টোল
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: এক মাসে ১০ লাখ যান চলাচল, প্রত্যাশার চেয়ে ৫০% বেশি
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা ও টোল আদায় সব প্রত্যাশা ও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। গত ২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজারেরও বেশি যানবাহন এটি ব্যবহার করছে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আখতার জানান, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৬২৭টি যানবাহন এই এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেছে। এ সময়ে টোল আদায় করা হয়েছে ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারী গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাইভেটকার, ট্যাক্সি, স্পোর্টস ইউটিলিটি যানবাহন, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের কম) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের কম) যা ক্যাটাগরি-১ এর অন্তর্ভুক্ত। এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে এসব যানবাহনকে ৮০ টাকা টোল দিতে হয়। প্রথম মাসে, এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা যানবাহনগুলোর মধ্যে ৮ লাখ ৯২ হাজার ২৫০টি এই ক্যাটাগরির ছিল, যা মোট যানবাহনের ৯৯ শতাংশেরও বেশি।
ক্যাটাগরি-২ এর অন্তর্ভুক্ত মাঝারি ধরনের যানবাহনের (৬ চাকা পর্যন্ত) টোল ৩২০ টাকা। এই ক্যাটাগরির ১ হাজার ৪৬৮টি যানবাহন এক্সপ্রেসওয়েটি ব্যবহার করেছে।
ছয়টির বেশি চাকার ট্রাককে ক্যাটাগরি-৩ হিসেবে শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলোর টোল ৪০০ টাকা। প্রথম মাসে এক্সপ্রেসওয়েতে এই ক্যাটাগরির গাড়ি চলেছে মাত্র ৪৯টি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে ৯টি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন, প্রথমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
এ ছাড়া ক্যাটাগরি-৪-এ সব ধরনের বাস (১৬ সিট বা তার বেশি) রয়েছে। এই ক্যাটাগরির মোট ৬ হাজার ৮৬০টি গাড়ি ১৬০ টাকা করে টোল দিয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে এই সময়ের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা মোট যানবাহনের শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ ছিল এই ক্যাটাগরির যান।
আখতার বলেন, ‘আমরা খুশি কারণ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বেশি যানবাহন ব্যবহার করছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ সেপ্টেম্বর তার বহরের ২৫টি গাড়ির জন্য ২ হাজার টাকা টোল পরিশোধ করে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। পরের দিন বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য রুট খুলে দেওয়া হয়। এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যেতে ১০ থেকে ১২ মিনিট সময় লাগে।
আখতার আরও বলেন, ‘যদিও আমরা আশা করেছিলাম যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ হাজার যানবাহন এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবে। এখন সেই সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি হয়েছে। এটি প্রত্যাশার চেয়ে ৫০ শতাংশেরও বেশি।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত নগরীর বাসিন্দারা রাস্তায় যানবাহন চালিয়ে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ‘এক্সপ্রেসওয়ে সম্পূর্ণরূপে চালু হলে এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলে আমরা উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাব।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে দুই বাসের সংঘর্ষ, আহত ৬
প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি রাজধানীর কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে চলবে।
তবে যাত্রী সংকটের ভয়ে সরকারি-বেসরকারি পরিবহনগুলো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করছে না। এমনকি মহাখালীর আন্তঃজেলা বাসগুলোও এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে না। কারণ, বাস স্টেশনগুলোর কাছাকাছি র্যাম্পগুলো এখনও চালু হয়নি। ফলে নগরীর অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ কমছে না।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, মহাখালী র্যাম্পের পাশাপাশি এক্সপ্রেসওয়ের অন্যান্য র্যাম্পের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ হবে।
তিনি আরও বলেন, একবার সেগুলো সম্পন্ন হলে, এক্সপ্রেসওয়েতে বর্তমানের চেয়ে যান চলাচল আরও বাড়বে, এক্সপ্রেসওয়ের নিচে রাস্তায় পরিবহনের চাপ কমবে।
