ফখরুলে
কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ-আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি ফখরুলের
শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘সরকার যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, সেটি রক্তপাতের ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টামাত্র।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এই দাবি করেন।
বিবৃতিতে তিনি আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানান।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থসহ আরও কয়েকজন বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিটি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে সরকার: ফখরুল
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস ঢাকতে এবং সহিংসতার দায় বিএনপির ওপর চাপাতে সরকারের 'অশুভ চেষ্টার' অংশ হিসেবে বিএনপির নিরীহ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাদের বাড়িঘরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
তারা বিএনপি নেতাদের না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার, তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং তাদের আসবাবপত্র ও মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাদের ওপর আন্দোলনে ভূমিকা রাখার অভিযোগ এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য মিথ্যা দোষারোপ করছে। যদি তাই হয়, তাহলে কেন তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হলো না? এটাই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয়, বিএনপি বা বিরোধী দল কেউই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নয়।’
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের 'ক্যাডাররা' কয়েকশ’ নিরীহ ছাত্রকে হত্যা করেছে।
ফখরুল বলেন, ছয়জন হত্যার ঘটনা তদন্তে সরকারের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ‘এটা পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার শামিল। তাই সব ঘটনা ও হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে জনগণ।’
আরও পড়ুন: ২০০০ বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে: ফখরুল
অন্যথায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করে দেশবাসী।
বিএনপি মহাসচিব শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশ ও আনসার সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের পরিবারকে নগদ দুই লাখ টাকা ও আট লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র দিয়েছে। কিন্তু গণহত্যায় কয়েকশ’ নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করার সাক্ষী হয়েছে দেশের মানুষ।’
ছাত্র হত্যায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান ফখরুল।
বিএনপিসহ বিরোধী দলের গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপির ২ নেতাসহ ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ গ্রেপ্তার
৩ মাস আগে
ইউএনকপে আইজিপি’র নাম অন্তর্ভুক্তি: ফখরুলের সমালোচনা
জাতিসংঘের চিফ অব পুলিশ সামিটে (ইউএনকপ) বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদের নাম অন্তর্ভূক্তির সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সম্মেলনে আইজিপিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি করে সরকার সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে।
শনিবার গুলশানে দলের চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের দায়িত্বহীন, অহংকারী আচরণ দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ঠেলে দিচ্ছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বেনজির আহমেদ যিনি গুমের মত ভয়ানক মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজের নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন তাকে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সদস্য করে সকল
মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছেন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুমের মতো মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত বেনজির আহমেদসহ র্যাবের সাতজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আগামী ৩১
আগস্ট শুরু হতে যাওয়া দুই দিনের পুলিশ প্রধান সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি করা হয়েছে আইজিপিকে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ সম্মেলনে অংশগ্রহণে আইজিপিকে শর্তাধীন দুই দিনের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করছে। বাংলাদেশ এরকম প্রতিনিধি জাতিসংঘে পাঠিয়ে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।’
তিনি বলেন, আইজিপির শর্তযুক্ত ভিসা দিয়ে জাতিসংঘের সম্মেলন ছাড়া আর কোনও কর্মকাণ্ডে তিনি অংশ নিতে পারবেন না।
ফখরুল বলেন,‘ আমরা মনে করি এরূপ শর্তযুক্ত ভিসা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অপমান করা হয়েছে।’
জানা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে বেনজির বৃহস্পতিবার(২৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেয়েছেন। তারা রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ‘জাতিসংঘ পুলিশ প্রধান সম্মেলন(ইউএনকপ)-২০২২’ এ মন্ত্রী, পুলিশ প্রধান, আঞ্চলিক এবং পেশাদার পুলিশ সংস্থাগুলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বেনজির আহমেদসহ র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। বেনজির আহমেদ পুলিশের মহাপরিদর্শক নিযুক্ত হওয়ার আগে র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
আরও পড়ুন:সরকারের পতনই এখন বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য: ফখরুল
অন্যের সহায়তায় যারা ক্ষমতায় আছে তারা বাংলাদেশকে শাসন করতে পারে না: ফখরুল
২ বছর আগে