নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
ডিপোতে বিস্ফোরক ছিল না, আগুন নাশকতা কি না তদন্তে বেরিয়ে আসবে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না, তবে ডিপোতে লাগা আগুন নাশকতা কি না তা তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, ‘হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, এটা কোনো বিস্ফোরক আইটেম নয়। এটি অনুমোদিত রপ্তানি পণ্য, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রপ্তানি করছে। এই ডিপো আইএসপিএস কোড (আন্তর্জাতিক জাহাজ, বন্দর সুবিধাদি ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত কোড) অনুসরণ করেছে। যে কমপ্ল্যায়েন্সগুলো ছিল সবগুলোর মেনেছে। সেখানে অগ্নিনির্বাপক যে ব্যবস্থা থাকা দরকার, সবই ছিল। তারপরও ঘটনাটা ঘটে গেল।’
ঘটনাস্থল ঘুরে এসে মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ কার্যলয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই সব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিব: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বিপদজনক পণ্য পরিবহনের যে নীতিমালা আছে, সেটাও সেখানে মানা হয়েছে। বলা হয়েছে, কন্টেইনার ডিপোগুলোর মধ্যে বিএম কন্টেইনার ডিপোর ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে ভালো।
তিনি বলেন, আমরা পরিদর্শন করে যা দেখলাম, আগুনের যে চিত্রটা, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের যে কন্টেইনারগুলো ছিল, কিছু কন্টেইনারে আগুন ধরে গেছে, বিস্ফোরিত হয়েছে। মাঝখানে কিছু কন্টেইনারে কিন্তু কিছু হয়নি, কিছুদূর পরে গিয়ে আবার কিছু কন্টেইনারে হয়েছে। এটা খুব সন্দেহজনক। কীভাবে এতো বড় ঘটনা ঘটে গেল, বিস্ফোরণ হয়ে গেল, আগুনটা অস্বাভাবিক। একটা স্তর বাদ দিয়ে আরেকটা স্তরে আগুনটা ধরেছে। এটা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এটা কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য নয়। এখানে অন্য একটি এ ধরনের ইয়ে (অন্য কিছু) দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। যেহেতু এটা বিস্ফোরক নয় তাই তাদের এটা ডিক্লেয়ার করার কিছু নেই। ব্যাপারটা এ রকমই। আমরা যাওয়ার আগে এক ধরনের চিন্তা করেছিলাম। যাওয়ার পরে আমরা আরেক ধরনের ব্যবস্থা দেখলাম।
তাহলে বিস্ফোরণ কীভাবে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, অক্সিজেন নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সহায়তা করে, এই ধরনের কোনো একটা ঘটনা হয়তো ঘটেছে। সেজন্য এখানে বলা হচ্ছে এটা নাশকতা কি না। তাই তদন্তের আগে এই মুহূর্তে এটা বলা খুব কঠিন।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক উন্নয়নে মেরিন ক্যাডেটদের অবদান অপরিসীম: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সঙ্গে একটি গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সীতাকুণ্ডের এই আগুনের বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা যদি স্বাভাবিকভাবে বলি-দেখেন গতকালকে একটা ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। এই উদ্বোধনের সঙ্গে এই ঘটনাটা জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উদ্বোধনের যে আয়োজন এতে যে অর্থটা খরচ হবে সেটা ন্যূনতম।
‘এই অর্থ দিয়ে আগুন মোকাবিলায় হেলিকপ্টার কেনা হবে-গুজব ছড়ানো হয়েছে। মিলিয়ন ডলার এখানে ব্যয়, সেটার সঙ্গে এটা খুবই যৎসামান্য। এটা পপুলার একটি গুজব। এই যে মিলিয়ে দেয়া হলো, পাশাপাশি নাশকতার ধারণা করা হচ্ছে। এটাতে খুবই যোগসূত্র পাওয়া যায়।’
বিষয়টিকে নাশকতা ধারণা করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যেটা দেখেছি, আপনি যদি প্র্যাকটিক্যালি যান আপনারও এমনটা হতে পারে। সবকিছু তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। যেহেতু আমাদের আশঙ্কাটা এখানে এসেছে। যারা তদন্ত করছেন তারা হয়তো এই বিষয়টাও আমলে নিবেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি ও গেইটওয়ে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে সেই এগিয়ে যাওয়ায় অনেকে ঈর্ষান্বিত। সেই জায়গাগুলোতে অনেকে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেটাও একটা ব্যাপার। তদন্তের মধ্যে বেরিয়ে আসবে, যদি মালিকপক্ষ তদন্তের মধ্যে আসে, গাফিলতি আছে, ডেফেনেটলি আইনের আওতায় আসবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
২ বছর আগে