মনোহরদী
দাওয়াত দিয়ে বাড়িতে এনে বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যা!
নরসিংদীর মনোহরদীতে বন্ধুকে দাওয়াত দিয়ে বাড়িতে এনে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। রবিবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার গোতাশিয়া ইউনিয়নের নামা গোতাশিয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত বন্ধুকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
নিহত আবুল কালাম আজাদ (৩৫) ওই ইউনিয়নের ঠেকেরকান্দা এলাকার আবদুস ছাত্তারের ছেলে। আর অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন (৩৮) একই ইউনিয়নের নামা গোতাশিয়া এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তারা দুজনই পেশায় রংমিস্ত্রি। প্রায় পাঁচ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করতেন তারা। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে যুবক হত্যা: মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুরে দাওয়াতের কথা বলে আবুল কালামকে বাড়িতে ডেকে নেন বিল্লাল হোসেন। দুপুরের খাওয়ার পর তারা বিশ্রাম নেয়ার জন্য পাশের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন একটি বাঁশঝাড়ে যান। সেখানে প্লাস্টিকের একটি পাটি বিছিয়ে তারা দুজন বসেছিলেন। পরে বিকালের দিকে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিল্লাল ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ি থেকে একটি ধারালো দা নিয়ে এসে আবুল কালামের গলায় কয়েকটি কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই কালামের মৃত্যু হয়।
এ সময় পালিয়ে না গিয়ে ঘটনাস্থলেই বসে থাকে বিল্লাল। পরে স্থানীয় লোকজন এসে বিল্লালকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়।
স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই ) হারুন অর রশিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় আবুলের গলায় একাধিক কোপের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। পরে বিল্লাল পুলিশের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ দেন। এ সময় তাঁর দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়।
সেখানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর রাতে বিল্লালকে থানায় নেয়া হয়।
এসআই হারুন অর রশিদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁদের দুজনের মধ্যে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ কারণে তিনি কালামের প্রতি বিরক্ত ছিলেন। এ ক্ষোভ থেকে তাকে ডেকে এনে হত্যা করেন। তবে বিল্লালের দেয়া তথ্য সত্য কি না, সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তিনি জানান।
নিহত আবুল কালামের মা মার্জিয়া বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজের সূত্রে বিল্লাল ও কালামের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। বিল্লাল আমাকে মা বলে ডাকত। নিয়মিত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। ঘটনার দিন তারা কাজে যায়নি। দুপুরে আমার ছেলেকে ফোন দিয়ে ডেকে নেয় বিল্লাল। বিকালে জানতে পারি, বিল্লাল আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।
আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত বিল্লাল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। প্রকৃত রহস্য জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:পাবনায় বিরোধের জেরে সাবেক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন
২ বছর আগে