ভেটো
গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় ইসরায়েল-হামাসের চলমান যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকা বলেছে, বুধবারের (২০ নভেম্বর) উত্থাপিত প্রস্তাবটিতে হামাসের হাতে এখনও আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের তাৎক্ষণিক মুক্তির বিষয়টি নেই।
এদিকে লেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অগ্রগতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তার দেশ যুদ্ধ বন্ধের যেকোনো চুক্তিতে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের অধিকার চায়।
লেবাননের সরকার সম্ভবত এ ধরনের যেকোনো দাবিকে তার দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখবে।, যা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সেপ্টেম্বর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সর্বাত্মক যুদ্ধের অবসানের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলবে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল যুদ্ধে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ হাজার মানুষ। যুদ্ধের কারণে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বা লেবাননের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
অন্যদিকে রকেট, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের ৮৭ সেনা ও ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অভিযানের পরদিন থেকেই ইসরায়েলে গোলাবর্ষণ শুরু করে হিজবুল্লাহ।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক যুদ্ধে প্রায় ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ৭ অক্টোবরের হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং আরও ২৫০ জনকে অপহরণ করা হয়। গাজার অভ্যন্তরে প্রায় ১০০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে। যাদের অন্তত এক তৃতীয়াংশ নিহত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ত্রাণের ট্রাক লুট, ২০ জনকে হত্যা করেছে হামাস
১ মাস আগে
গাজায় মানবিক যুদ্ধ বিরতির জাতিসংঘের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো
গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবিতে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
১৫ সদস্যের কাউন্সিলে ১৩ সদস্য পক্ষে এবং একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত ছিল।
এতে গাজায় ইসরায়েলের মাসব্যাপী বোমাবর্ষণ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচ্ছিন্ন অবস্থান এবং তার কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্রের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান ফাটল লক্ষ করা যায়।
যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থনকারীদের মধ্যে ফ্রান্স ও জাপানও ছিল।
প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সনদের ৯৯ অনুচ্ছেদ বলে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
এই অনুচ্ছেদে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘ প্রধানকে।
গুতেরেস গাজায় সৃষ্ট ‘মানবিক বিপর্যয়’ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে মার্কিন ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর রবার্ট উড বলেছেন, সামরিক অভিযান বন্ধ করা হলে হামাসকে গাজা শাসন চালিয়ে যেতে এবং ‘পরবর্তী যুদ্ধের বীজ রোপণ করার সুযোগ দেবে’।
ভোটের আগে উড বলেছিলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি শান্তি এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান চায় না হামাস। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে চায়, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা উভয়েই যাতে শান্তিতে ও নিরাপদে বসবাস করতে পারে। তাই আমরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করি না।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উপত্যকায় ১৭ হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত এবং ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক সদস্যদের মৃত্যুর আলাদা করে কোনো হিসাব দেয়নি।
তবে তারা জানায়, নিহতদের ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।
অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলি পক্ষের প্রায় ১২০০ জন মারা গেছে।
১ বছর আগে
ইউক্রেনের ৪টি অঞ্চলে গণভোটের বিরুদ্ধে আনা নিন্দা প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো
জাতিসংঘের উত্থাপিত এক নিন্দা প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার জাতিসংঘের উত্থাপিত এই প্রস্তাবে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে আয়োজিত গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে এবং মস্কোর দাবিকৃত ভূখণ্ডের কোনো দখলকে স্বীকৃতি না দেয়ার জন্য সমস্ত দেশকে অনুরোধ করা হবে।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ১০-১ ভোট পড়েছে এবং চীন, ভারত, ব্রাজিল ও গ্যাবন এসময় ভোট প্রদানে বিরত ছিল।
