লঞ্চ টার্মিনাল
সদরঘাটে লঞ্চের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের লালকুঠি ঘাট এলাকায় শুক্রবার সকালে একটি লঞ্চে আগুন লাগার পর তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ময়ূর-৭ লঞ্চে কোনো যাত্রী ছিল না, কারণ আগুন লাগার আগেই সবাই লঞ্চ ছেড়ে গিয়েছিল।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: ঢাকার ওয়ারীতে গ্যাস লাইন লিকেজের আগুনে দদ্ধ একজনের মৃত্যু
বরিশালে লঞ্চ টার্মিনাল থেকে নদীতে পড়ে পথশিশু নিখোঁজ
বরিশাল নদী বন্দরে দোতলা লঞ্চ টার্মিনাল থেকে কীর্তনখোলা নদীতে এক পথশিশু পড়ে নিখোঁজ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
লঞ্চঘাটের এক পথশিশু চাঁদনী জানায়, আমি, আসলাম, জনি ও সাথী পন্টুনের পাশে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে পেছন থেকে নাইম এসে সাথী ও আসলামকে ধাক্কা দেয়।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ট্রলারডুবি: বরসহ এখনও নিখোঁজ ৪
এ সময় আসলাম সাঁতার কেটে উঠে। কিন্তু সাথী সাঁতার না জানায় ডুবে যায়। আমরা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সাথীকে আর পাওয়া যায়নি।
লঞ্চঘাটের আরেক পথশিশু আসলাম জানায়, আমরা পন্টুনে বসে দুষ্টুমি করছিলাম, এ সময় পেছন থেকে কে যেনো ধাক্কা দেয়। আমি নদীতে পড়ে গেলে সাঁতার কেটে উপরে উঠি।
নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া শিশুর নাম নাইম (১৩)। তার বাবা অজ্ঞাত। সে ৫নং ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা।
নিখোঁজ পথশিশু সাথী আক্তারের (১২) বাড়ি ঢাকায় বলে জানা গেছে। সে বরিশাল নদী বন্দরে থাকত।
সদর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. জলিল বলেন, স্থানীয়ভাবে আমরা বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেই।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিখোঁজ শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বরিশাল নদীবন্দর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. এনামুল হক সুমন জানান, আমাদের ফায়ার সার্ভিসের একটি দল শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ৫ দিন ধরে নিখোঁজ মাদরাসা ছাত্র
নাসিরনগরে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার
ঈদে নৌপথের ২৭ লাখ যাত্রীর চাপ পড়বে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে: জাতীয় কমিটি
পদ্মা সেতুর কারণে লঞ্চে করে বৃহত্তর বরিশালগামী যাত্রীর সংখ্যা কমে গেলেও, আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের অস্বাভাবিক চাপের মুখে পড়বে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল।
এছাড়া ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় যাবেন।
নৌ পরিবহন, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিদিন তিন লাখ লোক হিসেবে ৯ দিনে গড়ে কমপক্ষে ২৭ লাখ লোক সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল দিয়ে বাড়ি যাবে।
আরও পড়ুন: লঞ্চ টার্মিনালে প্রবেশ ফি আরোপের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশিস কুমার দে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেন।
এদিকে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে এবং ঝামেলামুক্ত ও নিরাপদ ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে জাতীয় কমিটি সরকারকে বিকল্প উপায়ে জাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর ঈদুল ফিতরে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
এর মধ্যে ৩৭ দশমিক ৫০ লাখ (২৫ শতাংশ) নৌপথে যাতায়াত করে।
এতে বলা হয়, এর প্রায় শতভাগই উপকূলীয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের যাত্রী।
এদিকে নাগরিক সংগঠনটি জানায়, গত জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর চাঁদপুর বাদে উপকূলীয় জেলাগুলোর নৌপথে যাত্রীর হার প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।
ফলে এই ঈদে লঞ্চে ৩০ লাখ মানুষ (মোট যাত্রীর ২০ শতাংশ) যাবেন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২৭ লাখ ঢাকা নদীবন্দর দিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নির্মাণ হবে আধুনিক লঞ্চ টার্মিনাল
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৩ এপ্রিল থেকে গৃহমুখী মানুষের ভিড় শুরু হবে। বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের নৌপথের সকল যাত্রী ১৩ থেকে ২১ এপ্রিল (ঈদের আগের দিন) ৯ দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরবেন।
এর ফলে প্রতিদিন সদরঘাট টার্মিনাল দিয়ে তিন লাখ মানুষ যাতায়াত করবে এবং বাকি যাত্রীরা নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর ব্যবহার করবে।
নাব্যতা সংকটের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে সরকারিভাবে ৪১টি নৌপথ ছিল। তবে নাব্যতা সংকট ও যাত্রী সংকটের কারণে অন্তত ১৫টি নৌপথ ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়েছে।
জাহাজের স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে জাতীয় কমিটি বলেছে, বাকি ২৬টি নৌপথে নিয়মিত সর্বোচ্চ ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। ঈদের আগে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৮০-এর কাছাকাছি।
