দ্বীপ
সেন্টমার্টিনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু
ঢাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি (ইউএনবি)—
পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২০০ জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক এতে অংশ নিয়েছেন।
চলমান এ অভিযান আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ও আগামীকাল চলবে। এছাড়াও, গত দুই মাসে সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্সও দ্বীপে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে গত দুমাসে বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সংগ্রহ করে অপসারণ করা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রদূষণরোধে জাহাজ ঘাট থেকে ২৪১ কেজি প্লাস্টিক ও ৮৭ কেজি পলিথিন সংগ্রহ করা হয়।
প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরের মাধ্যমে সেন্টমার্টিনে ১৪.৩ মেট্রিক টন এবং কক্সবাজারে ৬৭.৩ মেট্রিক টন প্লাস্টিক অপসারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামীকাল থেকে ৯ মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সেন্টমার্টিন
সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও প্লাস্টিক দূষণ কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দৈনিক সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটকের সীমা নির্ধারণ করা হয়। এ সময়ে গড়ে দৈনিক ১ হাজার ৬৯৪ জন পর্যটক দ্বীপে এসেছেন। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে কয়েকটি জাহাজকে সতর্ক করা হয় এবং দুইটি জাহাজকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
পর্যটক ও স্থানীয়দের সচেতন করতে দ্বীপে তথ্যসংবলিত সাইনবোর্ড স্থাপন ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে। সৈকতের পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তায় বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির (বিএমসি) অধীনে ১০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ৬ জন লাইফগার্ড সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ বিষয়ে একযোগে কাজ করবে।
৬৫ দিন আগে
ছেঁড়া দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাতায়াত, খরচ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য
সমুদ্র আর বালুকাবেলায় নির্জনতার মায়াবী আহ্বান উপেক্ষা করা যেকোনো ভ্রমণপিপাসুর জন্যই কঠিন। এমন অসীম নৈস্বর্গের সঙ্গে যদি যুক্ত হয় হাজার বছরের পুরনো প্রবাল, তবে সেই হাতছানি যেন মুহুর্মুহু স্পন্দনে পরিণত হয়। বাংলাদেশের মানচিত্রের সর্বদক্ষিণের বিন্দু ছেঁড়া দ্বীপ নিয়ে এমনটা বলা হলে, তা মোটেই অতিরঞ্জিত হবে না। সমুদ্রের বুকে ভেসে থাকা এই এক টুকরো স্বর্গে ঢেউয়ের শব্দে শোনা যায় নিরবতার ঐকতান। চলুন, জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ছেঁড়া দ্বীপে যাওয়ার উপায় এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
ছেঁড়া দ্বীপের অবস্থান
বঙ্গোপসাগরের বুকে প্রায় ৩ কিলোমিটার বিস্তৃত ছোট্ট এই দ্বীপপুঞ্জ সেন্টমার্টিন থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রশাসনিকভাবে এর অবস্থান চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজারের অন্তর্গত টেকনাফ উপজেলায়; ইউনিয়নের নাম সেন্টমার্টিন। এখানে রয়েছে ১০০ থেকে ৫ বর্গমিটারের ছোট ছোট কয়েকটি দ্বীপ।
ছেঁড়া দ্বীপের নামকরণ ও ইতিহাস
স্থানীয়দের কাছে এর নাম ‘ছেঁড়াদিয়া’; কেউ কেউ বলেন ‘সিরাদিয়া’, যেটি এর ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে কিছুটা ‘ছেঁড়া’ বা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এমন নামকরণ।
২০০০ সালের শেষের দিকে দ্বীপটির অস্তিত্ব প্রথমবারের মতো ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। নব্বইয়ের দশকে এখানে পাওয়া গিয়েছিল ৬৬ প্রজাতির প্রবাল ও জীববৈচিত্র্যের অস্তিত্ব, যার মধ্যে এখন টিকে আছে মাত্র ১০টি প্রজাতি।
আরো পড়ুন: কলকাতায় কেনাকাটার জনপ্রিয় স্থান
ঢাকা থেকে ছেঁড়া দ্বীপ যাওয়ার উপায়
প্রথমেই যাত্রা করতে হবে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে। ঢাকা থেকে টেকনাফ; তারপর সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন হয়ে ছেঁড়া দ্বীপ।
সরাসরি টেকনাফ পৌঁছার একমাত্র উপায় হচ্ছে বাসে যাতায়াত। রাজধানীর সায়েদাবাদ, কলাবাগান, ফকিরাপুলে টেকনাফের বাস পাওয়া যায়। ভাড়া মাথাপিছু ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা।
কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে কক্সবাজার পর্যন্ত যাওয়া যাবে। এ যাত্রায় খরচ হবে সর্বনিম্ন জনপ্রতি ৬৯৫ থেকে সিটের ধরণভেদে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৮০ টাকা পর্যন্ত। বিকল্প হিসেবে বিমানে করেও কক্সবাজার পর্যন্ত যাওয়া যেতে পারে। বিমান ভাড়া সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা; ধরণভেদে টিকেট সর্বোচ্চ ১১ হাজার টাকা পর্যন্তও রয়েছে।
