চন্দ্রাভিযান
নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: দ্বিতীয় প্রচেষ্টাও ব্যর্থ, পরবর্তী চেষ্টা কয়েক সপ্তাহ পর
মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) শনিবারের পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান রকেট উৎক্ষেপণ বিপজ্জনক জ্বালানি ত্রুটির কারণে আবারও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ট্যাংকের জ্বালানি নির্গতজনিত সমস্যার কারণে উৎক্ষেপণ নিয়ন্ত্রকদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টাও কয়েক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যা মাস পর্যন্তও গড়াতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
৩২২ ফুট উঁচু স্পেস লঞ্চ সিস্টেম নাসার এ পর্যন্ত নির্মিত শক্তিশালী রকেটটির সোমবারের চেষ্টাতেও হাইড্রোজেন জ্বালানি ত্রুটি দেখা দেয়। তবে তা তুলনামূলক কম ছিল। তবে একই সমস্যা এ বছরের শুরুর দিকে পরীক্ষামূলক চেষ্টাটি বড় আকারের ছিল।
নাসার কর্মকর্তাদের মতে, আরও মেরামত ও সিস্টেম আপডেটের জন্য মিশন ব্যবস্থাপকরা রকেটটিকে লঞ্চ প্যাডে রেখেছে। যেখানে নানা পরীক্ষা চালিয়ে দেখা হবে। এ কাজ করতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই সপ্তাহের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় পরবর্তী পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চেষ্টা সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরে করা হতে পারে। নাসা আপাতত অক্টোবরের শুরুতে নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে একটি বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত স্পেসএক্স মহাকাশচারী ফ্লাইট নিয়ে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: নাসা: ইঞ্জিন ত্রুটি সাড়ার পর শনিবার নতুন চন্দ্রযান রকেট উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নির্ধারণ
নাসার প্রশাসক বিল নেলসন জোর দিয়ে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। কারণ পরীক্ষামূলক এই চেষ্টার ওপর নির্ভর করছে পরবর্তীতে নভোচারীদের সশরীরে চাঁদে পা রাখার সফলতা।
তিনি বলেন, ‘শুধু মনে রাখবেন যে এটি সঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা উৎক্ষেপণ করছি না।’
উৎক্ষেপণ পরিচালক চার্লি ব্ল্যাকওয়েল-থম্পসন ও তার দল ভোরবেলায় স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটে প্রায় ১০ লাখ গ্যালন জ্বালানি ঢালা শুরু করতেই নিচের দিকে ইঞ্জিন অংশে জ্বালানি নির্গতজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
গ্রাউন্ড কন্ট্রোলাররা পূর্বে ছোট ছিদ্রগুলো যেভাবে বন্ধ করেছিল সেভাবে চেষ্টা করে দেখে। সরবরাহ লাইনের একটি সীলের চারপাশে ফাঁক বন্ধ করার আশায় অতি ঠান্ডা তরল হাইড্রোজেনের প্রবাহ বন্ধ করে পুনরায় চালু করে দেখেছেন তারা। তারা দুবার চেষ্টা করেছিল এবং লাইনের মধ্য দিয়ে হিলিয়ামও প্রবাহিত করেছিল। তবুও সমাধা হয়নি।
আরও পড়ুন: নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: জ্বালানি ত্রুটির কারণে রকেট উৎক্ষেপণে বাধা
ব্ল্যাকওয়েল-থম্পসন তিন থেকে চার ঘণ্টার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর অবশেষে থামিয়ে দেয়।
মিশন ম্যানেজার মাইক সারাফিন সাংবাদিকদের বলেন, ঠিক কি কারণে সমস্যাটি হয়েছে তা এখন নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে সকালে হাইড্রোজেন লাইনের অসাবধানতাবশত অত্যধিক চাপের কারণে কেউ একজন ভুল ভাল ঘুড়ানোর কারণে হতে পারে।
সারাফিন বলেন, ‘এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিদ্র ছিল না। নির্গত হাইড্রোজেন দুই বা তিনবার দাহ্য সীমা অতিক্রম করেছে।’
চাঁদে নভোচারীদের ক্যাপসুল পাঠানোর জন্য ইতোমধ্যেই নাসা অনেক বছর অপেক্ষা করেছে। ছয় সপ্তাহের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সফল হলেই ২০২৪ সালে চাঁদের কক্ষপথ দিয়ে রকেট প্রদক্ষিণ করতে পারবে এবং ২০২৫ সালে নভোচারী চাঁদে পা রাখতে পারবে। এর আগে মানুষ চাঁদে পা রেখেছিল ৫০ বছর আগে।
হাজার হাজার দর্শনার্থী যারা ফ্লোরিডার উপকূলে ভিড় জমিয়েছিল তারা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যায়।
উল্লেখ্য, গ্রীক পুরাণ অনুসারে ৪১০ কোটি মার্কিন ডলারের এই পরীক্ষামূলক অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে আর্টেমিস।
আরও পড়ুন: নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: শনিবার উৎক্ষেপণের দ্বিতীয় চেষ্টা
২ বছর আগে
নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: শনিবার উৎক্ষেপণের দ্বিতীয় চেষ্টা
পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের জন্য শনিবার আবারও নতুন চন্দ্রযান রকেটটির উৎক্ষেপণ করবে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা (নাসা)। সোমবার উৎক্ষেপণের প্রথম চেষ্টা ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে বাধাগ্রস্ত হয়।
রকেটটির ইঞ্জিনের জ্বালানি ট্যাংক ও সেন্সরের ত্রুটির জন্যই সমস্যায় পড়তে হয় নাসাকে। সংস্থাটির ব্যবস্থাপকরা জানিয়েছেন, সমস্যাটির সমাধানে মঙ্গলবার জ্বালানি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
৩২২ ফুট উচ্চতার নাসার এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেটটি কেনেডি স্পেস সেন্টারের স্টেশনেই নভোচারীবিহীন দাঁড়িয়ে আছে।
স্পেস লঞ্চ সিস্টেম নভোচারীবিহীন ক্যাপসুলটিকে (কক্ষ) চাঁদের কক্ষপথে পাঠানোর চেষ্টা করবে। ক্যাপসুলে নভোচারী না থাকলেও থাকবে মানব আকৃতির তিনটি ডামি। এই উৎক্ষেপণ যদি সফল হয় তাহলে নাসার ‘অ্যাপোলো’ প্রোগ্রামের ৫০ বছর পর চাঁদের চারিদিকে প্রদক্ষিণের সফলতা আসবে।
নাসার রকেট প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপক জন হানিকাট বলেন, ‘আমাদের টেকনিকাল টিমের কাছ থেকে যা জানতে পারলাম, তাতে আমাদের কাছে যা ডেটা আছে সেগুলোতে বারবার চোখ বুলাতে হবে এবং আমাদের পরিকল্পনাকে ঘষামাজা করে উৎক্ষেপণের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে হবে।’
আরও পড়ুন: নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: জ্বালানি ত্রুটির কারণে রকেট উৎক্ষেপণে বাধা
রকেটটিতে যে চারটি ইঞ্জিন রয়েছে তার একটি উৎক্ষেপণের আগে ইঞ্জিন চালু করার সময় পর্যাপ্ত ঠান্ডা হচ্ছিল না। হানিকাটের মতে হাইড্রোজেন জ্বালানির তাপমাত্রা প্রয়োজন ছিল মাইনাস ২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কিন্তু তারচেয়েও পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রা দেখাচ্ছিল। তবে অন্য ইঞ্জিনগুলো ঠিক ছিল।
হানিকাট বলেন, শনিবারের চেষ্টায় সকালের দিকে জ্বালানি ভরা হলে উৎক্ষেপণের আধা ঘণ্টা আগেই শীতলীকরণ প্রক্রিয়া চালানো হবে। গতবছরের সফল পরীক্ষায় শীতলীকরণের বিষয়টি পূর্বেই করা হয়েছিল। তাই এবার সেটা তাড়াতাড়ি প্রয়োগ করতে হবে।
হানিকাট একটি ইঞ্জিনের সেন্সর নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে সেন্সরটি যথাযথ ডেটা দিতে পারেনি।
গ্রীক পুরাণ অনুসারে ৪১০ কোটি মার্কিন ডলারের এই পরীক্ষামূলক অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে আর্টেমিস। যার সফলতার ওপর নির্ভর করছে নভোচারীদের ২০২৪ সালে চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ এবং ২০২৫ সালে চাঁদে অবতরণ।
আরও পড়ুন: ৫০ বছর পর চাঁদে রকেট পাঠাচ্ছে নাসা
মহাকাশের প্রথম রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে নাসা
২ বছর আগে
নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: জ্বালানি ত্রুটির কারণে রকেট উৎক্ষেপণে বাধা
জ্বালানি ট্যাংকে ছিদ্র থাকার কারণে সোমবার মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযানের রকেট উৎক্ষেপণ বাধাগ্রস্ত হয়।
ত্রুটি টের পেয়ে উৎক্ষেপণ নিয়ন্ত্রণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে ট্যাংকটি বন্ধ করে দেন।
উপকূলে বজ্রপাতের কারণে ইতোমধ্যে তাদের ঘণ্টাখানেক দেরি হয়ে যায়। এরপর ফের পুরো প্রক্রিয়া চালু করলে অ্যালার্ম বেজে ওঠায় আবারও তাদের থামতে হয়।
মহাকাশ সংস্থাটির দাবি ৩২২ ফুট এই রকেটটি এপর্যন্ত নাসার তৈরি সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট। এমনকি ‘স্যাটার্ন ভি’ নামের যে রকেটটিতে করে অর্ধ শতাব্দী আগে নভোচারীরা চাঁদে গিয়েছিল সেটির চেয়েও শক্তিশালী।
এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ যদি সফল হয় তাহলে রকেটে নভোচারী বিশিষ্ট ক্যাপসুল (কক্ষ) স্থাপন করা হবে। যা ৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবার চাঁদের কক্ষপথ (লুনার অরবিট) প্রদক্ষিণ করবে।
আরও পড়ুন: ৫০ বছর পর চাঁদে রকেট পাঠাচ্ছে নাসা
পরীক্ষামূলক এই উৎক্ষেপণ প্রস্তুতিতে নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারে অবস্থিত রকেটটির ক্যাপসুলে কোনো নভোচারী ছিল না। এর পরিবর্তে মানব আকৃতির তিনটি ডামি রাখা হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে সেগুলো ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হবে।
এখনও কোনো উৎক্ষেপণ না করা হলেও স্পেস লঞ্চ সিস্টেম দেখতে হাজার হাজার মানুষ ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উপকূলে ভিড় করছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস তার স্বামীর সঙ্গে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে এসেছিলেন নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হতে। কিন্তু উৎক্ষেপণে বাধা পড়ায় তাদের যাত্রা বাতিল করতে হয়।
জানা যায়, আগামী শুক্রবারের আগে পরবর্তী উৎক্ষেপণ চেষ্টা করা হবে না।
আরও পড়ুন: ৭ ঘণ্টার স্পেসওয়াক শেষ করলেন নাসার দুই নভোচারী
২ বছর আগে