কোরবানির হাট
কোরবানির হাট মাতাবে ‘সম্রাট’ ও ‘ট্রাম্প’
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে খুলনায় কোরবানির জন্য সাড়ে ২৭ মণ ওজনের সম্রাট এবং ২৬ মণের ট্রাম্পকে প্রস্তুত করা হয়েছে। শুধু সম্রাট-ট্রাম্পই নয় এই ফার্মে রয়েছে সম্রাটের ভাই নবাব, আছে ডন, বাদশা, টাইটেন, জেমস, কালুসহ বিভিন্ন বাহারি নাম আর রংয়ের ৬৫টি গরু।
খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের মধুমতি ডেইরি ফার্মে এবারের ঈদে কোরবারির জন্য ৯টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। সম্রাট আর ট্রাম্প এবারের কোরবানির পশুর হাট মাতাবে বলে মন্তব্য করেছেন ফার্মের সংশ্লিষ্টরা।
ফার্মের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইমতিয়াজ হোসেন রনি বলেন, ফার্মটি আমার চাচা শামীম শেখের। আমি নিজেসহ বেশ কয়েকজন ফার্মটি দেখাশোনা করি। কিছু কর্মচারী রয়েছে। এই খামারের শুরুতে সাড়ে ৩ থেকে ৪ বছর আগে ১৪টি গরু আনা হয়। এখন চার প্রজাতির ৬৫টি গরু রয়েছে খামারে। এই সময়ের মধ্যে আরও ছয়টি গরু বিক্রি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোরবানির হাটের জন্য প্রস্তুত খুলনার ৩২ মণের ‘কালো মানিক’
তিনি বলেন, এটি দুগ্ধ খামার। এখানে এবার কোরবানি ঈদের জন্য ৯টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে আকার-আকৃতি, গঠন, রং, স্বভাব, চেহারা সবদিক থেকে আকর্ষণীয় হচ্ছে সম্রাট। যে কারোরই পছন্দ হবে। এটির দাম ১৩ লাখ টাকা বলেছিল একজন। কিন্তু আমরা ২৫ লাখ টাকা বলেছি। আশা করছি হাটে নেয়ার পরই বিক্রি হবে। ট্রাম্পও ভালো দামে বিক্রি হবে-ইনশাআল্লাহ। দু’টি গরুই শান্ত প্রকৃতির।
ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, এরা সাধারণ খাবারই খায়। গমের ভূষি, সয়াবিনের খৈল, ধান ও ভুট্টার কুড়া খেয়ে থাকে। এর সঙ্গে দুপুরে নিজেদের ফার্মেই উৎপাদিত ঘাস খাওয়ানো হয়।
ফার্মের কর্মচারী জাফর ভূঁইয়া বলেন, এই ফার্মের শুরু থেকে এখানে কাজ করি। গরুগুলোকে সাধারণ খাবার খাওয়ানো হয়। আর দুধের গরুগুলোকে এসব খাবারের পাশাপাশি ভিটামিন ওষুধ খাওয়ানো হয় ক্যালসিয়ামের জন্য। খাবারের সঙ্গে আয়োডিনযুক্ত লবণ দেয়া হয়। এসব খাবার দুই বেলা দেই আর এক বেলা ঘাস।
আরও পড়ুন: এবার ১.২১ কোটির বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত: মন্ত্রী
ফার্মের মালিক শামীম শেখ জানান, কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য ফার্মে ৯টি গরুর মধ্যে আকর্ষণীয় হচ্ছে সম্রাট ও ট্রাম্প। এর মধ্যে সম্রাটের ওজন সাড়ে ২৭ মণ হবে। আর কালো রংয়ের ট্রাম্পের ওজন ২৬ মণ হবে। গরুগুলো ঢাকা গাবতলীর হাটে নেয়া হবে। আকর্ষণীয় এই দু’টি গরুর দাম ৩২ থেকে ৩৩ লাখ টাকা প্রত্যাশা করছি। যার মধ্যে সম্রাট ১৭ থেকে ১৮ লাখ এবং ট্রাম্প ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা। বাকি গরুগুলো বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হবে।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অরুণ কান্তি মন্ডল বলেন, বিগত দিনে কোরবানির জন্য ৮০ হাজার গরু-ছাগল বিক্রি হয়েছে। এই বছর তার চেয়ে কিছু বেশি হবে। কারণ করোনার প্রভাব না থাকার কারণে আমরা সকল উৎসবে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখছি। মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার প্রেক্ষিত আমরা মনে করি এবার কোরবানির ঈদ আনন্দময় হবে।
