজানুর রহমানকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তিন বছরের সাজা দিয়েছেন। কিন্তু দুদক আইনের ৫ (২) ধারায় তাকে সাজা দেয়া হয়নি। এ ধারায় সাত বছরের সাজা আছে। তাই দুদক সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করে। হাইকোর্ট দুদকের আবেদনের শুনানি করে তার সাজা পরিবর্তন করে দুদক আইনের ৫(২) ধারায় কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
অন্যদিকে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত মিজানুর রহমানের জামিন বহাল রেখেছেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুষ লেনদেন ও অর্থপাচারের অভিযোগে করা মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম রায় দেন। রায়ে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও এ মামলার প্রধান আসামি খন্দকার এনামুল বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫ (এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু অর্থ পাচারের অভিযোগ থেকে মিজানুর রহমানকে খালাস দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচার: ডিআইজি মিজানের শাস্তি চেয়ে দুদকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ
পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন মিজান ও এনামুল বাছির। হাইকোর্ট দুই জনের আপিলই শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। এছাড়া গত ১৩ এপ্রিল ঘুষ লেনদেনের মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে দুই মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত ওই আবেদনের ওপর ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন।
এদিকে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানকে বিশেষ জজ আদালতের দেয়া সাজা পরিবর্তন করে তা বাড়ানোর জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে তার সাজা বাড়ানোর ব্যাপারে রুল দেন হাইকোর্ট।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।
আরও পড়ুন: ডিআইজি মিজানের হাইকোর্টে জামিন
এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।
এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকে এ মামলায়ও গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত রায় দেন।
আরও পড়ুন: দুদক মামলায় সম্রাটের জামিন নামঞ্জুর, মুক্তি মিলছে না
২ বছর আগে