ভবিনফারু দ্বীপের সৈকত
ঘুরে আসুন মালদ্বীপ: অপরূপ এক দ্বীপদেশ ভ্রমণ গাইড
মন্ত্রমুগ্ধ নীল জলরাশি ও রোমাঞ্চকর সমুদ্র তলদেশে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইলে নির্দ্বিধায় ঘুরে আসুন মালদ্বীপ। ১২০০টি দ্বীপ এবং ২৬টি প্রবালদ্বীপের এই অপরূপ দ্বীপদেশটি অপার্থিব সব বিলাসিতার কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশি পর্যটকদের স্বপ্নের গন্তব্য সাগর মাঝের এই এক টুকরো স্বর্গটি। অন এরাইভাল ভিসার সুবিধায় তারা নিমেষেই মেটাতে পারেন নিজেদের সমুদ্র তৃষ্ণা। তবে এর ব্যয়বহুল পর্যটন সেই তৃষ্ণার রাশ টেনে ধরে। এরপরেও মালদ্বীপ ভ্রমণকে উদ্দেশ্য করে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে কোন এক শীতে অথবা বৃষ্টিস্নাত আগস্টে বাজেট ট্যুর দেয়া যেতেই পারে। চলুন, দেখে নেয়া যাক ওয়াটার অ্যাক্টিভিটি করতে মালদ্বীপের কোথায় কোথায় যাবেন।
মালদ্বীপের বিখ্যাত ১০টি দর্শনীয় স্থান
মালে দ্বীপ
মালদ্বীপের রাজধানী মালে দেশটির সবচেয়ে বড় ও বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর। মালদ্বীপের অধিকাংশ দর্শনীয় স্থানের সাথে এর যোগসূত্র থাকায় মালদ্বীপ ভ্রমণে বিশ্ব পরিব্রাজকদের প্রথম পছন্দ এটি। এখানে আছে প্রবাল পাথরে বানানো ওল্ড ফ্রাইডে বা হুকুরু মস্ক, মালে মাছ বাজার, ভারুনুলা রালহুগান্ধু, মালে জাতীয় যাদুঘর, মুলি আজ প্যালেস এবং সুনামি স্মৃতিস্তম্ভ।
স্নোর্কেলিং ও সার্ফিং-এর জন্য উপযুক্ত জায়গা এই দ্বীপটি। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ব্যবস্থা আছে মালে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামার। এয়ারপোর্ট থেকে মাত্র ৪ কিলো দূরত্বে ট্যাক্সি করে পৌছা যায় মালেতে। এছাড়া এয়ারপোর্টের সামনে থেকে স্পিডবোট বা ফেরীতে চেপেও যাওয়া যায় এই দ্বীপে। বাংলাদেশ থেকে বিমানে যাতায়াত সহ এই মালে ভ্রমণে একজনের খরচ হতে পারে দিন প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ১০টি প্রাকৃতিক ঝর্ণা, জলপ্রপাত কোথায়? কীভাবে যাবেন?
বারোস দ্বীপ
ভারতের সামুদ্রিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে এই বিলাসবহুল রিসোর্ট দ্বীপটি সবার ঊর্ধ্বে। হানিমুনের জন্যে বিখ্যাত এই দ্বীপের প্রধান আকর্ষণ ওয়াটার স্কাইং, উইন্ড সার্ফিং, ওয়াটার বোর্ডিং এবং ক্যানোইং।
মালে এয়ারপোর্ট থেকে ২৫ মিনিট দূরত্বের বারোসে যাবার একমাত্র মাধ্যম স্পীড বোট বা ফেরী। বিমান ভাড়া ছাড়াই এই দ্বীপ ভ্রমণ খরচ দিন প্রতি ৩৮ থেকে ৭৭ হাজার টাকা।
হুলহুমালে দ্বীপ
দ্বীপদেশ মালদ্বীপের মধ্যমণি হলো এর বৃহত্তম দ্বীপ হুলহুমালে। স্বল্প ব্যয়ের হোটেল, রেস্তোঁরা এবং রাজধানীর সন্নিকটে থাকার জন্য এই দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মালে বিমানবন্দর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হুলহুমালের সৈকতে স্থলপথেই পৌছানো যায় ১০ মিনিটে। এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে হুলহুমলে বিচ, হুলহুমলে সেন্ট্রাল পার্ক, এইচডিসি বিল্ডিং, এবং হুকুরু মিসকি।
আরও পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
বানানা রিফ
উত্তর মালে এটল-এ অবস্থিত এই রিফ বিশ্বের সেরা ডাইভিং সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম। মালদ্বীপের প্রথম আবিষ্কৃত এই ডাইভিং সাইটটি গথুগিরি নামেও পরিচিত। সমুদ্র গর্ভের তিনশ মিটার এই দীর্ঘ প্রবাল প্রাচীর সমুদ্রপৃষ্ঠে চোখ ধাঁধানো নানা রং ছড়িয়ে দেয়। তাই রাতের বানানা রিফকে কেউ এলিয়েন জগৎ বললেও তাকে দোষারোপ করা যাবে না। এখানকার মুল আকর্ষণ স্কুবা, স্নোর্কেলিং, প্রবাল প্রাচীরে জেট স্কিইং আর দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আলিমাথা দ্বীপ, বিয়াধু দ্বীপ, মান্তা পয়েন্ট অন্যতম।
মিহিরি দ্বীপ
পার্থিব জগৎ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন থাকার এক মোহনীয় অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে মিহিরি দ্বীপে। এর ৩০টি জলের ভিলার প্রত্যেকটি যে কোন নতুন দম্পতিকে পৃথিবীর কোন আদিম দ্বীপে অ্যাডাম ও ইভের আবহ দিবে। ভেজা মৌসুমে এর রেস্তোরাঁগুলোর মুখরোচক খাবার আর ডুব সাঁতার বারবার টেনে নিয়ে যেতে চাইবে মিহিরি দ্বীপে। যে কোন আগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বরে নিমেষেই হারিয়ে যাওয়া যেতে পারে এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে।
ভবিনফারু দ্বীপের সৈকত
এই দ্বীপের সৈকত মালদ্বীপের সেরা পাবলিক সৈকতগুলোর মধ্যে একটি। এখানকার জেট স্কিইং, বন্যান ট্রি ভবিনফারুর ঘরগুলো, প্যারাসেইলিং এবং স্নোর্কেলিং বছরের অধিকাংশ সময়ে ভিড়ের প্রধান কারণ। তলদেশে প্রবাল আর রঙিন মাছের মাঝখানে নিজেকে প্রকান্ড অ্যাকোয়ারিয়ামে বন্দি মনে হবে। মালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্পিডবোট এ করে ২৫ মিনিটে চলে আসা যায় এই সৈকতে।
আরও পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
২ বছর আগে