বুয়েটের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে আংশিকভাবে চালু হওয়ার পরও রাস্তায় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের সমস্যা দৃশ্যমানভাবে কমেনি। তিনি বলেন, কমার কোনো সুযোগও নেই।
আরও পড়ুন: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: প্রথম তিন সপ্তাহে ৫ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
এক্সপ্রেসওয়ের ল্যান্ডিং পয়েন্টগুলোর নিকটবর্তী রাস্তাগুলো ব্যস্ততম সময়ে তীব্র যানজটের কবলে পড়ে। তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের জন্য গণপরিবহনের বিকল্পগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি না করা পর্যন্ত সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি চালু হলে প্রকল্পের প্রকৃত প্রভাব অর্থাৎ ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব নির্ধারণ করা যেতে পারে।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) আবু সালেহ মো. রায়হান ইউএনবিকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত যানবাহন চলাচল কিছুটা হলেও সহজ হয়েছে কারণ বেশিরভাগ ব্যক্তিগত গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করছে।
যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, যদিও ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকার লাভ রোডের মতো র্যাম্পের কিছু এক্সিট পয়েন্টে প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান। তবে সংশ্লিষ্ট রাস্তায় কিছু প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার পরে সেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
আরও পড়ুন: জধানীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গার্ডারের আঘাতে শ্রমিকের মৃত্যু
১ বছর আগে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: প্রথম তিন সপ্তাহে ৫ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
ঢাকা (এম জাহাঙ্গীর আলম), ২৫ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)-
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার পর থেকে ৫ কোটি টাকার বেশি টোল আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আখতার জানান, রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোট ৬ লাখ ২১ হাজার ১৫২টি যানবাহন চলাচল করেছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার গাড়িবহরে থাকা ২৫টি গাড়ির জন্য প্রতিটি গাড়ির জন্য ৮০ টাকা হারে দুই হাজার টাকা টোল পরিশোধের মধ্য দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
গত ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় বিমানবন্দর থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট পর্যন্ত অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেটে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট।
প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আখতার বলেন, আমরা আগে ধারণা করেছিলাম প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ হাজার যানবাহন এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলে রাজধানীর কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত চলাচল করবে।
আখতার ইউএনবিকে বলেন, আমরা আশা করছি এটি সম্পন্ন হলে প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের নকশা অনুযায়ী যানবাহন ৮০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে চলতে পারে, কিন্তু তারা র্যাম্পে ৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং ৪০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছে।
তারা এখনও গতিসীমা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ শুরু করতে পারেনি। যদিও ইতোমধ্যে এক্সপ্রেসওয়েতে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস চলাচল শুরু করেছে। যাত্রীরা এখন মাত্র ৩৫ টাকায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পার হচ্ছেন।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের খেজুর বাগান থেকে জসিমউদ্দিন রোড পর্যন্ত নতুন বাস রুটের ঘোষণা দেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে তিনটি ডিপো থেকে মোট আটটি বাস চলাচলের কথা ছিল। এক্সপ্রেসওয়ের উভয় প্রান্ত থেকে যাত্রীরা বাসে উঠতে পারবেন।
তবে এক্সপ্রেস হাইওয়েতে চলাচলকারী বিআরটিসি বাসের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২টিতে।
উত্তরা-ফার্মগেট বিআরটিসি বাস রুটের ফার্মগেট বাস কাউন্টারে কর্মরত বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কর্মী বিশ্বজিৎ বলেন, যাত্রী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট, আমরাও সন্তুষ্ট।
