অপেক্ষা
সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আরও ৩ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সরকারের অনুমোদন পেতে বেসরকারি খাতে আরও তিনটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সরকারি সূত্র মতে, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১০০ মেগাওয়াট, জামালপুরের ইসলামপুরে ৩০০ মেগাওয়াট এবং রাজবাড়ীর সদর উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।
বাঁশখালীতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে যে হংকংয়ের হুইহেং উইন্ড পাওয়ার লিমিটেড ও জুপিটার এনার্জি লিমিটেড বাংলাদেশ। ইসলামপুরের ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে এসএএল-জিটেক কনসোর্টিয়াম এবং রাজবাড়ীর ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে কনসোর্টিয়াম অব সানগ্রো রিনিউয়েবল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট পিটিই এবং থিয়ে পাওয়ার (সিঙ্গাপুর)।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য-যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত ঢাকা-থিম্পু
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগ ইতোমধ্যে তিনটি কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তিনটি পৃথক প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘সিসিজিপি প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করলে বিদ্যুৎ বিভাগ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) তাদের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করতে বলবে।’
তবে এসব কেন্দ্র থেকে সৌরবিদ্যুতের শুল্কের বিস্তারিত প্রকাশ না করলেও প্রায় ১০ মার্কিন সেন্টের শুল্কে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় বিপিডিবি এসব কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কিনবে বলে জানান তিনি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌর বিদ্যুতের অংশ বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে। এর আওতায় ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যমান ৩ শতাংশের নিচে থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি জরুরি: নসরুল হামিদ
তিনি ২০ মার্চ বার্লিন এনার্জি ট্রানজিশন ডায়ালগ ২০২৪-এ 'জ্বালানি খাতে কপ২৮ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন - সুযোগ, সীমাবদ্ধতা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ: দ্য ওয়ে হেড' শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের মাল্টি-স্টেকহোল্ডার গোলটেবিল বৈঠকে দেশের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বর্তমানে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ৯৮৯ দশমিক ৬১ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭১ দশমিক ৪৮ মেগাওয়াট অগ্রিড এবং অবশিষ্ট ৬১৮ দশমিক ১৩টি অন-গ্রিড।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি এবং অফ-গ্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫ হাজার মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ বিভাগের দাপ্তরিক নথিপত্রে দেখা যায়, গত তিন বছরে সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৬০৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রায় ১৩টি সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
নথিগুলোর উল্লেখ করে এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) এবং মনোনয়নের বিজ্ঞপ্তি (এলওআই) জারি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প (৩০+৭০) ১০০ মেগাওয়াট এবং বাকি ১১টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়ছে লোডশেডিং-তাপপ্রবাহ
আরও পাঁচ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া বিএনপির কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে অগ্নিসংযোগকারী, ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি ও ১৫ আগস্টের খুনিদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত এবারও ব্যর্থ হয়েছে। বারবার নির্বাচন বর্জন করার পর এখন বিএনপির পাঁচ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। বিএনপি এখন যেসব অভিযোগ এনেছে তা অবাস্তব ও ভিত্তিহীন।’
আরও পড়ুন: ভোট বর্জনকারীদের বর্জন করেছেন ভোটাররা: কাদের
সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বিএনপিকে সত্য মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব: ফেরদৌস
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা নির্বাচনি ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করেছি তা বাস্তবায়ন করব এবং ভবিষ্যতে একটি স্মার্ট ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলব। এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জনসভা করবে আওয়ামী লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অভিনেতা ও প্রযোজক সাজু মুনতাসিরের বিশেষ দিন
নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না, যথাসময়ে নির্বাচন হবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না, যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকার গুলশানে একটি হোটেলে সদ্য প্রকাশিত ‘দৈনিক বাংলা পত্রিকা’র প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদে করা ‘তফসিল ঘোষণা হলেই যে নির্বাচন হয়ে যাবে, এতো সহজ নয়’-এমন মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে লাল পতাকা দেখিয়েছে জনগণ: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, আসলে বিএনপি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভণ্ডুল করতে চায়। ২০১৪ সালে তারা এটি করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছিল। এবার চেষ্টা করলে জনগণ তা দমন করবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে, সেই মানুষগুলো বসে থাকবে না। আমরা আওয়ামী লীগও বসে থাকবো না।
নির্বাচনের ট্রেন কারও জন্য দাঁড়াবে না জানিয়ে হাসান বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের ট্রেন যেমন কারো জন্য দাঁড়ায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি পা দানিতে বসে নির্বাচনের ট্রেনে চড়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা আশা করব এবার নির্বাচনের ট্রেনে তারা ভালোভাবে বসবে। আর তারা না চড়লেও নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের কোন নেতা কি বলল তাতে কিছু যায় আসে না। জনগণ নির্বাচনে অংশ নিল কি না সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই এটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।
এর আগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দৈনিক বাংলা পত্রিকা, এর সকল সদস্য ও পাঠকের জন্য শুভকামনা জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি কেক কাটায় অংশ নেন এবং পত্রিকার সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাতের ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার জীবনের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তার হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন।
আরও পড়ুন: বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতি কি বুদ্ধি খাটিয়ে শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে- প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান: তথ্যমন্ত্রী
পাটকল চালুর অপেক্ষায় খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকেরা
খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল বন্ধের তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। ভালো নেই চাকরিহারা প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক। পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাদের।
তবুও পাটকল চালু হবে সাইরেন বাজবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন শ্রমিকেরা।
মিল বন্ধ থাকায় অযত্নে নষ্ট হচ্ছে ৯টি পাটকলের ৫ হাজার ৮৩টি তাঁত ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি। ফলে আবার এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে মিলগুলো উৎপাদনে যেতে পারবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় পাটকলের আগুন নিয়ন্ত্রণে
শ্রমিকরা জানান, লোকসানের কারণ দেখিয়ে ২০২০ সালের ২ জুলাই রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম, যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল বন্ধ করে দেয় সরকার।
লিজের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করে তিন মাসের মধ্যে মিলগুলো আবার চালুর ঘোষণা দিয়েছিল বিজেএমসি।
শ্রমিকরা জানান, কিন্তু এখনও চালু হয়নি। তাদের কেউ কেউ অন্য পেশায় ঢুকলেও অনেকেই বেকার। খালিশপুর, দিঘলিয়া ও আটরা শিল্প এলাকার পাটকল বন্ধ হওয়ায় ওই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে।
শ্রমিকরা আরও জানান, অনেকে এলাকা ছেড়ে নিজ জেলায় সপরিবারে ফিরে গেছেন। বন্ধ হয়ে গেছে মিল কারখানাকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও দোকানপাট। নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে শিল্প এলাকা।
প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, মিল বন্ধের সময় বলা হয়েছিল তিন মাসের মধ্যে চালু করা হবে। কিন্তু আজ তিনটি বছর পার হয়েছে। এখনও মিল চালু হয়নি। বেকার হয়ে কষ্টে দিন কাটছে। মাঝে ঢাকা একটি শো-রুমে চাকরি করেছি। পরে সেখান থেকে চলে আসতে হয়েছে।
তিনি জানান, পরিবারে তিন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও আমিসহ ৫ জন। সংসারের খরচ, লেখাপড়া, চিকিৎসা খরচসহ ঊর্ধ্বগতির বাজারে ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে কাজ পেলে করি, না হলে বেকার বসে থাকতে হয়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে একটি কম্পিউটার দোকানে কাজ করছি।
খালিশপুর প্লাটিনাম জুট মিলের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের শ্রমিক ছিলেন আব্দুল জলিল। ১৯৯৬ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০২০ সালের জুলাইয়ের শুরুতেই মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর বেকার হন জলিল।
তিনি অবসায়নের অর্ধেক টাকা পেলেও পাননি সঞ্চয়পত্রের টাকা। সঞ্চয়পত্রের টাকার জন্য তিন বছর ধরে ঘুরছেন মেইল দপ্তরে। বর্তমানে প্লাটিনাম জুট মিলের সামনেই একটি দোকা ভাড়া নিয়ে চা, বিস্কুট, রুটি, কলা বিক্রি করে কোনোরকম দিন পার করছেন।
