জেলিফিশ
কক্সবাজার সৈকতে প্রতিদিন ভেসে আসছে অসংখ্য জেলিফিশ
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক দিন ধরে অসংখ্য মরা জেলিফিশ ভেসে আসছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার থেকে জোয়ারের পানিতে মরা জেলিফিশ ভেসে আসছে। রবিবার সকালে সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত জেলিফিশ বালিয়াড়িতে দেখা যায়। এর মধ্যে কিছু জেলিফিশ পানিতে ভাসমান অবস্থায় দেখা যায়।
সৈকতের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, শাহপরীর দ্বীপ, বাহারছড়া সৈকতে শত শত জেলিফিশ ভেসে আসছে।
হিমছড়ি এলাকার জেলে আব্দুর শুক্কুর জানান, ২-৩টা জেলিফিশ নিয়মিত ভেসে আসে এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে একসাথে ৩০-৪০টি কখনো আসেনি। সৈকতে এত বেশি জেলিফিশ তাই সাবধানে পা ফেলতে হচ্ছে। কারণ জেলিফিশ গায়ে লাগলে ক্ষত সৃষ্টি হয়।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, কিছু জেলিফিশ কুকুর খেয়ে ফেলছে, কিছু বালুর নিচে চাপা পড়ছে। অনেক জেলিফিশ বালুচরে পড়ে আছে। সাগরে কোন সংকট সৃষ্টি হয়েছে কি না তা জানা দরকার। হঠাৎ এত বিপুলসংখ্যক জেলিফিশ ভেসে আসার কারণ অনুসন্ধান জরুরি।
শুক্রবার সৈকত থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে কক্সবাজার সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানের বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফিক ডিভিশনের প্রধান আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ৬৫ দিন মাছ আহরণ বন্ধ থাকার পর গত ২৩ জুলাই থেকে মাছ ধরার সব ট্রলার সাগরে নেমেছে। অন্যান্য মাছের মতো বঙ্গোপসাগরে জেলিফিশেরও প্রজনন বেড়েছে। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জেলিফিশগুলো জেলেদের জালে আটকে পড়ে মারা গেছে।
তিনি বলেন, এখন জোয়ারের পানিতে ভেসে আসছে, তবে বিপুলসংখ্যক জেলিফিশ মৃত্যুর পেছনে সমুদ্রদূষণ কিংবা অন্য কোনো কারণ আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রাণঘাতী না হলেও সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা মরা জেলিফিশের সংস্পর্শে গেলে মানুষের শরীরে চুলকানিসহ নানা সমস্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ।
নির্দিষ্ট সময়ের পর এসব জেলিফিশ জোয়ার-ভাটায় মিলিয়ে যায় বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, কোনো ট্রলারের জালে জেলিফিশ ধরা পড়ার খবর পাওয়া যায়নি।
পড়ুন: অবৈধ স্থাপনা: কক্সবাজারের ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এলো জীবিত ডলফিন
২ বছর আগে
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শতাধিক মৃত জেলিফিশ
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের বিভিন্ন পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকালে শতাধিক মৃত জেলিফিশ ভেসে এসেছে।
লাবণী, সুগন্ধা, সায়মনবিচ ও দরিয়া নগর পয়েন্টসহ হিমছড়ি পর্যন্ত দীর্ঘ ৫০ কিলোমিটারের একাধিক পয়েন্টে ছোট-বড় প্রায় শতাধিক মৃত জেলিফিশ জোয়ারের পানিতে ভেসে এসে বালুতে আটকে আছে। তবে এগুলো কি কারণে মারা যাচ্ছে এর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছেন না।
এবিষয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবু সাইয়েদ মো.শরীফ বলেন, ‘জেলিফিশ সাধারণত শীতকালে মারা যায় এবং মৃত অবস্থায় সাগর উপকূলে ভেসে আসে। বেশ কিছুদিন ধরে আমরা সাগরে ভেসে আসা জেলিফিশ গুলো পরীক্ষা করে দেখেছি, ভেসে আসা এসব জেলিফিশ জেলেদের জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। যেহেতু, এতদিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। এখন মাছ ধরা শুরু হওয়ায় জেলেদের জালে আটকা পড়ছে এসব জেলিফিশ। এছাড়াও জেলিফিশ যেহেতু কম সাঁতার কাটতে জানে, সেহেতু জোয়ারের পানিতে ভেসে এসে সাগর পাড়ে বালুচরে আটকে মারা যাচ্ছে। সাগরে পরিবেশ বিপর্যয়ের মত কিছুই হয়নি।’
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান জেলেদের বলেন, এই সময়ে মাছগুলো মরার কোন সিজন নয়। হয়তোবা জেলিফিশ উপকূলের কাছাকাছি এসে জেলেদের জালে আটকা পড়েছে। পরে জেলেরা মাছগুলো ফেলে দেয়ায় মরা মাছ সৈকতের বেলাভূমিতে আসতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে, মৃত জেলিফিশের দুর্গন্ধের কারণে আশেপাশে হাঁটা-চলা করতে পারছেন না পর্যটকেরা। এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে গোটা সৈকতে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় জেলেদের কাছে জেলিফিশ সাগরের ‘লোনা’ হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন: আবারও কক্সবাজারের সৈকতে বিশাল মৃত তিমি
কুয়াকাটা সৈকতে ফের ভেসে এলো মৃত ডলফিন
২ বছর আগে