গোপনীয়তা
গুগলের নিরাপত্তা নীতিতে পরিবর্তন, ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিয়ে শঙ্কা
ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি, (ইউএনবি)— এ বছরের জানুয়ারিতে গুগলের ঘোষিত নিরাপত্তা নীতি পরিবর্তন কার্যকর হয়েছে আজ (রবিবার)। তবে ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টিং’ নামের ওই নিরাপত্তা নীতিতে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও গুগল বলছে, বিজ্ঞাপনদাতাদের তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহারকারীর রুচি অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের সুবিধার্থেই এই নীতি কার্যকর করা হচ্ছে, তবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন মহলের দাবি, এর ফলে ব্যবহারকারী ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ হারাবে এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের মাধ্যমে এসব তথ্য অপব্যবহার করার ঝুঁকি বাড়বে।
গুগলের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, গুগলের সেবা ব্যবহারকারীদের ডিভাইসের আইপি অ্যাড্রেসসহ ডিভাইস-সংক্রান্ত আরও তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হবেন অনলাইন বিজ্ঞাপনদাতারা।
অবশ্য এ বিষয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির দাবি, বিভিন্ন কোম্পানি আগে থেকেই ব্যাপকভাবে এসব তথ্য ব্যবহার করে আসছে। এখন তারা তথ্য ব্যবহারে ওইসব কোম্পানিকে দায়িত্বশীলতার মধ্যে আনতে চায়।
আরও পড়ুন: অ্যাপল ও গুগল মানচিত্র: মেক্সিকো বাদ দিয়ে আমেরিকা উপসাগর নামকরণ
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০১৯ সালে প্রথম যখন বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এ ধরনের নীতি প্রণয়নের আলোচনা হয়, তখন খোদ গুগলই এই নীতি বাস্তবায়নের বিরোধিতা করেছিল। ফিঙ্গারপ্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহের এই প্রক্রিয়াকে তখন তারা অসাধু কাজ বলে আখ্যায়িত করে। তবে তার ৬ বছর পরই সেই পথেই হাঁটতে শুরু করল প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে বিবিসিকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তা নীতিমালা-সংক্রান্ত নতুন এই নীতি বাস্তবায়নের ফলে অংশীদারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে। একই সঙ্গে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিয়ে কোনো আপোষ করা হবে না বলেও নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গুগল নিশ্চয়তা দিলেও তাতে আশ্বস্ত হতে পারছে না ইন্টারনেটে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল। প্রতিষ্ঠানটির এহেন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। এই নীতিমালাকে ‘ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন অনেকে।
গুগল ক্রোমের প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাউজার মজিলার প্রকৌশলী মার্টিন থমসন বলেছেন, ফিঙ্গারপ্রিন্টিং ও আইপি অ্যাড্রেস সংগ্রহ করা ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হলে একটি পর্যায়ে গিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।
আরও পড়ুন: নতুন স্মার্টফোন কিনছেন, জেনে নিন সেটি আসলেই নতুন কিনা!