এর মধ্যে সদরঘাট থেকে ৯০টি নৌযান বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং ৯০টি বিভিন্ন স্থান থেকে আসবে।
নাগরিক সংগঠনটি আরও জানায়, প্রতিদিন ৯০টি লঞ্চে তিন লাখ যাত্রী পরিবহন করলে একটি লঞ্চ গড়ে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ যাত্রী বহন করবে।
কিন্তু লঞ্চগুলোর কোনোটিরই ধারণক্ষমতা দুই হাজারের বেশি নেই।
আরও পড়ুন: লালকুঠি-রূপলাল হাউজ পর্যন্ত লঞ্চ টার্মিনাল সরানোর আহ্বান তাপসের
এমনকি অনেক লঞ্চের যাত্রী ধারণক্ষমতা এক হাজারেরও কম। এ ছাড়া ঈদের আগের তিন দিনে ভিড় বাড়বে দেড় গুণ।
এছাড়া প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অনেক লঞ্চ চাপ সামলানোর ক্ষমতার বাইরে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ যাত্রী বহন করে। এর ফলে ছাদে ও ডেকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়।
সংগঠনটি নৌপথে দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগের ঝুঁকি কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে।
এছাড়া নৌপথ ও টার্মিনালগুলোতে সর্বোচ্চ নজরদারি এবং কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
লালকুঠি-রূপলাল হাউজ পর্যন্ত লঞ্চ টার্মিনাল সরানোর আহ্বান তাপসের
ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে পুরান ঢাকার লালকুঠি থেকে রূপলাল হাউজ পর্যন্ত অংশের সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল অতিসত্বর সরিয়ে নিতে আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফলজে নূর তাপস।
সোমবার (২৩ মে) সদরঘাটস্থ লালকুঠি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রজেক্ট (ডিসিএনইউপি) প্রকল্পের আওতাধীন প্রকল্প কার্যাবলী সংক্রান্ত প্রদর্শনী কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বিআইডব্লিওটিএকে এই আহ্বান জানান।
শেখ তাপস বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা নদী ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে আমাদের ঢাকা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা এই ঐতিহাসিক স্থাপনা থেকে এখন আর বুড়িগঙ্গা দেখতে পাই না। কারণ সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি দখলদারিত্বের ছোবলে নদী আজ দখল হয়ে গেছে। তাই, আমি বিআইডব্লিউটিএকে অনুরোধ করব, অতিসত্বর আপনারা লালকুঠি থেকে রূপলাল হাউজ পর্যন্ত অংশে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সরিয়ে ফেলুন। ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে টার্মিনালের এই অংশটি দ্রুত সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিন।’
ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও ফিরিয়ে আনতে এটাই সর্বোত্তম সময় উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দুঃখজনকভাবে দেখলাম, লালকুঠি আর ঢাকা গেইটই শুধু করপোরেশনের আওতাধীন। রূপলাল হাউজসহ যেসকল স্থাপনা ঢাকার অস্তিত্ব সৃষ্টি করেছে, ঢাকাকে পরিচিতি দিয়েছে সেগুলো করপোরেশনের আওতাধীন নয়।
তিনি বলেন, রূপলাল হাউজ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় হস্তান্তর করতে আজকের অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্টদের যে দাবি, সেই দাবির সাথে আমিও একাত্মতা পোষণ করছি। রূপলাল হাউজ আমাদেরকে হস্তান্তর করলে আমরা এর পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করব। আমরা ঢাকার সকল ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও স্মৃতিস্তম্ভের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডাইরেক্টর মারসি মিয়াঙ টেম্বন, ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, বিশ্বব্যাংকের সাউথ এশিয়া সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের রিজিওনাল ডাইরেক্টর জন রুম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বক্তব্য দেন।
পড়ুন: মেয়র তাপসকে নিয়ে অবমাননাকর ফেসবুক পোস্ট: ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাঙালি সংস্কৃতি ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাব: মেয়র তাপস
চাঁদপুরে নির্মাণ হবে আধুনিক লঞ্চ টার্মিনাল
চাঁদপুরে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি আধুনিক লঞ্চ টার্মিনাল নির্মাণ করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ও নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
চাঁদপুরের বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক কায়সারুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই দশমিক ৪০ একর জমিতে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন টার্মিনালে নদীবন্দর অফিস, যাত্রীদের জন্য শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানীয় জল, বসার ব্যবস্থা, প্রার্থনার স্থান এবং নারীদের জন্য ওয়েটিং রুম এবং ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া লঞ্চের টিকিট পাওয়া যাবে না: নৌপ্রতিমন্ত্রী
নতুন টার্মিনাল নির্মাণের মূল কাজ অক্টোবর বা নভেম্বরে শুরু হবে বলে তিনি জানান।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান টার্মিনাল ভবন ও লঞ্চঘাটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কিন্তু করোনার কারণে প্রকল্পটি সময়মতো বাস্তবায়িত হয়নি।