রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
কানাডা পটাশিয়াম সার বিক্রি অব্যাহত রাখবে: কৃষিমন্ত্রী
কানাডা বাংলাদেশে পটাশিয়াম সার বিক্রি অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো.আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে গতবছর পটাশিয়াম সার নিয়ে বিশ্বব্যাপী চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। আমরা বেলারুশ থেকে পটাশিয়াম সার কিনতে পারি নি। তখন সরকারের প্রচেষ্ঠায় কানাডা আমাদেরকে জরুরি ভিত্তিতে ৫ লাখ টন পটাশিয়াম সার প্রদান করে। যার ফলে রবি মৌসুমে ও চলমান বোরো মৌসুমে সার সংকট দেখা দেয় নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের নেতৃত্বে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের (সিসিসি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, কানাডা প্রতিনিধিদলের সদস্য কানাডা দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর এঞ্জেলা ডার্ক, ট্রেড কমিশনার কামাল উদ্দিন, কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কিম ডগলাস ও পরিচালক এন্টনি রিজক উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে ও বাণিজ্য সহজতর করতে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছেন।
আরও পড়ুন: সার ও বীজের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
বৈঠকে কানাডার বাণিজ্য প্রতিনিধিদল কানাডা থেকে ক্যানুলা আমদানির ক্ষেত্রে সয়াবিন ও পাম তেলের সমপরিমাণ আমদানিশুল্ক নির্ধারণের অনুরোধ জানান। বর্তমানে ক্যানুলা আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিশুল্ক সয়াবিন ও পাম তেলের দ্বিগুণ বলে তারা জানান।
এছাড়া, বাংলাদেশে ডাল রপ্তানি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ থেকে শাকসবজি নেয়ার কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিখাতে যে বিশাল অংকের ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছেন, তা পৃথিবীতে বিরল। অর্থনীতিতে যত চাপই আসুক, কৃষি উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ে এমন কোন পদক্ষেপ নিবেন না প্রধানমন্ত্রী। সেজন্য, প্রধানমন্ত্রী সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ ও কৃষির সার্বিক উন্নয়নে বিশাল অংকের ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যে শাকসবজি ও ফলমূল পাঠাতে পারবে: কৃষিমন্ত্রী
উন্নত দেশগুলোর প্রতি খাদ্যকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
১ বছর আগে
জ্বালানি সংকট কাটিয়ে উঠার আশা তৌফিক-ই-ইলাহীর
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে চলমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট উত্তরণে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে হাডসন ইনস্টিটিউট নামে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আয়োজিত ‘এনার্জি সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট চ্যালেঞ্জ ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিস: বাংলাদেশ কেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে জ্বালানি উপদেষ্টা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হাডসন ইন্সটিটিউটের ইনিশিয়েটিভ অন দ্য ফিউচার অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড সাউথ এশিয়ার ডিরেক্টর ড. অপর্ণা পান্ডে গোলটেবিলটি পরিচালনা করেন।
ড. চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশের একার নয়, এটি এখন একটি বৈশ্বিক সমস্যা।
আরও পড়ুন: পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
তিনি বলেন, গণমাধ্যমসহ দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
ড. চৌধুরী বলেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং সরবরাহের ঘাটতির কারণে বিশ্বে যে আঘাত এসেছে তা বাংলাদেশেও পড়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে তিনি এই বৈশ্বিক সংকটের সমাধান খুঁজতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আরও জোরালো উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত।
জ্বালানি উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশে জ্বালানি খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে এবং কৃষি ও শিল্প খাতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যাপক অবদান রাখায় দেশের অর্থনীতি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
ড. চৌধুরী উল্লেখ করেন যে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সরকার সৌরবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন বাড়াতে পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যেখানে বাংলাদেশ জলবিদ্যুৎ ব্যবহারে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতার জন্য কাজ করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল, ন্যাশনাল ব্যুরো অব এশিয়ান রিসোর্সেস, ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস এবং আটলান্টিক কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা ঘণ্টাব্যাপী গোলটেবিলে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সংকট: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ২দিন ছুটি ঘোষণা নিয়ে ভাবছে সরকার
২ বছর আগে
১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৩৫ টাকা
দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কমানো হয়েছে। প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডার এখন এক হাজার ২১৯ টাকা, যা আগে ছিল ১ হাজার ২৫৪ টাকা। সে হিসাবে ১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৩৫ টাকা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ দাম ঘোষণা করে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ দাম কার্যকর হয়।
৫ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত অন্যান্য পরিমাণের এলপিজি কন্টেইনার যৌক্তিকভাবে নতুন হারে বিক্রি করা হবে বলে জানান বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল।
ঘোষণা অনুযায়ী, মোটর গাড়ির জন্য অটো গ্যাসের দাম কমিয়ে প্রতি লিটার ৫৬ দশমিক ৮৫ টাকা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৫৮দশমিক ৪৬ টাকা।
আবদুল জলিল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম কমলেও স্থানীয় বাজারে ডলারের দাম বেশি থাকায় নিম্নমুখী প্রবণতার পুরো সুবিধা পাচ্ছেন না ভোক্তারা। অপারেটরদের আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এলপিজি আমদানি করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ডলারের হার মানছে না। বরং তারা চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে ডলারের দাম নির্ধারণ করে। ব্যাংকগুলো ডলারের রেট হিসাব করেছে ৯৮ থেকে ১০৫ টাকার মধ্যে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেট ছিল অনেক কম।
আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো আমাদের চিঠির জবাব দেয়নি।’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর স্থানীয় বাজারে এলপিজির দাম সর্বোচ্চ এক হাজার ৪৩৯ টাকা (১২ কেজি) হয়ে যায়।
এই বছরের জানুয়ারিতে ১২ কেজি এলপিজির দাম সর্বনিম্ন এক হাজার ২২৫ টাকা ছিল। এর পর থেকে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসে ক্রমাগত এলপিজির দাম বৃদ্ধি হয়।
আবদুল জলিল বলেন, বিশ্বব্যাপী সৌদি সিপির (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) দাম কমেছে।
বাংলাদেশের বেসরকারি এলপিজি অপারেটররা মূলত সৌদি সিপির ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার থেকে গ্যাস আমদানি করে।
বিইআরসি প্রথমবারের মতো হাইকোর্টের আদেশ মেনে চলার জন্য গণশুনানির পর ১২ এপ্রিল খুচরা-পর্যায়ে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে।
পড়ুন: ১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৯৩ টাকা
দেশে তেলের দাম কমবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে জনগণের কাছে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চিত পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় সরকারি ভর্তুকি হ্রাস করা প্রয়োজন বলে জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি দেশের জনগণ আমাদের সহযোগিতা করবে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক বিজনেস ইনকিউবেটর ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’, শেখ জামাল ডরমেটরি এবং রোজি জামাল ডরমেটরির ভার্চুয়াল উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ঈদের আগে ২৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং এলএনজি আমদানিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের লোডশেডিং এর দিকে যেতে হবে এবং আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমিত করতে হবে যাতে সরকার এই খাতে ভর্তুকি কমাতে পারে।
তিনি বলেন, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির জন্য সরকার দেয় ৫৯ দশমিক ৬০ টাকা যেখানে ভোক্তা পর্যায়ে দাম মাত্র ৯ দশমিক ৬ টাকা। সম্প্রতি দাম বাড়িয়ে ১১ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও সেখানে বিশাল ভর্তুকি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ প্রতি কিলোওয়াট ১২ দশমিক ৮৪ টাকা, যেখানে সরকার চার্জ করছে মাত্র পাঁচ দশমিক ৮ টাকা।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফারনিজ তেলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল্য ১৭.৪১ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫.০৮ টাকা। ডিজেলের জন্য, প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ৩৬ দশমিক ৮৫ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫ দশমিক ০৮ টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ১২ দশমিক ৩৭ টাকা যেখানে বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫ দশমিক ০৮ টাকা।
তিনি বলেন, কতদিন আমরা এত বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে পারব। আমাদের গৃহহীনদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা সুবিধা এবং ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে সরকার ভর্তুকি হিসাবে ৮৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ভর্তুকি না কমালে সরকার টাকা পাবে কোথা থেকে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতাসহ সব কিছুর ব্যবহার এবং নিজ নিজ সঞ্চয় বাড়ানোর জন্য তিনি সকলকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে একটিই বিকল্প আছে, আমি ইতোমধ্যে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং আরোপ করার নির্দেশ দিয়েছি এবং জনগণকে আগে জানানোর জন্য একটি রুটিন তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছি যাতে তারা প্রস্তুতি নিতে পারে এবং আমরা তাদের ভোগান্তি কমাতে পারি।
২ বছর আগে
জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং চালু করার কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আজ, আমি মনে করি যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কিছু সময়ের জন্য (প্রতিদিন) বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে বলব, যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানি সংরক্ষণ করা যায়।’
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে পিজিআর সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনলাইনে কর্মসূচিতে যোগ দেন।
তিনি বলেন, অতীতে ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল যেখান থেকে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংকটের কারণে দেশব্যাপী লোডশেডিং বাড়ছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সক্ষম হয়েছে।
সব এলাকায় গণহারে লোডশেডিং হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট এলাকা এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঘোষণা করে এটি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি আমরা এখন থেকে নির্দিষ্ট এলাকার জন্য লোডশেডিংয়ের সময় নির্দিষ্ট করতে পারি তাহলে আমরা সামনের কঠিন দিনগুলো থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারব।
করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশেই বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, ডিজেল, জ্বালানি তেল, এলএনজির মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপকরণের দাম ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে।
তিনি সকলকে মিত্যব্যায়ী হয়ে সঞ্চয় বাড়ানোর আহ্বান জানান যা ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের সংকট মোকাবিলায় সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: উত্তরের অনেক জেলায় জ্বালানি সংকট, যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি প্রত্যেক পরিবারের মধ্যে সঞ্চয়পন্থী মানসিকতা গড়ে ওঠে এবং খাদ্যশস্যের সর্বোত্তম উৎপাদনশীলতার জন্য তাদের নিজস্ব জমি ব্যবহার করে, তবে এটি ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, সব খালি জায়গা উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করতে হবে, তা যাই হোক না কেন। বাজারের উপর চাপ কমাতে এবং অবশিষ্ট উদ্বৃত্ত খাবার বিক্রি করে লাভ করার জন্য আমাদের নিজেদের খাদ্য উৎপাদনের চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানকে এ পদক্ষেপ নিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকা, ব্রিটেনসহ অনেক দেশই বিদ্যুতের স্বল্পতার কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন হচ্ছে। যদি আমরা সতর্ক থাকি আমাদের কোন সমস্যা হবে না।
