ভারত সফর
ভারত সফর সংক্ষিপ্ত, কিন্তু অত্যন্ত ফলপ্রসূ: সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সাম্প্রতিক ভারত সফর ছিল সংক্ষিপ্ত, কিন্তু অত্যন্ত ফলপ্রসূ।
তিনি বলেন, ‘এ সফর ছিল সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফলপ্রসূ। আমি মনে করি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে এ সফর সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে।’
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ২১-২২ জুন ভারতে তার রাষ্ট্রীয় সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই সফর দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে এই সফরে যান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু
বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর ভারতে কোনো সরকার প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
এছাড়া, ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে এটি ছিল ভারতের রাজধানীতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর, কারণ ৯ জুন মোদির শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি ছিলেন।
২ প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক আরও সংহত করতে সফরকালে ঢাকা ও নয়া দিল্লির মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই এবং আরও ৩টি সমঝোতা স্মারকের পুনর্নবীকরণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিগত ১৫ বছরে একটি অনন্য উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। যার সুফল দু’দেশের জনগণ ভোগ করছেন।’
তিনি বলেন, বিশেষ করে ২০২৩ সালে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এ সফরকালে ভারতের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নবনির্বাচিত দুটি সরকার কীভাবে সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সে বিষয়ে একটি রূপকল্প প্রণয়ন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথ-চলা শুরু করেছে, সে ধারাবাহিকতায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন- বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত এবং দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
চলমান বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে মোদি বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে আরও গভীরভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
শেখ হাসিনা বলেন, মোদি আশ্বাস দিয়েছেন- বাংলাদেশ তাঁদের ‘প্রতিবেশী প্রথম’, ‘অ্যাক্ট ইস্ট’, ‘সমুদ্র ও ইন্দো-প্যাসিফিক’ নীতির কেন্দ্রে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কার্যপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের দু’দেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে আমরা অন্যান্য পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্তে হতাহতের ঘটনা শুন্যে নামিয়ে আনা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর টেকসই ব্যবস্থাপনা ও পানি বণ্টন, জ্বালানি ও শক্তি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করি।
তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে তার সুবিধাজনক সময়ে যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় সফরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
৫ মাস আগে
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ২ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২১ জুন) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ২৯ মিনিটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে দুপুর ২টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
আরও পড়ুন: ২ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়া দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী কীর্তিবর্ধন সিং এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর দেশটির ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্যের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো হয়।
সড়কের দুই পাশে বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা এবং শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির প্ল্যাকার্ড দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে পালাম বিমানবন্দর থেকে হোটেল তাজ প্যালেস পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন ভাষায় নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এই প্রথম কোনো সরকার প্রধানের ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফর।
এ সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হবে এবং ঢাকা ও নয়াদিল্লি বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করা হবে।
এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত এক দশক ধরে অসংখ্য আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা
গত ৯ জুন মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হওয়ার পর ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে এটি ভারতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থলে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
শনিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে লাল গালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেওয়া হবে। এসময় বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত বাজানো হবে। এরপর সেখানে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
এরপর তিনি রাজঘাটে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। সেখানে পরিদর্শক বইয়েও সই করবেন তিনি।
একই দিনে হায়দরাবাদ হাউজে মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে উভয় প্রধানমন্ত্রী সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী সংবাদ বিবৃতি দেবেন।
এরপর হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী মোদির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন তারা।
বিকালে সচিবালয়ে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা।
এরপর সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
একই দিনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট দিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করে রাত ৯টায় ঢাকায় অবতরণের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখায় প্রবাসীদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন
৬ মাস আগে
শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গতিশীল করবে: গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
ঈদুল আজহার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় ভারত সফরের মধ্য দিয়ে নতুন মেয়াদে দুই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের নতুন সূচনা হবে এবং আরও গতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন সারা বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ এবং এই সম্পর্কের সৌন্দর্য হলো ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মোকাবিলা করা।
ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় ‘বাংলাদেশ ভারতের নতুন সরকার: সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের নতুন সূচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ছিলেন- সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব আনাম খান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব, বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ শাহরিয়ার জামান এবং ভারত থেকে অনলাইনে যুক্ত হন প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সভাপতি গৌতম লাহিড়ী, টেলিগ্রাফের হেড অব পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স দেবদীপ পুরোহিত।
শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে রাজধানীতে ভোরের কাগজের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। দুই দেশের এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশ্বে দৃষ্টান্ত। দুই দেশের এই সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় এগিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফর ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় সফর নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
গত ১৫ বছরের অর্জন তুলে ধরে শাহরিয়ার আলম বলেন, 'এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা খুবই আনন্দিত।’
তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময়কার ৩৩ দফা যৌথ বিবৃতি ছিল, যেখানে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ), জ্বালানি সহযোগিতা, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ, বিস্তৃত সংযোগ এবং অন্যান্য বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর এসব ক্ষেত্রে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে জানান শাহরিয়ার আলম।
যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) পরবর্তী বৈঠক শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২২ সালের আগস্টে নয়াদিল্লিতে জেআরসির ৩৮তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে পানি সম্পদ খাতে সহযোগিতা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত জেআরসি অভিন্ন নদী ব্যবস্থা থেকে সর্বাধিক সুবিধা অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বাধিক কার্যকর যৌথ প্রচেষ্টা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। জেআরসির নেতৃত্বে রয়েছেন দুই দেশের পানিসম্পদমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২১-২২ জুন অনুষ্ঠেয় দ্বিপক্ষীয় এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক, চুক্তি সই রয়েছে হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া সহযোগিতার কয়েকটি ক্ষেত্র নিয়ে ঘোষণাও আসতে পারে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সঞ্চালক শ্যামল দত্ত বলেন, সম্পর্ককে আরও গভীর করতে দুই দেশের নতুন নির্বাচিত নেতৃত্বের ইচ্ছা রয়েছে।
দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী ভারত সরকারের নতুন মেয়াদে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি দেখার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি আমাদের ন্যায্য হিস্যা পাব।’
এর আগে ২০২২ সালে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের প্রাপ্ত পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনার জন্য একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গঠনকে স্বাগত জানিয়েছেন দুই নেতা।
বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী এ বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে শমসের বলেন, ‘১৯৭১ সালে যদি আমরা রক্ত ভাগাভাগি করতে পারি, আমার বিশ্বাস আমরা পানি ভাগাভাগি করতে পারব।’
বৈঠকে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ই উপনিবেশমুক্ত হওয়ার ফলে উপকৃত হচ্ছে এবং দুই দেশকে এগিয়ে যেতে থাকা এই সম্পর্কে নতুন মাত্রা আনতে হবে।
আরও পড়ুন: গঙ্গা চুক্তি নবায়ন ও তিস্তা চুক্তি সই করতে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির আহ্বান
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন কিছু আনতে হবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তিস্তার পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যা ইস্যুতে কথা বলে আসছি।’
জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মনের বিকাশের প্রয়োজন।
এ সময় 'তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্ট' প্রকল্পের কথা বলেন তিনি। এ প্রকল্পে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ধারণার বিষয়ে চীন আগ্রহ দেখিয়েছে।
একই প্রকল্পে ভারতের আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সংঘাতের ভূ-রাজনীতিকে সহযোগিতার ভূ-রাজনীতিতে রূপান্তর সম্ভব। কারণ, বাণিজ্যসহ অনেক ক্ষেত্রেই চীনের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে।’
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে নেতৃত্বের ভূমিকা নেওয়ার ইচ্ছা আছে ভারতের। এটি দেশটির জন্য সবাইকে একত্রিত করে নেতৃত্ব গ্রহণের একটি সুযোগ।
তিনি বলেন, ‘তিস্তায় পর্যাপ্ত পানি নাও থাকতে পারে, কিন্তু ব্যবহারের জন্য যা পাওয়া যায় তা ভাগ করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে সমস্যা সেখানেই সমাধান খুঁজতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী ভারত: হাছান মাহমুদ
তিস্তা প্রকল্প প্রসঙ্গে সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি চীনের নিজস্ব প্রস্তাব নয়, তবে বাংলাদেশের অনুরোধে তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক সাহাব বলেন, বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে বিশাল লাইন অব ক্রেডিটস (এলওসি) পাচ্ছে তবে এর বাস্তবায়ন ধীর গতিতে চলছে।
তিনি বলেন, 'বিশাল এলওসি আসছে, যা খুবই আকর্ষণীয়। টাকা তো আছেই। রাজনৈতিক অঙ্গীকারও তো আছে। তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমি মনে করি দুটি দেশকে আরও বাস্তববাদী হতে হবে।’
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, চীনের প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি খুবই দ্রুত, এমনকি এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও খুব দ্রুত গতির। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ এবং চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার।
প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সভাপতি গৌতম লাহিড়ী বলেন, দুই দেশ বহু বছর পর স্থলসীমানা সমস্যার সমাধান করেছে এবং তিস্তা বিষয়ে সমস্যার সমাধানও হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সিইপিএ নিয়ে আলোচনায় অগ্রসর হওয়া দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের সময় নষ্ট করা উচিত নয়। আমাদের দ্রুত এগোতে হবে।’
পানি ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন এবং বন্যা এড়াতে যৌথভাবে তিস্তায় ড্রেজিংয়ের চেষ্টা করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন গৌতম।
তিনি বলেন, ভারত বিশ্বাস করে যে বাংলাদেশ এমন কিছু করবে না যা ভারতের স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে এবং বাংলাদেশের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হওয়ার লক্ষ্য পূরণে ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির শপথ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন গৌতম।
ভারতের টেলিগ্রাফের হেড অব পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স দেবদীপ পুরোহিত বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে দেখে। এরই মধ্যে ভারতের কাছে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন ৩৬০ ডিগ্রিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
তিস্তা নদীর জল ভাগাভাগির বিষয়ে দেবদীপ বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে তিস্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যখন তিস্তার জল ভাগাভাগির কথা ওঠে, তখন প্রশ্ন আসে, সেচের লক্ষ্য কীভাবে পূরণ হবে। কারণ, শুকনা মৌসুমে তো নদীতে জল থাকে না। তিস্তায় পর্যাপ্ত জল না থাকায় দুই দেশ কীভাবে তিস্তাকে ব্যবহার করবে, তা নিয়ে নতুন ভাবনা-চিন্তা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সব মিলিয়ে তিস্তাকে বাঁচাতে হবে। এ নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রস্তাবও আছে। চায়নাও প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতও প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ কার সঙ্গে যাবে এটা নিয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে দেবদীপ পুরোহিত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে এসে বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী, রাজীব গান্ধী ও প্রিয়াংকা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। সে সাক্ষাতের ছবি রাহুল গান্ধী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। সেই ছবি ভীষণ ভাইরাল হয়েছে। এতেই বুঝা যায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে বর্ণনা করে তিনি আরও বলেন, ‘কলকাতার সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যরকম সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক পরের ধাপে নিতে আমাদের দৃঢ় বাস্তববাদী মনোভাব দরকার।
আরও পড়ুন: তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মোদি
৬ মাস আগে
ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সেখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন, বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানা যাবে।’
সোমবার (১০ জুন) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সংসদ সদস্য এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে তিন দিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নিবন্ধিত সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