এছাড়া অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসা, বাড়ি ভাড়া, লেখাপড়াসহ সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।
একই মিলের আরেক শ্রমিক মোহাম্মদ আলী বলেন, মিল বন্ধের তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের টাকা পাইনি। মিলের কাছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা পাওনা ছিল। যার মধ্যে নগদে অর্ধেক পেয়েছি। বাকি ৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা সঞ্চয়পত্রে পাওনা রয়েছে এখনও।
তিরি বলেন, গত তিন বছর সংসারের হানি টানতে টানতে নগদ অর্থ সবই শেষ। নিজের কোনো কাজ নেই। তবুও ছয় সদস্যের পরিবার চালাতে হয়। এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনি ও স্ত্রীকে নিয়ে হাউজিং বাজার এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করি। অনেক কষ্টে আছি, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: বিটিএমসির পাটকল ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩,১৬৮ কোটি টাকা লোকসান করেছে: পাটমন্ত্রী
তিনি বলেন, গেল তিন বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, তবুও সঞ্চয়পত্র পাইনি। মিল বন্ধ করে আমাদের পথে বসিয়েছে। এই বয়সে কোথাও কাজ করার সুযোগ নেই। এক ছেলে পরিবহনে কাজ করে। তার আয় দিয়ে সংসার চলে না। মেয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের লেখাপড়া করে। চিকিৎসাও করাতে পারি না। এখন দেনা হয়ে গেছি।
তিনি আরও বলেন, ঘর ভাড়া, বাজার-ঘাট, লেখাপড়ার খরচ মেটাতে পারি না। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
এছাড়া দ্রুত পাওনা পরিশোধ এবং মিল চালুর দাবি জানান তিনি।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, মিল বন্ধের আগে শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ এবং দ্রুত মিল চালু করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ তিনটি বছর পার হতে চলেছে। এখনও অনেক শ্রমিকের সঞ্চয়পত্রের টাকা পাওনা রয়েছে।
তিনি বলেন, মিল চালুর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আমরা জানতে পারিনি। ২৬টি মিল বন্ধের পর শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ে। অনেকে দিনমজুর, রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। অনেকেই কর্ম হারিয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। শ্রমিকরা অনেক কষ্টে রয়েছে। আমাদের দাবি শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করা হোক। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় মিলটি চালু করা হোক।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, পাটকল বন্ধের পর থেকে শ্রমিকরা কষ্টে আছে। মিল চালুর প্রতিশ্রুতি থাকলেও অগ্রগতি নেই।
তিনি বলেন, বিআইডিসি সড়কের আলমনগর মোড় থেকে নতুন রাস্তা মোড় পর্যন্ত অর্ধেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে।
বিজেএমসি সূত্র জানায়, মিলগুলোর কাছে ২১৪ শ্রমিকের নগদ ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং ১ হাজার ৩১৫ শ্রমিকের ৭৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র পাওনা রয়েছে।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. গোলাম রব্বানী বলেন, মাসখানেক আগে যশোরের জেজেআই জুট মিল আকিজ গ্রুপকে লিজ দেওয়া হয়েছে। তারা শিগগিরই মিলটি চালুর চেষ্টা করছে। খুলনার প্লাটিনাম জুট মিল ফরচুন গ্রুপকে লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, অন্য ছয়টি পাটকল লিজ দেওয়ার জন্য জুনের মাঝামাঝি তৃতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আর আলিম জুট মিলের মালিকানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব থাকায় এটি লিজ দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়নি।
তিনি বলেন, অধিকাংশ শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কিছু সংখ্যক শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা, নামের ভুলসহ বিভিন্ন প্রকার জটিলতা থাকায় তারা এখনও সব টাকা পাননি। সেগুলোও পর্যায়ক্রমে পরিশোধের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, যন্ত্রপাতিগুলো মাঝেমধ্যে মেইনটেন্যান্স ও চালু করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু যেভাবে মেইনটেন্যান্স করা দরকার, তা অর্থাভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: খুলনার বেসরকারি ১৭ পাটকল বন্ধ হওয়ার উপক্রম
কেসিসি নির্বাচন: নবনির্বাচিতদের দায়িত্ব গ্রহণে অপেক্ষা করতে হবে আরও ৪ মাস
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ের পর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন পুননির্বাচিত মেয়র ও নবনির্বাচিত কাউন্সিলরা। তবে নির্বাচনে জয়ী হলেও এখনই দায়িত্ব বুঝে পাচ্ছেন না তারা।
তাই স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী আরও ৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে নবনির্বাচিতদের।
আরও পড়ুন: কেসিসি নির্বাচন: প্রস্তুত ইসি, বিজিবি মোতায়েন
আর ততদিন অর্থাৎ চলতি বছরের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বর্তমান কাউন্সিলররাই নিজ পদে থাকবেন। কাউন্সিলরদের মধ্যে যারা পরাজিত হয়েছেন এবং নির্বাচনে অংশ নেননি এমন ১৮ জন কাউন্সিলরও নিজ পদে থাকবেন ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। ১১ অক্টোবর নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরা দায়িত্ব বুঝে নেবেন।
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন আইন -২০০৯) এর প্রথম অধ্যায়ের সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘কর্পোরেশনের মেয়াদ উহা গঠিত হইবার পর উহার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হইবার তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর হইবে’।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তালুকদার আবদুল খালেকের নেতৃত্বাধীন কেসিসির বর্তমান পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করে ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর।
বর্তমান পরিষদের প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় ১১ অক্টোবর। অর্থাৎ চলতি পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১০ অক্টোবর।
মেয়াদ শেষের পরই নতুন পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: কেসিসি নির্বাচন: এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে, জাপা মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ
কেসিসি নির্বাচন: অধিকাংশ কেন্দ্র ফাঁকা, ১১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ ১১%
মঞ্চ তৈরি, অপেক্ষা নোরা ফাতেহির
বলিউড তারকা নোরা ফাতেহির ঢাকায় আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েকবার। শেষবার জানা গিয়েছিল কয়েকটি শর্ত মেনে আসতে পারবেন। অবশেষে সেটিই সত্যি হলো।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) উইমেন লিডারশিপ কর্পোরেশন আয়োজিত ‘গ্লোবাল এচিভার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’-এ অংশ নেবেন তিনি। এরইমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন নোরা।
দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার নিজস্ব নৃত্যশিল্পীদের বহর নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন নোরা ফাতেহি। সেখান থেকে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিশ্রামে যান তারা।
আজ রাত ৮টায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি)-তে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন নোরা ফাতেহি। এরই মধ্যে নোরা ফাতেহির জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। দর্শকরাও আসতে শুরু করেছেন। এখন অপেক্ষা নোরার। যার নৃত্যের ঝলকানি দেখার জন্য এতদিন অপেক্ষায় ছিলেন এ দেশের ভক্তরা।
আজকের অনুষ্ঠান শেষ করে আগামীকাল বিকেলে ঢাকা ত্যাগ করবেন নোরা ফাতেহি।
আরও পড়ুন: অবশেষে বাংলাদেশে আসার অনুমতি পেলেন নোরা ফাতেহি
জটিলতা পেরিয়ে অবশেষে ঢাকায় আসছেন নোরা ফাতেহি
বিয়ানীবাজারে গ্যাসের সন্ধান: বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন নিয়ে অপেক্ষা
সিলেটের বিয়ানীবাজারে পরিত্যক্ত একটি কূপে নতুন করে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এটি বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য কিনা তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে সপ্তাহখানেক।
শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান।
নাজমুল আহসান বলেন, বিয়ানীবাজারের একটি পরিত্যক্ত কূপে আমরা ওয়ার্কওভারের কাজ করছিলাম। সেখানেই কিছু গ্যাসের অস্তিত্ব পেয়েছি। তবে সেই গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য কিনা বা সেটি কি পরিমাণ উত্তোলন করা যাবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নতুন কূপেও গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাপেক্স
তিনি আরও বলেন, এখনও কূপটিতে কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে। এরপর আমরা এসব বিষয় নিশ্চিত করতে পারবো।
জানা যায়, কূপের তিন হাজার ৪৫৪ মিটার গভীর থেকে পরীক্ষা করে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এতে এখন গ্যাসের চাপ রয়েছে তিন হাজার ১০০ পিএসআই।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল) সূত্রে জানায়, বিয়ানীবাজার-১ কূপটির তিন হাজার ৪৫০ মিটার গভীর থেকে ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হ। এরপর ২০১৬ সাল থেকে কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কূপটিতে নতুন করে ওয়ার্কওভার (পুনঃখনন) শুরু করে বাপেক্স।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় নতুন গ্যাস কূপের সন্ধান
স্বাভাবিক জীবনের অপেক্ষায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা
আসছে ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক সীমানা পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস এর উদ্যোগে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী (রোহিঙ্গা) সমস্যা নিয়ে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের জুন ২০২২ এর হিসাবে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম এই শরণার্থী ক্যাম্পের মানুষগুলো দৈনন্দিন ও দীর্ঘমেয়াদি সকল প্রয়োজন মেটাতে মানবিক সাহায্যের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল।
এই মানবিক সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সরকার শুরুতেই বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সরকারের সহায়ক হয়ে এই সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায়। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি)’র সহায়তায় এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে কক্সবাজারে পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশন (পিএমও) নামে একটি আন্তর্জাতিক অপারেশন যাত্রা শুরু করে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব, কাজী শফিকুল আজম বলেন:‘সংকটটি ইতোমধ্যেই একটি জটিল ও দীর্ঘায়িত বাস্তুচ্যুতি সংকটে পরিণত হয়েছে। এজন্য, শরণার্থী ক্যাম্প ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে বর্তমানে চলমান কার্যক্রম সমন্বয় করে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ। আমরা এই সঙ্কট নিরসনের জন্য প্রতিশ্রুতি ও সহায়তার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সহায়তা চায় ইউএনএইচসিআর
ক্যাম্পের মোট জনগণের ৫১ শতাংশই শিশু এবং প্রায় ৫২ শতাংশ নারী ও কিশোরী। প্রতি তিনটি পরিবারের মধ্যে একটির সদস্যরা সহজেই মানব পাচার, বাল্যবিয়ে, যৌন শোষণ ও নিপীড়ন ইত্যাদির শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ক্যাম্পে বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন-স্বল্পমেয়াদী আশ্রয়কেন্দ্র, টেকসই আবাসন, সৌরচালিত পানি সঞ্চালন নেটওয়ার্ক, দুর্যোগ নিরসনসহ গৃহীত স্থায়িত্বশীল উদ্যোগ অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করেছে।
আইএফআরসি-র এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক পরিচালক, আলেকজান্ডার ম্যাথিউ বলেন, ‘ক্যাম্পে বাইরে থেকে যা দৃশ্যমান, তা গত পাঁচ বছরের অনেক উদ্যোগের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা বাংলাদেশ সরকারসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থাকে তাদের এই অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু যা দৃশ্যমান নয় অথচ ক্যাম্পে বসবাসরত মানুষের জীবনে ঘটে চলেছে, তা হচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, তাদের কোনো কাজ বা চলাফেরার স্বাধীনতা নেই, বরং কম হলেও অনিবার্যভাবে আছে বিষন্নতা, পাচার, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতাসহ অন্যান্য সহিংসতার শিকার হবার ঝুঁকি। যেহেতু কোন স্থায়ী সমাধান এখনও নিশ্চিত নয়, মানবিক সহায়তা হিসেবে জীবন রক্ষাকারী উদ্যোগের পাশাপাশি বিনোদন এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার উপরও জোর দেওয়া দরকার।’
পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে কক্সবাজারের ভৌগলিক অবস্থানের জন্য, যা অতিমাত্রায় ঘূর্ণিঝড় প্রবণ। এই এলাকা হরহামেশাই জলোচ্ছ্বাস, বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়সহ ভারি বর্ষণের শিকার হয় যার ফলে ভূমিধ্বস, জলাবদ্ধতা, ঘরবাড়ির ক্ষতি, ঘনঘন আগুন, মহামারি যেমন কলেরা, ডেঙ্গু, এবং ডিপথেরিয়াসহ বিভিন্ন দুর্যোগ এই এলাকার নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে উঠেছে। তার উপর ক্যাম্পের ঘনবসতির কারণে কলেরা ও কোভিড মাঝে মাঝেই অতিমারির আকার ধারণ করে।
আইএফআরসি, বাংলাদেশ ডেলিগেশনের প্রধান সঞ্জিব কাফলে বলেন, ‘এই সংকট আইএফআরসি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং দুরূহ মানবিক সহায়তা কার্যক্রম। গত পাঁচ বছর ধরে ক্যাম্পে সুরক্ষাসহ যাবতীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে, আইএফআরসি ও তার সহযোগী ন্যাশনাল সোসাইটিগুলো বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টকে সহায়তা করে আসছে। কোভিড-১৯ এর অভিজ্ঞতার আলোকে, আইএফআরসি এখন প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির উপর কাজ করছে। তাই কক্সবাজারের বাস্তুচ্যুত এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে সাহায্য প্রদানের ক্ষেত্রে আইএফআরসি'র বর্তমান কৌশল হচ্ছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত কম্যুনিটিতে সমন্বিত কম্যুনিটি সহনশীলতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরন এবং কার্যকর দুর্যোগ সাড়াদান ইত্যাদিতে মনোযোগ বৃদ্ধি।’
আইএফআরসি এবং অন্যান্য সহযোগী ন্যাশনাল সোসাইটির যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এই জরুরি মানবিক প্রয়োজন মেটাতে ও তা বৃদ্ধিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আশ্রয়, স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা, ওয়াশ, জীবিকায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষার মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। সেই সাথে সুরক্ষা, জেন্ডার ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অন্তর্ভুক্তিকরণ, জনগোষ্ঠীকে যুক্ত করা এবং জবাবদিহিতা ইত্যাদিকে মূলধারায় নিয়ে আসার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সহায়তা চায় ইউএনএইচসিআর
দিল্লিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে ভারত
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইইউর সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