মেশিন
রমেক হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিন বিকল, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে। এতে বিকল হয়ে পড়েছে কয়েকটি মেশিন। ফলে ওই ইউনিটে জট বেধেছে রোগীদের।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা করতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, বিষন্ন মনে বসে আছেন অনেক রোগী। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে ইউনিটের একটি অংশ। বিছানাগুলো খালি পড়ে আছে।
নামমাত্র টাকায় সরকারের এই সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে হঠাৎ বৈদ্যুতিক শটসার্কিটে পুড়ে গেছে সাতটি মেশিন ও আটটি এয়ারকন্ডিশনার (এসি)। এতে ব্যাহত হয়ে পড়ে ডায়ালাইসিস কার্যক্রম।
নীলফামারীর রানা মাহমুদ কিডনি রোগে আক্রান্ত তার মাকে নিয়ে সোমবার ডায়ালাইসিসের জন্য সকাল থেকে হাসপাতালে অপেক্ষা করলেও কোনো চিকিৎসা নিতে পারেননি।
রানা মাহমুদ সাড়ে তিন বছর ধরে তার মায়ের ডায়ালাইসিস করাচ্ছে। ইতোমধ্যে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হয়েছেন সর্বশান্ত। তার পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করা সম্ভব না।
দিনাজপুরের পারবর্তীপুর থেকে আসা জহুরুল ইসলাম বলেন, আড়াই বছর ধরে তার স্ত্রী কিডনি রোগে ভুগছেন। মৃত্যু পথযাত্রী তার স্ত্রীকে নিয়ে ভোরে এসেছেন হাসপাতালে। কিন্তু ডায়ালাইসিস না হওয়ায় অন্যদের মতো তিনিও বিপাকে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: রমেকের অক্সিজেন ‘পাচারকারী চক্রের’ ৬ সদস্য আটক
আক্ষেপ করে জহুরুল বলেন, অস্থিরতার বাজারে হাসপাতালের ৪০০ টাকা জোগাড় করা তার জন্য কঠিন। হাসপাতালে চিকিৎসা না হলে তার স্ত্রীকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
হাসপাতালের ডায়ালাইসিস বিভাগের ইনচার্জ সাজেদা খাতুন জানান, কয়েকধাপে এই বিভাগে ৩৯টি ডায়ালাইসিস মেশিন স্থাপন করা হলেও শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক সমস্যায় নষ্ট হয়েছে ২০টি মেশিন। বর্তমানে ১৯টি মেশিন সচল থাকলেও সেগুলো চলছে জোড়াতালি দিয়ে।
সাজেদা আরও জানান, গড়ে প্রতিদিন ৭০ জন রোগী আসেন ডায়ালাইসিস করতে। শুধুমাত্র দায়িত্বশীল মানুষের জন্য বিকল হচ্ছে এসব যন্ত্র। ডায়ালাইসিস করতে না পারায় রোগীর স্বজনদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
বার বার হাসপাতালে শটসার্কিটের কারণ জানতে চাইলে রংপুর গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) রাজিয়া সুলতানা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জানান, তার বদলি হয়েছে অন্যত্র। শটসার্কিটের খবর পেয়ে তিনি পরিদর্শনে এসেছেন।
হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এবিএম মোবাশ্বের আলম বলেন, চিকিৎসাসেবায় তাদের কোনো আন্তরিকতার অভাব নেই। নষ্ট যন্ত্রপাতির কারণে এই ইউনিটের চিকিৎসকসহ কর্মকর্তাদের দুর্নামের ভাগ নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. ইউনুস আলী জানান, মেশিনগুলো জরুরিভাবে মেরামতের জন্য তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। আর বিদ্যুৎ শটসার্কিট বন্ধে স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগকে অবগত করেছেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের ২৭ তারিখ পর্যন্ত রমেক মেডিকেলে ডায়ালাইসিস করেছেন ১৪ হাজার মানুষ।
আরও পড়ুন: চমেক হাসপাতালে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ডায়ালাইসিস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
রমেক পরিচালকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ
১ বছর আগে
ভ্যাট সংগ্রহে ৩ লাখ মেশিন বসানো হবে
আগামী তিন বছরে ঢাকা মহানগরী ও এর আশেপাশের এলাকা এবং চট্টগ্রাম শহরে তিন লাখ ভ্যাট সংগ্রহের মেশিন বসানো হবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড এই মেশিনগুলো সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করবে।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে সরকারের পক্ষে মূল্য সংযোজন কর(ভ্যাট) সংগ্রহের জন্য জেনেক্স ইনফোসিসকে বিক্রেতা হিসাবে নির্বাচিত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার হার বাজারভিত্তিক করা হবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠকে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল বারিক জানান, জেনেক্স ইনফোসিসকে একটি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে জেনেক্স বিভিন্ন ধরনের খুচরা দোকানে বৈদ্যুতিক কর সংগ্রহ যন্ত্র বা ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস (ইএফডি) এবং সেলস ডেটা কন্ট্রোলার (এসডিসি) বা ভ্যাট সংগ্রহের মেশিন সরবরাহ ও স্থাপন করার তিনটি ভাগেরই চুক্তিতে জিতেছে।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট এনবিআরের এই সিদ্ধান্তে নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বারিক বলেন, বিক্রেতা তার নিজস্ব খরচে মেশিন সরবরাহ ও ইনস্টল করবে এবং বিনিময়ে সংগৃহীত অর্থের শূন্য দশমিক ৫২ থেকে শূন্য দশমিক ৫৩৮ শতাংশ সার্ভিস চার্জ হিসাবে সরকারকে জমা দেয়ার সময় পাবে।
তিনি আরও বলেন, এটি পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।
এনবিআর কর্মকর্তাদের মতে, সারাদেশে এতগুলো মেশিন পরিচালনা করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়, সে কারণেই সার্ভিস আউটসোর্সিং করা হচ্ছে।
তবে দুই বছর আগে ইএফডি মেশিন বসানোর কাজ শুরু করা হলেও এর কার্যক্রমে তেমন গতি নেই।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়াতে আইএমএফের কোনো প্রস্তাব পাইনি: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফের কাছে ঋণ চাইলেও অর্থনীতির অবস্থা খারাপ নয়: অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে