উপদেষ্টা পরিষদ
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণের প্রস্তাব অনুমোদন
পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করে একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের প্রস্তাবনা নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি জানান।
যে পাঁচ ব্যাংক একীভূত হয়ে নতুন ব্যাংক গঠিত হবে সেগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
পাশাপাশি ব্যাংক ও বীমা খাতে আমানত সুরক্ষা আইনকে যুগোপযোগী করে সংশোধনীও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
মুল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী উল্লিখিত ব্যাংকগুলোর বিশাল অংকের শ্রেণীকৃত ঋণ বা বিনিয়োগ এবং মূলধন ঘাটতি থাকায় বর্ণিত ৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টি ব্যাংককে মার্জার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারি মালিকানায় শরীয়াহ্ভিত্তিক একটি ইসলামি ব্যাংক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ বিভাগকে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক পিএলসি-এর শেয়ার মালিকানা বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় আইসিবি ইসলামী ব্যাংককে উক্ত প্রক্রিয়ার আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত এক বছরের অধিক সময় ধরে তারল্য সহায়তা প্রদান করা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার কোনও উন্নতি ঘটেনি; বরং তাদের তারল্য সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি, শ্রেণীকৃত বিনিয়োগ বা ঋণ ও অগ্রিমের হার, প্রভিশন ঘাটতি এবং তারল্য সংকট এমন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে, তাদের আমানতকারী ও অন্যান্য পাওনাদারদের প্রদেয় পাওনা পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
উল্লিখিত ৫টি ব্যাংক আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা না থাকায় আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার, ব্যাংকিংখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, আমানতকারীদের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নিমিত্ত টেকসই ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী ব্যাংকিংখাতের এ ৫টি সংকটাপন্ন ব্যাংককে অতিসত্বর রেজল্যুশন প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা আবশ্যক বলে মনে করে অর্থ বিভাগ।
প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকটি বাণিজ্যিকভাবে ও পেশাদারত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে যে, প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের ৪০ হাজার কোটি টাকার ‘অনুমোদিত মূলধনের’ বিপরীতে ‘পরিশোধিত মূলধন’ হিসেবে আনুমানিক ৩৫ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকটির মূলধন বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, বেইল ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত মূলধনে রূপান্তর করা যেতে পারে এবং অবশিষ্ট ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার মূলধন হিসেবে প্রদান করতে পারে।
প্রাথমিকভাবে ব্যাংকটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে, তবে ধীরে ধীরে এর মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাংকটি বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হবে।’
একীভূতকরণ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধানের জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহমেদের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
৫৬ দিন আগে
পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আরও পড়ুন: চার দিনের সফরে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়
খসড়া চুক্তি অনুযায়ী,বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা বিনা ভিসায় পাকিস্তানে যেতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের একই ধরনের পাসপোর্টধারীরা বিনা ভিসায় বাংলাদেশে আসতে পারবেন।
শফিকুল আলম বলেন, চুক্তিটি হবে পাঁচ বছরের জন্য। এ ধরনের চুক্তি আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে আছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
১০৫ দিন আগে
উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না: দুদক চেয়ারম্যান
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একেবারে দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। তবে তার উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, শুধু শাস্তি দিয়ে দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও সুসম্পর্কই পারে দুর্নীতি অনেকাংশে লাঘব করতে। দুদক সেবাদাতা ও গ্রহীতাদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে কাজ করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে নগরীর স্টেশন রোডে দুদকের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কয়েকটি নিউজপেপারে এসেছে এই সরকারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। আমরাও বিধিবদ্ধভাবে কাউকে ছাড় দেবো না। তবে কারো দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি শুধু বলি কোটি কোটি টাকা অমুক আত্মসাৎ করেছেন, দুর্নীতি করেছেন বললে হবে না। বলতে হবে কোথা থেকে করেছেন, কিভাবে করেছেন। এই অংশগুলো যদি আমরা প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনটি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগগুলো যদি সুনির্দিষ্ট হয় তাহলে নিয়ে আসুন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গত এক বছরে অনেক মামলা হয়েছে এবং পুরনো অনেক মামলা বিগত সময়ে ধামাচাপা ছিল, সেই মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন মামলাগুলো দেখা হচ্ছে গুরুত্ব দিয়ে।
এছাড়াও অনেক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, বিশেষ করে সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকে, সেসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বাতিল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতি কমিশনের নিজস্ব কিছু বিধিবদ্ধ আইন আছে। আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। দুর্নীতি বাংলাদেশে অনেক ধরনের আছে, কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা সরকারি লোক। টাকা পাচার, অবৈধ আয় বিষয়ে নজর রাখার চেষ্টা করে দুদক। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলছে। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে যদি শেষপর্যন্ত প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের ঝুলে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এরপর দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার আবু সাইমসহ প্রশাসনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
১১৪ দিন আগে
নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কনভেনশনে যোগদানের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
নিষ্ঠুর নির্যাতন, অমানবিক বা অপমানজনক আচরণবিরোধী জাতিসংঘের কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রটোকল (ওপি-ক্যাট)-এ বাংলাদেশের যোগদানের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এ ছাড়া, সভায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় স্থাপনের খসড়া সমঝোতা স্মারক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (সংশোধন) খসড়া অধ্যাদেশ, মালয়েশিয়ার বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট স্থাপনের প্রস্তাব, মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৫’র খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৩৩তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০০২ সালে নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রটোকলটি ঘোষিত হয়। এর মূল লক্ষ্য হলো— নির্যাতন ও নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অপমানজনক আচরণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত ও জোরদার করা।
১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী সনদে যুক্ত হয়েছিল বলে বৈঠকের পর জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক ইউনূসের নির্দেশে দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে ইসি, আশা ফখরুলের
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) স্থাপনে খসড়া সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর হচ্ছে সংস্থাটির মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রধান নীতিনির্ধারণী ও তত্ত্বাবধানকারী দপ্তর।
এ ছাড়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মালয়েশিয়ার জহুর বাহরুতে নতুন একটি বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল স্থাপনের প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভায় ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়াকে আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগের চূড়ান্ত যাচাই সাপেক্ষে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’র খসড়াও ওই সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও, ফেনী ও নোয়াখালীতে অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা বন্যা পরিস্থিতি এবং সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে বৈঠকে অবহিত করেন।
১৪৭ দিন আগে
ফেনী ও নোয়াখালীতে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা
কয়েক জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ফেনীর মুসাপুর রেগুলেটর, বামনি ক্লোজার এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করার প্রয়োজনীয়তা এবং নোয়াখালীর খাল পরিষ্কার ও ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নত করার গুরুত্ব নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত সভায় ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা তাদের মতামত তুলে ধরেন এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭ স্থানে ভাঙন, ৩৫ গ্রাম প্লাবিত
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে আজকের বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো জানায়।
সভায় জানানো হয় যে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে দুটি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, নদী তীরের সুরক্ষা এবং পানি নিয়ন্ত্রণের অবকাঠামো মেরামতের কাজ চলছে।
এছাড়া, দুটি জেলার চলমান বন্যা ও জলাবদ্ধতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপগুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
১৪৭ দিন আগে
উপদেষ্টা পরিষদে নতুন অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন
নতুন অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। রবিবার (২২ জুন) প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাজেট অনুমোদন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাজেট অনুমোদন হয়েছে। বাজেটের অঙ্ক পরিবর্তন হবে না। আমরা কোনো মেগাপ্রকল্প নিচ্ছি না। পাশাপাশি, পুরোনো অনেক প্রকল্প বাদ দিয়ে দিয়েছি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) টাকা মোটামুটি একটা বাস্তব পর্যয়ে নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘আগে বাজেট নিয়ে যা লেখালেখা হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। একটা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা ছিল, সেটা পরিবর্তন করে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
‘দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ডব্লিউটিওর একটি চুক্তি আছে যে আমরা রফতানি খাতে প্রণোদনা চারধাপে কমিয়ে আনবো। এরইমধ্যে দুইধাপ আমরা করেছি। তারা বলেছিল, জুলাই থেকে তৃতীয় ধাপ শুরু করা। কিন্তু আমরা বলেছি, জানুয়ারির আগে আমরা শুরু করবো না। প্রস্তুতির জন্য আমাদের সময় লাগবে।’
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব, সন্তুষ্ট ডিএসই-ডিবিএ ও সিপিডি
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংসদ না থাকায় এবার উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় ও সংশোধিত অর্থ অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে। অর্থ অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে নির্দিষ্টকরণ অধ্যাদেশের গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে যাবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। গত ২ জুন বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সংসদ না থাকায় তার বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়।
১৬৫ দিন আগে
গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক, সবার দৃষ্টি যমুনায়
দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বসছেন। বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য়।