টেকনাফে পৌঁছে প্রথম কাজ হচ্ছে সি-ট্রাক বা জাহাজের টিকেট কাটা। টেকনাফের জাহাজঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে সেন্টমার্টিনের জাহাজ ছাড়ে। ফিরতি ট্রিপ রওনা হয় বিকাল ৩টা থেকে সাড়ের ৩টা নাগাদ। সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই রুটিনটি অবশ্যই যথাযথভাবে মেনে চলা জরুরি। যাওয়া-আসাসহ এ যাত্রায় ভাড়া পড়ে জনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকার মধ্যে।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সেরা ১০ মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত
সেন্টমার্টিনের জেটি থেকে ছেঁড়া দ্বীপ যাওয়ার জন্য রয়েছে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও স্পিডবোট। ট্রলারে গেলে জনপ্রতি ভাড়া পড়ে ২৫০ টাকা করে। রিজার্ভ করে নিলে ট্রলারের আকার ভেদে খরচ পড়তে পারে প্রায় ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। স্পিডবোটে যেতে চাইলে ভাড়া পড়বে ৩ হাজার টাকা।
তবে ভাটার সময় পানি নেমে গেলে মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেল ভাড়া নিয়েও রওনা হওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে অনন্য অভিজ্ঞতা নিতে অনেকে পায়ে হেঁটেও ছেঁড়া দ্বীপ চলে যান। এভাবে হেঁটে যেতে সময় লাগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাইসাইকেল কিংবা মোটরসাইকেলগুলো ছেঁড়া দ্বীপে সরাসরি প্রবেশ করতে পারে না। সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে ছেঁড়া দ্বীপ সংলগ্ন পয়েন্টে নির্ধারিত ফি দিয়ে সাইকেল রাখতে হয়। তারপর সেখান থেকে শুরু হয় পায়ে হাঁটা পথ।
ছেঁড়া দ্বীপ ভ্রমণে কি কি দেখবেন
প্রবাল প্রাচীরে ঘেরা এই জনবসতিহীন দ্বীপের প্রধান বাসিন্দা শামুক, ঝিনুক ও কাকড়া। স্বচ্ছ পানির নিচে কদাচিৎ চোখে পড়ে রঙিন মাছ। একদিকে লোনা জলে সিক্ত প্রবালের বিস্তীর্ণ সৈকত, অন্যদিকে ঝোপঝাড় ও উঁচু পাম গাছের সমারোহ। এর সঙ্গে সারি সারি নারকেল গাছ আকাশ রঙা পানির পটভূমিতে এক মোহময় পরিবেশ তৈরি করে। সামুদ্রিক হাওয়ায় বিস্ময়কর নীলিমা আর সূর্যাস্তের রঙিন মিতালী যেকোনো ভ্রমণচারির হৃদয়কে মোহাবিষ্ট করে ফেলতে যথেষ্ট।
আরো পড়ুন:
পূর্ণিমার রাতে অনেক রোমাঞ্চ সন্ধানীরা এখানে চলে আসে ক্যাম্পিং করতে। ছোট ছোট প্রবালদ্বীপগুলো একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় পায়ে হেঁটেই পুরো দ্বীপাঞ্চলটি ঘুরে দেখা যায়। এই আদিম পরিবেশকে অবিস্মরণীয় রাখতে ছবি তোলার লোভ কেউই সামলাতে পারেন না। নিদেনপক্ষে, এটি দেশের সবথেকে আকর্ষণীয় ছবি তোলার স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বিশেষ করে দ্বীপের দক্ষিণ পাশের জলরাশি অনেকটা স্বচ্ছ; আর তাই অনেক বেশি আকাশ রঙের। সমুদ্রের ঢেউ এদিকটায় বেশ শান্ত; তবে ছন্দময়।
ছেঁড়া দ্বীপসহ সেন্টমার্টিনের আশপাশের দ্বীপাঞ্চলে কেওড়া গাছের ঘনত্ব চোখে পড়ার মতো। এই গাছগুলো শুধু দ্বীপের সৌন্দর্য্যই বাড়ায় না, বরং ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় প্রাকৃতিক দূর্গে রূপ নেয়।
আরো পড়ুন: ঢাকা ও নিকটবর্তী এলাকার ১০টি ঐতিহাসিক মন্দির
৭৮ দিন আগে
ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্যের অকৃত্রিম মেলবন্ধনের সান্নিধ্য মিলে এশিয়ার দ্বীপদেশ ভ্রমণে। নিত্য জীবন ধারণের প্রতিচ্ছবিগুলো একই থাকলেও এক ভিন্ন অনুভূতির পরিস্ফুটন ঘটে সাগর পাড়ের শহরগুলোতে। কোথাও বা জনাকীর্ণ অত্যাধুনিক বিপণি জুড়ে চির ব্যস্ততা,কোথাও অতিকায় উচ্চতায় নিঃসীম নিরবতা। সব কিছু ছাপিয়ে পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো। বিশেষ করে গন্তব্য যখন ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ তখন উপকূলবর্তী পর্যটনকেন্দ্রগুলো দেখার নেশাটা অদম্য হয়ে ওঠে। কেননা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই শহর বেশ স্বল্প খরচে একদিনেই ঘুরে শেষ করা যায়। চলুন জনপ্রিয় এই দ্বীপাঞ্চলের ভ্রমণ বৃত্তান্ত বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাটাম দ্বীপের অবস্থান ও বিশেষত্ব
সিঙ্গাপুরের দক্ষিণ উপকূল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার রিয়াউ দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম দ্বীপ শহর বাটাম। সিঙ্গাপুর প্রণালি ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটারের দূরত্বে সিঙ্গাপুর থেকে পৃথক করেছে ভূ-খণ্ডটিকে। দ্বীপটি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের শিল্প ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। পরিবহনসহ বাণিজ্য ও যোগাযোগ নীতিমালায় শিথিলতার কারণে তিন দেশের গ্রোথ ট্রায়াঙ্গেলের একটি অংশ এই বাটাম। বালি ও জাকার্তার পর ইন্দোনেশিয়ার ব্যস্ততম প্রবেশ বন্দরগুলোর মধ্যে এর অবস্থান তৃতীয়।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাটামের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
.
ব্যারেলাং ব্রিজ
রেম্পাং,গালাং ও ব্যারেলাং বাটাম-এই তিন দ্বীপকে সংযুক্ত করে গঠিত হয়েছে এই নান্দনিক সেতু। রিয়াউ দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন ধরনের ছয়টি সেতুর এক দীর্ঘ শৃঙ্খল এই ব্যারেলাং ব্রিজ। সমগ্র ব্যারেলাং অঞ্চলটি ৭১৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। সেখানে সেতুর এক প্রাপ্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার এবং পুরোটা অতিক্রম করতে প্রায় ৫০ মিনিট সময় লাগে।
নোংসা
বাটামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রায় পুরোটাই দখল করে আছে নোংসা অঞ্চলটি। এখানকার সৈকত স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। এখান থেকে নৌকা ভ্রমণ করে যাওয়া যায় অদূরেই পুত্রী দ্বীপে। এছাড়া নোংসা ভূ-খণ্ডেই রয়েছে ম্যানগ্রোভ পান্ডাং তাক জেমু। এটি মূলত একটি ম্যানগ্রোভ বন,যাকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে অপূর্ব একটি রিসোর্ট। বেশ পরিপাটি,কারুকার্যময় এবং গ্রামীণ পরিবেশের আমেজ থাকায় এটি ভ্রমণপিপাসুদের অবকাশ যাপনের জন্য উৎকৃষ্ট জায়গা।
রায়া মসজিদ
আসল নাম গ্র্যান্ড,যেটি ইন্দোনেশিয়ার মেদানে অবস্থিত বাটাম দ্বীপের বৃহত্তম মসজিদ। এটি গড়ে তোলা হয়েছিল মধ্যপ্রাচ্য,ভারতীয় ও স্প্যানিশ স্থাপত্য শৈলীর সন্নিবেশে। এর অষ্টভূজাকার আকৃতি এবং চারপাশ জুড়ে বিস্তৃত শাখাগুলো মসজিদটির বিশেষ আকর্ষণ। দেয়াল, ছাদ, স্তম্ভ, খিলান ও পৃষ্ঠ; সব জায়গায় ফুল ও গাছপালার অলঙ্করণের জয়জয়কার।
আরো পড়ুন: হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
মহা বিহার দূতা মৈত্রেয় মন্দির
উত্তর সুমাত্রার মেদানে অবস্থিত এই মন্দির গোটা ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্তম আধুনিক বৌদ্ধ মন্দির হিসেবে বিবেচিত। মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল ৪ দশমিক ৫ হেক্টর জায়গার ওপর। বুদ্ধ মৈত্রেয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন স্বরূপ তৈরি করা হয়েছিল মঠটি। চীনা সম্প্রদায়গুলোর মাঝে এটি লাফিং বুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। এর ভেতর রয়েছে ড্রাগন,পৌরাণিক প্রাণীদের বিভিন্ন মূর্তি ও ভাসমান চাপাতার একটি ফোয়ারা।
অত্যাধুনিক শপিংমল
বাটাম পর্যটনের এক বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে এর অভিজাত শপিংমলগুলো। তন্মধ্যে ৮ দশমিক ৯ একর আয়তনের নাগোয়া হিল মার্কেটটি সুলভ মূল্যে খুচরা পণ্যের জন্য সুপরিচিত। অনেকেই শুধু এখান থেকে মার্কেট করবেন বলেই বাটামে আসেন।
এছাড়াও রয়েছে ফেরি টার্মিনালের কাছাকাছি অবস্থিত মেগামল বাটাম সেন্টার। সাগর পাড়ে নজরকাড়া স্থাপনাশৈলীর মল দেখার অভিজ্ঞতা নিতে অনেকে ভিড় জমান এখানে।
দ্বীপের ঠিক কেন্দ্রে থাকায় বাটাম সিটি স্কোয়ার বা বিটিএস এখানকার পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় শপিং গন্তব্য।
আরো পড়ুন: দার্জিলিংয়ের টংলু ও সান্দাকফু যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাটাম ভ্রমণের সেরা সময়
এখানে ঋতুর খুব একটা পরিবর্তন হয় না। বিষুব রেখায় ও সমুদ্রের কাছাকাছি হওয়ায় অধিকাংশ সময়েই সর্বত্র জুড়ে আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করে। তাই প্রকৃতিগতভাবেই বেশিরভাগ সময় গরম থাকে। আর বৃষ্টির মৌসুম মানেই একটানা মুষলধারে বৃষ্টি।
মৌসুম যেমনই হোক না কেন,বাটাম ভ্রমণে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো এড়িয়ে চলাই উত্তম। ফেরি টার্মিনাল থেকে শুরু করে শপিংমল সব জায়গায় ভয়াবহ ভিড় থাকে। তাছাড়া এই সময়ে সবকিছু দামও একদম লাগাম ছাড়া থাকে। তাই ভ্রমণের অফ-পিক সময় বেছে নেওয়া উচিত।
আরো পড়ুন: নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাটাম ভ্রমণের জন্য পর্যটন ভিসা নেওয়ার উপায়
বাংলাদেশি পর্যটকরা তিনভাবে বাটাম যেতে পারেন। প্রথম উপায় হলো সরাসরি ইন্দোনেশিয়ার সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা নিয়ে,আর অপর দুটি হলো সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ার ডাবল এন্ট্রি ভিসা নিয়ে। দ্বিতীয় উপায়ে বাটাম ফেরি টার্মিনালে নেমে ইন্দোনেশিয়ার অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিতে হবে।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
ভিসার আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· সম্পূর্ণ পূরণকৃত ভিসা আবেদনপত্র
· কমপক্ষে ৬ মাসের মেয়াদ সম্পন্ন বৈধ পাসপোর্ট
· গত ৩ মাসের মধ্যে তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি
· ফিরতি ফ্লাইট ভ্রমণের অনুলিপি
· অর্থপ্রদানের রশিদ
· ব্যবসা,সম্মেলন বা মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে,বাংলাদেশভিত্তিক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি প্রত্যয়নপত্র বা রেফারেন্স চিঠি। সেই সঙ্গে ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক অংশীদার কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র।
· গত ৩ মাসের মধ্যে কমপক্ষে ২ হাজার মার্কিন ডলার বা ২ লাখ ৩৮ হাজার ৭৯৩ টাকা (১ মার্কিন ডলার = ১১৯ দশমিক ৪০ বাংলাদেশি টাকা) তহবিলের প্রমাণ
