বহন
হেরোইন বহনের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাটোরে ৮০ গ্রাম হেরোইন বহনের দায়ে আবু তালেব নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকালে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অম্লান কুসুম জিষ্ণু।
আরও পড়ুন: নাটোরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ-ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাটোর জজ আদালতের পিপি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার কাছিকাটা টোলপ্লাজায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী নৈশ কোচে তল্লাশি চালিয়ে তালেব ও নাছির নামে দুই যাত্রীর ব্যাগ থেকে ৪০ গ্রাম করে ৮০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
তবে তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রে নাছিরকে স্কুল ছাত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে আবু তালেবকে জেলা জজ আদালতে সাজা দেওয়া হলেও নাছিরকে বিচারের জন্য শিশু আদালতে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি কাদের খানের ৪ বছরের কারাদণ্ড
৫ মাস আগে
ভারী ব্যাগ বহনে মেরুদণ্ডের সমস্যা নিয়ে বেড়ে উঠছে শিশুরা
শিশুদের জন্য স্কুলে ব্যবহৃত বেঞ্চ বা চেয়ারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এছাড়া দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ভারী স্কুলব্যাগ বহন করে। দীর্ঘসময় ভারী ব্যাগ বহনের কারণে অনেকের মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যায়, পিঠে-ঘাড়ে চাপ পড়ে।
অল্প বয়স থেকেই তারা মেরুদণ্ডের সমস্যা নিয়ে বেড়ে ওঠে। পরে তারা ৪০-৫০ বছরে পৌঁছলে অনেকেই মেরুদণ্ডজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন।
রবিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বাংলাদেশ নিউরো স্পাইন সোসাইটি আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ৮৮ শতাংশ করোনা রোগী ওমিক্রনে আক্রান্ত: বিএসএমএমইউ’র জরিপ
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বিগত দিনের তুলনায় স্পাইন রোগের চিকিৎসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনায় অনেক দূর এগিয়েছে। বর্তমানে কমসংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানের ঘাটতি ও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে দেশের জনগোষ্ঠীর ৫০ শতাংশ চিকিৎসাসেবার বাইরে রয়েছে।
বর্তমান সরকার আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে মেরুদণ্ডের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে পৌঁছাতে কাজ করে চলেছে।
সেমিনারে বলা হয়, বিশ্বের ৫৪ কোটি মানুষের মেরুদণ্ডের সমস্যা ভুগছেন। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের এ সমস্যা রয়েছে। প্রতি বছর বাংলাদেশ প্রায় ২০ হাজার এ ধরণের রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। বাংলাদেশের এসব রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ২১২ জন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। অনেক সময় গাছ থেকে পড়ে যাওয়া ও আঘাতজনিত সমস্যা হলে অস্ত্রোপচার করতে হয়। অন্য রোগীদের ইনজেকশন, ওষুধ ও থেরাপি জাতীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রতিবছর এ রোগে আক্রান্ত ৪০ হাজার রোগীর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। এদের অধিকাংশই থেকে যান চিকিৎসার বাইরে।
তাছাড়া ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকে চিকিৎসা ব্যয় বহনে অসমর্থ্য। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য শ্রেণিকক্ষে বসার ব্যবস্থা থাকে না। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে তাদেরও মেরুদণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
সেমিনারে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে উন্নতমানের নিউরো স্পাইনের সব ধরণের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোকে বিশ্বমানের করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই বাংলাদেশে নিউরো সার্জারি এমএস কোর্স চালু করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউরো স্পাইন সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোঃ কামাল উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বিএসএমএমইউতে আগুন
তিন ডোজ টিকা নেয়ার দাবিদার ফারুক বিএসএমএমইউতে
২ বছর আগে
‘জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা বাংলাদেশকে একা বহন করতে হবে না’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাই বলেছেন, বাংলাদেশের মতো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে প্রধান গ্রিনহাউস নির্গমনকারী দেশগুলির একটি স্পষ্ট বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে একা জলবায়ু পরিবর্তনের ভার বহন করতে হবে না।’
তিনি চরম আবহাওয়ার ঘটনার প্রভাব থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে পুনরুদ্ধারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক তহবিলের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান
তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিকূলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং বলেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা বাংলাদেশের একা বহন করা উচিত নয়।
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার বলেন, ‘অনেক দীর্ঘ সময় ধরে প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলো তাদের (ক্ষতিগ্রস্তদের) কষ্টের জন্য নিজেদের দায় অস্বীকার করেছে। এটি অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত।’
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে তার ১০ দিনের সফর শেষে এক বিবৃতিতে ফ্রাই বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলোর পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে একটি ক্ষতি ও ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত তহবিল গঠন করতে হবে।
তিনি বলেছেন, নারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের একটি বিশাল বোঝা বহন করে, পরিস্কার পানি আনার জন্য দীর্ঘ দূরত্বে হাঁটতে হয়। যার ফলে তারা যৌন হয়রানির ঝুঁকিতে পড়ে এবং তাদের শিশুর যত্ন ও কৃষিকাজ থেকে দূরে থাকতে হয়।
র্যাপোর্টিয়ারের মতে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেটের আকস্মিক বন্যায় নারীরা গবাদিপশু, ফসল ও সঞ্চিত ফসল হারিয়েছে। এগুলো পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে ভুক্তভোগীদের কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: এখনই জলবায়ু নিয়ে ভাবুন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শুনুন: ব্যাচেলেট
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ তার সফরের সময় আদিবাসীদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেছেন, যারা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ তাদের এলাকার গাছ কেটে ফেলার ফলে তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ধ্বংস হচ্ছে এবং মিঠা পানি, খাদ্য ও ওষুধ খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলছে।
র্যাপোর্টিয়ার বলেন, গাছ কাটা; বন উজাড় ও বন অবক্ষয় কমাতে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া নিজস্ব কর্মসূচির লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সরকার অস্বীকার করে যে এই সম্প্রদায়গুলো আদিবাসী এবং তাই তাদের দুর্দশা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
ফ্রাই বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্থানান্তরের বিষয়টি আমার জন্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যায় ভুগছেন এমন কয়েক লাখ মানুষ অন্যান্য সুযোগের সন্ধানে শহরে চলে যাচ্ছে।’
ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘অবশ্যই এই লোকেরা প্রধান শহরগুলোর বস্তি এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেয়, সেখানে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো অস্বীকার করা হচ্ছে।’
তিনি জানান, তিনি রিপোর্ট পেয়েছেন যে বিশেষ করে শহুরে বস্তিতে শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ। তারা অপুষ্টি, স্কুল থেকে ঝড়ে পড়া, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম ও নির্যাতনের উচ্চ হারের শিকার হয়।
ফ্রাই বলেন, তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের সঙ্গেও দেখা করেন। যারা দাবি করেন যে তারা নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য সরকার দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সরকার জলবায়ু কর্মীদের কণ্ঠস্বর দমন করতে ডিজিটাল সুরক্ষা আইন ব্যবহার করছে বলে মনে হচ্ছে।’
ফ্রাই ২০২২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন, যাতে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন, ক্ষয়ক্ষতি, ক্ষতি ও অংশগ্রহণের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার ব্যাপারে আহ্বান জানানো হবে।
তার বাংলাদেশ সফরের একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ২০২৩ সালের জুনে মানবাধিকার কাউন্সিলে পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান বাংলাদেশ ও আইওএম-এর
২ বছর আগে