এর আগে একনেক বৈঠক শেষে উপদেষ্টা পরিষদের একটি অনির্ধারিত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠকে বসবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সন্ধ্যা ৭টার দিকে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছেন দলের এক স্থায়ী কমিটির সদস্য। শুক্রবার রাতে তিনি জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও পৃথক বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিএনপির ওই নেতা জানান, রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি নিরসনের লক্ষ্যে তারা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দেশকে নতুন সংকটে ফেলবে বলে তাদের মত।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, রবিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারা তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবেন এবং দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচনের একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে অনুরোধ জানাবেন।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এক বেসরকারি টেলিভিশনে বলেন, ‘আমরা সোমবার থেকেই সময় চেয়ে আসছি, কিন্তু এখনো তা দেওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, কেবল কিছু বিতর্কিত উপদেষ্টার অপসারণ চেয়েছি। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছি। তিনি যদি রোডম্যাপ না দিয়ে পদত্যাগ করতে চান, সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত—কিন্তু আমরা পদত্যাগ চাইনি।’
বৃহস্পতিবার বিএনপি হুশিয়ারি দিয়ে জানায়, নির্বাচনের রোডম্যাপ অবিলম্বে না এলে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা পুনর্বিবেচনা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নিরপেক্ষতা ও সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে সদ্য গঠিত একটি রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ কয়েকজন বিতর্কিত উপদেষ্টাকে সরাতে হবে।
এদিকে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যে হতাশ হয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছেন।
১৯৪ দিন আগে
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি
স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ করা হবে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) `সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর গেজেট জারি হয়েছে।
এরআগে এদিন সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এ কথা জানান। গত ১৭ জানুয়ারি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫ এর গেজেট আজকে জারি হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন, বিগত সরকারের সময় যে অনাচার হতো, মানবাধিকার লঙ্ঘন হতো, মানুষকে যে দমন-নিপীড়ন করা হতো—সেটার একটা বড় প্ল্যাটফর্ম ছিল উচ্চ আদালত। চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরেও মানুষ সেখানে প্রতিকার পেতেন না।
আরও পড়ুন: ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে: আইন উপদেষ্টা
‘কারণ ছিল উচ্চ আদালতে রাজনৈতিক সরকারগুলো সম্পূর্ণভাবে দলীয় বিবেচনায়, অনেক ক্ষেত্রে অযোগ্য লোকদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিত। উচ্চ আদালতে বিচারক হিসেবে যদি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষ ও যোগ্য লোক নিয়োগ না পান, তবে ১৮ কোটি মানুষের মানবাধিকারের প্রশ্নটি অমীমাংসিত ও ঝুঁকির মধ্যে থেকে যায়।’
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে দক্ষ, অভিজ্ঞ, দল নিরপেক্ষ, প্রকৃত যোগ্য ব্যক্তিরা বিচারক নিয়োগ পাবেন—এমন একটি চাহিদা সমাজে বহু বছর যাবত ছিল। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন থেকে এই ধরনের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল।
আসিফ নজরুল বলেন, অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, এই আইনটা হয়েছে। আইনটি রচনা করার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির অফিস থেকে একটা ড্রাফট (খসড়া) পাঠানো হয়েছিল, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন থেকে একটা খসড়া পাঠানো হয়েছিল। ২০০৮ সালে এরকম একটি অধ্যাদেশ করার প্রক্রিয়া ছিল সেটার কপি—কিছু পর্যালোচনা করেছি আমরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমরা একটি পরামর্শক সভা করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি ভালো একটা আইন করার জন্য।
আধ্যাদেশে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল করার কথা বলা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সেই কাউন্সিল হবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দুজন বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারক ও এটর্নি জেনারেল—তাদেরকে নিয়ে এ কাউন্সিল গঠন করা হবে।
‘এ কাউন্সিল প্রথমে যাচাই-বাছাই করবে। তারা নিজ উদ্যোগে অনেক নাম সংগ্রহ করবেন। একই সঙ্গে যে কোনো মানুষ, যে কোনো আইনজীবী বা যে কেউ কাউকে রেফার (বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার জন্য) করে চিঠি পাঠাতে পারবেন। সেটা উন্মুক্ত থাকবে। কাউন্সিল প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করার পর ইন্টারভিউ নেবেন।’
আরও পড়ুন: বিবাহ কর বাতিল, ডকুমেন্ট সত্যায়ন এখন অনলাইনে
আসিফ নজরুল বলেন, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালতে বিচারকরা নিয়োগ পাবেন। আশা করছি, উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে আগামী তিন মাসের মধ্যে হাইকোর্টে যে পরবর্তী নিয়োগ আছে, আগের যে কোনো আমলের চেয়ে একটা বেটার নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ দিতে পারব।
জুডিশিয়াল সার্ভিস এবং আইনজীবীদের মধ্য থেকে এখন হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়। নতুন আইন অনুযায়ী দুই ক্ষেত্র থেকে নিয়োগের জন্য কোনো অনুপাত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এটি দীর্ঘদিনের টেনশন—কতজন আইনজীবী থেকে বিচারক করা হবে আর কতজন নিম্ন আদালতের বিচারক থেকে করা হবে। আমরা এটা কাউন্সিলের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমরা বলেছি যথোপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব যাতে থাকে।
৩১৭ দিন আগে
হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান, পর্যটন ও ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
এদিন সভার শুরুতে হাসান আরিফের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভায় রিজওয়ানা হাসান জানান, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের কবরের পাশে হাসান আরিফকে সমাহিত করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, আজ অনেক কথাই মনে পড়ছে। তিনি সবসময় মনে করিয়ে দিতেন- আমরা কিন্তু সমবয়সী!
তিনি বলেন, শিশুর মতো সরল ব্যবহার ছিল তার। যত রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে, যেখানে কোনো কোন্দল দেখেছেন, তিনি হাজির হয়েছেন তা সমাধানে। এক অপূর্ব লোক আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপদেষ্টা হাসান আরিফ ছিলেন সদা হাস্যময় একজন বিরল ব্যক্তিত্ব।
পাট, বস্ত্র ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে হাসান আরিফের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। অতীতের কর্মময় জীবনের আমাদের দুজনের অনেক স্মৃতি রয়েছে।
সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, এখানে কাজ করতে এসে উনার সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। উনি আমাদের জন্য এক ইতিবাচক প্রেরণা ছিলেন।
মৎস্য ও পশু সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, আজকে আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আমরা হাসান আরিফকে মিস করছি। উনাকে ছাড়া আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: হাসান আরিফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আইনজীবী হিসেবে হাসান আরিফের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি হিসেবেও কাজ করেছেন হাসান আরিফ।
আইন ও বিচার এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, একজন কর্মনিষ্ঠ ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন হাসান আরিফ। তিনি সব নথি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, হাসান আরিফ কখনও কোনো কাজ কম গুরুত্বের সঙ্গে নিতেন না।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, হাসান আরিফ অমায়িক মানুষ ছিলেন। যেকোনো সমস্যা উনার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা যেত।
জ্বালানি ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের সমাজে বিভেদ অনেক বেশি। এ বিভেদ জোড়া লাগানোর মানুষ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। সর্বমহলে উনার গ্রহণযোগ্যতা ছিল।
১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সইয়ের সময় হাসান আরিফের ভূমিকা স্মরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, উনি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের নিয়ে অনেক ভাবতেন। তার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হলো পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের।
স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে এসে উনাকে চিনেছি। উনাকে সবসময় শিক্ষকের মতো পাশে পেয়েছি।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, উনার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একবারও আমাদের বয়সের পার্থক্য বুঝতে পারিনি। উনি সবার সঙ্গে আন্তরিকভাবে মিশতেন।
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিকভাবে কাজ করতে দেখেছি উনাকে। এবারও উনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, বেসামরিক বিমান সচিব নাসরীন জাহান, ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: হাসান আরিফের মৃত্যুতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার শোক
৩৪৭ দিন আগে
উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ছে, শপথ নিচ্ছেন আরও ৫ জন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের আকার আরও বাড়ছে। উপদেষ্টা পরিষদে নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন আরও পাঁচজন। রবিববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তাদের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আজ সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন উপদেষ্টাদের শপথ পড়াবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: উপদেষ্টা পরিষদে যোগ হচ্ছে নতুন মুখ
সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিবহন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর বলেন, নতুন উপদেষ্টাদের গাড়ি প্রস্তুত করার নির্দেশনা পেয়ে আমরা পাঁচটি গাড়ি প্রস্তুত রাখছি।
তবে নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে কারা রয়েছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ২১ জন। নতুন করে আরও পাঁচজন যুক্ত হলে সংখ্যা বেড়ে হবে ২৬ জন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ
৩৮৯ দিন আগে