স্ত্রীকে
যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন চালিয়ে স্ত্রী ফারহানা বেগম পান্নাকে হত্যার দায়ে স্বামী শাহজাহান প্রধানকে মৃত্যুদণ্ড এবং একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদানের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এই রায় প্রদান করেন।
নিহত ফারহানা বেগম পান্না একই ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীর মো. আলী আকবর পাটওয়ারীর মেয়ে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে প্রতিবন্ধী শিশু হত্যা মামলায় চাচাসহ ২ জনের যাবজ্জীবন
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহান প্রধান একই উপজেলার ভাটরা গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ীর মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ফারহানা ও শাহজাহানের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবন ভালই চলছিল। ঘটনার সময় তাদের মাহবুব (৩) নামে পুত্র ও মীম নামে দেড় বছর বয়সী কন্যা সন্তান ছিল। ঘটনার কিছুদিন পূর্ব থেকে শাহজাহান সৌদি আরব যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে তিন লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ২০০৯ সালের ৭ জুন বিকালে নিজ বসতঘরে শাহজাহান আবারও যৌতুকের টাকা না আনায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতন ও সজোরে তার তলপেটে লাথি মারে। তাৎক্ষণিক ফারহানা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় ফারহানার ভাই ফারুক আহম্মদ পাটওয়ারী বাদী হয়ে শাহাজাহান প্রধানকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।পরবর্তীতে ওই মামলাটি ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে দায়ের হয়। বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন সিআইডি চাঁদপুরের তৎকালীন সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীরকে। তিনি তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৭ মার্চ শাহজাহানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবদুল মান্নান খান মহিন।
আরও পড়ুন: রংপুরে ধর্ষণের দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ায় বাড়িওয়ালাকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
২ বছর আগে
ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার মামলায় স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসময় মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু ট্রাইবুনাল, বিচারক জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত ফরিদা বেগম উপজেলার বাগাট গ্রামের রাশেদ শেখ মেয়ে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. সরোয়ার শেখ (৩৫) মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের চুন্নু শেখের ছেলে এবং পেশায় ভ্যানচালক।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-সরোয়ার শেখের মা ছাহেরা বেগম (৫৫), মামা ওবায়দুল শেখ (৪৫) ও আলিয়ার শেখ (৬০)।
মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট স্বপন পাল।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ৬ জুলাই সকালে তার মেয়ে তাকে মোবাইলে ফোন করে জানায় যে, ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য তার স্বামী তাকে মারধর করছে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পান যে তার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। এ ঘটনার পর পুলিশ আলামত জব্দ করে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় এবং মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে। দায়েরকৃত অপমৃত্যু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন আদালতে।
মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ময়নাতদন্তে প্রতিবেদনে নিহতের গলায় চারটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে গলাটিপে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ আসামি সরোয়ার শেখের বিরুদ্ধে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ এর ১১(ক) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় উল্লেখিত আসামিকে ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
ফেনীতে ১৯ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
২ বছর আগে