পদ্মা সেতু উদ্বোধন
পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে কোনো উৎসব করছে না সরকার: তথ্যমন্ত্রী
পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে সরকার কোনো উৎসব করছে না, বরং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করছে বলে স্পষ্ট করেছে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, যেহেতু পদ্ম সেতু নির্মিত হয়েছে, তাই এটির উদ্বোধন নিয়ে সমগ্র দেশের মানুষ আজ উল্লসিত। মানুষ এটিকে শুধু একটি সেতু হিসেবে নেয়নি। এটি আমাদের সক্ষমতার প্রতীক।
সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রী এই সব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, এখানে একটি জনসভা হবে আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। বিএনপি চায় না পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। তাই এটিকে বানচাল করতে নানা পরিকল্পনা করেছিল, এর অনেকগুলো নস্যাৎ করা হয়েছে আর কিছু কিছু তারা করতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু তাদের জন্য তো একটি যন্ত্রণা, জ্বালার বিষয়। পদ্মা সেতু হোক তারা চায় নাই। তাই এটা হলে একটা জ্বালা, আর উদ্বোধন হলে তো আরও বড় জ্বালা। সে জ্বালা থেকেই কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সিলেট, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি এরই মধ্যে মধ্যাঞ্চলে এসেছে। এটি স্বাভাবিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলে যাবে। খোদা না করুক যদি ভবিষ্যতে এরকম কোনো পরিস্থিতি যদি সৃষ্টি হয় তাহলে তো আমাদের সেটা মোকাবিলা করতে পদ্মা সেতু সহায়ক হবে। এজন্যই পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিল আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু করতে পারবে না পারবে না পারবে না। আবার বলেছিল বানালে সেটি জোরাতালি দিয়ে হবে। এটিতো বিল্ডিংয়ের ছাদ না যে একবারে ঢালাই দিয়ে বানাবে। এটা ধীরে ধীরেই বানাতে হবে।
সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক দিনে এক হাজার মিলি লিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে আমাদের দলের নেতাকর্মীদেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় যখনই কোনো দূর্যোগ হয়েছে তিনি সকলের আগে ছুটে গিয়েছেন। ৯১ ঘূর্ণিঝড়ের সময় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। শুধু তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যর্থতার জন্য চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থাকা ১০-১২ টি উড়োজাহাজ নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। এগুলো বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ। এগুলোকে উড়িয়ে ঢাকায় নিয়ে আসলেই হতো।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ উসকানি দেয়নি, দিয়েছে ছাত্রদল: তথ্যমন্ত্রী
জাহাজগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে না নেয়ায় অনেকগুলো তখন রাস্তায় উঠে গিয়েছিলো। যখন খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করা হলো আমি কী ভাষা ব্যবহার করবো জানি না। তিনি সংসদে বলেছিলেন, যত মানুষ মরার কথা তত মানুষ মরে নাই।’
তিনি বলেন, আমাদের সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে আমাদের দলের একজন নেতা ছাড়া কেউ মৃত্যুবরণ করেনি। এটিই প্রমান যে আমাদের দল পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা তো পাশে দাঁড়াননি এখানে বসে বাগাম্বর করেন। ভাসন দেন।
২ বছর আগে
পদ্মা সেতু: উদ্বোধনকে ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের একদিন পর ২৬ জুন সকাল থেকে বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।
দেশের এই বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পের চূড়ান্ত রূপ দিতে প্রকৌশলী ও কর্মীরা ২১ ঘন্টা করে কাজ করছেন। এই সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার ভ্রমণ সময়কে কমিয়ে আনবে অনেকটা।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি বাংলাদেশের সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
চলছে শেষ পর্যায়ে কাজ
পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শফিকুল ইসলাম বলেন, চূড়ান্ত রূপ দিতে ছোটখাটো কিছু বিষয়ে কাজ করছেন তারা। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ৪০টি পিলারের এ্ই সেতুতে ৪০০ লাইট থাকবে যেগুলো ফাইন টিউনিং প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, আমাদের অনেক ল্যাম্পপোস্টের দিক ঠিক করতে হবে এবং আবার পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া সেতুর দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কে আরও ২০০টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ চলছে।
উদ্বোধন ও আমন্ত্রণ
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) রূপম আনোয়ার ইউএনবিকে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রায় তিন ৫০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুকে ঘিরে মাদারীপুরে উন্নয়নের ছোঁয়া
তিনি আরও জানান, যাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে তাদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আমন্ত্রণ জানানো শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘সরকারি ও বিরোধী দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য), সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, টিভি অনলাইন রেডিও সম্পাদক, সিনিয়র সাংবাদিক এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে এদিন আমন্ত্রণ জানানো হবে।
আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পিডি শফিকুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি প্রথম টোল পরিশোধ করে চার লেনের সেতু পার হবে। জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনের পর একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হবে যেখানে প্রায় ১০ লাখ লোক সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, উদ্বোধনের আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে আমন্ত্রণ, বিনোদন, যানবাহন ও পরিবহনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১৮টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য ২৬ জুন থেকে খুলে দেয়া হবে: ওবায়দুল কাদের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকালে নির্দিষ্ট যানবাহন ছাড়া কোনো প্রবেশ থাকবে না।
ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনুমতি দিলেই সেতুতে লোকজন উঠতে পারবে।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনের দিন দুপুর থেকে পদ্মা সেতু খোলা থাকবে। এ সময়ে কী করা হবে তা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে কবে থেকে যানবাহন চলাচল করতে পারবে এবং কতদিন সাধারণ মানুষকে প্রবেশাধিকার দেয়া হবে সে বিষয়ে সরকার গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে।
২ বছর আগে