মূলধন
সপ্তাহজুড়ে পতনে পুঁজিবাজারে মূলধন কমলো ৩,৩৯৬ কোটি টাকা
সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে চারদিনই পতন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই); বাজার মূলধন কমেছে ৩,৩৯৬ কোটি টাকা।
ডিএসই'র সাপ্তাহিক পুঁজিবাজারের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭৯ কোটি টাকার মূলধন নিয়ে সপ্তাহ শুরু হলেও বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকায়।
পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে মোট মূলধন কমেছে ৩,৩৯৬ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মূলধন হ্রাসের পাশাপাশি সাপ্তাহিক গড় লেনদেনেও ভাটা পড়েছে। ৯০০ কোটি টাকার ঘরে থাকা গড় লেনদেন কমে ৬০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। এক সপ্তাহ ব্যবধানে মোট লেনদেন কমেছে ২৪ শতাংশ।
ঢাকার বাজারে সারা সপ্তাহের লেনদেনে সব সূচক কমেছে; প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৭ পয়েন্ট, বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ২৩ পয়েন্ট এবং শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ৭ পয়েন্ট।
সাপ্তাহিক লেনদেনে ডিএসইতে দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির; ৯৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২৭৪ কোম্পানির এবং ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
খাতভিত্তিক শেয়ার
ডিএসই'র তালিকাভুক্ত কোম্পানির ২১ খাতে দাম বেড়েছে মাত্র পাঁচটিতে, বাকি সব খাতে শেয়ারের দাম নিম্নমুখী।
বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে রীতিমতো ধস নেমেছে। ব্যাংক খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৫৫ শতাংশ, লেনদেন কমেছে ৫২ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে ২৮ ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে।
অন্যদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে দাম কমেছে ৫৩ শতাংশ, লেনদেন কমেছে ৫১ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ২৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম কমেছে ১৯ প্রতিষ্ঠানের।
বীমাখাতে সাধারণ বীমা এবং জীবন বীমার দাম কমেছে যথাক্রমে ৩২ এবং ৭ শতাংশ।
পতনের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে চামড়াশিল্প খাতে, দর বেড়েছে ১৪৭ শতাংশ। ভালো অবস্থানে আছে পাটখাত, দাম বেড়েছে ১৩৬ শতাংশ। এছাড়া উত্থান হয়েছে পর্যটন খাত, কাগজ ও প্রিন্টিং এবং করপোরেট বন্ডে।
উত্থানে শীর্ষ কোম্পানি
ডিএসইতে উত্থানের ধারায় শীর্ষে আছে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটির রিটার্ন বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। ৭১ টাকায় লেনদেন শুরু করে শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৭ টাকা।
পড়ুন: এলডিসি থেকে উত্তরণ ছয় বছর পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
দরবৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক, রিটার্ন বেড়েছে ২০ শতাংশ। সপ্তাহব্যাপী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
বেক্সিমকোর পরেই শীর্ষ তালিকায় আছে ডোমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস, রিটার্ন বেড়েছে ১৯ শতাংশ। আরেক কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশনের রিটার্ন বেড়েছে ১৮ শতাংশ; ৩৮৮ টাকা প্রতি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫৯ টাকা।
উত্থানের শীর্ষ তালিকায় আছে সামাতা লেদার কমপ্লেক্স, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড।
পতনে শীর্ষ কোম্পানি
ঢাকার বাজারে ১৪ শতাংশ রিটার্ন কমে পতনের শীর্ষে আছে এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড। ১২ শতাংশ রিটার্ন কমে দ্বিতীয় অবস্থানে এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড।
দাম কমেছে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের; ১১ শতাংশ কম রিটার্ন এসেছে গত সপ্তাহে। গত ৬ মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লাভ (ইপিএস) কমেছে ৪ শতাংশ।
পতনের শীর্ষ তালিকায় আছে ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস, রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, নূরানি ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস এবং এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) পতন হয়েছে সব সূচকের; দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
সারা সপ্তাহের লেনদেন সিএসইর সার্বিক সূচক (সিএএসপিআই) কমেছে ২২১ পয়েন্ট। শরীয়াভিত্তিক সূচক সিএসআই কমেছে ১১ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির সূচক সিএসই-৩০ ও সিএসই-৫০ কমেছে যথাক্রমে ২০০ এবং ২১ পয়েন্ট।
সারা সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩১৩ কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে; দাম কমেছে বেশিরভাগের। ৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৯ কোম্পানির এবং ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এবং দরবৃদ্ধিতেও শীর্ষে আছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। গত সপ্তাহে ওরিয়নের প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ।
