অর্থনৈতিক পরিবর্তন
ক্ষমতায় গেলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনবে বিএনপি: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে, সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও হবে।
তিনি বলেন, ‘জনগণের সমর্থনের মধ্য দিয়ে বিএনপি যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়—তাহলে নিঃসন্দেহে একদিকে যেমন রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে এবং বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) মাজারে দোয়া ও পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, কাজী আবুল বাশার, সাইফুল আলম নীরব, মহানগর বিএনপির উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের তানভীর আহমেদ রবিনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পুস্পস্তবক অর্পনের পরে জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন নেতারা।
আরও পড়ুন: ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে: মির্জা ফখরুল
সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংস্কার কমিশনে যে প্রস্তাবগুলো নিয়ে এসেছিল, বিএনপি তা সমাধানে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। এছাড়া, ৩১ দফা কর্মসূচি প্রবর্তন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার ব্যবস্থা করেছে বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এখন যে চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে রয়েছে সেটি হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে কথা আছে— তা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য বারবার চেষ্টা হয়েছে উল্লেখ করে করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে বারবার। বিএনপিকে ধ্বংস করে ফেলার জন্য বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো প্রতিবারই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শ নিয়ে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে এবং খালেদা জিয়ার আদর্শ নিয়ে ফিরে এসেছে।’
তিনি দাবি করেন, গত ১৫ বছরে বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য দলের প্রায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ১ হাজার ৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। বিএনপিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে দেশে একটি নির্মম ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা সেই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট থেকে মুক্তি পেয়েছি।
৯৪ দিন আগে
‘বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষা নিতে পারে পাকিস্তানের নেতৃত্ব’
কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে বাংলাদেশ যা দেশটির নেতৃত্বের অবদান বলা যেতে পারে। দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এমন কথা বলা হয়েছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, পাকিস্তানের নেতৃত্ব বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে প্রধান বিষয় হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন যা প্রতিরক্ষা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
সাহেবজাদা রিয়াজ নূর তার প্রবন্ধে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন এবং একে ‘গর্ব ও সক্ষমতার প্রতীক’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
‘টেকওয়েস ফ্রম বাংলাদেশ’স লিডারশিপ’ শিরোনামের প্রবন্ধটিতে বলা হয়, ১৯৯২ সালের প্রথম দিকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিষয় ও পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতির ভারসাম্যের কাজটি গ্রহণ করেছিলেন।
শেখ হাসিনা এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন যাদের অর্থনৈতিক সাফল্য চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক উন্নয়ন, রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাণিজ্য উদারীকরণ ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা জাতিসংঘ মহাসচিবের
এক সম্মেলনে একজন অর্থনীতিবিদ তাকে বাণিজ্য উদারীকরণের সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করতে শুরু করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাকে বাণিজ্য উদারীকরণের বিষয়ে আমাকে বোঝাতে হবে না। আমি যখন যুগোস্লাভিয়ান সীমান্তের ইতালীয় শহর ট্রিয়েস্টে আমার পদার্থবিদ স্বামীর সঙ্গে থাকতাম, আমি দেখেছি সীমান্ত সপ্তাহে তিনবার খোলা হচ্ছে এবং দু’পাশ থেকে মানুষ যাতায়াত করছে, পণ্য ক্রয় করছে এবং ফিরে যাচ্ছে।’
আর এতে প্রমাণিত হয় শেখ হাসিনা অন্যান্য বিষয়, যে সবের প্রতি রাজনীতিকরা আকৃষ্ট হয়, থেকে অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়েছেন; রিয়াজ নূর তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ১৯৭১ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জবাবদিহিমূলক প্রচারণা ও সামরিক শাসনে প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে সেনাবাহিনী পেছনের আসন নেয়। বাংলাদেশে বেসামরিক সরকার কম ঘন ঘন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, শাসনের সামান্য অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী তীক্ষ্ণতা ও প্রত্যয় ছিল অর্থনৈতিক অগ্রগতিই দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের একমাত্র উপায়।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। ১৯৭০ সালে দেশটি পাকিস্তানের তুলনায় ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল কিন্তু বর্তমানে এটি ৪৫ শতাংশ ধনী।
প্রবন্ধ অনুযায়ী, ১৯৭০ সালে দেশে ১০ মিলিয়ন বেশি মানুষ ছিল। তবে বর্তমানে পাকিস্তানের ২৩০ মিলিয়নের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭০ মিলিয়ন।
আরও পড়ুন: কসমস-বিআইপিএসএস গোলটেবিল: ইউক্রেন সংঘাতের বিরূপ প্রভাব কাটাতে বাংলাদেশকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে
২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যেখানে পাকিস্তানের রপ্তানি আয় ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পাকিস্তানে মাথাপিছু আয় এক হাজার ৫৪৩ ডলারের তুলনায় বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ২২৭ ডলার।
২০২২ সালে পাকিস্তানের ৩৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশ এবং পাকিস্তানের পূর্ব ১২ থেকে ১৫ শতাংশ যা বর্তমানে বেড়ে ২১ শতাংশ এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে তা আরও বাড়তে পারে।
এছাড়া পাকিস্তানি রুপির তুলনায় বাংলাদেশি টাকা অনেক শক্তিশালী।
এতে বলা হয়, উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনীতিতে নারীর উচ্চ অংশগ্রহণসহ বাংলাদেশে ভালো সাক্ষরতার হার রয়েছে।
প্রবন্ধ অনুযায়ী, পাকিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যক্তিগত লাভের প্রতি আগ্রহী।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বারবার কারসাজি শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক ও অ-বংশবাদী দলগুলোর প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন, শক্তিশালী বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলেও প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।
১২১৯ দিন আগে