জন-বাজেট সংসদ ২০২২
বাজেট শুধু বাৎসরিক দলিল নয়, আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাজেট সরকারের শুধু বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের দলিল নয়। বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে দেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে থাকে।
রবিবার (৫ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বণিক বার্তা ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'জন-বাজেট সংসদ ২০২২' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করেই বাজেট ঘোষণা করে থাকে। কারণ এর মাধ্যমে মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়। দেশের কোন মানুষকে বাদ দিয়ে উন্নত দেশে গড়া সম্ভব না। দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় সকল মানুষের অংশগ্রহণের ফলে।
এবারের বাজেটেও জাতির আশা-আঙ্খার প্রতিফলিত ঘটবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, দেশ অর্থনীতির সকল সূচকে অনেক এগিয়েছে। এটি সবাইকে মানতে হবে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। আর এটি একদিনে হবে না। স্বাধীনতার পর মাথাপিছু আয় ছিল ১২৫ ডলার। এখন এটি বহুগুণ ছাড়িয়ে গেছে। আগে খাদ্যের চরম অভাব ছিল। এখন সেটি নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সকলে খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, দেশে একসময় ভয়াবহ দরিদ্রতা ছিল। আমি নিজে দরিদ্রতা দেখেছি। না খেয়ে থাকা মানুষের আহাজারি শুনেছি। মানুষ দরজায় এসে বলতো ' মাগো সারাদিন কিছু খাই না, দয়া করে ক'টা খাবার দেন'। কিন্তু এখন মানুষ না খেয়ে মরছে না। মানুষ এখন খেতে পারছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ কেটে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্বে টালমাটাল শুরু হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি অনেক জিনিস-পত্রের দাম বেড়েছে। আমরা পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছি। সরকার নানাভাবে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধুও তাঁর সময়ে কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনো শেখ হাসিনা কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। এখনও অন্যান্য খাতের মত তিনি কৃষিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কৃষিকে একক গুরুত্ব দিয়ে মানুষে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার কৃষির পাশাপাশি শিল্পায়নকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের। এর অবদান একা কারো নয়। একজন সাধারণ পোষাক শ্রমিকও এর কৃতিত্ব পাবে।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করার জন্য পথ নকশা তৈরি করেছে। এই লক্ষমাত্রা অর্জনে পঞ্চম বার্ষিকীসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশে যে অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ চলছে তা বাস্তবায়িত হলে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হবে। দেশ পৌঁছে যাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. এম এম আকাশ, রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।
আরও পড়ুন: পানির অপচয় রোধে রিসাইক্লিং করার উদ্যোগ নিতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
রাজধানীর প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
২ বছর আগে