ফোর্সেস গোল ২০৩০ অনুসরণ করে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করব না, আমরা শান্তি চাই। এক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতি মেনে চলি। তবে একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সংগঠনগুলো গড়ে তুলতে হবে। আমরা সে জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করেছি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল: প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দুর্নীতির অভিযোগ এনে আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্য, মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সচিবকে অসম্মান করতে চেয়েছিল বা বাংলাদেশকে অসম্মান করতে চেয়েছিল, আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করে তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অনন্য জাতিসত্তার বহিঃপ্রকাশ।
শেখ হাসিনা বলেন, এই একটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সম্পর্কে সারা বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার দারিদ্র্য কমাতে সক্ষম হয়েছে, সব ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছে এবং এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যেখানে কেউ গৃহহীন থাকবে না।
সিলেট অঞ্চলের বন্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কোনো দুর্যোগ যে কোনো সময় আসতে পারে এবং জাতির পিতা শিখিয়েছেন কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি ভালো ভবিষ্যতের জন্য ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর মতো ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েছি।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় তিনি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
৫ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ পেল হাদিসুরের পরিবার
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়া এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিহত মো. হাদিসুর রহমানের পরিবার ও জাহাজটির অন্যান্য নাবিকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর দৈনিক বাংলার বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) আঞ্চলিক কার্যালয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের এ চেক তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
এর মধ্যে নিহত মো. হাদিসুর রহমানের পরিবারকে পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য নাবিকদের সাত মাসের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেয়া হয়। এছাড়া হাদিসুরের ভাইকে বিএসসিতে চাকরি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চিরনিদ্রায় শায়িত হাদিসুর
এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি বাংলাদেশ তথা বহির্বিশ্বের মেরিটাইম সেক্টরে নজিরবিহীন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাদিসুরকে আমরা ফিরে পাব না। দুর্ঘটনার পর আমার সঙ্গে টেলিফোনে হাদিসুরের বাবা বলেছিলেন, হাদিসুর আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমরা কোথায় যাব? এ চেকটি একটা অবলম্বনের পথ খুঁজে দিল। হাদিসুরের ভাইকে বিএসসিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পরবর্তীতে তার যোগ্যতা অনুযায়ী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কোনো সংস্থায় স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এস এম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল ও জাহাজের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান।
বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে। পরবর্তীতে ২ মার্চ ইউক্রেনের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে জাহাজে ক্ষেপনাস্ত্র আঘাত হানে। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান নিহত হন।
আরও পড়ুন: পারিবারিক কবরস্থানে মঙ্গলবার দাফন করা হবে হাদিসুরকে
পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের সহায়তায় এবং বিএসসির সার্বিক প্রচেষ্টায় গত ৯ মার্চ জাহাজে অবস্থানরত ২৮ জন নাবিককে দেশে ফেরত আনা হয়।
এছাড়া ১৪ মার্চ হাদিসুর রহমানের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
২ বছর আগে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কঠিন সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর
ঢাকা, ১১ মে (ইউএনবি)-রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক ঝুঁকি শেষ না হলে সরকার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘কঠিন সময়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন,‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি আগের মতো নেই। বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: ভর্তুকি বা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার: অর্থমন্ত্রী
কঠিন সিদ্ধান্তের বিষয়ে তার মন্তব্য স্পষ্ট করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে অর্থনীতির চাকা বা আমাদের উন্নয়ন থেমে যাবে।’
তিনি বলেন, সরকার সাময়িকভাবে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ‘তবে আমরা সেই জিনিসপত্র দুই মাস বা ছয় মাস পরে কিনতে পারি।’
অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেয়া যেতে পারে, তবে বাতিল করা যাবে না বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই ধরনের প্রকল্প পুনর্গঠন করছি যাতে আমরা কার্যকরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারি। আমাদের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি আরও গতি পাবে।’
আরও পড়ুন: বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে: অর্থমন্ত্রী
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা কেউ বলতে পারবে না।
তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতি শেষ হয়ে গেছে এবং এখন কোনো দেশে এর নেতিবাচক প্রভাব নেই। এখন সারা বিশ্বে শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিরাজ করছে। সবাই কষ্ট ভাগাভাগি করছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের ঘন ঘন বিদেশ সফর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যদি এগুলো কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে বিশেষ বা অপরিহার্য না হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এ ধরনের সফরের বিরুদ্ধে নির্দেশনা জারি করেছেন।
২ বছর আগে