ব্যবসায়ী
কাঙ্খিত মাছ পেয়ে খুশি সুন্দরবনের জেলে ও ব্যবসায়ীরা
নিষেধাজ্ঞা শেষে নৌকা-জাল নিয়ে ফের নদীতে মাছ শিকারে নেমেছে সুন্দরবনের জেলেরা।
দীর্ঘ দিনের নিরবতা কাটিয়ে এবং চরম অর্থ কষ্টে দিনাতিপাত করে পর্যাপ্ত জ্বালানি আর খাবার নিয়ে নৌকায় সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে মাছ ধরে গিয়ে কাঙ্খিত মাছ পাওয়ায় খুশি জেলে, ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
বর্তমানে খুলনার বাজারগুলোতে মাছ সরবরাহ বেড়েছে। দামও কিছুটা কমেছে, এতে ক্রেতারাও বেশ খুশি।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন এবং টেকসই মৎস্য আহরণের লক্ষ্যে ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা বেধে দেয় সরকার। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলেদের সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন খাল ও নদীতে পুনরায় মাছ শিকারের অনুমতি দেয় কৃর্তপক্ষ।
তবে এই মাছ ধরা নিয়ে অভিযোগ করেছে জেলেরা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ ধরা শুরু
তাদের অভিযোগ, একজনের নামের বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) মহাজনরা অন্য জনের নামে পাশ কেটে ভাড়া দিচ্ছেন। ফলে অনেক প্রকৃত জেলে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যেতে পারছেন না।
এদিকে, মাছ ধরে অনেক জেলে উপকূলে ফিরে এসেছেন। তারা জানান, গহীন বনে একেকটা জালে কয়েক মণ চিংড়ি পেয়েছেন।
কয়রার মহারাজপুর এলাকার জেলে জামাল উদ্দিন বলেন, আশা করেছিলাম বেশি মাছ পাব, আশা পূরণও হয়েছে। সুন্দরবন খুলে দেয়ার প্রথম দিনেই প্রচুর মাছ পেয়েছি। পরের কয়েক দিনও ভালো মাছ পেয়েছি।
মহারাজপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মো. আবু সাঈদ বলেন, পাশ নিয়ে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হলেও অধিকাংশই সমাধান হয়েছে। তবে এর জন্য ফরেস্ট অফিস দায়ী নয়, স্থানীয় অসাধু মহাজনদের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: তিন মাস বন্ধের পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু
তবে স্থানীয় জেলেদের অভিমত, মহাজনেরা এক সঙ্গে অনেকের বিএলসি নিয়ে ফরেস্ট অফিস থেকে অন্যের নামে পাশ করায় কীভাবে? যার বিএলসি তাকেই পাশ দেয়ার নিয়ম।
কয়রার দেওলিয়া মৎস্য আড়তের মেসার্স হোগলা ফিসের স্বত্বাধিকারী মো. ইনসান আলী বলেন, মাছের সাইজ প্রকার অনুযায়ী বিভিন্ন দামে আমরা কিনছি। ছোট-বড় সব সাইজের মাছ পাচ্ছি। তবে মাঝারি সাইজের বেশি। চিংড়ি ৩৩০ থেকে ৩৮০ টাকার সাইজ বেশি পাচ্ছি। দাঁতনি মাছ ১৮০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে দাম একটু কমেছে।
কয়রা কাসিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, তার আওতায় ৭০০ বিএলসির পাশ দেয়া হয়েছে। সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে সুন্দরবনে মাছের ঘনত্ব বেড়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, চরপাটা জাল ও ভেপদি জাল দিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে নৌকা ও ট্রলারে মাছ ধরছেন জেলেরা। সুন্দরবনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদী-খাল রয়েছে। অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারাবছরই মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। আর বাকি অংশের নদী-খাল ও জলাভূমিতে পারমিটধারী জেলেরা মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। মৎস্য আহরণের উপর সুন্দরবন উপকূলের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে।
২ বছর আগে