· স্বাস্থ্য অর্থায়ন বা চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধের জন্য সম্মতিপত্রসহ ভ্রমণ বিমা |
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়ার বাটাম যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর হয়ে বাটামে সরাসরি প্লেনে যেতে ১০ থেকে ১৬ ঘণ্টা লাগবে। এছাড়া সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ঢাকার নিয়মিত ফ্লাইট আছে,যেগুলোতে সময় লাগবে সোয়া ৪ ঘণ্টা।
তবে সবচেয়ে সাশ্রয়ী হচ্ছে সিঙ্গাপুর কিংবা মালয়েশিয়াতে নেমে সেখান থেকে বাটামের ফেরি ধরা। সমুদ্র ভ্রমণের সুযোগ থাকায় এই যাত্রা আনন্দায়কও বটে। সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা লাগে বাটাম সেন্টার আন্তর্জাতিক টার্মিনালে পৌঁছাতে। ঝকঝকে এই আধুনিক টার্মিনালেই ইন্দোনেশিয়ার অভিবাসের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়।
আরো পড়ুন: দিনাজপুরের রামসাগর দীঘি ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দ্বীপ ভ্রমণে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
গোটা এশিয়া জুড়ে বেশ সমাদৃত পর্যটন স্থান হওয়ায় বাটামে প্রচুর হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। হোটেল ভাড়াও প্রায় সিঙ্গাপুরের অর্ধেক। তিন হাজার টাকার মধ্যেই পাঁচতারকা হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা যায়। ট্রিপ অ্যাডভাইজার,অ্যাগোডা,বুকিং ডট কম থেকে অগ্রিম রুম বুক করে রাখা ভালো।
উপকূলবর্তী হওয়ায় এখানে জনপ্রিয় সামুদ্রিক খাবার। স্থানীয় খাবারগুলোর চেয়ে এগুলোর দাম বেশি হলেও তা সিঙ্গাপুরের তুলনায় অনেক সস্তা।
অন্যান্য খাবারের মধ্যে রয়েছে গাজরের কেক এবং মরিচ ও মিষ্টি সয়া সসের সঙ্গে কেওয়ে টিও কাই পু। এটি মূলত ডিম,মাংস,মুরগি বা সামুদ্রিক খাবারের টপিংস দিয়ে এক ধরনের বিশেষ নুডলস।
আরো পড়ুন: সুন্দরবনের কটকা সমুদ্র সৈকত: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক ভ্রমণ খরচ
বাটামের আভ্যন্তরীণ ভ্রমণের সম্ভাব্য খরচ
ফেরিতে অভিবাসন শুল্কসহ বাটাম যাওয়া-আসায় খরচ পড়বে জনপ্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। দ্বীপের ভেতর আবাসন বাবদ খরচ হতে পারে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়ার মধ্যে। এই খরচ প্রায় ৪৫৪ থেকে ৯০৮ টাকার (১ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া = ০ দশমিক ০০৭৬ বাংলাদেশি টাকা) সমান।
প্রতি বেলা খাবারের জন্য ব্যয় করতে হবে ২৫ থেকে ৫০ হাজার রুপিয়া (১৮৯ থেকে ৩৭৮ টাকা)। এভাবে প্রতিদিনের খাবার বাবদ ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার রুপিয়া (৭৫৭ থেকে ১ হাজার ১৩৫ টাকা) বাজেট রাখা যেতে পারে।
শহরের ভেতরে যাতায়াতের জন্য বাজেট রাখতে হবে দিনপ্রতি ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ রুপিয়া। এই বাজেট প্রায় ১ হাজার ৮৯১ থেকে ২ হাজার ২৭০ টাকার সমতূল্য।
আরো পড়ুন: বর্ষাকালে সুউচ্চ ঝর্ণা-পাহাড়ে হাইকিং ও ট্রেকিং: ঝুঁকির কারণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
ভ্রমণকালীন কিছু প্রয়োজনীয় সতর্কতা
· মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর বা ইন্দোনেশিয়া যেভাবেই যাওয়া হোক না কেন; অভিবাসনের প্রয়োজনীয় প্রতিটি কাগজপত্র সঙ্গে রাখা জরুরি। বিশেষ করে বাংলাদেশে ফেরার বিমান টিকিট,হোটেল বুকিং স্লিপ এবং পর্যাপ্ত ডলারের এন্ডোর্সমেন্ট।
· শহরের ভেতরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাতায়াতের জন্য নিরাপদ উপায় হচ্ছে গ্র্যাব এবং গোজেক রাইডিং অ্যাপগুলো ব্যবহার করা। এছাড়া ট্যাক্সি ক্যাবের তুলনায় ভ্যান ভাড়া করাটা অধিক সাশ্রয়ী।
· শীতের সময়েও দিনের বেলা রোদের তীব্রতা থাকে। তাই সঙ্গে হালকা পোশাক, সানস্ক্রিন, সানগ্লাস ও হেডক্যাপ রাখা ভালো।
· ব্যাগপ্যাক বহন করা উত্তম, তবে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন অত্যধিক ভারী হয়ে না যায়।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
পরিশিষ্ট
ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ মাঝ সাগরে প্রাণের সরব স্পন্দনের এক অমূল্য অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে নোংসার আদিম সৈকত এবং ব্যারেলাং ব্রিজের বিস্ময়কর স্থাপত্য যেন অবিনশ্বর স্মৃতিচিহ্নের নামান্তর। সিঙ্গাপুর থেকে স্বল্প দূরত্বের পানিপথ যোগাযোগ থাকায় বাজেট-বান্ধব ভ্রমণের উপযোগী হয়ে উঠেছে গন্তব্যটি। এখানকার থাকা-খাওয়া ও আভ্যন্তরীণ যাতায়াত ব্যবস্থা সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ার মূল শহরগুলোর তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী। বাংলাদেশিদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা থাকায় আরও চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠেছে সুযোগটি। তাই অতিরিক্ত খরচের চাপ ছাড়াই একটি নিশ্চিন্ত ছুটি কাটানোর জন্য সেরা গন্তব্য এই এশীয় দ্বীপ।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
১৬০ দিন আগে
ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