প্রস্তাবটি রাশিয়ার ‘ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার বেআইনি আক্রমণ’ অবিলম্বে বন্ধ করার এবং ইউক্রেন থেকে তার সমস্ত সামরিক বাহিনীকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড ভোটের আগে বলেছিলেন যে রাশিয়ার ভেটোর ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়া বলেছে তারা এটিকে ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে নিয়ে যাবে, কেননা সেখানে কোনো ভেটো নেই।
তিনি আরও বলেন, তরা দেখাবে যে বিশ্ব এখনও এই সিদ্ধান্তে সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার পক্ষে রয়েছে।
আগামী সপ্তাহে এটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বিবৃতিকে সমর্থন বলেন যে রাশিয়ার কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের সনদ লঙ্ঘন করেছে এবং এর নিন্দা করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া যে এলাকাটিকে সংযুক্ত করার দাবি করছে সেটি ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই সবচেয়ে বড় জোরপূর্বক ভূখণ্ড দখল। এ বিষয়ে কোনো মধ্যপন্থার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: বিশ্বে গণতন্ত্রের পশ্চাদপসরণ ঘটছে: জাতিসংঘ মহাসচিব
কাউন্সিলের ভোটটি ক্রেমলিন অনুষ্ঠিত এ জমকালো আয়োজনের কয়েক ঘন্টা পরেই অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়া অধিকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়াকে অধিগ্রহণ করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এবং বলেন যে এগুলো এখন রাশিয়ার অংশ এবং মস্কো এগুলো রক্ষা করবে।
থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন যে অঞ্চলগুলো রাশিয়ায় যোগ দিতে চায় কিনা তা নিয়ে ‘জাল’ গণভোটের ফলাফল মস্কোতে পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং সবাই তা জানে। তাদের দিকে রুশ বন্দুক তাক করে রাখা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সনদের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার পবিত্র নীতিগুলোকে রক্ষা করতে হবে। ’
থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘পুতিন ইউক্রেনীয়দের সংকল্পের ভুল হিসাব করেছেন। ইউক্রেনের জনগণ উচ্চস্বরে ও স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে তারা কখনই রুশ শাসনের অধীন হওয়া মেনে নেবে না।’
রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া গণভোটকে সমর্থন করে দাবি করেন যে ইতালি, জার্মানি, ভেনিজুয়েলা ও লাটভিয়া থেকে ১০০ টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ভোটটি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং তারা এই ফলাফলকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, গণভোটের ফলাফল তাদের পক্ষে আসে। এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা ইউক্রেনে ফিরতে চায় না। তারা স্বেচ্ছায় আমাদের দেশের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি পছন্দ করেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংঘাতে ৩৭৫২ বেসামারিক মানুষের প্রাণহানি: জাতিসংঘ
নেবেনজিয়া আরও বলেন, ‘আজকের উত্থাপিত এই খসড়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হলে, ফিরে তাকানোর সুযোগ থাকবে না।’
তিনি কাউন্সিলে পশ্চিমা দেশগুলোকে প্রকাশ্য শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, কাউন্সিলের সদস্যদের নিন্দা জানিয়ে ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভেটোতে বাধ্য করার মাধ্যমে তারা নিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।
চলতি বছরের শুরুতে গৃহীত একটি প্রস্তাবের অধীনে রাশিয়াকে আগামী সপ্তাহগুলোতে সাধারণ পরিষদের সামনে তার ভেটো রক্ষা করতে হবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, ‘সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা উচিত। কিন্তু চীন বিরত ছিল। কারণ এটি বিশ্বাস করে যে নিরাপত্তা পরিষদের উচিত সংঘাতকে তীব্রতর করার এবং সংঘাত বাড়ানোর পরিবর্তে সংকট শান্ত করার চেষ্টা করা।’
ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত রোনালদো কস্তা ফিলহো বলেন, গণভোটগুলোকে বৈধ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না এবং তার দেশ সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর আঞ্চলিক অখণ্ডতার নীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এটি বিরত ছিল কারণ প্রস্তাবটি উত্তেজনা কমাতে ও ইউক্রেনের সংঘাতের সমাধান খুঁজে পেতে অবদান রাখেনি।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ: ইউক্রেনে রেকর্ড মানবিক সহায়তা সংকটের মুখে জাতিসংঘ
২ বছর আগে