প্রকোপ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি
দেশজুড়ে তীব্র গরম ও দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। একদিকে বৃষ্টির দেখা মিলছে না, অন্যদিকে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৭০ জন রোগী। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৬২ জন রোগী।
আরও পড়ুন: সাজেকে ডায়রিয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু
হাসপাতালে ভর্তি সদর উপজেলার মহারাজপুর এলাকার এক শিশুর মা পলি রানী বলেন, তার ১১ মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা, বমি। এ অবস্থায় সোমবার হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসা পেয়ে মেয়েটি কিছুটা আরাম পেয়েছে।
আরেক রোগীর মা জান্নাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। রবিবার হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখন একটু সুস্থ আছে।’
এদিকে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ডাক্তার ও নার্সরাও চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ইনচার্জ বেগম নুরুন্নাহার।
তিনি বলেন, আসলে হঠাৎ করে রোগী বাড়লে একটু চাপে পড়তে হয়। তারপরও সেভাবে আমাদের পরিস্থিতির সামাল দিতে হয়। আমরা রোগীর সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।
জেলা হাসপাতালের তত্বাবধয়ক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, তীব্র গরমের কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ডায়রিয়া রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যায় বেশি।
তিনি আরও বলেন, এখন প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এ অবস্থায় যারা বাইরে চলাচল করবেন বিশেষ করে খেটে খাওয়া লোকদের রোদে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।
তাহলে হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
তিনি স্বাভাবিক পানি, ওরস্যালাইন পান, রোদের মধ্যে সাবধানে চলাচল এবং বাবা-মাকে শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ, এক সপ্তাহে ৫৫০ জন হাসপাতালে ভর্তি
সিরাজগঞ্জে ডায়রিয়ায় প্রাণ গেল ২ জনের, আক্রান্ত শতাধিক
৬ মাস আগে
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকতে পারে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সম্ভাব্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই তিন মাস ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাবে। এই তিন মাস ডেঙ্গুর অবস্থা আরও খারাপ হবে।
রবিবার বিকালে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরে, জাহিদ মালেক বলেছেন যে ডেঙ্গু ইতোমধ্যে প্রায় ৫৭ জেলা জুড়ে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে, যার মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রয়েছে।
২৪ ঘন্টায় আরও ৬ জন ডেঙ্গু রোগী মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৩ এ দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করুন: জিএম কাদের
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি, বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বেশি রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এবং মুগদা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমরা সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাকে এলাকাভিত্তিক স্প্রে করার প্রচেষ্টা জোরদার করার অনুরোধ করব।’
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা ব্যাপক নির্দেশনা জারি করেছি। যার মধ্যে রয়েছে- দেশব্যাপী হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট স্থাপন। এছাড়া চিকিৎসক ও নার্সসহ চিকিৎসা পেশাজীবীরা বিশেষ প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। ডেঙ্গু রোগীদের প্রয়োজনীয় স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।’
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১২ হাজার ৯৫৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৯হাজার ৯০ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৮৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ১০ হাজার ১৩১ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ৭ হাজার ৬৬ জন ঢাকার ও বাকি ৩ হাজার ৬৫ জন অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩ জন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ হতাশাজনক: টিআইবি
ডেঙ্গু প্রতিরোধ: বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়
১ বছর আগে
কমছে না ডেঙ্গুর প্রকোপ, ৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ ক্রমেই লাগাম ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু না হলেও এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: আক্রান্তের হারে ঊর্ধ্বগতি, হাসপাতালে ভর্তি ৬৭ জন
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬১ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৩ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৪৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ২০৭ জন ঢাকায় এবং ৩৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ মে ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৯২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ২৯৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৬৩১ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে এক হাজার ৬৬৮ জন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে এক হাজার ৭৯ জন ঢাকার এবং বাকি ৫৮৯ জন দেশের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩ জন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: আক্রান্তের হারে ঊর্ধ্বগতি, হাসপাতালে ভর্তি ৭২ জন
১০৬৬ রোহিঙ্গা ডেঙ্গু আক্রান্ত, ব্যবস্থাপনা কঠিন বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
১ বছর আগে
চট্টগ্রামের ১৫ উপেজলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি
চট্টগ্রাম মহানগরী ও ১৫ উপজেলায় সম্প্রতি ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এরমধ্যে জেলার বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অন্যান্য উপজেলার চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেড়েছে।
জেলার ১৫ উপজেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৬৪ জন নারী-পুরুষ-শিশু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।
তন্মধ্যে বোয়ালখালীতে আক্রান্ত ৫০ জন, চন্দনাইশে ৩৩ জন, পটিয়ায় ৩২ জন ও আনোয়ারায় ২৯ জন।
বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত দুসপ্তাহের ব্যবধানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সহস্রাধিক রোগী।
