ঢাকা-ভাঙ্গা
ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেনের ভাড়া ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি জাতীয় কমিটির
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের ফলে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। তবে ঢাকা-ভাঙ্গা প্রস্তাবিত ট্রেনভাড়া অন্তত ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছে নাগরিক সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হাজি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা-ভাঙ্গা প্রস্তাবিত ট্রেনভাড়া বিদ্যমান বাস ভাড়ার চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। এর ফলে সাধারণ যাত্রীরা ব্যয় সংকোচনের জন্য বাসকেই প্রাধান্য দেবে এবং প্রত্যাশার তুলনায় ট্রেনযাত্রী অনেক কম হবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনে পাড়ি দিতে উদগ্রীব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেলপথের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন। ১ নভেম্বর থেকে এ পথে শুরু হবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।
রেলকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সেবা সংস্থা উল্লেখ করে জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ট্রেন সেবার মান বৃদ্ধি ও জনগণের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য এ খাতে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। প্রয়োজন হলে সরকার ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথেও ভর্তুকি দিয়ে কম ভাড়া নির্ধারণ করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য আন্তনগর ট্রেনে (নন-এসি) জনপ্রতি ৩৫০ টাকা এবং এসি চেয়ারে ৬৬৭ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করেছে।
এতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত নন-এসি ও এসি বাসের ভাড়া বাসের ভাড়া জনপ্রতি যথাক্রমে ২৫০ টাকা ও ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন: দোহাজারী-কক্সবাজার রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ১৫ অক্টোবর
১ বছর আগে
পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সংযোগের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে আরেকটি মাইলফলক স্থাপনে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেললাইনের উদ্বোধন করেছেন।
'পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্পের' আওতায় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে জমকালো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য (মুন্সীগঞ্জ-২) সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেলওয়ে সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা রেলপথে চলল পরীক্ষামূলক পণ্যবাহী ট্রেন
গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী রেললাইন নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন।
রেললাইনটি তিন ধাপে নির্মিত হচ্ছে (পাশাপাশি ঢাকা ও গেন্ডারিয়ার মধ্যে ৩ কিলোমিটার সংযোগ নির্মাণ করা হচ্ছে): ৩৭ কিলোমিটার গেন্ডারিয়া-মাওয়া সেকশন, ৪২ কিলোমিটার মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশন এবং ৮৭ কিলোমিটার ভাঙ্গা জংশন-যশোর সেকশন। প্রায় ৪৩ দশমিক ২ কিলোমিটার লুপ, সাইডিং ও ওয়াই-সংযোগসহ মোট পথের দৈর্ঘ্য ২১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার।
ঢাকা-যশোর রেলপথের পুরো প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন থাকবে, যার মধ্যে ১৪টি নতুন ও ৬টি ইতোমধ্যে রয়েছে। পূর্ববর্তী স্টেশনগুলোরও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটিয়েছে
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রতিটি লেভেল ক্রসিংয়ে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে বলে ঢাকা-যশোর রেললাইনের কোথাও কোনো রেলক্রসিং থাকবে না।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব প্রায় ৮২ কিলোমিটার। ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে কেরাণীগঞ্জ হয়ে পদ্মা সেতুতে যুক্ত হয়েছে নতুন রেললাইন।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ দিয়ে কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী কোচ কেনা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে রেক সাজিয়ে নতুন ট্রেন চালু করা হবে।
২০১৬ সালের ৩ মে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এতে ব্যয় আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জিটুজি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে চীনের অর্থায়নে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি) এই প্রকল্পের কাজ করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে। বাকি খরচ বাংলাদেশ সরকার বহন করছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনে পাড়ি দিতে উদগ্রীব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী
১ বছর আগে
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেন চালু আগামী বছরের জুনে: রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল আগামী বছরের মার্চ মাসে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘মার্চে সম্ভব না হলে এটি আগামী জুনে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
রবিবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় মাওয়া রেলস্টেশনের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আগামী মাসে সেতুটি উদ্বোধনের পর জুলাই থেকে সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজ শুরু হবে এবং তা ছয় মাসে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রেল সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা থাকলেও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কারিগরি কারণে সেতুর ওপরের অংশে কাজ করার অনুমতি না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন: ওবায়দুল কাদের
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার রেলপথের অগ্রগতি প্রায় ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ; মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
২ বছর আগে