২১ জুন বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা প্লাটিনাম বর্ষপূর্তি কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
একই দিন বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
এছাড়া রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হাতিরঝিলে নৌকা বাইচ ও সাইকেল র্যালির আয়োজন করা হবে।
প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দলটির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
৬ মাস আগে
ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহো এখন ঢাকায়
ভারত সফর শেষে এবার ঢাকায় পা রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের কিংবদন্তি ও ২০০২ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল দলের সদস্য রোনালদিনহো।
তিনবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী ব্রাজিলিয়ান তারকা ফুটবলার বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
আরও পড়ুন: এএফসি মহিলা এশিয়া কাপ: অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ব্রাজিলিয়ান আইকন সরাসরি হোটেল রেডিসনে পৌঁছান। এদিকে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য নতুন করে সাজানো হয়েছিল হোটেল রেডিসন।
হোটেলে বিশ্রাম নেওয়ার পর রোনালদিনহো বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা।
বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত অবস্থানকালে হোটেল রেডিসনে বাংলাদেশের পুরুষ ও নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও সাবিনা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ব্রাজিলিয়ান সুপার স্টার।
পরে তিনি বুধবার রাত ১১টায় রাজধানী ত্যাগের আগে একই হোটেলে নির্বাচিত অতিথিদের মিলন ও শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এর আগে তিন দিনের সফরে রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছান।
রোনালদিনহো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করে তাকে একটি জার্সি উপহার দেন।
ভারতীয় ক্রীড়া উদ্যোক্তা শত্রু দত্তের আমন্ত্রণে রোনালদিনহো কলকাতা সফর করেন।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ
ফিফা বিশ্বকাপ: মালদ্বীপের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিলেন সাদ
১ বছর আগে
নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে: ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বলেছেন, তিন বছর পর তার সাম্প্রতিক ভারত সফর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারতে তার সরকারি সফর নিয়ে বুধবার বিকালে সরকারি বাসভবন গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা গোটা সফরজুড়ে ভালো প্রতিবেশী হিসেবে সমতা ও সম্মানের ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে ভারতের আন্তরিকতা ও অঙ্গীকার লক্ষ্য করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে তার সফরের সময় (৫-৮ সেপ্টেম্বর) গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বাস্তবায়িত হলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সর্বোপরি পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে, এই সফর উভয় দেশকে একটি নতুন পথে এগিয়ে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি উভয় দেশের
জনগণের কল্যাণে এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া শিগগিরই একটি সমৃদ্ধ অঞ্চলে পরিণত হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে উভয়ই আন্তরিকতা তুলে ধরে সমতা ও সম্মানের ভিত্তিতে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাংলাদেশের পাটপণ্যের ওপর থেকে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহার, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী তার সফরের অনেকগুলো অর্জন তুলে ধরেন- কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ঐকমত্য, ভারত ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ও অন্যান্য আন্তসীমান্ত রেল যোগাযোগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সম্মত হওয়া এবং চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যদ্রব্য রপ্তানি বন্ধ করার আগে বাংলাদেশকে আগাম বার্তা দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের মুজিবনগর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পর্যন্ত ঐতিহাসিক ‘স্বাধীনতা সড়ক’ উদ্বোধনের পরিকল্পনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে: দোরাইস্বামী
অভিন্ন নদীগুলোর দূষণের ক্ষেত্রে নদীগুলোর পরিবেশ ও নাব্যতা উন্নত করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়া হবে, রেল পরিষেবার মান বাড়ানোর জন্য তথ্য-প্রযু্ক্তির সমাধান বিনিময় এবং ২০২২ সালের মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি সাক্ষরের জন্য কাজ শুরু করতে দু’দেশের বাণিজ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সফরকালে, দুই পক্ষ সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সাক্ষর করেছে যার মধ্যে রয়েছে-
সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় কুশিয়ারা নদী থেকে বাংলাদেশে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার, বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল (সিএসআইআর) -এর মধ্যে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা।
তিনি আরও যোগ করেন, ভারত এবং বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের (বিসিএসআইআর) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, ভারতের ভোপালে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে, রেলপথ মন্ত্রণালয় (রেলওয়ে বোর্ড), সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে। ভারত এবং রেল মন্ত্রণালয়, ভারতে বাংলাদেশ রেলওয়ে
কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার, রেল
মন্ত্রণালয় (রেলওয়ে বোর্ড), ভারত সরকার এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আইটি সিস্টেমে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক ভারতীয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন 'প্রসার ভারতী' এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য এফওআইএস এবং অন্যান্য আইটি অ্যাপ্লিকেশন (বিটিভি) সম্প্রচারে সহযোগিতা এবং বিটিসিএল এবং এনএসআইএল-এর মধ্যে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতার
বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশ কুশিয়ারা অভিন্ন নদী থেকে সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় ১৫৩ কিউসেক পানি পাবে এবং এর ফলে রহিমপুর লিংক ক্যানেলের মাধ্যমে পাঁচ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা পাবে।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, মহাকাশ প্রযুক্তি, সবুজ অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।
‘আমরা বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে ভারতের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় গেটের নির্মাণ কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করতে সম্মত হয়েছি। এই ভালো কাজটি শুরু করতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই ভারত সফর করবে,’ তিনি যোগ করেন।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসামের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে জ্বালানি (ডিজেল) পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে প্রবাহিত হবে।
তিনি যোগ করেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প’ এর অধীনে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৯ এপ্রিল, ২০১৮ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়।
‘এই প্রকল্পের আওতায় ভারত সরকারের অর্থায়নে মোট ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার (বাংলাদেশ অংশে ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার এবং ভারতীয় অংশে পাঁচ কিলোমিটার) পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অংশে ১২৬
দশমিক ৫৭ কিলোমিটার পাইপলাইনের মধ্যে ১২৫ কিলোমিটার পাইপলাইন সম্পন্ন হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মেটাতে প্রতিকূল অবস্থায় পাইপলাইন নির্মাণের ফলে জ্বালানি পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে এবং ভারত থেকে সহজে, দ্রুত এবং ডিজেল আমদানি করা যাবে।
পড়ুন: জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানাবে ভারত
তিনি বলেন, এখন রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত থেকে বছরে ৬০-৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয় এবং একবার
পাইপলাইন নির্মাণ শেষ হলে ভারত থেকে বছরে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে, চলমান প্রকল্পের অধীনে পার্বতীপুরের স্টোরেজ ক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে স্টোরেজ ক্ষমতা ২৮ হাজার ৮০০ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন, জ্বালানির আমদানি উৎসকে বৈচিত্র্যময় করার লক্ষ্যে জি-টু-জি এর ভিত্তিতে ২০২২ সালের
২৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি জ্বালানি সরবরাহকারী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
এলএনজি আমদানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা এলাকায় বিপুল গ্যাসের চাহিদার কথা চিন্তা করে সরকার একটি আন্তসীমান্ত পাইপলাইনের মাধ্যমে
ভারত থেকে বাংলাদেশে রেগ্যাসিফাইড এলএনজি (আরএলএনজি) আমদানির কথা বিবেচনা করছে। শেষ পর্যন্ত, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন লিমিটেড ( আইওসিএল) এবং এইচ-এনার্জি’র প্রস্তাবের বিপরীতে পেট্রোবাংলা উভয় সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন-বাইন্ডিং সমঝোতা সাক্ষর সই করেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ভাষা ও সংস্কৃতির মিলের কারণে আমাদের সম্পর্ক গভীর হয়েছে।’
এ ছাড়া ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও স্বাধীনতার পর সহযোগিতা এই বন্ধুত্বকে বিশেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২ বছর আগে
ভারতের সঙ্গে মৈত্রী রক্তের বন্ধন: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী রক্তের অক্ষরে ও রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এ বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে।সোমবার সকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দপ্তরে ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
ড.হাছান বলেন, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সফল একটি ভারত সফর করেছেন এবং এ সফরে অনেকগুলো অর্জন আছে, যেমন- কুশিয়ারা নদীর পানি আমাদের পক্ষে বন্টন, ভারতের স্থলভাগের ওপর দিয়ে তৃতীয় দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি সুবিধা যার জন্য আমরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম, আলাপ-আলোচনার মধ্যেই ছিলাম সেটি এ সফরে সুরাহা হয়েছে, এটি একটি বড় অর্জন।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ: তথ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর: যৌথ সম্মতিতে যেসব সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ-ভারত
ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বের সম্পর্কের প্রতি গুরুত্ব প্রদর্শনপূর্বক ভারতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক সফরে (৫০৮ সেপ্টেম্বর) দুই দেশ যৌথ সম্মতিতে একমত হয়েছে। সেগুলো হলো-
অবিচল বন্ধুত্ব
আঞ্চলিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বের চেতনায় বৃহত্তর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রেল সংযোগ উন্নয়ন সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত
চলমান দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগের মূল্যায়ন, যেমন:
- টঙ্গী-আখাউড়া লাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর
- বাংলাদেশ রেলওয়েতে রেলওয়ে রোলিং স্টক সরবরাহ
- ভারতীয় রেলওয়ের স্বনামধন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ
- বাংলাদেশ রেলওয়ের সেবার উন্নতি নিশ্চিতে আইটি-সংক্রান্ত সহযোগিতা প্রদান
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থীর সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ-ভারত রেল সংযোগের উন্নয়নে গৃহীত নতুন উদ্যোগ
- কাউনিয়া-লালমনিরহাট-মোগলঘাট-নিউ গীতালদহ রেল সংযোগ
- হিলি ও বিরামপুরের মধ্যে রেল সংযোগ স্থাপন
- বেনাপোল-যশোর রেল পথ ও সিগন্যালিং ব্যবস্থা এবং রেল স্টেশনের মানোন্নয়ন
- বুড়িমারী ও চ্যাংড়াবান্ধার মধ্যে রেল সংযোগ পুনঃস্থাপন
- সিরাজগঞ্জে একটি কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ ইত্যাদি
বাংলাদেশের অনুরোধে অনুদানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০টি ব্রডগেজ ডিজেল লোকোমোটিভ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ধাক্কা প্রতিরোধ করা
ভারত থেকে বাংলাদেশে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা এবং রসুনের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের আনুমানিক সরবরাহ নিশ্চিতে উভয় দেশের সরকারের মাঝে বিশেষ ব্যবস্থায় (জি২জি) দুদেশের মধ্যে পণ্য সরবরাহের সম্ভাবনা।
মানুষ এবং পণ্যের স্বাচ্ছন্দ্যপুর্ণ চলাচলের সুবিধা নিশ্চিতকরণ
আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে চলমান উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুত সম্পন্নকরণ, যার মধ্যে ৪,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন সীমান্ত ক্রসিংগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অভিবাসন এবং বাণিজ্য-সম্পর্কিত অবকাঠামো রয়েছে।
আরও পড়ুন: আনুষ্ঠানিক মুক্তির আগে প্রধানমন্ত্রী দেখবেন ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’
সীমান্ত নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা
একটি শান্তিপূর্ণ এবং অপরাধমুক্ত সীমান্ত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, ত্রিপুরা সেক্টর থেকে শুরু করে সমগ্র সীমান্তের কাঁটাতারবিহীন অংশগুলোতে কাঁটাতার নির্মাণের কাজ শেষ করার বিষয়ে উভয় নেতা একমত হয়েছেন।
সীমান্ত রক্ষাবাহিনী কর্তৃক পদক্ষেপের মাধ্যমে সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাসকরণে সাহায্য করেছে। অস্ত্র, মাদক ও জাল টাকার চোরাচালান এবং পাচার রোধে বিশেষত নারী ও শিশুপাচার রোধে পারস্পরিক সহযোগিতাও প্রশংসিত হয়েছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
উভয় নেতাই সন্ত্রাসবাদের সকল রূপ ও অভিব্যক্তি নির্মূলে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
এই অঞ্চল ও এর বাইরে সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা এবং মৌলবাদের বিস্তার প্রতিরোধ এবং সে সম্পর্কিত পদক্ষেপে সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য যানবাহন সংগ্রহের পরিকল্পনাসহ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিরক্ষা লাইন অফ ক্রেডিটের অধীনে প্রকল্পগুলোর প্রাথমিক চূড়ান্তকরণে সম্মত হয়েছে।
বর্ধিত সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত উপকূলীয় রাডার সিস্টেম সমঝোতা স্মারকের প্রাথমিক কার্যকারিতা চূড়ান্তকরণ।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব চলে যাবে কি না, সে এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর: ওবায়দুল কাদের
নদীর পানি সংক্রান্ত সহযোগিতা
এক দশকেরও বেশি সময় পর যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের সভা আহ্বান করা, যেখানে সব অভিন্ন নদীর ব্যাপারে সহযোগিতার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়, যা প্রশংসিত হয়েছে।
আসাম রাজ্য সরকারসহ ভারতের সকল অংশীদারদের সহযোগিতায় কুশিয়ারা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি শুষ্ক মৌসুমে উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশের জমিতে সেচ দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কৃষকদের সাহায্য করবে এবং একইভাবে, দক্ষিণ আসামও এর দ্বারা উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ফেনী নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের অনুরোধের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
ত্রিপুরার জনগণের জন্য খাবার পানি প্রকল্পটির মাধ্যমে এখন শিগগিরই ফেনী নদী থেকে এক দশমিক ৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রদত্ত অনুমোদন এবং ছাড়পত্রের ভিত্তিতে ২০১৯ এ স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক কার্যকর হবে৷
তথ্য বিনিময় এবং অন্তর্বর্তীকালীন পানি বণ্টন চুক্তির কাঠামো প্রণয়নের জন্য এখন আরও অন্যান্য নদীগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
গঙ্গার পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনা করতে যৌথ কারিগরি কমিটি গঠনে উভয় পক্ষই সম্মত হয়।
২০১১ সালে চূড়ান্ত হওয়া তিস্তা চুক্তি শেষ করার জন্য বাংলাদেশ পুনরায় অনুরোধ জানায়।
নদী দূষণ মোকাবিলা, নদীর পরিবেশ ও নাব্যতা উন্নয়নে সহযোগিতা বাড়াতে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা
সিঙ্ক্রোনাস গ্রিড কানেক্টিভিটির মাধ্যমে কাটিহার (বিহার) থেকে পার্বতীপুর (বাংলাদেশ) হয়ে বোরনগর (আসাম) পর্যন্ত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৭৬৫ কিলোভোল্ট ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনে ‘স্পেশ্যাল পারপাজ ভেহিকল’ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ। এই সংযোগের মাধ্যমে মৌসুমী চাহিদামাফিক বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি ও রপ্তানি উভয়ই সহজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নেপাল, ভূটান এবং বাংলাদেশকে সংযুক্তপূর্বক উপ-আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড বাস্তবায়ন বেগবান হয়েছে। ভারত জানায়, যে এই জাতীয় নেটওয়ার্ক স্থাপনে অভ্যন্তরীণ নির্দেশিকা গৃহীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বাই-ব্যাক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
জ্বালানি খাতে সহযোগিতা
বাংলাদেশের জ্বালানির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করতে উভয় পক্ষই আন্তঃসীমান্ত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের নির্মাণকাজ দ্রুত সমাপ্তির আশা করছে যার মাধ্যমে ভারত থেকে সরাসরি বাংলাদেশে উচ্চ গতির ডিজেল পরিবহন হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পেট্রোলিয়াম পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভারত উভয় দেশের অনুমোদিত সংস্থার মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা নিশ্চিতে সম্মত হয়েছে।
এই বছরের আসাম ও মেঘালয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারত আসাম থেকে ত্রিপুরায় পেট্রোলিয়াম, তেল এবং লুব্রিক্যান্ট পরিবহনের সুবিধার্থে বর্ধিত সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রতি ধন্যবাদ জানায়।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড (আইওসিএল), ভারত সরকারের একটি পিএসইউ, এখন বাংলাদেশে জি-টু-জি (সরকার থেকে সরকারে) ভিত্তিতে পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ করার অনুমোদন লাভ করেছে৷
উন্নয়ন সহযোগিতা
বাংলাদেশ ভারত সরকারের সাথে যুক্ত লাইন অফ ক্রেডিট এর অধীনে, বিশেষত গত বছরের তহবিল বিতরণের কার্যকারিতা এবং গতির জন্য ভারতের প্রশংসা করেছে। বাংলাদেশকে প্রায় ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেয়াতি ঋণ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ভারতের শীর্ষ উন্নয়ন সহযোগী। ভারত কর্তৃক অন্যান্য দেশকে দেওয়া সকল উন্নয়ন অর্থায়নের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বা ২৫% করে বাংলাদেশকে প্রদান করে।
আরও পড়ুন: আশা করি তিস্তা চুক্তিসহ সব অমীমাংসিত সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে: প্রধানমন্ত্রী
দ্বিপাক্ষিক ও উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং সংযোগ বৃদ্ধি
উভয় নেতা বাংলাদেশ-ভূটান-ভারত-নেপাল মোটরযান চুক্তি কার্যকর করার প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করতে সম্মত হয়েছেন। একবার সম্মত হলে, চারটি দেশের সীমান্তে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক যানবাহন নিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করা সম্ভব হবে।
উপ-আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মহেন্দ্রগঞ্জ (মেঘালয়) থেকে হিলিকে (পশ্চিমবঙ্গ) সংযুক্তকারী একটি নতুন হাইওয়ে নির্মাণকল্পে একটি বিশদ প্রকল্প প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তাব করেছে ভারত। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়কেও তাদের অংশগ্রহণে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে তার ভূখণ্ডে নির্দিষ্ট ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন/বিমানবন্দর/সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে ভারতের দেওয়া বিনামূল্যের ট্রানজিট ব্যবহার করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে, ভারত তৃতীয় কোনো দেশে বাংলাদেশী রপ্তানির সুযোগ করে দিয়েছে। এটি নেপাল এবং ভূটানে রপ্তানিকারী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদেরকে ইতিমধ্যেই দেওয়া বিনামূল্যের ট্রানজিট সুবিধার বহির্ভূত।
পারস্পরিক লাভজনক দ্বিমুখী বাণিজ্য
২০১৫ সালে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত চুক্তির অধীনে সফল পরীক্ষামূলক চালান সম্পন্ন হয়েছে।
ভারতের ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের সংযোগকারী মৈত্রী সেতুটিও চালু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে এবং ভারত বাংলাদেশকে রামগড়ে অবশিষ্ট অবকাঠামো, অভিবাসন এবং শুল্ক সুবিধা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করেছে।
দ্বিমুখী ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য, ভারতীয় পণ্যের ওপর বাংলাদেশ কর্তৃক আরোপিত বন্দর নিষেধাজ্ঞা অপসারণে আবারও জোর দেওয়া হয়।
উভয় পক্ষের বাণিজ্য বিষয়ক কর্মকর্তাদেরকে ২০২২ সালের মধ্যে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে এবং ২০২৬ সালের আগে এটি সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ২০২৬ বাংলাদেশ তার এলডিসি অবস্থা থেকে উন্নীত হবে এবং বর্তমানে ভোগ করা শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধাগুলো ধরে রাখতে উদ্যোগ নেবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য চলাচলের সুবিধার্থে, দেশের ব্যস্ততম স্থলবন্দর, বেনাপোল-পেট্রাপোল আইসিপিতে একটি দ্বিতীয় মালবাহী গেট নির্মাণের উদ্দেশ্যে তহবিল গঠনের জন্য ভারতের দেওয়া প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
