পর্যালোচনা
মার্কিন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে র্যাবের সংস্কার শুরু হতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিষয়ে মার্কিন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সংস্কার শুরু করা যেতে পারে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যে সংস্কারের কথা বলেন- আমরা সব সময় করে যাচ্ছি। আমরা সবকিছু আধুনিকায়ন করছি। যা করা দরকার আমরা তা করছি।’
‘র্যাব একটি বিশেষ বাহিনী; আমরা মাঝে মাঝে তাদের বিশেষ কাজ দেই। র্যাব তার নীতি অনুযায়ী কাজ করে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক, পুলিশ ও আমাদের মতো বিত্তবানরাও মাদক সাপ্লাই করেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে র্যাব বা পুলিশ কেউই রেহাই পায় না। ‘অনেক পুলিশ ও র্যাব সদস্য কারাগারে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা মার্কিন প্রতিবেদনের ওপর নজর রাখছি। কোনো ভুল থাকলে অবশ্যই দেখব।’
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। জবাবদিহিতা ও সংস্কার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে শনিবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদ্য-নিযুক্ত মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গিবাদ ও গুরুতর অপরাধ মোকাবিলায় কৃতিত্ব অর্জনকারী বিশেষ বাহিনী র্যাবের সংস্কারের প্রশ্নই আসে না।
ধানমন্ডি-৩২-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এমন কিছু করছি না যার জন্য সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আমাদের জন্য নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছি। আমরা আইন লঙ্ঘন করে কিছু করি না। সেক্ষেত্রে সংস্কারের প্রশ্নই আসে না’।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং সরকার সরকারি পর্যায়ে এর জবাব দেয়া হয়েছে এটা (আমাদের জন্য) কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। বিশেষ বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক মোকাবিলা করে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে সমাজকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জোরপূর্বক গুম: জাতিসংঘ ২১ দেশের ৬৯৬ মামলা পর্যালোচনা করবে
জাতিসংঘের জোরপূর্বক বা অনিচ্ছাকৃত গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ ২১টি দেশের ৬৯৬টি মামলা পর্যালোচনা করার জন্য ১২৮তম অধিবেশন বসবে ১৯-২৮ সেপ্টেম্বর।
পাঁচটি স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞের দল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত জোরপূর্বক গুম সম্পর্কে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করবে এবং এগুলো নথিভুক্ত করবে৷
বিশেষজ্ঞরা জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন, রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে পৃথক ঘটনা ও কাঠামোগত বিষয় এবং জোরপূর্বক গুম সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের জন্য বৈঠক করবেন।
এই দলের সদস্যরা ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর গঠিত ‘জোরপূর্বক গুম বিষয়ক কমিটি’র সঙ্গে বার্ষিক যৌথ সভা করবেন।
আরও পড়ুন: দেশে গুম নেই, স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ নেই: ব্যাচলেটকে বললেন মোমেন
অধিবেশন চলাকালীন বিশেষজ্ঞরা জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সুরক্ষা সংক্রান্ত ঘোষণার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ পাওয়া গেছে সেগুলো পরীক্ষা করবেন। যেমন প্রত্যাবর্তনমূলক আইন ও অনুশীলন, বা বলপূর্বক গুমের ঘটনাগুলো মোকাবিলায় পদ্ধতিগত ব্যর্থতা; বিশেষত সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে।
তারা অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় ও ভবিষ্যত কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা করবে। যেমন: নির্দিষ্ট দেশসমূহ পরিদর্শন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে নতুন প্রযুক্তি ও জোরপূর্বক গুম নিয়ে তাদের করা গবেষণা প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: ব্যাচেলেটে সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘গুম’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫১তম অধিবেশনে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের সঙ্গে এই গ্রুপের অধিবেশনও হবে।
১২৮তম অধিবেশন চলাকালীন ওয়ার্কিং গ্রুপের সিদ্ধান্তগুলো এর পরবর্তী পোস্ট সেশনাল রিপোর্টে প্রকাশিত হবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের সতর্কতা: ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে
যুক্তরাষ্ট্রে এমআরপি পুনরায় চালুর বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশি নাগরিকদের সুবিধার্থে বর্তমানে প্রচলিত ই-পাসপোর্টের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) পুনরায় চালু করা যায় কি না তা পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
শুক্রবার (যুক্তরাষ্ট্র সময়) বিকালে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এখন জাতিসংঘের তৃতীয় চিফ অব পুলিশ সামিট (ইউএনকপস) ও অন্যান্য কর্মসূচিতে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
শিগগিরই ই-ভিসা চালু করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা খুব শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি এবং এমওইউ স্বাক্ষরিত হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ই-ভিসা প্রদান শুরু করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, দেশের সকল নাগরিক যাতে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সুবিধা পায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পড়ুন: জাতিসংঘ পুলিশ, সংস্থা ও জাতীয় কর্তৃপক্ষসহ সকলের সমন্বয় প্রয়োজন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি নিয়ে শিগগিরই পুরোদমে কাজ শুরু করবে এবং প্রবাসীরা যাতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে এনআইডি কার্ড পেতে পারে তার পরিকল্পনাও হাতে নেবে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন দূতাবাসের চার্জ ডি'অ্যাফেয়ার্স মো. মেহেদি হাসান। বৈঠকে মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাহেদুল ইসলামও বক্তব্য দেন।
ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা) মোহাম্মদ আবদুল হাই মিল্টন পাসপোর্ট ও ভিসাসহ সার্বিক কনস্যুলার কার্যক্রম, চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ের ওপর একটি উপস্থাপনা পেশ করেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতার ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দূতাবাস আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেন।
পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পেছনে ১০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প: আইজিপি