স্বাধীনতা সূচক
স্বাধীনতা সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১তম
স্বাধীনতা সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৪১তম অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, ফ্রিডম ইনডেক্সে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনি নির্দেশকে বাংলাদেশের অবস্থান টানা ২২ বছর ধরে নিম্নমুখী।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি থিংক ট্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মৌলিক স্বাধীনতা জোরদার করা গেলে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
প্রতিবেদনে দুটি পৃথক সূচক রয়েছে- স্বাধীনতা সূচক ও সমৃদ্ধি সূচক। বিশ্বের ১৬৪টি দেশের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির ধরন অনুযায়ী ক্রম বা অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স এবং পশ্চাদগামী বাংলাদেশ
মার্কিন দূতাবাসের বক্তব্যে বলা হয়, স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের ১৪১তম অবস্থান। এটি ‘অধিকাংশক্ষেত্রে স্বাধীনতাবঞ্চিত’ বিভাগের মধ্যে পড়ে। অন্যদিকে সমৃদ্ধি সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে ৯৯তম অবস্থান নিয়ে দেশটি ‘অধিকাংশক্ষেত্রে অসমৃদ্ধ’ শ্রেণিতে রয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আটলান্টিক কাউন্সিলের নতুন গ্লোবাল ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি প্রতিবেদনের ফলাফল নিয়ে ‘সমৃদ্ধি ও সুশাসন সম্মেলন’ আয়োজন করে।
সম্মেলনে সরকার, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী, দাতা, একাডেমিয়া ও থিংক ট্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘প্রতিটি দেশই দুর্নীতির বিপক্ষে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত করতে লড়াই করছে। সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া নয়, সমস্যা সক্রিয়ভাবে স্বীকার করা এবং তা মোকাবিলাই মূল বিষয়।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আটলান্টিক কাউন্সিলের ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি সেন্টারের পরিচালক জোসেফ লেমোইন।
তিনি প্রতিবেদনটির মূল ফলাফল তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে স্বাধীনতা সূচকের মাধ্যমে দেশগুলোর গণতান্ত্রিক ও শাসনবিষয়ক নির্দেশকগুলো পরিমাপ, ক্রম নির্ধারণ করা এবং সমৃদ্ধি সূচকের মাধ্যমে একটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি পরিমাপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১০ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ
লেমোইন বলেন, ‘যেসব দেশে স্বাধীনতা বেশি রয়েছে সেসব দেশ সমৃদ্ধির ক্ষেত্রেও উচ্চ স্তরে অবস্থান করে। অন্যদিকে কম স্বাধীনতা পাওয়া দেশগুলো সমৃদ্ধিতেও নিম্নস্তরে অবস্থান করে। শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রচারকারী দেশগুলোর পরিবেশ এমন থাকে যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। এই দেশগুলো কম স্বাধীনতার দেশগুলোর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি পরিমাণে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ পায়।’
অর্থাৎ স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মূল চাবিকাঠি হিসেবে স্বাধীনতা সূচকে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণতন্ত্রের লড়াই থেকে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ ভবিষ্যতের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কৌশলগত রূপরেখা উচ্চাভিলাষী রূপকল্প ২০৪১ এজেন্ডায় তুলে ধরেছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সামাজিক অগ্রগতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া এই পরিকল্পনা নাগরিকদের ক্ষমতায়ন এবং তার গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে দৃঢ় করার ওপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে ঢাকায় এশিয়ানেট সম্মেলন আয়োজন করবে ইউএনবি
৭ মাস আগে
আরএসএফ প্রতিবেদন অগ্রহণযোগ্য: তথ্যমন্ত্রী
রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের (আরএসএফ) বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, তাদের প্রতিবেদন বিদ্বেষপ্রসূত, আপত্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য।বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুরে মন্ত্রী তার চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে এ বিষয়ে তাদের প্রশ্নের জবাবে তার প্রতিক্রিয়া জানান।'প্যারিসভিত্তিক সংস্থা আরএসএফ সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'তারা গতবছর এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে প্রচন্ড আপত্তিকর মন্তব্য ছিল। তারা বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়েও অসত্য ভুল এবং মনগড়া রিপোর্ট করে। সেটার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বৃহত্তর সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো যেমন প্রতিবাদ জানিয়েছিল, একইভাবে প্যারিস প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি ফ্রান্সের আইনজীবীর মাধ্যমে আরএসএফ এর বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দিয়েছিল।'