তিনি বলেন, ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টিং চালু করে গুগল নিজেদের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানিগুলোর হাতে এমন এক ট্র্যাকিং পদ্ধতি তুলে দিয়েছে যা ব্যবহারকারীর পক্ষে আটকানো প্রায় অসম্ভব।’
যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশন অফিস (আইসিও) বলছে, ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টিং ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহের একটি অসাধু পন্থা। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের পছন্দের তালিকা সংকুচিত হয়ে যাবে। এমনকি তথ্য সংগ্রহে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও সীমিত হয়ে পড়বে।’
৫৩ দিন আগে
দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই: ড. ইউনূস
দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গোপনীয়তার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘নিত্য পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি… মূল্যস্ফীতির পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস একথা বলেন।
দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন, চলতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছয়টি বন্যা হয়েছে… বন্যার ফলে অনেক জায়গায় ফসলহানি হয়েছে, ব্যাহত হয়েছে পণ্য সরবরাহ শৃঙ্খল। বন্যা-পরবর্তী সময়ে বাজারে শাক-সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে আপনাদের কষ্ট হয়েছে।’
আরও পড়ুন: জি-২০ সামাজিক সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস
তিনি বলেন, ‘নিত্য পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। বাজারে ডিমের সরবরাহ বাড়ানো জন্য আমরা সাড়ে ৯ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় শুল্ক ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে ডিমের উৎপাদকরা যাতে সরাসরি বাজারে ডিম সরবরাহ করতে পারেন, সেই উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।’
মানুষ যাতে স্বল্প মূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারে, সেজন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্পটে সরকারি কিছু পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রস্তুত করা ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ড ইতোমধ্যে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সংস্কার করা হবে: ব্রিটিশ মন্ত্রীকে ড. ইউনূস
‘বন্যার ফলে চালের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। আসন্ন রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও দাম যাতে স্বাভাবিক থাকে, এজন্য সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে যাচ্ছে।’
নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই। মূল্যস্ফীতির পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি রোধে উচ্চ সুদহার নির্ধারণসহ একাধিক নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে- শস্য আমদানিতে এলসি সীমা অপসারণ ও সরবরাহ চেইন সংক্ষিপ্ত করা।’
তিনি আরও জানান, সামান্য হলেও জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হয়েছে। শিল্প কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ব্যাহত না হয় এবং রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। গণ শুনানি ছাড়া নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম না বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এসব পদক্ষেপ বাজারে পণ্যমূল্য কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার করব: অধ্যাপক ইউনূস
১৪৪ দিন আগে
তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে এফটিসি’র মামলা
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আইডাহোভিত্তিক কোম্পানি কোচাভা ইনকরপোরেটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
সোমবার করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চক্রটি কয়েক লাখ মুঠোফোন থেকে সংবেদনশীল ভৌগোলিক অবস্থানসহ নানা তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তা বিক্রি করেছে। অবস্থানগত এই তথ্য ব্যবহার করে একজন মুঠোফোন ব্যবহারকারীর প্রজনন স্বাস্থ্য ক্লিনিক, গৃহহীনদের আশ্রয়স্থল এবং উপাসনালয় কোথায় গিয়েছেন তা দেখা হয়েছে।
মামলায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। যেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে গর্ভপাত করতে চান এমন একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টি আলোচিত হয়।
এফটিসির কাছ থেকে তথ্য হাতিয়ে নেয়ার বিষয় এটিই প্রথম নয়। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্বাস্থ্য বিষয়ক, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে এই প্রথম।
আরও পড়ুন: চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়
গোপনীয়তা বিষয়ক ওকালতি সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিটাল ডেমোক্রেসির নির্বাহী পরিচালক জেফ চেস্টার বলেন, সম্ভবত এটি বেশ বড় একটি ঘটনা। এফটিসির এই মামলাকে তিনি বড় ধরনের পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর তথ্য হাতিয়ে নেয়ার এই বিষয়টি কংগ্রেস ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের কাছে পরবর্তী তদন্তের আওতায় আসে। আইন প্রণেতারা বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি ও তথ্যফাঁস সংক্রান্ত ছোট সংস্থাদের কাছে তারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জানতে চেয়েছে। বিশেষ করে মুঠোফোন থেকে ভৌগোলিক অবস্থানের তথ্য ব্যবহার করে গর্ভপাতের বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে কি-না তাতে গুরুত্ব দেয়া হয়।
এফটিসি এ মাসে ঘোষণা দেয়, তারা প্রযুক্তি ও অন্যান্য কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক নজরদারি এবং তথ্য নিরাপত্তায় ক্ষতিকর দিকগুলো সড়িয়ে নিতে খসড়া নীতির বিষয়ে আলোচনা করছে।
আরও পড়ুন: ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে লাইকি
৯৫৫ দিন আগে