বঙ্গবন্ধুর ওপর যৌথভাবে নির্মিত বায়োপিক ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ খুব শীঘ্রই শেষ হবে এবং আগামী বছর মুক্তি পেতে পারে।
মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্রের যৌথ প্রযোজনা এবং দুর্লভ ভিডিও ফুটেজের যৌথ সংকলনে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।
২০১৮ সাল থেকে বিনা মূল্যে ভারতের নামকরা হাসপাতালে ১০০ জনেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে চিকিৎসাসেবা প্রদানে ভারতের উদ্যোগ গভীরভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারত প্রয়োজনে সব সময় বাংলাদেশকে সাহায্য করে: প্রধানমন্ত্রী
সহযোগিতার ভবিষ্যত ক্ষেত্র
ভারতে বাংলাদেশী স্টার্ট-আপ প্রতিনিধি দলের প্রথম সফর।
সুন্দরবন সংরক্ষণে যৌথ উদ্যোগ।
মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, গ্রিন এনার্জি, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং অর্থ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত পরিষেবাগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
আঞ্চলিক সমস্যা
ভারত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত দশ লাখেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়া এবং মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেছে এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এইসব লোকদের নিরাপদ, টেকসই এবং দ্রুত স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে তার অব্যাহত প্রতিশ্রুতির ওপরে জোর দিয়েছে।
ভারত বিমসটেক সচিবালয়ের আয়োজনে এবং এর অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশের অবদানের প্রশংসা করেছে। ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি ভারতীয় পক্ষ তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
২ বছর আগে
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: ঢাকা-দিল্লির ৭টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা, রেলপথ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ও তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করি সফরটি অত্যন্ত সফল হবে। এটি আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।’
প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা হবেন।
আরও পড়ুন: দেশকে শক্তিশালী ভিত্তি দিতে জাতির পিতা সবকিছুই করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বাংলাদেশ মনে করে এই সফর দুই দেশের মধ্যে নতুন ‘সহযোগিতার দ্বার’ খুলে দেবে।
হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার আলোচনায় নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন সংকট, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে এই সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশি চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়।
কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালে শেষবার সফর করার পর তিন বছর পর শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন। এই সফর বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার থেকে আর কোন শরণার্থী নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এই সফরটি শক্তিশালী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন যার মধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন। শেখ হাসিনার কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ারও কথা রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে একটি আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেয়া হবে। এরপর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরকালে হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছাড়াও ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনকরের সঙ্গেও দেখা করবেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শেখ হাসিনার আজমীর সফরেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেবেন।
তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে শক্তিশালী করার জন্য বঙ্গবন্ধু সবকিছু করেছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২ বছর আগে
সহযোগিতার নতুন দ্বার খুলবে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমওএফএ) জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এই সফর বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী ৫-৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০১৯ সালে ভারত সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরে প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন, যেখানে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও হাসিনার সঙ্গী হবেন।
ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। সফরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন শেখ হাসিনা।
পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঢাকা-দিল্লির বহুমাত্রিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রত্যাশা
শেখ হাসিনা ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
হায়দরাবাদ হাউসে তিনি মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় মিলিত হবেন। পরে সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা যোগ দেবেন।
নয়াদিল্লিতে হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় সফরের সময় বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সফরে তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো সংকট বাংলাদেশে হবে না: প্রধানমন্ত্রী
হামলা হলে পুলিশের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে