বিজয় একাত্তর হল
চিরকুট লিখে ঢাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লকের ষষ্ঠ তলা থেকে লাফ দিয়ে জিয়াউর রহমান হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিহত কাজী ফিরোজ (২০১৯-২০) শিক্ষাবর্ষের চীনা ভাষার শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
ফিরোজের রুমমেট বিন ইয়ামিন বলেন, ‘ফিরোজ কিছুদিন ধরে হতাশ ছিল। আমরা সবসময় তাকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছি। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সে কক্ষে এসে নামাজ পড়ে এবং জিজ্ঞেস করে, আমাদের কাছে টাকা পাওনা আছে কি না।’
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে অপহরণের ৭ ঘণ্টা পর ঢাবি শিক্ষার্থী উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘যখন সে ঘর থেকে বের হচ্ছিল, তখন তাকে বেশ বিষণ্ণ মনে হচ্ছিল। আমি তার ফিরে আসার পরে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। কিন্তু পাঁচ মিনিট পর শুনলাম বিজয় একাত্তর হল থেকে কেউ আত্মহত্যা করেছে।’
ইয়ামিন বলেন, আমরা তৎক্ষণাৎ সেখানে ছুটে যাই এবং দেখি ওই শিক্ষার্থী ফিরোজ।
ফিরোজকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পরে তার টেবিল থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।
চিরকুটটিতে লেখা ছিল, 'মানুষ মর্যাদার জন্য বাঁচে। মর্যাদা না থাকলে জীবন অর্থহীন... মা, আমি দুঃখিত যে আমি আমার কথা রাখতে পারিনি।
ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, 'ঘটনাটি হৃদয় বিদারক।’
হল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সাজেক থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগ
১ বছর আগে
বহিষ্কৃত ৬ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হল কমিটিতে
সিনিয়র ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় ছয় শিক্ষার্থী হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের হল কমিটিতে তাদের পদ দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত ছয় ছাত্র মাসফি-উর রহমানকে পরিকল্পনা ও কর্মসূচি উপসম্পাদক, শফিউল্লাহ সুমনকে সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপসম্পাদক, নাইমুর রশিদকে গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক, সাব্বির আল হাসান কাইয়ুমকে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মোহাম্মদ ফিরোজ আলম অপিকে প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপসম্পাদক এবং আবদুল্লাহ আল মারুফকে ছাত্র বৃত্তি উপসম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা সবাই বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীবের অনুসারী।
যোগাযোগ করা হলে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব বলেন, হল কর্তৃপক্ষ তাদের হল থেকে বের করে দেয়নি। শুধু তাদের আসন বাতিল করা হয়েছে। এখনও তারা হলের মধ্যে সংযুক্ত। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে তাদের হলের ছাড়পত্র প্রয়োজন। আমি যতদূর জানি, ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তরা প্রভোস্ট অফিসে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমি আশা করি পরবর্তী আসন বণ্টন ব্যবস্থায় হলে তাদের আসন দেয়া হবে।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ সেরা কমিটি করার চেষ্টা করেছি এবং আশা করি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
পড়ুন: ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত, ১৬ নেতাকর্মী স্থায়ী বহিষ্কার
যোগাযোগ করা হলে প্রভোস্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট ইউএনবিকে বলেন, ‘ছয় শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কথা বলার পর শাস্তি পুনর্বিবেচনা করার প্রক্রিয়া রয়েছে এবং শাস্তি কমানোর জন্য অভিযুক্তদের আবেদন জানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে আখলাকুজ্জামানকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ছয় নেতাকর্মীর শাস্তি পুনর্বিবেচনা করার জন্য এমন কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয়নি এবং এখন পর্যন্ত তারা হলের অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
এর আগে চলতি বছরের ৪ এপ্রিল দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ছয় শিক্ষার্থীকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করে বিজয় একাত্তর হল কর্তৃপক্ষ।
পড়ুন: ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ, আহত ৮
ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের কোন্দল: সহ-সভাপতি আহত
২ বছর আগে