অভাবনীয় অগ্রগতি
এই নারী মানেই শক্তি
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতির পাশাপাশি বৈশ্বিক মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব এবং শিক্ষা ও দারিদ্র্য নিরসনে অর্জনের প্রশংসা করেছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের আর্টিকেলটি সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। যা সংবাদপত্রটির একজন কলামিস্ট পেটুলা ডিভোরাক লিখেছেন।
আর্টিকেলটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসির ঠিক বাইরে এক শহরতলিতে প্রধানমন্ত্রী তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ১৬ বছর বয়সী নাতনির সাথে ৭৬তম জন্মদিন উদযাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তাদের জন্য রান্না করেছি। চিকেন বিরিয়ানি… আমার ছেলের বাড়িতে আমার নিজের রান্নাঘর আছে, যেটা শুধু আমার জন্য।’
ডিভোরাক উত্তর ভার্জিনিয়ার রিটজ-কার্লটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নেন, যেখানে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দেয়ার পর ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সরকারের সমালোচনা করতে পারে: ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যের গল্প তুলে ধরে ডিভোরাক লিখেছেন- শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী নারী সরকারপ্রধান।
আর্টিকেলটিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার চেয়েও বেশি মানুষের একটি দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং ২০০৪ সালে বিশেষ করে রক্তাক্ত গ্রেনেড হামলাসহ অন্তত ২০টি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্টের আর্টিকেলটিতে ডিভোরাক প্রধানমন্ত্রীকে 'এই নারী মানেই শক্তি' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আবদুল্লাহ নিয়ামি নামে একজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে লেখক বলেন, শেখ হাসিনাকে দেখতে চাওয়ায় তিনি তার ছয় বছর বয়সী মেয়ে জোয়াকে উঁচুতে ধরেন। এ প্রসঙ্গে লেখক উল্লেখ করেন, একজন নারী সরকারপ্রধান (শেখ হাসিনা) যার মতো ‘আমেরিকা শিগগিরই দেখতে পাবে না’।
আর্টিকেলটিতে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত মোট ১৮ বছরে চার মেয়াদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারকে সমুন্নত রেখেছেন।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের শিবিরে বসতি স্থাপনকারী ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে সাহায্য চেয়েছেন।
ডিভোরাক শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন, শিবিরের জীবন ভালো নয় এবং রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরতে চায়।
আরও পড়ুন: আর সম্ভব নয়, রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, তার দেশের অভিবাসী পরিস্থিতি আমেরিকার সাথে তুলনা করা যায় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বিশাল দেশ যেখানে প্রচুর জায়গা ও কাজের সুযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম, যেখানে ১৭ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ রয়েছে। তবে এর আয়তন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের কাছাকাছি।
আর্টিকেলটিতে দেশীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের জিরো-টলারেন্স নীতির প্রশংসা করেছে।
লেখক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ডেস্পাইট বিইং অ্যাঁ ওমেন’ মিমের দিকে ইঙ্গিত করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, কখনও কখনও ‘নারীরা পুরুষদের চেয়ে ভাল’।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন নারী হিসেবে তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্যের সাথে সম্পর্কিত সংগ্রামগুলো, বেশিরভাগ নারী যেসব বাধার মুখোমুখি হন এবং কীভাবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না তা একটি জাতির অগ্রগতিকে আটকে দেয় তা বোঝেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, গত এক দশকে তার সরকার উল্লেখযোগ্যভাবে দেশে দারিদ্র্য হ্রাস করেছে, শিক্ষার সুযোগ বাড়িয়েছে এবং উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।
আর্টিকেলটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির জন্য বেশি নম্বর প্রদানকারী বিশ্বব্যাংককে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এটি ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার সময়ে সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে একটি থেকে ২০১৫ সালে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন: ঢাকার উদ্দেশে ওয়াশিংটন ত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে