পাটের উৎপাদন
জিনোম সেন্টারকে কাজে লাগিয়ে পাটের উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, সরকারের পাটবান্ধব নীতির কল্যাণে বিগত ১০ বছরে পাটের উৎপাদন বেড়েছে ৩৩ লাখ বেল।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যেখানে ৫১ লাখ বেল পাট উৎপাদন হতো, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে পাট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮৪ লাখ বেল। এর মধ্যে প্রায় ৪৩ লাখ বেল পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: মজুতের অভিযোগ পেলে গ্রেপ্তার করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাট গবেষণায় জিনোম সেন্টারের সাফল্য ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য ২০০৯ সালে পাটের জিনোম সিকুয়েন্সিং এর কার্যক্রম শুরু করেন এবং জিনোম সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। এর ফলে ২০১০ সালে বিশ্বে সর্বপ্রথম পাটের জীবন রহস্য উন্মোচন হয়।
তিনি বলেন, জীবন রহস্য উন্মোচনের ফলে দেশে চাষ উপযোগী উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর দেশের মাটিও পাট চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কাজেই পাটের উৎপাদন বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে।
বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, পাটের উৎপাদন আরও বাড়াতে উচ্চ ফলনশীল জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। এলক্ষ্যে গবেষণায় আরও মনোযোগী হতে হবে এবং জিনোম সিকুয়েন্সিং ল্যাবের পুরোপুরি ব্যবহারে আপনাদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: আমাদের এখন লক্ষ্য ডালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া: কৃষিমন্ত্রী
পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কাজ চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। চাহিদার সিংহভাগ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। পাটের আঁশের বহুমুখী ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে জিওটেক্সটাইলের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার। শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বজুড়ে নানা কাজে ‘মেটাল নেটিং’ বা পলিমার থেকে তৈরি সিনথেটিক জিওটেক্সটাইলের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ও উৎকৃষ্ট জুট জিওটেক্সটাইলের কদর বাড়ছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে পাটকাঠির কালো ছাই বর্তমানে চীন, তাইওয়ান, জাপান, হংকং ও ব্রাজিলে রপ্তানি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের বৈঠক
১০ মাস আগে
পাটের দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
পাটের রাজধানী ফদিরপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে সোনালী আশ খ্যাত পাট। সংসারের দৈনন্দিন খরচ মেটাতে উৎপাদিত এই পণ্য বাজারে এনে কাঙ্খিত দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা।
জেলার সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালমারীসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি হাটেই পাট উঠতে শুরু করেছে। তবে এবার সময় মতো পাট জাগের পানি না পাওয়ায় অধিক মূল্য দিয়ে ডিজেল চালিত সেলো মেশিন দিয়ে ভূগর্ভস্থল থেকে পানি তুলে জাগ দিতে হয়েছে। এতে চাষিদের খরচ বেড়েছে। অথচ পাটের এই ভরা মৌসুমে উৎপাদন খরচই তুলতে পারছে না তারা।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সাড়ে ১০ লাখ বেল পাট উৎপাদন, দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
এদিকে, পাটের বাজার হিসেবে জেলায় প্রসিদ্ধ হাট কানাইপুর। সপ্তাহে শুক্র ও মঙ্গলবার এখানে বাজার বসে। তাই প্রান্তিক চাষিরা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তাদের উৎপাদিত পাট নিয়ে আসে এখানে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই বাজারে পাট উৎপাদন মৌসুমে প্রতি হাটে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার মণ পাট কেনা বেচা হয়। বর্তমানে কানাইপুর হাটে পাটের দর রয়েছে ২২শ থেকে ২৮শ টাকা। তবে দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা।
২ বছর আগে