তিনি আরও বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে আটটি দোতলা বাস চলাচল শুরু করে।
আরও পড়ুন: ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চালু হলো বিআরটিসির বাস
বিশ্বজিৎ জানান, ফার্মগেট বাস কাউন্টার থেকে উত্তরা পর্যন্ত প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে বাস চলাচল করছে। এক্সপ্রেসওয়ের উভয় প্রান্তে যানজটের কারণে বাসগুলে কখনও কখনও দেরি করে।
তিনি বলেন, যাত্রীদের সেবা আরও উন্নত করতে আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। যাত্রী সংখ্যা বাড়ানোর জন্য রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, শিগগিরই বাসের সময়সূচি কঠোরভাবে বজায় রাখা যেতে পারে।
তানজিলা রহমান নামে এক যাত্রী রবিবার বিকালে ফার্মগেট বিআরটিসি এক্সপ্রেসওয়ে বাস কাউন্টার থেকে উত্তরায় যাওয়ার জন্য টিকিট কিনছিলেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সকালে একটি চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য এসেছিলেন এবং তিনি বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে ইন্দিরা রোডে পৌঁছেন। আমি পরিষেবাটি খুব ভালো লেগেছে। বিমানবন্দর থেকে এখানে পৌঁছাতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম সময় লেগেছে। আমি একই পথ দিয়ে ফিরে যাচ্ছি।
রায়হান নামে আরেক যাত্রী জানান, আগে বাসা থেকে কারওয়ানবাজারে অফিসে পৌঁছাতে অন্তত দেড় ঘণ্টা পথ পাড়ি দিতে হতো। তিনি বলেন, এটি তার জন্য একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা যে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে তিনি মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে তার অফিসে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
আরেক যাত্রী রাফিউজ্জামান রিয়ন বলেন, লোকাল বাসে অনেক বেশি স্টপেজ থাকে, অনেক বেশি সময় লাগে এবং তারা প্রায়ই বেশি ভাড়া আদায় করে।
তিনি বলেন, বিআরটিসি এক্সপ্রেসওয়ে রুটে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়, তাই ফি ন্যায্য থাকে। বিআরটিসি বাসের সিটকে আরও আরামদায়ক করে তুলতে পারে। এছাড়াও, যদি এই রুটে আরও কয়েকটি স্টপ থাকে তবে এটি আরও বেশি সংখ্যক যাত্রীকে সহায়তা করবে।
ইউএনবির প্রতিবেদক তৌফিক হোসেন মবিন একটি এক্সপ্রেসওয়ে বাসে চড়েছিলেন। দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ফার্মগেট থেকে উত্তরার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিজয় সরণিতে যানজটের কারণে বাসটি প্রথমে ধীর গতির ছিল, এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে ২৩ মিনিট সময় লেগেছিল।
এরপর বাসটি এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছাতে মাত্র ১৭ মিনিট সময় নিলেও অপর প্রান্তে যানজটের কারণে তিনি আবার ধীরগতিতে চলতে থাকে এবং দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে বিমানবন্দরে বাস থেকে নেমে যান।
আরও পড়ুন: ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার পর ল্যান্ডিং পয়েন্টগুলোতে যানজট
১ বছর আগে
উদ্বোধনের অপেক্ষায় বঙ্গবন্ধু টানেল, টোলের হার চূড়ান্ত
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রাথমিক নির্মাণকাজ সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
মূল টানেলটি যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি সজ্জিত ও প্রস্তুত। এটি দেশের প্রথম পানির নিচের টানেল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে টানেলটি উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে সমাবেশে ভাষণ দেবেন।
পরের দিন থেকে সুড়ঙ্গটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। যা এই অঞ্চলের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পরিবহন মাইলফলক হবে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, টানেলের প্রাথমিক নির্মাণকাজ সফলভাবে শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে টানেলের মধ্যে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই অসাধারণ প্রকল্পের উদ্বোধন পানির নিচে টানেলের যুগে বাংলাদেশের প্রবেশের সূচনা করছে।
তিনি বলেন, এই ‘স্মরণীয় অর্জন’ দেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগের একটি নতুন যুগের সূচনা করবে, যা জাতির জন্য গর্বের বিষয়।
সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন ইউএনবিকে বলেন, প্রাথমিকভাবে টানেলটি যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
তিনি বলেন, চলমান প্রচেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস এবং থানা ভবনের মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনসহ বিভিন্ন দিক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। টানেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, উদ্বোধনের পরও আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের
তিনি বলেন, একটি পুলিশ স্টেশন, একটি ডাম্পিং এলাকা এবং একটি স্টেশন স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং এর জন্য জায়গা সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা এই অভিযানের সঙ্গে জড়িত এবং যারা রক্ষণাবেক্ষণ করবেন তাদের নিজস্ব গাড়ি থাকবে।
সচিব বলেন, নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টানেল এলাকার অভ্যন্তরে এবং এর আশেপাশে যানবাহন চলাচল পরিচালনার জন্য ট্রাফিক বিভাগ একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
টানেলের অভ্যন্তরে যানবাহনগুলো ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম হবে।
টানেলে কী ধরনের যানবাহন চলবে তা ঠিক করা হয়েছে। টোলও নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেতু সচিব।
সেচিব বলেন, টানেলের ধারণাটি আমাদের কাছে নতুন। এজন্য এর কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এটি অন্যান্য সেতু বা রাস্তা থেকে আলাদা। সেক্ষেত্রে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে টানেলেটি নিরাপদ থাকবে এবং যারা এটি ব্যবহার করবে তারাও নিরাপদ থাকবে।
হোসেন আরও বলেন, এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি মনে করি না যে এই মুহূর্তে দুই বা তিন চাকার গাড়ির জন্য এটি নিরাপদ।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুন-অর-রশিদ ইউএনবিকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চালু হলে চট্টগ্রাম শহরের পরিধি বাড়বে।
টানেলের এক প্রান্ত চট্টগ্রাম শহর এবং অপর প্রান্ত আনোয়ারা উপজেলার দিকে। টানেলের উন্নয়ন আনোয়ারাকে একটি ক্রমবর্ধমান শহরে রূপান্তরিত করছে। একই সঙ্গে আনোয়ারা উপজেলায় জমির দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
আরও পড়ুন: নির্ধারণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল হার
আনোয়ারা উপজেলায় টানেলের টার্মিনাসে যাওয়ার রাস্তার দু'পাশে গড়ে উঠছে ছোট-বড় অসংখ্য শিল্প কারখানা। টানেলটি চালু হলে কর্ণফুলী নদী পারাপারের সময় কমে দাঁড়াবে মাত্র ৩ মিনিটে।
যেহেতু সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। টানেলটি রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পাশাপাশি পর্যটন নগর কক্সবাজারের মধ্যে সড়ক যোগাযোগে একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত।
মূল টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার এবং দুটি চার লেনের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার।
এ ছাড়া মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার লিংক রোড এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার থাকবে।
টানেলটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে অবস্থিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত প্রথম বা উত্তর টানেলের বোরিং শুরু করেন।
২০১১ সালে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ২০১৪ সালে একটি সমঝোতা স্মারকের পর ২০১৫ সালের ৩০ জুন ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ঠিকাদার নিয়োগের পর ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয়।
বাংলাদেশ ও চীন সরকারের (জিটুজি) যৌথ অর্থায়নে মোট ১০ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
টানেলের নির্মাণকাজ করছে চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)।
কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে চীনের সাংহাইয়ের অনুরূপ ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ ধারণা তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু টানেল ব্যবহারে মোট ১২ ধরনের যানবাহনে টোল চার্জ দিতে হবে। প্রাইভেটকারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম টোল ফি ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পিকআপ ট্রাককে প্রতি ক্রসিংয়ে ২০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসে ২৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হবে।
৩১টির কম আসনের বাসগুলোর ৩০০ টাকা এবং ৩২টির বেশি আসনের বাসগুলোর ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।