তিনি বলেন, এবার ৭ হাজার ৬১৪ জন খামারি ২৩ হাজার ৯১৭টি গরু কোরবানির জন্য লালন-পালন করেছে। এছাড়া মহিষ ১৭টি, ছাগল প্রায় ৯৩ হাজার এবং দুই হাজার ৩৫০টি ভেড়া রয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেড় লাখের বেশি কোরবানি পশু প্রস্তুত: জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর
তিনি বলেন, খামারির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে কোয়ালিটিও বাড়ছে। অনেকেই এখানে বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করছে। প্রাণিসম্পদে লাভ আকাশচুম্বি না হলেও লাভ অবশ্যই আছে। এই সময়ে মৌসুমী কিছু খামারিও গরু প্রস্তুত করে। বরাবরই তারা লাভ পেয়ে আসছেন। এবারও তারা লাভ পাবে। বেকার যুববকরা অনেক বিনিয়োগও করছে।
২ বছর আগে
কোরবানির হাটের জন্য প্রস্তুত খুলনার ৩২ মণের ‘কালো মানিক’
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু হিসেবে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাত ফুট উচ্চতা ও ১৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ৩২ মণ ওজনের কালো মানিক স্থানীয়দের মধ্যে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
উপজেলার আটালিয়া ইউনিয়নের রোস্তমপুর গ্রামের গরুর মালিক প্রবীর মজুমদার জানান, তিনি তার খামারে আরও তিনটি গরুর সঙ্গে কালো মানিক নামে গরুটিকে লালন ও পালন করেছেন।
বড় সাইজের গরুটিকে দেখতে প্রতিদিনই লোকজন খামারে ভিড় করছেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেড় লাখের বেশি কোরবানি পশু প্রস্তুত: জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর
ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় এনামুল গাজী ইউএনবিকে বলেন, ‘উপজেলায় কালো মানিকের চেয়ে বড় গরু আর নেই বলে অনেক খামারিদের কাছে শুনেছি। তাই নিজের চোখে দেখতে এসেছি।’
বড় আকৃতির গরুর কথা শুনে দেখার আগ্রহ হয়েছিল। তাই দেখতে এসেছি। আমি অনেক খামারির কাছে খবর নিয়েছি, উপজেলায় এত বড় গরু আর নেই।
মালিক প্রবীর মজুমদার বলেন, ‘আমার কালো মানিক খুব শান্ত স্বভাবের গরু। তার কোনো রাগ নেই। কারো দিকে তেড়েও আসে না।’
প্রবীর মজুমদার একজন প্রবাসী শ্রমিক ছিলেন। দেশে ফিরে আসার পর পাঁচ বছর আগে নিজের বাড়িতে তার গরুর খামার শুরু করেন। গত দুই বছর ধরে আরও তিনটি গরু সঙ্গে কালো মানিককে লালন ও পালন করেন। তিনি প্রতিদিন গরুটিকে প্রায় ১০ কেজি করে খাবার খাওয়ান। এর মধ্যে গমের ভুসি, ধানের কুঁড়া, ভুট্টা, শুকনো খড় ও কাঁচা ঘাস রয়েছে।
আরও পড়ুন: এবার ১.২১ কোটির বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত: মন্ত্রী
প্রবীর দাবি করেন, তিনি কালো মানিককে মোটাতাজাকরণের কোনো ওষুধ ব্যবহার করেননি তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা সুলতানা বলেন, ‘উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত কোরবানির পশু পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিক্রি এবং ভালো দাম পাওয়া নিয়ে কৃষকরা কিছুটা চিন্তিত রয়েছেন।’
২ বছর আগে