আ হ ম মুস্তাফা কামাল
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট: শিক্ষাখাতে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বৃহস্পতিবার ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল ৮১ হাজার ৪৪৯ টাকা।
এটি গত বাজেটের তুলনায় ৮ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৩-২৪ সালের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল; যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতের বিপরীতে ছিল ৪১ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বিপরীতে ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা।
জাতীয় বাজেট উন্মোচনের সময় মন্ত্রী বলেন, “আমরা শিক্ষা পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনাকে বিকেন্দ্রীকরণ করছি এবং প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়াতে একটি 'স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (এসএলআইপি)' বাস্তবায়ন করছি।”
এই পরিকল্পনার আওতায় মাঠ পর্যায়ে আর্থিক ক্ষমতার প্রতিনিধি দল পুনর্গঠন করা হয়েছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুসহ সমাজের সকল শিশুর জন্য মূলধারার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক স্তরে প্রায় ২৬ হাজার ৩৬৬টি শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। নতুন সৃষ্ট পদসহ মোট ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াও শিক্ষার মান বাড়াতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৫টি কোর ও ৩টি নন-কোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাজেটে বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণের জন্য বিদ্যমান শুল্ক দ্বিগুণ করার প্রস্তাব
এ ছাড়া ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে শিক্ষার্থীদের প্রস্তূত করতে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের জন্য ৫০ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগসহ মোট ৫৯ হাজার ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও সাউন্ড সিস্টেম দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৮০০ কর্মকর্তাকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ১ লাখেরও বেশি শিক্ষককে ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরির জন্য হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এই শিক্ষকরা ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন। ফলে শ্রেণীকক্ষের পড়াশোনা আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে এবং শিশুরা ক্লাসে আরও মনোযোগী হচ্ছে বলে জানান কামাল।
এদিকে জরুরি পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। 'দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং' শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৩৫টি জেলার ১০৪টি উপজেলার ১৫ হাজার ৪৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আধুনিক ও মডেল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৩৫১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৩৭১টি বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। সরকারি স্কুল ছাড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত ৩১৫টির মতো বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মডেল স্কুলে রূপান্তরিত করা হয়েছে।’
জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি স্নাতকোত্তর কলেজের জন্য ১৮০টি ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বেসরকারি কলেজ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত ১ হাজার ৬১০টি কলেজের মধ্যে ১ হাজার ৪৭৩টি কলেজে আইসিটি বান্ধব ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
এসইএসডিপি (মাধ্যমিক শিক্ষাখাত উন্নয়ন পরিকল্পনা) এর আওতায় সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ৬২টি নতুন স্কুলের সঙ্গে ৩৩টি মডেল মাদরাসা স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি কলেজে বিজ্ঞান শিক্ষা সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ৩৩টি ছাত্রাবাসসহ বিজ্ঞান শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য ১৭৬টি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
তথ্য প্রযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে এবং পাঠদান পদ্ধতি আধুনিকীকরণের জন্য ২০০৯ সাল থেকে নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৩৩ হাজার ২৮৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ১১ হাজার ৩০৭টি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে ৬৪ হাজার ৯২৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ১২ হাজার ল্যাব স্থাপন করা হবে।
প্রাথমিক স্তরের ২১টি পাঠ্যপুস্তকের ডিজিটাল বিষয়বস্তু এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৬টি পাঠ্যপুস্তকের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিজিটাল পাঠ্য সম্পূর্ণ এবং ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর ৬টি পাঠ্যপুস্তকের ই-লার্নিং মডিউল এবং ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর জন্য ৬টি পাঠ্যপুস্তকের ই-লার্নিং উপাদান তৈরি ও আপলোড করা হয়েছে। নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৭১০টি আইসিটি শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের শ্রেণীকক্ষের কার্যক্রমের ওপর শিক্ষকদের জন্য অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রশিক্ষণ সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে এবং উন্মুক্ত পাঠের মাধ্যমে সমস্ত শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৩-২৪: স্বাস্থ্য খাতে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ
বাজেট ২০২৩-২৪: সাংস্কৃতিক খাতে ৬৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ
১ বছর আগে
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য বাড়ানো এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা প্রধান চ্যালেঞ্জ: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য উন্নয়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা দেশের অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উন্মোচনকালে তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে, আমাদের বর্তমান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, চলতি হিসাবের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে টেকসই উত্তরণ এবং উত্তরণ-পরবর্তী বাস্তবতা মোকাবিলার কৌশলগুলো এখনই নির্ধারণ করা দরকার। বিশেষ করে শুল্ক যৌক্তিককরণ, রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ, ভর্তুকি/নগদ সহায়তা প্রত্যাহার বা বিকল্প অন্বেষণ ইত্যাদি এখন বিবেচনা করা উচিত।
তিনি উল্লেখ করেন, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় মেটাতে এবং প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের ব্যবস্থা করার জন্য জিডিপির শতাংশ হিসাবে রাজস্বের পর্যাপ্ত প্রবৃদ্ধি, সরকারি ব্যয়ের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় অর্থায়ন সহজতর করা এবং দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত।
আরও পড়ুন: শিগগিরই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উন্নতি হবে: বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীর আশাবাদ
তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা সম্পর্কে আপনাদেরকে ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য আমরা একটি কৌশল প্রণয়ন করছি।
বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে থাকে মধ্যমেয়াদী নীতি কৌশল সম্বলিত ‘মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (এমটিএমপিএস)’।
তিনি বলেন, এই নীতি বিবৃতি আমাদের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জগুলোকে বিবেচনা করে মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যগুলোকে ব্যাখা করে।
আরও পড়ুন: বাজেটে দাম বাড়ানো ও কমানো হয়েছে যেসব পণ্যের
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য তরুণ ও নারীদের প্রস্তুত করতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
১ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: শিক্ষায় বরাদ্দ মোট জিডিপির ২ শতাংশের কম বাড়বে
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৫ শতাংশ বেশি বরাদ্দের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ ৯৪ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষায় বরাদ্দ মোট প্রস্তাবিত বাজেটের ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
তবে, প্রযুক্তি ছাড়া শুধুমাত্র শিক্ষার জন্য বরাদ্দ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা হয়েছে। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ এখনও দেশের জিডিপির দুই শতাংশেরও কম।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে ১৬ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা এবং আইসিটি খাতের জন্য এক হাজার ৯১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং শিক্ষাকে উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার শিক্ষা খাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তারের কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছিল। তবে, সরকার শিক্ষা কার্যক্রমকে মহামারির নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে একাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
বাজেট ২০২২-২৩: ল্যাপটপ ও বিলাসবহুল মোটর গাড়ির দাম বাড়বে
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বাড়ানো সহ ছয়টি বড় চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে তিনি সম্পূর্ণ বাজেট উপস্থাপন করেছেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্পসমূহ নির্ধারিত সময়ে সমাপ্তি নিশ্চিত করা, স্থানীয় মূল্য সংযোজন করের সংগ্রহ বৃদ্ধি, করদাতা ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি, টাকার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে ঝুঁকিমুক্ত পর্যায়ে রাখাও প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে।
কামাল আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আগামী অর্থবছরে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে ফিরতে পারবে।
আরও পড়ুুন: বাজেট ২০২২-২৩: ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবে ৫০ লাখ পরিবার
বৃহস্পতিবার ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করার সময় তিনি সংসদে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মহামারি কাটিয়ে তারা দেশের অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে এনেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এবছরের বাজেটের অগ্রাধিকার হল-সব স্তরের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি করা, নিরবচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলার সাথে সাথে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা।
কামাল বলেন, এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমাদের খুব বাস্তববাদী হতে হবে। কারণ সঠিকভাবে এগুলোর মোকাবিলায় ব্যর্থতা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধান কৌশল হবে চাহিদা হ্রাস করে সরবরাহ বাড়ানো। তাই আমদানি নির্ভর এবং কম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ব্যয় বন্ধ বা হ্রাস করা হবে।
কামাল বলেন, উচ্চ ও মাঝারি অগ্রাধিকারের প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে কম অগ্রাধিকারের প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কমানো হবে।
তিনি বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও রাসায়নিক সারের বিক্রয়মূল্য পর্যায়ক্রমে এবং স্বল্প পরিসরে সমন্বয় করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রম এবং ভ্যাট ও আয়কর কভারেজ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর সংগ্রহ সংক্রান্ত অটোমেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হবে। বিলাসবহুল এবং কম প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার প্রতিযোগিতামূলক রাখা হবে।
আরও পড়ুুন: বাজেট ২০২২-২৩: রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা
জাতীয় বাজেট উত্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে: কামাল
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছেন, স্বপ্নের প্রকল্প পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করার সময় তিনি সংসদে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
আগামী ২৫ জুন সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে শিল্প ও বাণিজ্য সহায়ক পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে একটি পদ্মা সেতু।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উত্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
আরেকটি মেগা প্রকল্প হলো কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এটির নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে টানেলটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে বলে জানান কামাল।
এরই মধ্যে প্রথম অংশের (বিমানবন্দর-বনানী) প্রায় ৭৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
পুরো প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৪৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে, গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন নির্মাণের ৬৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এ ছাড়া বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
কামাল বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আশুলিয়া হয়ে সাভার ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর সড়কে মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, বরিশাল-ভোলা সড়কে কলাবাদর ও তেঁতুলিয়া সেতু নির্মাণ, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার মিঠামইন সেনানিবাস থেকে মরিচখালী পর্যন্ত দ্বিতল সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যমুনা নদীর তলদেশে একটি টানেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে এবং চলমান সেতু, ফ্লাইওভার এবং টানেলকে একীভূত করে আরও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং বড় সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আজ বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে: আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে