ভবিষ্যত
ভবিষ্যতের বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে তরুণদের প্রতি আহ্বান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের
বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যতের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং দেশের অগ্রগতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক সেশনে এ আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস। এ সময় জাতি গঠনে তরুণদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানালেন ব্লিঙ্কেন
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এই রংপুর, এই বাংলাদেশ এখন আপনাদের হাতে। আপনি যেখানে নিয়ে যেতে চান, সেখানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এই শক্তি আপনাদের ভেতরে রয়েছে- তা আর গবেষণার বিষয় নয়।’
ইউনূস দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী আবু সাঈদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তাকে 'মহাকাব্যিক চরিত্র' হিসেবেও বর্ণনা করেন।
তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ভবিষ্যতে, ‘তাকে নিয়ে অনেক কবিতা, সাহিত্য লেখা হবে।’
বাংলাদেশের ছাত্র ও তরুণরা সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি তাদের সাম্প্রতিক অর্জনকে দেশের 'দ্বিতীয় বিজয়' হিসেবে উল্লেখ করেন। এই বিজয় যাতে হাতছাড়া না হয় তা নিশ্চিত করার আহ্বানও জানান।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র আপনারাই এটা করতে পারেন। আমরা প্রবীণ প্রজন্ম এটা পারব না।’
তিনি প্রবীণ প্রজন্মকে সরে এসে যুবকদের জন্য পথ তৈরি করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
যেকোনো কাজ সম্পাদনের জন্য দূরদর্শিতার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘স্বপ্ন না থাকলে বিশৃঙ্খলা হবেই। কিন্তু আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন এবং এর পেছনে ছুটেন, তাহলে একসময় যা অসম্ভব বলে মনে হতো তা সম্ভব হয়ে যাবে। অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা আপনাদের মধ্যেই রয়েছে।’
তরুণদের কখনও পিছপা না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতিকে যেখানে নিয়ে যাওয়া দরকার সেই পথ দেখাতে প্রবীণ প্রজন্ম ব্যর্থ হয়েছে।
প্রবীণদের ব্যর্থতা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যর্থ হয়েছি। যেখানে আপনাদের নিয়ে যাওয়ার কথা, আমরা আপনাদের সেখানে নিয়ে যেতে পারিনি।’
ইউনূস শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যারা তাদের অগ্রগতি ব্যাহত করতে চায়, তাদের প্রচেষ্টা যেন সফল হতে না দেন শিক্ষার্থীরা। ‘আপনাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য অনেকে দাঁড়িয়ে আছেন। এবার আর ব্যর্থ হতে দেবেন না।’
জাতীয় সংস্কারের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। দেশকে দুর্দশা থেকে মুক্ত করার জন্য যা কিছু করা দরকার তা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সব পরিষ্কার করে দেব। সবকিছু পরিষ্কার না করা পর্যন্ত আমাদের কোনো স্বস্তি নেই।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে একে 'জঘন্য' বলে অভিহিত করেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তারা কি এ দেশের মানুষ নয়? আপনারা দেশকে বাঁচাতে পেরেছেন; কিছু পরিবারকে বাঁচাতে পারছেন না?’
তিনি হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ পরিবারকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, 'আপনাদের বলতে হবে- কেউ তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তারা আমার ভাই; আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি এবং আমরা একসঙ্গেই থাকব।’
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে একটি সুন্দর পরিবারের সঙ্গে তুলনা করেন। এর চেয়ে সুন্দর পরিবার আর হয় না।
এই ঐক্য রক্ষায় তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে, কিন্তু এত সুন্দর পরিবার আর নেই।’
আরও পড়ুন: নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
রংপুরে সাঈদের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
৩ মাস আগে
চাল আমদানি নয়, ভবিষ্যতে আমরা রপ্তানি করব: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘চাল আমদানি নয়, ভবিষ্যতে আমরা রপ্তানি করব। বিগত দুই বছর সরকার চাল আমদানি করেনি। এবারও চাল আমদানির প্রয়োজন হবে না।’
রবিবার (৭ জুলাই) সাপাহার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ‘কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৪’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, চালও নেই: খাদ্যমন্ত্রী
কৃষি প্রণোদনা সরকারের পরিকল্পিত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি প্রণোদনা দিয়ে- ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের পাশে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কৃষিকে প্রযুক্তিবান্ধব করতে কাজ করে যাচ্ছেন। যে প্রণোদনা আজ বিতরণ করা হচ্ছে সেটা সঠিক ব্যবহার হলে বেশি জমিতে চাষাবাদ আর উৎপাদন বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুচিন্তিত চিন্তাধারায় অল্প জমিতে বেশি ফসল ফলাতে কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। অধিক জনসংখ্যার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষকের জন্য আশির্বাদ। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক পতিত জমিতেও এখন চাষাবাদ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু কৃষকের উৎপাদন খরচের খবর কেউ নিচ্ছে না। দাম বাড়লে ভোক্তার সমস্যা আর পণ্যের দাম কমলে কৃষকের সমস্যা।’
উৎপাদন খরচ না উঠলে কৃষক উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অধীনে ভর্তুকি মূল্যে চাল আটা বিক্রি করা হচ্ছে।’
এর আগে তিনি সাপাহার উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা উদ্বোধন করেন এবং স্টল পরিদর্শন করেন।
পরে খাদ্যমন্ত্রী কৃষকদের মাঝে সরকারি আমন প্রণোদনা বিতরণ করেন এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপবৃত্তির চেক ও বাইসাইকেল বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: জীবনে বড় হতে হলে বইকে আপন করতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাঙালি সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
৪ মাস আগে
ভবিষ্যতের জন্য নির্মল নির্বাচনি পরিবেশ রেখে যেতে চাই: ইসি
নির্বাচনের সময় অর্জিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য একটি নির্মল নির্বাচনি পরিবেশ রাখতে চান বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা।
শনিবার বিকালে জিলা স্কুলের মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে তিনটি উপজেলার (সদর, চিরিরবন্দর ও খানসামা) প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সিইসিসহ অন্যদের আমন্ত্রণ জানাল রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন
এসময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ভোটের সময় কোনো প্রিজাইডিং অফিসার অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া নিরপেক্ষ ও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনেরও আহ্বান জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতার আহমেদ, জেলা নির্বাচন অফিসার কামরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতির যে কোনো সংখ্যাই গ্রহণযোগ্য: নির্বাচন কমিশনার আলমগীর
নির্বাচন কমিশনারদের বেতন-সুবিধা সংক্রান্ত আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
৫ মাস আগে
টেকসই খাদ্য নিরাপত্তায় গবেষণা জোরদার করতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে গবেষণা আরও জোরদারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের স্বল্প জীবনকালীন ও উচ্চফলনশীল নতুন জাত উদ্ভাবন এবং খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে আর চাষের জমি কমছে।
আরও পড়ুন: ফসলি জমি রক্ষা এবং মজুতদারি রোধে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চান কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা খাদ্য উৎপাদনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছি। দেশের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম কৃষি এখন বাণিজ্যিকীকরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে রাজধানীর খামারবাড়িতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ গবেষণা দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক কর্মশালায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানী ও গবেষণা সংস্থাগুলো ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রকে কাজে লাগিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবনে সময় কমিয়ে আনতে হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে ফসলের নতুন উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ারের সভাপতিত্বে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলস, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব সাস্কাচুয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট বালজিত সিং, বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক এবিএম খালদুন।
আরও পড়ুন: উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের আলু চাষের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
মজুতদার ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে: কৃষিমন্ত্রী
৭ মাস আগে
ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের পাশে আছে ভারত: রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা
একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ দেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভারত ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) মৈত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি তারিখ। এটি আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি প্রভাবশালী গুণনীয়ক।’
আরও পড়ুন: জাহাজের শুভেচ্ছা সফর ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে 'ভারত সরকার ও জনগণের অমূল্য অবদান' থেকে উদ্ভূত আবেগময় বন্ধনকে তুলে ধরে উভয় দেশ ৬ ডিসেম্বরকে 'মৈত্রী দিবস' বা 'বন্ধুত্ব দিবস' হিসেবে পালন করে।
মৈত্রী দিবসের আয়োজন ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে গভীর ও চিরস্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতিফলন, যা রক্ত ও অভিন্ন আত্মত্যাগে গড়ে উঠেছে।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ইতিহাসে এই দিনটি অনন্য।
তিনি বলেন, এটি অংশীদারিত্বের সূচনা যা এখন বহুমুখী হিসাবে দেখা হয় এবং সম্পর্কটি কৌশলগত অংশীদারদের ছাড়িয়ে যায়।
হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশ কৌশলগত অংশীদারের চেয়েও বেশি কিছু।
তিনি বলেন, এটি আত্মত্যাগকারীদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর দিন।
সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে উল্লেখ করে প্রণয় ভার্মা বলেন, 'আজ এটি একটি বহুমুখী সম্পর্ক, যা আমাদের সম্পর্কে নতুন গতি যোগ করছে।’
তিনি বলেন, দুই দেশ সব ক্ষেত্রে নতুন সংযোগ গড়ে তুলছে। ‘বৃহত্তর আশা এবং বৃহত্তর আশাবাদের সঙ্গে সুযোগটি সত্যিই অন্তহীন।’
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে আরও ১৪৫ অনিয়মিত বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন
হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের ইতিহাস ও উত্তরাধিকার সম্পর্কে তরুণদের আকৃষ্ট করতে তারা ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে একটি মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি স্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে যোগদানের জন্য ২০২১ সালের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে আসলে ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ১০ দিন আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ভারত।
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম।
২০২১ সালে ঢাকা ও দিল্লি ছাড়াও বিশ্বের ১৮টি দেশে দিবসটি পালিত হয়।
দেশগুলো হলো- বেলজিয়াম, কানাডা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র।
সেলিব্রিটি, সম্পাদক এবং ভারতের বন্ধুরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুর কারাগারে ভারতীয় হিন্দু নাগরিকের মৃত্যু
১১ মাস আগে
ভারতের ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত: জ্যেষ্ঠ এমইএ কর্মকর্তা
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) বাংলাদেশ, মিয়ানমার বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা স্মিতা প্যান্ট মঙ্গলবার বলেছেন, ভারতের ভবিষ্যৎ, বিশেষ করে এর নিরাপত্তা বাংলাদেশের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে অনেক কিছু অর্জন করতে পারে, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং সুন্দরবনের বদ্বীপ সুরক্ষায়।
টাইমস নাউ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন স্মিতা প্যান্ট।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে অপরাধীরা তার মূল্যবোধকে নির্মূল করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু, ‘ইতিহাসে যার সমকক্ষ কম’, তার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে ভারতীয় হাইকমিশন
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, জনগণ চরমপন্থা প্রত্যাখ্যান করেছে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং দেশটি প্রায় অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠায়।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান আলোচনার শুরুতে বলেন, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি মডেল। সাম্য, ন্যায়বিচার, মৌলিক মানবাধিকার এবং বিশেষত আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার উপলব্ধির জন্য লড়াই করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি তার রাজনৈতিক দর্শন বিকাশ করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে তার প্রথম ভাষণে সবার জন্য শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংগ্রামই শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য সার্বজনীন সংগ্রামের প্রতীক।’
আরও পড়ুন: ভারত পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ঠিকানা: ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার
একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত ন্যাম সম্মেলনে, যেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘যারা অত্যাচারী এবং যারা নির্যাতিত- তাদের মধ্যে পৃথিবী বিভক্ত… যারা নিপীড়িত এবং যারা নিপীড়ন থেকে মুক্তির ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আমরা তাদের পাশে আছি।’
বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, কিন্তু তারা এই মহান ব্যক্তির নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। তার শিক্ষা, মতাদর্শ এবং চেতনা আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে আছে।’
হাইকমিশনার অনুসারে, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ একমত পোষণ করেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিসংখ্যান এখন পাকিস্তান এবং কিছু পরিস্থিতিতে ভারতের চেয়ে ভালো।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুই একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকল ভারত
১ বছর আগে
ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষিজমি হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে হলে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থাকে রূপান্তর করে যুগোপযোগী করতে হবে।
আরও পড়ুন: মাশরুম চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না: কৃষিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রোমের স্থানীয় সময় সকালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সদর দপ্তরে চলমান ইউএন ফুড সিস্টেমস সামিটের কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর শীর্ষক প্লেনারি সেশনে প্যানেলিস্ট হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে সরকার। এত বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি সারা বিশ্বেই বিরল। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক বেশি ভর্তুকি দিচ্ছি। ভবিষ্যতেও এ ভর্তুকি অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ সরকার।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরে বাংলাদেশ সরকার সমন্বিত বিশাল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কৃষি উৎপাদন আরও বৃদ্ধিকরণ, বিপণন ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ, জলবায়ু সহনশীল কৃষি গড়ে তোলা ও কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার পার্টনার প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। এফএওর কাছ থেকেও সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হওয়ায় তলাবিহীন দেশ এখন উন্নত বিশ্বের কাতারে। বিশ্ব আমাদের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করে। আর এক্ষেত্রে কৃষির বিরাট অবদান রয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেছেন, তা বাস্তবায়ন জরুরি।
আরও পড়ুন: কৃষিমন্ত্রীর হাতে এক দফার লিফলেট দিলেন বিএনপি নেতা মিলন
কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বানচাল করতে পারবে না: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে
ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব প্রতিনিধিদের সচেতনতা বাড়াতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব প্রতিনিধিদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্য গবেষণায় আরও জোরালোভূমিকা রাখতে হবে।
মঙ্গলবার ভুটানের পারো শহরে শুরু হওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আয়োজিত পাঁচদিনব্যাপী সাউথ ইস্ট এশিয়ান রিজিওনাল অর্গানাইজেশনের (এসইএআরও ) আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
পাঁচদিনব্যাপী এই আঞ্চলিক সভায় সদস্য দেশগুলো উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কৌশল অন্যদেশে কীভাবে সাফল্যের সঙ্গে কার্যকরভাবে ব্যবহার করে সাফল্য অর্জন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
দেশগুলো ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলা, কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা, সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাসহ অসংক্রামক ব্যাধি মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণসহ সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে একযোগে কাজ করার কৌশল নির্ধারণ করবে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সভার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং।
আরও পড়ুন:অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সভায় এসইএআরও ভুক্ত ১০টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের মধ্যে আটটি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক সভায় প্রথম দিনের কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন।
সভায় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফলপ্রসু দিক নির্দেশনা ও সার্বিক পরামর্শের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এতে অংশগ্রহণ করেছেন।
তারা হচ্ছেন- স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, উপ-সচিব খন্দকার জাকির হোসেন, উপ-সচিব মোহাম্মদ শাহাদত খন্দকার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মেখালা সরকার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আরাফাতুর রহমান।
আরও পড়ুন:দেশে প্রতিদিন যক্ষায় ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
ভবিষ্যতে বিপজ্জনক তাপপ্রবাহ ৩ গুণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস
একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তন আরও খারাপ পর্যায়ে পৌছানোয় ‘বিপজ্জনক তাপ’ হিসেবে বিবেচিত তাপপ্রবাহ আগামী কয়েক দশকে সারাবিশ্বে অন্তত তিনগুণ বেশি আঘাত হানবে।
সম্প্রতি কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর মধ্য-অক্ষাংশে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে গ্রীষ্মকালের কোনো কোনো সময় এখানকার তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ১০৩ ডিগ্রি (৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশিতে পৌঁছায়।
গবেষণার লেখক বলেছেন, ২১০০ সালের মধ্যে এই অসহনীয় তাপপ্রবাহের প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মতো জায়গাগুলোতে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ১২৪ ডিগ্রি (৫১ সেলসিয়াস) ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে মনে করা হয়। বর্তমানে এটি খুব কমই ঘটে। এই শতাব্দীর শেষ দিকে ভারতের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলোতে এই ধরনের তাপপ্রবাহ প্রতিবছর এক থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
হার্ভার্ডের জলবায়ু বিজ্ঞানী ও এই গবেষণার লেখক লুকাস জেপেটেলো বলেছেন, ‘তাই এটি এক ধরণের ভীতিকর বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর ফলে কয়েক বিলিয়ন মানুষ খুব নিয়মিতভাবে অত্যন্ত বিপজ্জনক মাত্রার তাপের সংস্পর্শে আসতে চলেছে।’
জেপেটেলো ও তার সহকর্মীরা উচ্চ তাপের দুটি ভিন্ন স্তরের সম্ভাব্যতা দেখার জন্য ১ হাজার টিরও বেশি কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করেছেন। মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী তারা ১০৩ ডিগ্রি (৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ১২৪ ডিগ্রি (৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর ওপরে তাপ সূচককে বিপজ্জনক এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
তারা ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রতি বছর কতবার এই ধরনের তাপপ্রবাহ ঘটেছিল তার সঙ্গে ২০৫০ ও ২১০০ সালের মধ্যে কতবার এটা ঘটবে তার তুলনা করেছেন।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, মধ্য-অক্ষাংশে ১০৩-ডিগ্রি তাপ তিন থেকে দশগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে তাপপ্রবাহ কম হওয়ার এবং খুব কম হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র পাঁচ শতাংশ।
সমীক্ষা অনুসারে, সম্ভবত ২১০০ সালের মধ্যে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ‘প্রতি সাধারণ বছরের বেশিরভাগ দিনে’ ১০৩-ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকবে।
গবেষণায় দেখা যায়, শিকাগো ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মাত্র চারবার ১০ ডিগ্রী তাপ সূচকে পৌঁছায়।
কিন্তু শতাব্দীর শেষ নাগাদ শিকাগোতে বছরে ১১ বার সেই তাপদাহ ঘটেছে।
জেপেপেটেলো বলেছেন, তাপপ্রবাহ হল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, পানির ঘাটতি ও সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তনের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন চারটি লক্ষণের মধ্যে একটি।
তিনি ২০২১ সালে ওয়াশিংটন রাজ্যের উষ্ণায়নের সময় অনেক গবেষণা করেছেন। যে তাপদাহ বহু বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ যাতে প্রাণ হারায়।
উডওয়েল ক্লাইমেট রিসার্চ সেন্টারের জলবায়ু বিজ্ঞানী জেনিফার ফ্রান্সিস বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে এই গবেষণায় দেখানো ভয়ঙ্কর ভবিষ্যদ্বাণীগুলো বিশ্বাসযোগ্য।’
আরও পড়ুন:জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান
তিনি বলেন, ‘গত দুটি গ্রীষ্ম আমাদের ইউরোপ, চীন, উত্তর-পশ্চিম উত্তর আমেরিকা, ভারত, দক্ষিণ-মধ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মধ্য সাইবেরিয়া এবং এমনকি নিউ ইংল্যান্ডে প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহ সহ ভবিষ্যতের তাপদাহের জন্য একটি ইঙ্গিত দিয়েছে। গরম অঞ্চলগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। কারণ তাপ সূচকগুলো বিপজ্জনক সীমা ছাড়িয়ে যাবে, যা মানুষ ও বাস্তুতন্ত্রকে সমানভাবে প্রভাবিত করবে। যে অঞ্চলগুলোতে এখন চরম তাপ বিরল, সেখানেও ক্রমবর্ধমান ক্ষতি হবে।’
হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ড. রেনি সালাস বলেছেন, গবেষণাটি তাপ সূচকের ওপর আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাপ সূচক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরকে শীতল করা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে ওঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হিট স্ট্রোক হল তাপ অসুস্থতার একটি সম্ভাব্য মারাত্মক রূপ, যা শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনক মাত্রায় বেড়ে গেলে ঘটে।’
আরও পড়ুন:জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান বাংলাদেশ ও আইওএম-এর
এখনই জলবায়ু নিয়ে ভাবুন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শুনুন: ব্যাচেলেট
২ বছর আগে