কনজারভেটিভ পার্টি
অবশেষে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়তে রাজি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবশেষে তার দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার তার কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনসনের ডাউনিং স্ট্রিট অফিসের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করে বলেছেন, শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন।
তার পদত্যাগের পর কনজারভেটিভ পার্টি একজন নতুন নেতা বাছাই করার জন্য একটি অভ্যন্তরীণ নির্বাচন করবে, যিনি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীও হবেন। গ্রীষ্মে এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে পারে।
এর আগে নৈতিকতা অবক্ষয়ের দায়ে জনসন তার মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে করা পদত্যাগের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। ৫০ জনের বেশি মন্ত্রী তার সরকার থেকে পদত্যাগের পরে সরকারের ভেতর-বাইরের সব মহল থেকে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হচ্ছিল।
তবে কনজারভেটিভ পার্টি নতুন নেতা বেছে নেয়ার সময় জনসন অফিসে থাকবেন কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বন্যার্তদের সহায়তায় ৫ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দিল যুক্তরাজ্য
এর আগে অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক পদত্যাগ করায় বরিস তার স্থলাভিষিক্ত করেন নাদিম জাহাউইকে। চাকরিতে বসানোর মাত্র ৩৬ ঘন্টা পরেই নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী নাদিম জাহাউইও বরিস জনসনকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান।
জাহাউই বলেন, জনসন জানেন ‘সঠিক (এই মুহূর্তে) কাজটি’ হলো ‘চলে যাওয়া’।এটাই দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
মঙ্গলবার নিয়োগ পাওয়া শিক্ষামন্ত্রী মিশেল ডোনেলানও বৃহস্পতিবার সকালে তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে জনসন তার পদত্যাগের আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি কয়েক ডজন মন্ত্রী তার মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করার পরেও তিনি ক্ষমতায় থাকার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
ব্রিটিশ মিডিয়া জানিয়েছে জনসনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মন্ত্রীদের একটি দল বুধবার ডাউনিং স্ট্রিটে তার অফিসে তার সঙ্গে দেখা করেন। তারা তাকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন।
কিন্তু জনসন তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন এবং মন্ত্রী মাইকেল গভকে বরখাস্ত করেন।
স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির নেতা ইয়ান ব্ল্যাকফোর্ড দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ‘তিনি (বরিস জনসন) তার ওপর রাখা বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। তাকে স্বীকার করতে হবে যে নেতৃত্ব দেয়ার নৈতিক অধিকার তার আর নেই।’
৫৮ বছর বয়সী জনসনের বিরুদ্ধে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল তিনি তার সমর্থকদের গুন্ডামি ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রক্ষা করেছিলেন। এছাড়াও তিনি মহামারির সময় সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের দ্বারা লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গকারী কর্মকাণ্ডের বিষয়েও জনসাধারণের কাছে অসৎ ছিলেন বলে কথিত আছে।
কিন্তু সম্প্রতি জনসনের বিরুদ্ধে রক্ষণশীল আইন প্রণেতা ক্রিস পিনচারের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ আমলে না নেয়ার অভিযোগ ওঠে। তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ সম্পর্কে জানা সত্বেও তিনি পিনচারকে বড় পদে বসান বলে তার বিরুদ্ধে আক্রোশ বাড়ে।
বুধবার কয়েক মিনিটের ব্যবধানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ও অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক পদত্যাগ করেন। মন্ত্রিপরিষদের এই দুই হেভিওয়েট মন্ত্রীর পদত্যাগ জনসনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। কারণ এই দুই মন্ত্রী ব্রিটেনের সাম্প্রতিক বড় দুট সংকট-দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন: আব্রামোভিচসহ ৭ রুশ নাগরিকের ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
‘আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশল’ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক বৃদ্ধি করবে: যুক্তরাজ্য
২ বছর আগে