পাঁচ টন পর্যন্ত পণ্য বহনে সক্ষম ট্রাকের জন্য টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। আট টনের ট্রাকে ৫০০ টাকা এবং ১১ টনের ট্রাকে ৬০০ টাকা দিতে হবে। তিন এক্সেল কনটেইনার ট্রেইলারের জন্য ৮০০ টাকা।
চার এক্সেলের একটি ট্রেলারের জন্য ১ হাজার টাকা। তবে প্রতিটি অতিরিক্ত এক্সেলের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা দিতে হবে।
টানেলটি যানবাহন চলাচলের জন্য চালুর দিন থেকে টোল হার কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: অক্টোবর-নভেম্বরে দুই ভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: সেতুমন্ত্রী
১ বছর আগে
নির্ধারণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল হার
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) যানবাহনের শ্রেণি অনুযায়ী টোল হার চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সেতু বিভাগ।
টানেলটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু টানেলে মোট ১২ ধরনের যানবাহনের জন্য টোল দিতে হবে। এই টানেলে মোটরসাইকেল চলতে পারবে না। টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দিন থেকে এই টোল হার কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: অক্টোবর-নভেম্বরে দুই ভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: সেতুমন্ত্রী
তবে এখনো ট্যানেল খুলে দেওয়া বা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু টানেলে সর্বনিন্ম টোল ২০০ টাকা। প্রাইভেটকার পারাপারে এই টোল দিতে হবে।
প্রতিবার পিকআপ পারাপারে টোল লাগবে ২০০ টাকা। মাইক্রোবাসের টোল ২৫০ টাকা। ৩১ আসনের কম বাসের টোল ৩০০ টাকা।
৩২ আসনের বেশি বাসের টোল ৪০০ টাকা। ৩ এক্সেল বিশিষ্ট বড় বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা।
৫ টন পর্যন্ত পণ্য বহনে সক্ষম ট্রাকের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। ৮ টনের ট্রাক পারাপারে ৫০০ টাকা এবং ১১ টনের ট্রাকে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে।
৩ এক্সেলের ট্রেইলারে টোল লাগবে ৮০০ টাকা। ৪ এক্সেলের ট্রেইলারে দিতে হবে ১ হাজার টাকা। পরবর্তী প্রতি এক্সেলের জন্য বাড়তি ২০০ টাকা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী
এদিকে কর্ণফুলী আমানত শাহ সেতুর তুলনায় যানবাহনের শ্রেণি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু টানেলে আড়াই থেকে ৬ গুণ টোল দিতে হবে। আমানত শাহ সেতুতে প্রাইভেটকারের টোল ৭৫ টাকা।
সেতুতে ৩১ আসনের কম বাসের টোল ৫০ টাকা। টানেলে তা ৩০০ টাকা। ফলে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টানেলকে প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে সেতুর সঙ্গে।
১ বছর আগে
পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক চালু হলো ইলেকট্রনিক টোল আদায় ব্যবস্থা
পদ্মা সেতুতে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসিএস) পরীক্ষামূলক শুরু হয়েছে।
বুধবার থেকে সয়ংক্রিয় এই টোল আদায়ের আওতায় আনা হয়েছে ১৪টি বুথ। আর বাকি তিন বুথে মোটরসাইকেলের জন্য আগের মত ম্যানুয়ালি রাখা হয়েছে।
এছাড়া সেতুর যান চলাচল পর্যবেক্ষণে মাওয়া প্রান্তে চালু হয়েছে পদ্মা ব্রিজ ট্রাফিক মনিটরিং সেন্টার।
রেডিও ফিকিউয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) পদ্ধতিতে চলন্ত অবস্থায় টোল আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই পদ্ধতির জন্য রেজিস্ট্রেশন করা গাড়ি টোল প্লাজার সামনে আসতেই ১ নম্বর বুথ থেকে স্ক্যানারে গাড়ি শনাক্ত করে। নির্ধারিত টোল কেটে ব্যারিয়ার উঠে এবং স্ক্রিনে ব্যালেন্স দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে টোল আদায় ৬৬০.২৪ কোটি টাকা: কাদের
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেতু সচিব স্মার্ট পদ্ধতিতে টোল পরিশোধ করে টোল প্লাজা অতিক্রম করেন। ২ নম্বর বুথের নাম হাইব্রিড। আরএফআইডি, টাচ অ্যান্ড গো এবং ক্যাশ- এই তিন পদ্ধতিতে টোল পরিশোধের সুযোগ থাকবে এখানে। আর ৩ থেকে ৭ নম্বর এই পাঁচটি বুথে টাচ অ্যান্ড গো এবং ক্যাশ পদ্ধতি চালু হয়েছে।
দুই পারে একই রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর সেতুর যান চলাচল পর্যবেক্ষণে মাওয়া প্রান্তে চালু হয়েছে পদ্মা ব্রিজ ট্রাফিক মনিটরিং সেন্টার।
সেতু সচিব মো. মঞ্জুর হোসন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে স্মার্ট টোল আদায় শুরু হওয়ায় দুই পারে দুইটি বুথ বাড়ানো হয়েছে। তাই এখন সেতুর দুই পারে প্রবেশ পথে ১৭টি টোল বুথ চালু। ইলেকট্রনিক টোলের আওতায় আনা হয়েছে ১৪টি টোল বুথ।
মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতু উত্তর থানার পূর্ব পাশে ইটিসিএস রেজিস্ট্রেশন বুথ চালু হয়েছে। পুরোপুরি এই পদ্ধতি চালু হলে যানবাহনগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে হবে না, জটলামুক্ত থাকবে টোলপ্লাজা। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে সেতু ব্যবহাকারীরা।
প্রসঙ্গত, সেতুর মাওয়া প্রান্তের ৮নং এবং জাজিরা প্রান্তের ৮নং ও ৯নং মোট তিনটি বুথে মোটরসাইকেলের জন্য আগের মত ম্যানুয়ালি কম্পিউটারে টোল আদায় হবে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে পৌনে ৩ কোটি টাকা টোল আদায়
১ বছর আগে
টার্মিনাল বাদে অন্য কোথাও টোল নেয়া যাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, টার্মিনাল বাদে অন্য কোথাও টোল নেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, বাস কিংবা ট্রাকের মালিক ও শ্রমিক সমিতি একটা টোল নিয়ে থাকেন, তারাই সেটা নির্ধারণ করেন। সেটা টার্মিনাল ছাড়া কোনো জায়গা থেকে নেয়া যাবে না। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির ১১১ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভা হয়। এ সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক, পুলিশ ও আমাদের মতো বিত্তবানরাও মাদক সাপ্লাই করেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পৌর ও সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন হবে। প্রজ্ঞাপন দেয়ার পর টোল আদায়ের বিধি না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি চাঁদাবাজির মামলাও করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ড্রাইভার ও শ্রমিকদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া বিআরটিএ’র জনবল বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ অবৈধ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল গুলোকে বিআরটিএ’র আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হেলমেটের মান নির্ধারণের জন্য বিআরটিএ ও বিএসটিআইয়ের সমন্বয়ে নির্ধারিত হেলমেটের বাইরে কেউ অন্য হেলমেট পরতে পারবে না।
আরও পড়ুন: বাস মালিকদের ধর্মঘট কেন তা আমাদের জানার বিষয় নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সমাবেশে বিএনপির কর্মীরা লাঠি নিয়ে আসছে, এটা আইনসিদ্ধ নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
২ বছর আগে
কালনা সেতু: টোল হার নির্ধারণ, অপেক্ষা উদ্বোধনের
দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতুর টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সেতুর টোল হার নির্ধারণ করেছে। এক্ষেত্রে বড় ট্রেইলার ৫৬৫ টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সসেল বিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০ টাকা, দুই এক্সসেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, বড় বাসের ক্ষেত্রে ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকাপ, কনভারশনকৃত জিপ ও রে-কার ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, অটোটেম্পু, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিক্শা, ভ্যান ও বাইসাইকেল পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান বলেছেন, ‘সেতুটির নির্মাণকাজ ৩০ আগস্ট শেষ হয়েছে, তবে প্রধানমন্ত্রী এখনও উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করেননি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তারিখ সম্পর্কে আমাদের অবহিত করার পরে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হবে।’
গত ৭ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে অক্টোবরের যেকোনো দিন কালনা সেতু উদ্বোধন করা হবে।
আরও পড়ুন: কঁচা নদীর ওপর বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মিত হয়েছে।
আশরাফুজ্জামান বলেন, কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: অক্টোবর-নভেম্বরে দুই ভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: সেতুমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কায় বালুবোঝাই বাল্কহেডডুবি
২ বছর আগে
কুষ্টিয়ায় টোল প্লাজায় হামলা: ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি গঠন
কুষ্টিয়ায় মাস-উদ রুমী সেতুর টোল প্লাজায় হামলার ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আতিকুর রহমান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।
কমিটির সদস্যরা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি সৌরভ খাঁন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহম্মেদ তুষার।
আরও পড়ুন: চমেকে জোনায়েদ সাকির ওপর ছাত্রলীগের হামলা
