বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী
রাঙামাটিতে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দানোৎসব
শান্তি ও মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে লাখো পূর্ণার্থীর শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উদযাপিত হলো। শুক্রবার দুপুরে রাঙামাটির রাজবন বিহারে চীবর উৎসর্গের মধ্যদিয়ে শেষ হলো ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব।
এদিন দুপুরে বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে ২৪ ঘন্টায় তৈরীকৃত চীবর রাঙামাটি মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত বনভন্তের শীর্ষ রাঙামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে চীবর উৎসর্গ করেন রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।
চীর উৎসর্গের সময় ভক্তদের সাধু,সাধু,সাধু কন্ঠধ্বনিতে রাজবন বিহারের সমগ্র আশেপাশে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
বিহার প্রাঙ্গণে আগত লাখো লাখো পুর্ণার্থীর সামনে রাঙামাটি রাজবন বিহারের প্রধান মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তের অমৃত কথা অডিও উপস্থাপন করা হয়। পরে আগত দায়ক দায়িকার উদ্দেশ্যে স্বধর্ম দেশনা দেন রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এসময় তিনি কৌশল কর্ম, সৎ চেতনা ও সৎ জীবন নিয়ে জীবনযাপন করার জন্য হিতোপোদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ১ কোটি টাকা অনুদান দিলেন প্রধানমন্ত্রী
চীবর দান উৎসবে রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্হায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল জাহাঙ্গীর আলম, রাঙামাটি পৌর মেয়র মো. আকবর হোসেন চৌধুরী, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, বিএনপির নেতা দীপন তালুকদার, রাজবন বিহারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসাসহ দেশি-বিদেশি পূর্ণার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
২ বছর আগে
রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ‘আষাঢ়ী পূর্নিমা’ উদযাপিত
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব আষাঢ়ী পূর্ণিমা পালিত হয়েছে। বুধবার সকালে আষাঢ়ী পূর্ণিমা উপলক্ষে রাঙ্গামাটির আনন্দ বিহার ও মৈত্রী বিহারসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিন সকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টশীল গ্রহণ, সমবেত প্রার্থনা, চীবরদান, গুরু ভক্তি, ছোয়াইং প্রদান (ভান্তেদের দান), মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা অনুষ্ঠান পালন করেন।
এসময় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন আনন্দ বিহারের উপাধ্যক্ষ ধর্মেশ্বর ভান্তে থেরো।
বিকালে বুদ্ধ মূর্তি স্নান, ধর্মদেশনা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শেষ হয় আষাঢ়ী পূর্ণিমার আয়োজন।
আষাঢ়ী পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি ধর্মীয় উৎসব। কারণ এ তিথিতেই গৌতম বুদ্ধ মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি লাভ, রাজ প্রাসাদ, রাজত্ব ও স্ত্রী-পুত্রের মায়া ত্যাগ করে দুঃখ থেকে মুক্তির পথ অন্বেষণে গৃহত্যাগ এবং বুদ্ধত্ব লাভের পর তাঁর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের উদ্দেশে প্রথম ধর্মচক্র দেশনা দেন (ধর্মের বাণী প্রচার করেন)। এবং তিনি সংযম পালনের ব্রত নিয়ে এই আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিনমাস বর্ষাবাস শুরু করেছিলেন।
এ আষাঢ়ী পূর্ণিমার পরে তিনমাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বর্ষাবাস শুরু করেন। এ সময় ভিক্ষুরা জরুরি কোনো কারণ ছাড়া বিহারের বাইরে রাত্রিযাপন করতে পারেন না। এছাড়া এ তিনমাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্ম বিনয় অধ্যয়ন ও ধ্যান চর্চা করে থাকেন। তিনমাস বর্ষাবাস শেষ হওয়ার পর প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত
বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু
২ বছর আগে