আরও পড়ুন: প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১০ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ'সেই আইনি নোটিশে বলা ছিল, তারা কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের ব্যাপারে এরকম মন্তব্য করতে পারেনা, ফ্রান্সের আইনেই সেটি বলা আছে, অর্থাৎ তারা ফ্রান্সের আইন লঙ্ঘন করে সেটা করেছে' জানিয়ে ড. হাছান বলেন, সুতরাং তারা এখন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এটিও কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, এটি আপত্তিকর এবং বিদ্বেষপ্রসূত।তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে সেই সমস্ত সূত্র থেকে আরএসএফ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং নিজেরাও বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে যে রিপোর্ট দেয় সেটির কোন মূল্য নেই। গতবছর বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ (বিএফইউজে) সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তাদের সেই প্রতিবেদন ও মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, বিবৃতি দিয়েছিল।'সেই একই সংগঠন যখন আবারও বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়ে কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিতে হবে তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে, বলেন তিনি।ডিজিটাল বা সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও আরএসএফ কথা বলেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ডিজিটাল বিষয়টি যখন ছিল না তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টিও ছিল না। যখন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল বিষয়টি এসেছে, তখন গণমানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ আইন করেছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই আইন হয়েছে এবং হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, ভারত, পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, বাংলাদেশেও হয়েছে।'এই আইন সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এবং এই আইনের সুযোগ গ্রহণ করে অনেক সাংবাদিকও তাদের মানহানিকর বিষয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং সাংবাদিক হোক, সাধারণ মানুষ হোক কারো বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহার হওয়া উচিৎ নয়, সে নিয়ে আমরা সতর্ক আছি', বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে বাংলাদেশে যেসমস্ত ধারাগুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়, কেউ কেউ সমালোচনাও করেন। অথচ, ভারত পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে যে আইনগুলো হয়েছে, সেখানেও অনুরূপ ধারাগুলো সন্নিবেশিত আছে।তিনি বলেন, 'এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফ্রেইমওয়ার্ক ল' করছে, যেটার অধীনে বিভিন্ন দেশে পদক্ষেপ নেয়া হবে, আইন করা হবে। ফ্রান্সেও একই ধরনের অনুরূপ আইন আছে। সুতরাং আরএসএফ আগে থেকেই যেহেতু বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত সেজন্যই তারা বাংলাদেশকে কয়েক ধাপ নামিয়ে দিয়েছে। আমরা এটি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি।'
আরও পড়ুন: সুব্যবস্থাপনায় নির্বিঘ্ন ঈদ যাত্রা হয়েছে : তথ্যমন্ত্রীবিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য 'দেশে গণতন্ত্র নেই, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ বিভিন্ন কারণে মানুষের মন ভালো নেই, তাই দেশের মানুষ ভালোভাবে ঈদ করতে পারেনি' এ বিষয়ে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, করোনা মহামারির পর এবার যেভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশের মানুষ ঈদ করেছে সেটি অভাবনীয়। শুধু তাই নয়, এবছর দেশের মানুষ যেভাবে কেনাকাটা করেছে, সমস্ত ব্যবসায়ীরা প্রচন্ড খুশি এবং দেশের অর্থনীতি চাঙা হয়েছে। এবার দেশে ঈদযাত্রা অনেকটা ভোগান্তিহীন ছিল। মানুষের মধ্যে এখনও খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে।'মির্জা ফখরুল সাহেব সম্ভবত অন্য গ্রহে বসবাস করেন অথবা তার মাথার মধ্যে অন্যদেশ ঘুরপাক খায় বলে তিনি এধরণের কথা বলছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'এজন্য আমার মনে হয় মির্জা ফখরুল সাহেবের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা দরকার। কারণ বয়স হলে অনেক ধরনের আবোল তাবোল কথা মানুষ বলে। তাদের ডাক্তারদের সংগঠন ড্যাব তার শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থের কিছু পরীক্ষা করতে পারে।'
২ বছর আগে