ডিপোর শিফট ইনচার্জ শাহাদাত উল্লাহ মজুমদার
সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফেনীর ৩ বাড়িতে শোকের মাতম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ফেনীর ফায়ার ফাইটার সালাউদ্দিন কাদের সবুজ (৩৭) , বিএম কন্টেইনার ডিপোর শিফট ইনচার্জ শাহাদাত উল্লাহ মজুমদার (৩৮) ও নিখোঁজ কাভার্ডভ্যান চালক মোহাম্মদ ইয়াসিনের (২৮) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহত সবুজ ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের মাছিম পুর গ্রামের মাস্টার মো. ইউছুফের ছোট ছেলে। শাহাদাত ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের আমিন উল্লাহ মজুমদারের ছেলে। মুহাম্মদ ইয়াসিনের ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোসাইপুর গ্রামের মো. খোকা মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে নিহত সবুজের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের কর্মক্ষম ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বাবা-মা।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ সিরাজগঞ্জের শফিউল
পরিবার জানায়, সবশেষ ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন। রবিবার রাত ৯টায় স্ত্রী মর্জিনা আক্তারের সঙ্গে কথা হয়। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার বিগ্রেডের ইউনিটের সঙ্গে ডিপোতে উদ্ধারের কাজে যোগদেন। এরপর বিস্ফোরণের পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রবিবার দুপুরে স্বজনরা জানতে পারেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ রয়েছে। পরে সোমবার গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।
ফায়ার ফাইটার সবুজ ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে সোনগাজী ফায়ার স্টেশনে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার শাহাদাত মজুমদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শাহাদাতের মা-বাবা ভেঙে পড়েছেন। পরিবারের কর্মক্ষম বড় ছেলেকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ তারা। শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ডিপোতে আসেন ও পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বলা অবস্থায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।
রবিবার দুপুরে স্বজনরা জানতে পারেন চট্টগ্রাম মেডিকেলে তার লাশ রয়েছে। রবিবার রাতে গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত শাহাদাত তিন বছর আগে একই এলাকায় বিয়ে করেন। তার আড়াই মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপুতে বিস্ফোরণ, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩
এদিকে শনিবার রাত থেকে খোঁজ নেই স্পেক্ট্রা কোম্পানির কভার্ডভ্যান চালক মোহাম্মদ ইয়াসিনের। রবিবার রাতে ইয়াসিনের গ্রামের বাড়িতে মা কোকিলা আক্তার ছেলের নাম করে ডুকরে কাঁদতে দেখা গেছে, এ সময় তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন চার বোনও।
চাচাতো ভাই মোহাম্মদ নাহিদ জানান, ডিপোতে আগুন লাগর পর ইয়াসিন বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কথা শেষ করে ফেইসবুক লাইভে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দেখান সবাইকে। এক পর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটলে তার লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২ বছর আগে