বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব
বঙ্গমাতার নামে পাঠাগার স্থাপন অনেক আত্মতৃপ্তির: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের খুব বেশি পুঁথিগত বিদ্যা ছিলনা, কিন্তু তিনি ছিলেন অসীম জ্ঞানের অধিকারী। তার নামে পাঠাগার স্থাপন আমাদের জন্য অনেক আত্মতৃপ্তির ব্যাপার।
শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকা রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পাঠাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তার সংক্ষিপ্ত জীবনের প্রায় ১৩ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি যখন কারাগারে বন্দি থাকতেন, তখন বঙ্গমাতা তার অনুভূতিগুলো লিখে রাখার জন্য তাকে কাগজ-কলম দিয়ে আসতেন। বঙ্গবন্ধুর লেখা সেই অনুভূতিগুলো তিনটি বই আকারে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
এই মহিয়সী নারীর বুদ্ধিমত্তার কারণে-ই এসব বই পড়ে বতর্মান প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর চিন্তাচেতনা এবং জাতির সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বঙ্গমাতা পাঠাগার শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয় মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, সব বয়সী মানুষের জন্য এই পাঠাগারটি উন্মুক্ত। সবাই এখানে এসে বই পড়তে পারবে।
এই পাঠাগারটি বুদ্ধিবৃত্তিক আড্ডার স্থল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এলাকার মানুষকে পাঠাগারে আসার জন্য আকৃষ্ট করতে শিক্ষকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ১০ জন মানুষকেও যদি আকৃষ্ট করতে পারেন তাহলে এই পাঠাগার স্থাপন সার্থক হবে। যদিও স্বপ্ন আরও অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গমাতার ৯৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত
নিরক্ষরদের অক্ষরজ্ঞান দেওয়া ছাড়াও এই পাঠাগার নিয়ে অনেক পরিকল্পনা রয়েছে বলে এ সময় তিনি জানান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলার বই পড়ার অভ্যাস বড় হলে সফলতার অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করে।
শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য পাঠাগারে কবিতা পাঠ ও গল্প পাঠের আসর আয়োজনেরও পরামর্শ দেন তিনি।
১৩৫টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু করা পাঠাগারটিতে পর্যায়ক্রমে আরও বই দেয়া হবে জানিয়ে তিনি পাঠাগারটিকে বই দিয়ে আরও সমৃদ্ধ করতে এলাকার মানুষকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম মুকুট, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ এফ এম হাসান।
অন্যান্যের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা ১০জন কৃতি শিক্ষার্থীর হাতে বঙ্গবন্ধুর লেখা কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই দুটি উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বাঘা উপজেলায় মোট ৯টি পাঠাগার স্থাপন করার কথা রয়েছে। এ নিয়ে ৬টি পাঠাগারের উদ্বোধন করা হলো। বাকি তিনটির কাজ চলমান রয়েছে, খুব শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানা যায়।
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতার ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
সিউলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত
১ বছর আগে
বঙ্গবন্ধু সৌভাগ্যবান যে তিনি বঙ্গমাতাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেয়েছিলেন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সৌভাগ্যবান, যে তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে তার জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন। যিনি তাকে দেশের স্বাধীনতা ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য অপরিসীম শক্তি জুগিয়েছিলেন।
সোমবার বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা আমার বাবার জন্য সৌভাগ্যের বিষয় যে, তিনি আমার মাকে তার পাশে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন।’
এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ বিজেতার হাতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতু ন নেছা মুজিব পদক-২০২২ বিতরণ করেন।
শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ও বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি রোডের ৩২ নম্বর বাসভবনে তার বাবা-মাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করা হয়েছিল।
তাদের ছেলেকে (বঙ্গবন্ধু) ছোট বেলা থেকেই দেশের জন্য কাজ করার স্বাধীনতা দেয়ার জন্য তার দাদা এবং দাদীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, তার দাদা-দাদি কখনোই তাদের ছেলের কাছে কিছু দাবি করেননি।
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতার আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিন: শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ‘আমার বাবার পক্ষে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে পুরোপুরি নিবেদিত হওয়া সহজ ছিল, কারণ তিনি তাঁর পাশে এমন অসাধারণ জীবনসঙ্গী ও পিতামাতা পেয়েছিলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, মায়ের মতো জীবনসঙ্গী না পেলে বঙ্গবন্ধুর জন্য দেশের জন্য কাজ করা এবং রাজনীতিতে পূর্ণ মনোযোগ দেয়া খুবই কঠিন হতো।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘...যদি তিনি (বঙ্গমাতা) তার স্বামীকে বিভিন্ন দাবির জন্য সব সময় চাপ দিতেন, তাহলে আমার বাবার জন্য এটা (রাজনীতিতে মনোযোগ দেয়া) কঠিন কাজ হতো।’
তিনি বলেন, তার মা কখনোই তার স্বামীর কাছ থেকে কিছু পাওয়ার জন্য জোরাজুরি করেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মায়ের যে কোনও সমস্যাকে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করার এবং কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার অস্বাভাবিক মানসিক শক্তি ছিল।
তিনি আরও বলেন, তার মা তাদেরকেও সেভাবেই বড় করেছেন এবং তার সন্তানদের সাহসের সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিখিয়েছেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তার মা যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ও পরে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, যে দেশ স্বাধীন হবে এবং আমার মায়ের এই প্রত্যয় আমার বাবার জন্য খুব সহায়ক ছিল।’
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক পেলেন ৫ বিশিষ্ট নারী
তিনি বলেন, তার মা শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৫ আগস্ট, তিনি তার জন্য জীবন ভিক্ষা করেননি। বরং তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন।’
শেখ হাসিনা দেশের নারীদেরকে বঙ্গমাতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হতে বলেন। যা আমাদের শিক্ষা দেয়, আকাঙ্ক্ষা ও ভোগ-বিলাসই কারও জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়।
তিনি বলেন, আমি দেশের নারীদের ত্যাগের চেতনা ধারণ করে জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানাব।
বঙ্গমাতার জীবন ও আত্মত্যাগের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে সৈয়দা জেবুন্নেসা হক বলেন, এই সম্মান পেয়ে তিনি গভীরভাবে আলোড়িত।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে সারাদেশের ২৫০০ অস্বচ্ছল নারীর মাঝে ২০০০ টাকা করে বিতরণ করেন।
এর মধ্যে ১৩ লাখ টাকা বন্যা কবলিত সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে দুস্থ মহিলাদের মধ্যে প্রায় চার হাজার ৫০০টি সুইং মেশিন বিতরণ করেন।
তিনি ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা: আমার মা’- শিরোনামের একটি বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন।
শেখ হাসিনা রাজধানীতে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের নামে একটি মহিলা হোস্টেলও খোলেন।
আরও পড়ুন: দলমত নির্বিশেষে আমি প্রতিটি নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক পেলেন ৫ বিশিষ্ট নারী
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য সোমবার পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২২ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদকপ্রাপ্তরা হলেন-রাজনীতিতে সৈয়দা জেবুন্নেসা হক (সিলেট), অর্থনীতিতে সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ (কুমিল্লা), শিক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমাদ, সমাজসেবায় আছিয়া আলম (কিশোরগঞ্জ) এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গোপালগঞ্জ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য (মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার)।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা পুরস্কার তুলে দেন।
আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর মা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু সেনা সদস্যের নির্মম হামলায় তিনি বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে শাহাদাত বরণ করেন।
পড়ুন: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক পাচ্ছেন ৫ নারী
বঙ্গমাতার আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিন: শেখ হাসিনা
২ বছর আগে