সিএসইতে দর পতনের শীর্ষে আছে এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড; সপ্তাহব্যাপী দাম কমেছে ২৩ শতাংশ।
এদিকে, টানা এক সপ্তাহ পতন হলেও বাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের হিসাব অনুযায়ী, এক সপ্তাহে নতুন বেনিফিসিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৯৩৯টি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উত্থান-পতনের সাম্যবস্থা রক্ষা করা সম্ভব হলে বাজারে বড় বিনিয়োগ আসবে। এছাড়া ভালো কোম্পানির নতুন আইপিও আসতে শুরু করলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
১১০ দিন আগে
শেয়ারবাজারে এক সপ্তাহে মূলধন বৃদ্ধি ছাড়াল ১০ হাজার ১৮৫ কোটি
পুঁজিবাজারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি মাসের ৪র্থ সপ্তাহে পুঁজিবাজার চার দিনে ১০ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা মূলধন বৃদ্ধি হয়েছে।
গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূলধন ছিল ৭ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। শেষ দিনে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা।
আপরও পড়ুন: ৪ প্রতিষ্ঠান পেল টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স
অর্থাৎ মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে তা বেড়েছে দুই হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। টানা দুই সপ্তাহ বাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বেড়েছে।
গত সপ্তাহে (২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি) পাঁচ কার্যদিবসে কেনাবেচা হয়েছিল। প্রথম ব্যবসায়িক দিনে সূচকের পতন দেখা গিয়েছিল, তারপরে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার টানা চারটি ব্যবসায়িক দিনে সূচক বেড়েছে।
এই সময়ে ডিএসইতে মোট ৩৮৭টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে, কমেছে ১১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০৫টির।
আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১৪টির দাম বেড়েছে, ৬৮টির দরপতন হয়েছে এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০৫টির। আগের সপ্তাহের তুলনায় দাম কমানো কোম্পানির সংখ্যা বেড়েছে।
তবে বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে যাওয়ায় ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে বিদায়ী সপ্তাহে ছয় হাজার ২৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসই’র অন্য দু’টি সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক আগের সপ্তাহের তুলনায় ছয় পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৫০ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৮০০ কোটি টাকার লেনদেন কমেছে; শতাংশ হিসাবে এটি ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)ও একই অবস্থায় লেনদেন হয়েছে।
গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৫৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে লেনদেন হয়েছে ৬৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০৪ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ৬১টির শেয়ার দর বেড়েছে, ৮৩টির দাম কমেছে এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩৪টি কোম্পানির।
আপরও পড়ুন: শেয়ার বাজার কারসাজিকারীকে চিহ্নিত করতে ৬-১২ মাস সময় লাগে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
প্রফিট শেয়ার করার জন্য হাওয়া ভবন ও পিএমওতে উন্নয়ন উইং নেই: ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী
১০৪১ দিন আগে
চলতি মূলধনের ঋণসীমা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলোকে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য চলতি মূলধনের ঋণসীমা যৌক্তিক পর্যায়ে বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, উদ্যোক্তাদের নিয়মিত সীমা অতিক্রম করলেও চলতি মূলধনের ঋণ যৌক্তিক পর্যায়ে বাড়ানো হবে। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্ক এবং ঝুঁকির কারণ পরিমাপের ভিত্তিতে, ব্যাংক গ্রাহকদের চলতি মূলধন ঋণের সীমা বাড়াতে পারবে।
আরও পড়ুন: এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের সংশোধিত নির্দেশিকা জারি বাংলাদেশ ব্যাংকের
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ মহামারি সম্পর্কিত চলাচল বিধিনিষেধের কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় চালান ও অর্থপ্রদানও বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু এখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে মূলধনের অভাবে কিছু উদ্যোক্তা কারখানা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।’
এ প্রেক্ষাপটে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং আমদানি-রপ্তানিসহ দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি মূলধনের ঋণের সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৩১৭ দিন আগে