বন্যার উন্নতি
পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি
যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সোমবার সকালে রেকর্ড অনুযায়ী, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ২৮ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ও কাজীপুর পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটারের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি কমছে ধীরগতিতে, বাড়ছে দুর্ভোগ
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) নাসির উদ্দিন জানান, যমুনার পানি খুব দ্রুত কমে বন্যাকবলিত এলাকার অনেক বাড়ি-ঘর থেকে পানি নেমে গেছে এবং আগামী তিন দিনের মধ্যেই বেশির ভাগ নিম্নাঞ্চল থেকেও পানি নেমে যেতে পারে। সেই সঙ্গে যমুনার পানি কমে যাওয়ায় জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও দ্রুত কমতে শুরু করেছে।
তিনি জানান, যমুনা তীরবর্তী সদর, চৌহালি, বেলকুচি, শাহজাদপুর, কাজীপুর এই পাঁচ উপজেলার ৩৮ ইউনিয়নের অর্ধ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। বাড়ি-ঘর থেকে দ্রুত পানি নেমে গিয়ে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অনেক স্থানে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দেয়ায় বন্যাদুর্গত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু
এদিকে, যমুনায় পানি কমতে থাকায় যমুনা তীরবর্তী পাঁচ উপজেলায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে ভাঙনরোধে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ নিক্ষেপ এবং বাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড নজর রাখছে।
ত্রাণ নিয়ে জেলার বানভাসিদের দাবি, সরকারের অপ্রতুল ত্রাণ সামগ্রি বেসরকারি এনজিও সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোরও তেমন তৎপরতা না থাকাও বানভাসিদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া জেলার নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের ৮৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। জেলার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বন্যার্তদের জন্য ১৮৪ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাছাড়া ২৩টি মেডিকেল টিম গঠন করে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বন্যায় জেলায় প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন, তিল, মরিচ, বাদাম, রোপা আমন, শাক-সবজি, বীজতলাসহ উঠতি ফসল পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়েছে। এবারের বন্যায় জেলার কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে রবিবার ১১টি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
কৃষকদের ক্ষতির কথা স্বীকারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, কৃষকের এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যাবে।
২ বছর আগে
সিলেটে পানি কমছে ধীরগতিতে, বাড়ছে দুর্ভোগ
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। জেলার নদ-নদীর পানি সকল পয়েন্টে ধীরগতিতে কমছে। তবে পানি কমলেও দুর্ভোগ বাড়ছে। বন্যায় সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলোতে চলছে হাহাকার। রাস্তাঘাটের বিপুল ক্ষয়ক্ষতিতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। বিভিন্ন সড়কে এখন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি নগরীতেও পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর বন্যাকবলিত প্রধান সড়কগুলো থেকে বন্যার পানি সরেছে। তবে এখনো কিছু পাড়া মহল্লায় পানি রয়ে গেছে। পানিতে বিকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
রবিবার বিকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেট এই সব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু
সিলেট বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, সিলেটের সবকটি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি ধীরগতিতে কমছে। এর মধ্যে কিছু নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করছি, অন্য নদীগুলোতেও বিপদসীমার নিচে নেমে আসবে।
জানা গেছে, নগরীর উপশহর, তেররতন, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মিরাবাজার, জামতলা, তালতলা, শেখঘাট, বেতের বাজার, ঘাসিটুলা, কুয়ারপাড়, লালাদিঘীর পাড়, মির্জাজাঙ্গাল এলাকার পানি মূল সড়ক থেকে নেমে গেছে। তবে কিছু পাড়া-মহল্লার অভ্যন্তরের সড়ক ও বাসাবাড়ির সামনে পানি এখনো জমে রয়েছে। এসব পানিতে ময়লা–আবর্জনা ভাসতে দেখা গেছে। পানিগুলোও পচে কালো রং ধারণ করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
নগরীর বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে লোকজন বাসাবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত মহানগর এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করেছিল। রবিবারও কিছু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে রবিবার ১১টি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাসে ঘরে ফেরা মানুষের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। রবিবার বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেটরি টিম (বিডব্লিউআইটি) জানিয়েছে, জুনের শেষে বা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
২ বছর আগে