যোগাযোগ করা হলে এই বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ছাত্রলীগ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি সৌরভ খাঁন জানান, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রবিবার থেকে তারা তদন্ত শুরু করবেন। ইতোমধ্যে তদন্তের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
নির্ধারিত তিন কার্য দিবসের মধ্যেই তদন্ত সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, শনিবার পর্যন্ত এ ঘটনায় ছাত্রলীগ বা টোল প্লাজার ইজারাদার কর্তৃপক্ষের কেউই থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।
সেতুটির ইজারাদার কুষ্টিয়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনু।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আ’লীগ নেতার মৃত্যু
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে জেলা ছাত্রলীগের শোক দিবসের আলোচনা সভা ছিল। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
সভায় অংশগ্রহণের জন্য কুমারখালী ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী মোটরসাইকেল যোগে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে আসার সময় মাছ-উদ রুমী সেতুর পশ্চিম দিকের টোল প্লাজায় পৌঁছলে সেখানে দায়িত্বরত একজন কর্মী একটি মোটরসাইকেল থামানোর চেষ্টা করেন। এসময় পেছন থাকা ৪০টি মোটরসাইকেল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং টোল প্লাজায় দায়িত্বরত কর্মীদের ওপর হামলা করে। হামলায় টোল প্লাজার ছয় কর্মী আহত হন। ঘটনার সময় ছাত্রলীগেরও কয়েকজন কর্মীও আহত হয় বলে দাবি করে ছাত্রলীগ।
২ বছর আগে
বাসের ধাক্কায় পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল বুথ ক্ষতিগ্রস্ত, আহত ১
পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোলপ্লাজার ২ নম্বর বুথে শনিবার যাত্রীবাহী একটি বাসের ধাক্কায় একজন টোল আদায়কারী আহত হয়েছেন। আপাতত কর্তৃপক্ষ এই বুথে টোল আদায় বন্ধ রেখেছেন।
আহত টোল আদায়কারীর নাম মো. রিপন হোসেন (২২)।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসাইন জানান, শনিবার সকালে ‘শরীয়তপুর পরিবহন’-এর একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বুথটিতে আঘাত করলে একজন টোল আদায়কারী আহত হন। আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাসের ধাক্কায় ২ নম্বর বুথের ভেতরের কম্পিউটার ও বুথে প্রবেশের দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শনিবার বেলা ১১ টা থেকে টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাসটি আটক করে থানায় রাখা হয়েছে।
তবে বুথটি সচলের চেষ্টা চলছে এবং অন্য চারটি বুথে টোল আদায় স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হয়ে টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা
৬ষ্ঠ দিনে পদ্মা সেতু থেকে রেকর্ড ৩.১৬ কোটি টাকা টোল আদায়
২ বছর আগে
পদ্মা সেতু: দ্বিতীয় দিনে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার টোল আদায়
পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের দ্বিতীয় দিনে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত যানবাহন থেকে টোল আদায় করে সরকার এক কোটি ৯৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে ১৫ হাজার ২৭৪টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উদ্বোধন করেন এবং রবিবার সকালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতি মাসে ১৩৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই টাকা ১৪০ কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে। এ জন্য সরকার বছরে এক হাজার ৬০৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা টোল আদায় করতে চায়।
বিবিএ জানায়, আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে যাবে বলে আশা করছে সরকার।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: প্রথম দিনে ২ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
অর্থ মন্ত্রণালয় বিবিএকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এবং তা ৩৫ বছরের মধ্যে এক শতাংশ সুদের হারে পরিশোধ করতে হবে।
এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এছাড়া সেতুতে যানবাহন থামানো, হাঁটা ও ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এছাড়া সেতু পার হওয়ার সময় সবাইকে টোল দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: প্রথম ৮ ঘণ্টায় ৮২ লাখ টাকার বেশি টোল আদায়
পদ্মা সেতু: টোল বাবদ বছরে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা
২ বছর আগে