অর্থনৈতিক ডিপ্লোম্যাসি
অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকার অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন ‘দেশের উন্নতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর রোডম্যাপ আছে এবং আমরা এজন্য দুটি প্যাকেজ হাতে নিয়েছি যার প্রথমটি হচ্ছে অর্থনৈতিক ডিপ্লোম্যাসি এবং অপরটি পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মোমেন বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতি প্যাকেজের পাঁচটি উপাদান রয়েছে এবং এগুলো হলো অধিকতর বৈদেশিক বিনিয়োগ, অধিকতর বাণিজ্য ও রপ্তানি বৈচিত্র্য, দেশে ও বিদেশে মানব সম্পদের লাভজনক কর্মসংস্থান, দেশে এবং দেশের বাইরের মানুষের কাছে মানসম্পন্ন সেবা প্রদান।
তিনি আরও বলেন, বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহের সহায়তায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে বেশ কয়েকটি দেশের অগ্রাধিকারমূলক ও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে। অর্থনৈতিক কূটনীতিতে দেশের লক্ষ্য অর্জনে দেশের সকল কর্মচারী ও মিশন প্রধানদের পরামর্শ প্রদান করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের পণ্যের অবাধ প্রবাহে যেন বাধাগ্রস্ত হতে না হয় সে জন্য বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রপ্তানি বাণিজ্যের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত জিএসপি প্লাস স্কিমের রুলস অব অরিজিন-এর শর্ত পূরণে 'ডাবল ট্রান্সফরমেশন' অর্জনের জন্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিজকে পর্যায়ক্রমে শক্তিশালী করার জন্য ইতোমধ্যেই সক্রিয় রয়েছে।
দেশের সম্ভাবনাময় অভ্যন্তরীণ বাজারের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বাজার সুসংহত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজার চীন, ভারত ও আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, শিল্প, কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধি করতে সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাইটেক পার্ক তৈরি করছে।
বর্তমান সময়ে অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহ পালনের কার্যকারিতার ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এমন সময়ে অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন ইউক্রেন সংকটের কারণে কোভিড-১৯ থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কাজটি করা কঠিনতর হয়ে যাচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মন্ত্রী বলেন, উদারতার পরিচয় দিয়ে এক মিলিয়নের অধিক রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দানের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশ এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ড. মোমেন বলেন, ‘২০২৬ সালের মধ্যে আমাদের দেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিধায় অর্থনৈতিক কূটনীতি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ঠ (এসডিজি) ও রূপকল্প ২০৪১ অর্জনে আমাদের জাতীয় প্রচেষ্টায়ও এটি গুরুত্বপূর্ণ।’
পড়ুন: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার প্রতিহত করতে প্রবাসীদের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহবান
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
২ বছর আগে