ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী
‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো স্বাধীনতা হয়ে গিয়েছিলো’
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো স্বাধীনতা হয়ে গিয়েছিলো। কেননা, তখন থেকেই সারাদেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছিলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অসহযোগ আন্দোলন গোটা বিশ্বের জন্য একটা দৃষ্টান্ত যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উপেক্ষা বা দমনের চেষ্টা করলে সেটা ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়।
সোমবার ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র: ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ এবং একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম’- শীর্ষক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের ঘটনাবলী পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বিধায় সকল বিষয় ও সময়ের সমন্বয়ে ধারাবাহিক বিশ্লেষণ একান্ত প্রয়োজন।
ইতিহাস বিকৃতি রোধের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দেন ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) আয়োজিত এই কনফারেন্সে ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মকথা’- শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের রচয়িতা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও বিলিয়ার চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধের ওপর সুদীর্ঘ আলোচনার এক পর্যায়ে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম দাবি জানান, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্রকে বাংলাদেশের ‘জন্ম সনদ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং ১০ই এপ্রিলকে ‘রিপাবলিক ডে’ ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিলিয়াকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেন।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম কর্তৃক রচিত ও উপস্থাপিত প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যা সকলের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে।
বিমসটেক এর প্রাক্তন উপদেষ্টা, বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সের স্বাগত বক্তা, বিলিয়ার অনারারি সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, গত শতাব্দীতে বাংলাদেশই একমাত্র রাষ্ট্র, যেটা সফলভাবে ইউনিলেটারাল ডেকলারেশন অব ইন্ডিপরন্ডেন্স (ইউডিআই) এর চর্চা করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, আইনগতভাবে জনগণই হচ্ছে বাংলাদেশের মালিক পক্ষ। অতএব, আর দেরি না করে দৈনন্দিন জীবনে নিজেদের মালিকানা প্রয়োগ করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন স্বাগত বক্তা।
১ বছর আগে
‘বৈচিত্র্যময় জ্বালানি খাত সময়ের দাবি'
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী একটি বৈচিত্র্যময় জ্বালানি খাত গড়ে তোলার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানের জন্য সৃজনশীল সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।’
মঙ্গলবার জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আয়োজিত 'বৈচিত্র্যময় শক্তি, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ' -শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা সেচ পাম্পে ডিজেলের পরিবর্তে সৌর শক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সৌর সেচ পাম্প চালু করতে পারি, তবে এটি অর্ধ মিলিয়ন মেট্রিক টন ডিজেল সাশ্রয় করতে পারে।’
সরকারের গ্যাস আমদানি নীতির পক্ষে ড. চৌধুরী বলেন, এটি বহুমুখী জ্বালানি-মিশ্রণ নীতির অংশ হিসেবে চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত যশোরের সবজির বাজার
তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয় যে দেশে গত ৫-১০ বছরে কোনো খনন হয়নি। বরং, গত পাঁচ বছরে ৩৫টি কূপ খনন করা হয়েছে, যার মানে বছরে গড়ে সাতটি কূপ খনন করা হয়েছে।’
সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম ওয়াসেকা আয়েশা খানম, বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সচিব মো. (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান।
অনুষ্ঠানে ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া পৃথক দুটি উপস্থাপনা করেন।
তার পক্ষে নসরুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট একটি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র কিনে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আজ অবধি চুক্তির সুবিধা পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, জ্বালানি খাতে সিদ্ধান্ত নেয়ার সাহস দেখিয়ে তার (বঙ্গবন্ধুর) পথ অনুসরণ করতে হবে।
তিনি সকলকে ঐক্য ও ধৈর্যের মাধ্যমে জ্বালানি খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আহ্বান জানান।
বেগম ওয়াসেকা আয়েশা খানম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানে উপযুক্ত প্রযুক্তি ও মৌলিক গবেষণা কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
অন্যদিকে হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার পরিবহন খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার উৎসাহিত করতে বৈদ্যুতিক যানবাহন নীতি প্রণয়ন করেছে। ‘নবায়নযোগ্য বিকল্প হিসেবে অফশোর বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মডুলার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথাও ভাবা হচ্ছে।
নাজমুল আহসান বলেন, পেট্রোবাংলা আগামী কয়েক বছরে ৪৬টি কূপ খননের একটি পদক্ষেপ শুরু করেছে, ‘যার ফলে জাতীয় গ্রিডে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাবে’।
এবিএম আজাদ বলেন, বিপিসি একটি সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যা গভীর সমুদ্র থেকে চট্টগ্রামের জ্বালানি শোধনাগারে পেট্রোলিয়াম পরিবহনে বছরে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করবে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে নীলক্ষেতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
২ বছর আগে