সাগরের উন্মত্ত জলরাশির স্পন্দনের সাথে একাত্মতা হওয়ার উচ্ছাস আর বালুকাবেলায় রোদ্দুরের সোনালী আলিঙ্গন। এর আরেক নাম সমুদ্র বিলাসী অভিলাষ, যা সযত্নে লালন করে চলে প্রতিটি সৈকতপ্রেমী। কেবল ফিসফিস করে অসীম দিগন্তের সূর্যের শেষ বিন্দু দেখার প্রশান্তি নয়, এখানে আছে অনন্তে হারিয়ে যাওয়ার আধ্যাত্মিকতা। এরই প্রাচুর্য ধরে রাখে পর্বত শিখরের মহান মন্দিরগুলো। এই ঐশ্বর্য্যের পসরা ছড়িয়ে থাকা বসতিগুলো যেন প্রত্যহ গেয়ে যায় জীবনের গান। এ গানের সঙ্গে ঐকতানে বাজে সাগরতলের জীববৈচিত্র্যের সুর। নৈসর্গিক কার্নিভালের এমন আয়োজনের দেখা মেলে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে। পর্যটনের জমজমাট বিপণীতে এখনো নিজের সপ্রতিভ উপস্থিতি ঘোষণা করে দ্বীপের আদিম পটভূমি। চলুন, দ্বীপাঞ্চলটির দর্শনীয় স্থানগুলোর পাশাপাশি জেনে নেওয়া যাক দ্বীপের যাবতীয় ভ্রমণবৃত্তান্ত।
বালি দ্বীপের ভৌগলিক অবস্থান
ইন্দোনেশিয়ার বালি প্রদেশের এই দ্বীপটি জাভা থেকে ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার পূর্বে এবং বিষুব রেখা থেকে প্রায় ৮ ডিগ্রি দক্ষিণে অবস্থিত। জাভা ও এই দ্বীপের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বালি প্রণালী। দ্বীপটির বিস্তৃতি পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রায় ১৫৩ কিলোমিটার এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ১১২ কিলোমিটার। প্রশাসনিকভাবে ৫ হাজার ৭৮০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য্যমন্ডিত এই দ্বীপ।
‘বালি’ নামকরণের ইতিহাস
রাজা শ্রী কেশরী ওয়ারমাদেওয়া ৯১৩ সালে এই দ্বীপের নাম দিয়েছিলেন ‘বালি’। এটি মুলত সংস্কৃত শব্দ বলি থেকে এসেছে যার অর্থ ত্যাগ, পুনর্জন্ম বা উৎসর্গ। এই শব্দটি এই অঞ্চলে আবিষ্কৃত বিভিন্ন শিলালিপিতে পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে একটি দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চল সানুরের ‘ওয়ালি দ্বীপা’ শব্দ খোদাইকৃত ব্লাঞ্জং স্তম্ভ। এই শিলালিপির কাজটি করা হয়েছিলো ৯১৪ সালে রাজা ওয়ারমাদেওয়ার শাসনামলে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় কেনাকাটার জনপ্রিয় স্থান
ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন ভিসা পাওয়ার উপায়
বালি দ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার প্রথম শর্ত ইন্দোনেশিয়ার সিঙ্গেল বা মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা নেয়া। এই ভিসার আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন হবে, তা হলো-
ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সম্পূর্ণ পূরণকৃত ভিসা আবেদনপত্র (ফর্মটি পাওয়া যাবে এই লিঙ্কে https://kemlu.go.id/download/)
ইন্দোনেশিয়ায় আগমনের তারিখে কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী পাসপোর্ট
বিগত ৬ মাসের মধ্যে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা একটি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি। সফ্ট কপি ১০০ থেকে ২০০ কিলোবাইটের জেপিইজি ফাইল হতে হবে
ফিরতি ট্রিপসহ ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার বিমান টিকেটের অনুলিপি
ভিসা ফি প্রদানের রশিদ
আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ হিসেবে গত ৩ মাসের মধ্যে কমপক্ষে ২ হাজার মার্কিন ডলারের তহবিলের প্রমাণ। বাংলাদেশি টাকায় এই তহবিল ২ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৭ (১ মার্কিন ডলার = ১১৬ দশমিক ৪৯ বাংলাদেশি টাকা) টাকার সমতুল্য।
চিকিৎসা ব্যয় সঙ্কুলানের বিবৃতি পত্রসহ একটি ভ্রমণ বীমা
কোভিড-১৯ প্রোটোকল মেনে চলার বিবৃতি পত্র এবং টিকার সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়ার প্রমাণপত্র
আরও পড়ুন: আইসল্যান্ড ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ভিসার মেয়াদ, ফি এবং আবেদন জমা
এই ভিসার মেয়াদ একক প্রবেশে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের জন্য বৈধ থাকে। ভিসার ফি ১০ হাজার ৫০০ টাকা। আবেদনের সমুদয় কাগজপত্র সহ ঢাকার ইন্দোনেশিয়া দূতাবাসের কনস্যুলার সার্ভিস কাউন্টারে জমা করতে হবে।
সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আবেদন জমা নেয়া হয়।
ইমেইল ঠিকানার (consular@indonesia-bd.org) মাধ্যমে সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া যায়।
বালি দ্বীপ ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে রৌদ্রজ্জ্বল দিনগুলোতে বালি দ্বীপ ভ্রমণের সেরা সময়। এই মৌসুমের ব্যাপ্তি এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত, তবে জুলাই ও আগস্টে পর্যটকদের ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এ সময় হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে যাবতীয় ভ্রমণ পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে করতে হয়।
বালিতে আর্দ্র ঋতু থাকে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত। ক্রিসমাস এবং নিউ ইয়ার ছাড়া বাকি সময়গুলোতে এখানে পরিব্রাজকদের চাপটা কম থাকে। তাই নিরিবিলিতে সমুদ্র বিলাসে যেতে হলে এই মৌসুমটাই উত্তম।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের মাফুশি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