তবে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় ২৪০ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের হাসপাতালে ১০ শয্যার বিপরীতে ১৩৫ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি
ডায়রিয়ার প্রকোপ রোধে সময়োপযোগী উদ্যোগসহ সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের কারণ অনুসন্ধান করে ডায়রিয়া আউট ব্রেক ইনভেস্টিগেশন প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন অফিস।
প্রতি ইউনিয়নে একটি ও প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচটি করে মেডিকেল টিম পুনর্গঠন করে প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ লক্ষ্যে একটি কন্ট্রোল রুম (ফোন নাম্বারে ০২৩৩৩৩৫৪৮৪৩) খোলা হয়েছে।
ডায়রিয়া বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরমের পাশাপাশি খাবারের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ডায়রিয়ায় ভুগছেন রোগীরা। যাদের অবস্থা বেশি খারাপ হচ্ছে, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংকট থাকায় অনেক রোগীকে মেঝেতে রেখেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে ডায়রিয়া মোকাবিলায় ২৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়। মজুত রাখা হয়েছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রীও। চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বাসাবাড়িতে।
আরও পড়ুন: উলিপুরে ডায়রিয়ায় কিশোরের মৃত্যু
এদিকে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। অতিরিক্ত গরমেও মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। চলতি সপ্তাহের প্রথমদিকে হঠাৎ করে উপজেলার হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি বেড়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় মেডিকেল টিম এবং চিকিৎসা সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদ জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষ জুস, পানি এবং বিভিন্ন খাবার খাওয়ার কারণে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে তরমুজের মৌসুম। তরমুজ কাটার পর ফ্রিজে রাখার ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়। যা মানুষের শরীরে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিআইটিআইডি হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, চলতি সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন অর্ধশত ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে সেখানে। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে অনেকের অবস্থা খারাপ। তাদের বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
ডায়রিয়া আক্রান্ত মা কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বোয়ালখালী এলাকার বাসিন্দা নুরুজ্জামান বলেন, আমার মা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ খাওয়াই বোয়ালখালী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর এখন স্যালাইন দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। তার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি ছিল না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধ দেন। বর্তমানে তার অবস্থা উন্নতির দিকে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর ভর্তি বেড়েছে। কিছুদিন যাবত এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে রোগীর চিকিৎসায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা শেষে সিলেটে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে
১ বছর আগে
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ: আট মাসে মৃত্যু ২২
কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বেড়েই চলছে। তবে এর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
বছরের শুরু থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত জেলায় ১২ হাজার ২৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা হচ্ছে ১১ হাজার ৬৫৮ জন ও স্থানীয় ৫৮৮ জন। এই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। এর মধ্যে ২২ জন রোহিঙ্গা ও একজন স্থানীয়। মৃত ২৩ জনের মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানীয় একজনসহ মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের, আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৫৩৪ জন। আর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তির রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ খুনের ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোমিনুর রহমান জানান, বর্তমানে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫২ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ৫২৬ জন ও রোহিঙ্গা ১৮৬ জন। ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ১১ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ১০ জনই রোহিঙ্গা।
গত মাসে তানভীর আহমদ (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রসহ ডেঙ্গু আক্রান্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ডা. মো. মোমিনুর রহমান জানান, বর্ষাকালে ভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে। একই সঙ্গে সড়কের সংস্কার কাজসহ নালা নর্দমায় পানি জমে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার জন্ম হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলায় হেড মাঝি নিহত
অপরদিকে কক্সবাজার পর্যটন এলাকা হওয়ায় ভ্রমণে আসা অনেক পর্যটক আবাসিক হোটেলে মশারী ব্যবহার না করায় ঝুঁকি বাড়ছে। ডেঙ্গুর জীবানুবহন করে কোনো ব্যক্তি কক্সবাজার এসে রাত্রি যাপন করলে তাকে কোনো মশা কামড়ানোর পর অন্য ব্যক্তিকে কামড় দিয়ে সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। তাই মশারী ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, কক্সবাজারে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৫৩৪ জন। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন স্থানীয় এক এবং রোহিঙ্গা ২২ জনসহ মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজারে ডেঙ্গু ভয়াবহতা দেখা দেয়ায় নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের অন জব প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার পর্যাপ্ত আরডিটি কিট সরবরাহ রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মী, ভলান্টিয়ার, রোহিঙ্গা মাঝিসহ নানাভাবে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এডিস মশা যাতে প্রজনন করতে না পারে সে জন্য ক্যাম্পে খাল, ডোবা, নালা, নর্দমা পরিস্কার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলি, এপিবিএন সদস্য গুলিবিদ্ধ
২ বছর আগে