৩৩৩ দিন আগে
থাইল্যান্ডের ক্রাবি ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দ্বীপদেশের মনমুগ্ধতার নেপথ্যে রয়েছে রোদের আলোয় চিকচিক করা বালি আর আলোক ছটা দেওয়া ঢেউ। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বালুকাবেলায় ঝিনুকের আঁকিবুকিগুলো যেন সাবধানে পা ফেলতে বলে সৈকতপ্রেমিককে। এরপরেও উপেক্ষা করা যায় না খালি পায়ে হাঁটা বা সূর্যস্নানের হাতছানি। সমুদ্রের বিশাল বিস্তৃতির উপর দিয়ে লালিমার দিগন্ত রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়া এক অদ্ভূত শিহরণ জাগিয়ে তোলে।
এই প্রতিটি উপাচারকে সঙ্গে নিয়ে মহাদেশগুলোতে বিচিত্রভাবে সেজে ওঠে সমুদ্রবিলাস। এমনি একটি মহাদেশ এশিয়া, যেটি বিশ্বের সেরা দ্বীপদেশগুলো নিয়ে যুগ যুগ ধরে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান ধরে রেখেছে। এমনকি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় কিছু পর্যটন স্থান পরম যত্নে লালন করে চলেছে মনোরম সব সমুদ্র সৈকত। তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ মিলবে থাইল্যান্ডের ক্রাবিতে গেলে। চলুন, অনন্য নান্দনিকতায় ভরপুর ক্রাবি ভ্রমণের আদ্যোপান্ত জেনে নেওয়া যাক।
ক্রাবির ভৌগলিক অবস্থান
দক্ষিণ থাইল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলের ক্রাবি প্রদেশের রাজধানীর নাম ক্রাবি। চুনাপাথরের কার্স্ট এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে অবস্থিত এই শহর থেকে ক্রাবি নদী ফাং নাগা উপসাগরের সঙ্গে মিশেছে। আন্দামান উপকূলের কাছাকাছি এই রিসোর্ট শহরটি ব্যাংকক থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
ক্রাবির নামকরণের ইতিহাস
এই শহরের নাম নিয়ে দুটি গল্প প্রচলিত আছে। প্রথম গল্পটি একটি প্রাচীন তলোয়ার নিয়ে। একবার এই স্থানের অধিবাসীরা এখানকার মাটি থেকে অতিকায় একটি তলোয়ার খুড়ে বের করে। এই তলোয়ারটি পরে প্রদেশের গভর্নরের কাছে পেশ করা হয়। এরপর আরও একটি তলোয়ার মাটি খুড়ে বের করা হয়, তবে এবারেরটা একটু ছোট ছিল। এটিও সেই গভর্নরের কাছে সোপর্দ করা হয়। গভর্নরসহ তখনকার সাধারণ মানুষ এই তলোয়ার দুটিকে বেশ মূল্যবান এবং পবিত্র বলে মনে করতেন। অতঃপর গভর্নরের নির্দেশে তলোয়ার দুটিকে আড়াআড়িভাবে ‘খাও কানাব নাম’ নামে একটি গুহায় স্থাপন করা হয়। এই তলোয়ার দুটির নাম ছিল ক্রাবি। যেটির নামেই পরবর্তীতে এই স্থানের নামকরণ হয়। বর্তমানে পর্যটকরা ক্রাবিতে ঘুরতে যেয়ে একবার হলেও এই তলোয়ার দুটিকে দেখে যান।
আরও পড়ুন: আইসল্যান্ড ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দ্বিতীয় গল্পটি লুম্ফি নামের একটি গাছ নিয়ে। চীনা এবং মালয় বণিকরা এটিকে খো-লো-বি কিংবা কা-লু-বি উচ্চারণ করতো। কিন্তু এই দুই শব্দই ছিল ভুল। আর এই ভুল শব্দেই জায়গাটি কয়েক যুগ ধরে পরিচিত থাকে। পরে পাওয়া যায় যে, সেই ভুল শব্দগুলোর সঠিক শব্দ হচ্ছে ক্রাবি। অবশেষে এই নতুন নামেই জায়গাটি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে।
৩৪০ দিন আগে
আইসল্যান্ড ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
কোনো পর্যটন স্থানের সৌন্দর্য গৌণ হয়ে যায় যখন সেখানে ভ্রমণকালীন নিরাপত্তার প্রসঙ্গ আসে। একটি দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে সে দেশের পর্যটন শিল্পের উপর। সামগ্রিকভাবে নিরাপদ ভূ-খণ্ড নিশ্চিন্তে ভ্রমণের রসদ যোগায়। এই দিক থেকে নিমেষেই শীর্ষস্থানটি পেয়ে যেতে পারে আইসল্যান্ড নামের দেশটি। কেননা ২০২৩ সালের বৈশ্বিক শান্তি সূচক অনুসারে দেশটি অর্জন করেছে সর্বনিম্ন স্কোর; ১ দশমিক ১২৪।
এই সর্বনিম্ন মান বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থার দিকে নির্দেশ করে। এ নিয়ে দেশটি টানা ১৬ বার বিশ্বের এক নম্বর শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে মনোনীত হলো। নর্ডিক এই দেশটিতে ঘুরে বেড়ানো নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন, আইসল্যান্ডের দর্শনীয় স্থানসহ যাবতীয় ভ্রমণ খরচ নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আইসল্যান্ডের ভৌগোলিক অবস্থান
উত্তর আটলান্টিক এবং আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যবর্তী একটি দ্বীপ দেশ আইসল্যান্ড। উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের মধ্যবর্তী আটলান্টিক রিজের উপর অবস্থিত এই দেশটি বিশ্বের ১৮-তম বৃহত্তম দ্বীপ। গ্রেট ব্রিটেনের পরে এটিই ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। এর প্রধান দ্বীপ ১ লাখ ১ হাজার ৮২৬ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। সমগ্র দেশটির ১ লাখ ৩ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ৬২ দশমিক ৭ শতাংশই তুন্দ্রা অঞ্চল।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, ঘুরতে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
স্থলভাগের দিক দিয়ে উত্তর আমেরিকার তুলনায় আইসল্যান্ড ইউরোপের বেশি কাছাকাছি। কিন্তু জলভাগের দিক থেকে এটি উত্তর আমেরিকার দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের সবচেয়ে কাছে। তবে ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, এবং ভাষাগত কারণে আইসল্যান্ড ইউরোপের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
৩৪২ দিন আগে
সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের উপকূল থেকে বিশাল জলরাশির উপর বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত বুককে আশ্রয় করে আছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলো। চর নামের প্লাবনভূমিগুলো অঙ্গে ধারণ করে আছে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের পলি মাটিকে। এই দ্বীপপুঞ্জের প্রত্যেকটিতে আছে আদিম জীবনের ঘ্রাণ। আছে অপরিচিত সম্প্রদায়ের মাঝে সাবলীল প্রবেশাধিকার। জেলে গ্রামগুলোর সংগ্রামী দিন যাপন, আতিথেয়তা, আর সংস্কৃতি নিমেষেই আপন করে নেয় স্তম্ভিত পর্যটককে। এমনি শত শত দ্বীপের মাঝে অন্যতম একটি দ্বীপ সোনাদিয়া। সমুদ্র-বিলাসীদের এই চিরন্তন গন্তব্যে পাড়ি জমাতে চলুন, এই দ্বীপাঞ্চলে ভ্রমণ নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সোনাদিয়ার ভৌগলিক অবস্থান
বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন স্থান কক্সবাজার থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত মহেশখালী। এই উপজেলার অন্তর্গত কুতুবজোম ইউনিয়নের ছোট্ট একটি দ্বীপ সোনাদিয়া। প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটারের এই দ্বীপটি একটি খাল দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়েছে মহেশখালী দ্বীপ থেকে।
ভূতত্ত্ববিদ ও ভূগোলবিদদের মতে, বাঁকখালী নদীর স্রোতধারা ও মহেশখালী প্রণালীর সঙ্গে সাগরের ঢেউয়ের সংঘর্ষে এই দুই এলাকার ঠিক মাঝে বালি জমে জমে জন্ম নিয়েছে সোনাদিয়া দ্বীপ।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
সোনাদিয়া দ্বীপের নামকরণের ইতিহাস
১০০ থেকে ১২৫ বছর আগে সাগরের মাঝে জেগে ওঠা এই চরে মানুষের বসতি গড়ে উঠে। এরই মাঝে এ দ্বীপের সঙ্গে জড়িয়ে যায় রোমাঞ্চকর সব কিংবদন্তি।
একদা এক বিদেশী জাহাজ মহেশখালীর উপকূলের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় পর্তুগিজ জলদস্যুদের কবলে পড়ে। মালবাহী এই বাণিজ্যিক জাহাজে ছিল প্রচুর পরিমাণ স্বর্ণ। নাবিকদের সঙ্গে জলদস্যুদের সংঘর্ষে পুরো জাহাজটি সাগরের নিচে তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই দূর্ঘটনাস্থলে বালি ও পলি জমে আস্ত এক দ্বীপের সৃষ্টি হয়। স্বর্ণবাহী জাহাজডুবির ঘটনার কারণে স্থানীয় জেলেদের মাঝে দ্বীপটি স্বর্ণ দ্বীপ বা সোনাদিয়া দ্বীপ নামে পরিচিতি পায়।
এই জায়গাটি নিয়ে লোকমুখে আরও মজার মজার গল্প শোনা যায়। প্রায় পৌনে তিনশ’ বছর আগের কথা। একবার লুতু বহদ্দার নামের এক জেলের জালে এক অদ্ভূত ও রহস্যময় পাথর ধরা পড়ে। পাথরটি সে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে আসে এবং তা ঘরে ঢোকার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
একদিন এক নাপিত এই সিঁড়িতে বসে কাঁচিতে ধার দেওয়ার সময় অসাবধানে পাথরটি ভেঙ্গে ফেলে। আর সঙ্গে সঙ্গেই তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একটি স্বর্ণমুদ্রা। অতঃপর বহদ্দার ও নাপিত সেই স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। লুতু বহদ্দার যে স্থানে জাল ফেলেছিল সেটি ছিল মূলত একটি চরের সৈকত। আর সেই চরটিই আজকের সোনাদিয়া দ্বীপ।
কেউ কেউ মনে করেন, এক সময় এখানে মুক্তার চাষ হতো। সেই মুক্তা কেনা-বেচা হতো স্বর্ণের দামে। আর এই কারণেই দ্বীপের নামকরণ করা হয় সোনাদিয়া।
৩৫১ দিন আগে
সুপারশী: যে দ্বীপে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
বিশ্ব পরিব্রাজকদের শীর্ষ সারিতে নারীদের অবস্থান এখন আর নতুন কোনও ব্যাপার নয়। গহীন অরণ্য, আকাশচুম্বী পর্বতশৃঙ্গ, এমনকি সাগরের মাঝে জেগে থাকা প্রবাল দ্বীপেও নারীরা এখন সাবলীলভাবে বিচরণ করছে। নারীদের ভ্রমণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে নিরাপত্তা। ভ্রমণকালে পুরুষদের অযাচিত আচরণের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের ভ্রমণ হয়ে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এমন রূঢ় বাস্তবতার মাঝে অনেক নারী হয়তো এমন কোনো স্থানে ভ্রমণ করতে চান যেটা হবে পুরুষের ছায়া মুক্ত। ‘সুপারশী’ দ্বীপের গল্পটা ভ্রমণপিপাসু নারীদের কাছে কিছুটা স্বপ্নের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে আসলেই এমন একটি দ্বীপ আছে, যেটি শুধু নারীদের এবং যেখানে কোনও পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই। চলুন, বিস্ময়কর এই দ্বীপটির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সুপারশী দ্বীপের ভৌগলিক অবস্থান
মধ্যরাতের সূর্যের দেশ ফিনল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলবর্তী শহর রেইসবর্গ মিশে গেছে বাল্টিক সাগরে। এই রেইসবর্গ সৈকতের কাছাকাছি বাল্টিক সাগরের বুকে রেইসবর্গ দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট্ট দ্বীপ ফিওর্ড্স্কার। ৮ দশমিক ৪ একরের এই ভূ-খন্ডটি রাজধানী হেলসিন্কির অন্তর্গত রেইসবর্গ শহরের অংশ। এই ফিওর্ড্স্কারই ২০১৮ সাল থেকে সুপারশী নাম নিয়ে বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র নারীদের দ্বীপের মর্যাদা অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: সাধ্যের মধ্যে মালদ্বীপের বিকল্প হতে পারে এশিয়ার যেসব ট্যুরিস্ট স্পট
সুপারশী উদ্যোগের পটভূমি
জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান নারী উদ্যোক্তা ক্রিস্টিনা রথ ২০১৭ সালে ক্রয় করেন ফিওর্ড্স্কার দ্বীপটি। এই রথ ফোর্বসের দ্রুত সফলতা অর্জনকারী শীর্ষ ১০ নারী উদ্যোক্তাদের একজন। ২০১৬ সালে তিনি তার প্রযুক্তি পরামর্শদানকারী সংস্থা ‘ম্যাটিসিয়া কন্সাল্ট্যান্ট্স’ ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি করেন। বাংলাদেশি টাকায় এর মূল্য ৭১৩ কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা (১ মার্কিন ডলার = ১০৯ দশমিক ৭৩ বাংলাদেশি টাকা)।
ফিওর্ড্স্কারের মালিক হওয়ার পর রথ দ্বীপের নামকরণ করেন ‘সুপারশী’। তার উদ্দেশ্য ছিল মূলত নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে বিশ্বের নানান পেশাজীবী নারীদের সান্নিধ্য পাওয়ার। আর এরই অঙ্কুরে জন্ম নেয় সুপারশী।
শুরু থেকেই রথ দ্বীপে শুধুমাত্র নারীদের প্রবেশের রীতি চালু রেখেছিলেন। দ্বীপের বিদ্যুৎ ও পানির লাইন স্থাপনের জন্য পুরুষ নির্মাণ শ্রমিকদের প্রবেশাধিকার ছিল। এছাড়া বিশেষ অনুমতি ছিল রথের ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে অল্প কিছু সংখ্যক পুরুষদের।
আরও পড়ুন: আপনি কি মার্কিন ডলার না কিনে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন?
বেশ কয়েকটি মিডিয়াতে নিজের এই উদ্যোগের কথা শেয়ার করেন রথ। মুহুর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যাওয়ায়, দ্বীপের সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার আগেই বুকিং-এর অনুরোধ আসতে শুরু করে। গোটা বিশ্ব থেকে ৮ হাজারেরও বেশি নারী পর্যটকের আবেদন এসেছিল। এর মধ্য থেকে রথ ১৫০ জনের ভিডিও সাক্ষাৎকার নেন।
অবশেষে ২০১৮ সালের ২৩ জুন পুরো একটি দ্বীপ রিসোর্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করে ‘সুপারশী’।
২০২৩ সালের শেষের দিকে শিপিং নির্বাহী কর্মকর্তা ডেয়ান মিহভ দ্বীপটি কিনে নেন এক মিলিয়ন ইউরোতে। মূল্যটি প্রায় ১১ কোটি ৯০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯০ টাকার (১ ইউরো = ১১৯ দশমিক ১৫ বাংলাদেশি টাকা) সমান। মালিকানা পরিবর্তনের পরেও চিত্তবিনোদনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
৪১৫ দিন আগে
সেন্টমার্টিন দ্বীপে দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে বিজিবি
সেন্টমার্টিনে ২০০ দরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের সীমান্তবর্তী এলাকা পরিদর্শন শেষে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।
এর আগে বুধবার তিনি কক্সবাজার-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী পালংখালী ও ঘুমধুম বিওপি পরিদর্শন করেন।
এসময় অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালানসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সীমান্তে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি গোয়েন্দা কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন বিজিবি মহাপরিচালক।
৪৫৬ দিন আগে
মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচ
অন্যান্য দ্বীপদেশগুলোর মত জাঁকজমক না হলেও, বাংলাদেশের উপকূলগুলো মোটেই বঞ্চিত হয়নি প্রাকৃতিক শোভা থেকে। পৃথিবীর এই বৃহত্তম ব-দ্বীপের আঙ্গিনা সযত্নে ধুয়ে দিয়ে যায় বঙ্গোপসাগরের ফেনিল জলরাশি। সামুদ্রিক হাওয়ার পরশে পলিমাটির অলঙ্করণে যেন নিয়ত সেজে থাকে কাঁচা জীবনধারার ঘনবসতিগুলো।
২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মনপুরা চলচ্চিত্রটি ঠিক যেন এমনি এক কাদামাটি তুলে এনেছিল সাগরের বুক থেকে। তারপর চলচ্চিত্রপ্রেমি থেকে ভ্রমণপিপাসুদের হৃদয় অব্দি পাড়া হতে খুব বেশি সময় লাগেনি মনপুরার। দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে সরাসরি কোনো যোগসূত্র না থাকলেও তারা ছুটে গেছে এই দ্বীপ সৈকতে।
চলুন, সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক এই মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণের আদ্যোপান্ত।
মনপুরা নামের পটভূমি
দ্বীপের নাম কিভাবে মনপুরা হলো সে নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। স্থানীয় বায়োজ্যেষ্ঠগণের মতে, দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্য্য ও উপকূলবর্তী খাবার আগন্তুকদের মন জয় করত। এ কারণেই দ্বীপ ও ইউনিয়নের নাম মনপুরা হয়েছে।
অনেকের ধারণা, মনগাজী শাহবাজপুর জমিদারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছিলো বিস্তৃত এই জায়গাটি। ফলে তার নামের উপর ভিত্তি করেই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায়
এছাড়া একটি অদ্ভূত গল্পও প্রচলিত আছে এ দ্বীপকে ঘিরে। জায়গাটিতে আগে বাঘ ও হাতীর মত হিংস্র সব জন্তু-জানোয়ার বিচরণ করতো। একদা মনগাজী নামের এক লোক বাঘের আক্রমণে শিকার হয়ে বেঘোরে প্রাণ হারান। সেই থেকে সবাই দ্বীপটিকে মনপুরা নামে ডাকতে শুরু করে।
৫৫১ দিন আগে