ফাইনাল
কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
বলের দখলে আধিপত্য বিস্তার করলেও ধারহীন আক্রমণেরে কারণে ম্যাচজুড়ে ভুগতে হলো বার্সেলোনাকে। তবে ভাগ্যের ছোঁয়ায় প্রতিপক্ষের দেওয়া আত্মঘাতী গোল ও তাদের বেশ কয়েকটি আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়ায় তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মাদ্রিদের বুতার্কে স্টেডিয়ামে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে লা লিগার ৩১তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
এতে করে ২২ জয় ও চার ড্রয়ে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
লিগে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে লেগানেসের বিপক্ষে একই ব্যবধানে হারে বার্সেলোনা। ফিরতি লেগে এসে তার প্রতিশোধ নিল তারা।
অবশ্য ঠিক প্রতিশোধ বলা চলে না। কারণ মাঠে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরালেও তেমনভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি দারুণ আক্রমণ শানিয়েছিল লেগানেস, তা থেকে গোলও আদায় করতে পারত দলটি। মাঝে একবার বল জালেও জড়িয়েছিল তারা, কিন্তু অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। শেষের দিকে সময়ক্ষেপণ করে ওই এক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ার জন্য শিষ্যদের ইঙ্গিত করতে দেখা যায় ফ্লিককে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই।
হারলেও ম্যাচ শেষে তাই কিছুটা তৃপ্তি ঝরেছে লেগানেস কোচ বোর্হা হিমেনেসের কণ্ঠেও, ‘আজ আমরা বার্সেলোনার মতো একটি দলকে সময় নষ্ট করতে এবং শেষের বাঁশি চাইতে বাধ্য করেছি।’
এই জয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করে লিগ শিরোপা জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল কাতালান জায়ান্টরা।
তবে পূর্ণ তিন পয়েন্ট অর্জনের রাতের স্বস্তিতে নেই দলটি। চোট পেয়ে প্রথমার্ধে বিরতির আগে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সার তরুণ ফুলব্যাক আলেহান্দ্রো বালদেকে।
৪ দিন আগে
আতলেতিকোকে বিদায় করল বার্সেলোনা, কোপায় এল ক্লাসিকো ফাইনাল
সব প্রতিযোগিতা থেকে কার্যত ছিটকে যাওয়ায় কেবল কোপা দেল রে-ই ছিল আতলেতিকো মাদ্রিদের সামনে একমাত্র শিরোপা। ফলে ফাইনালে উঠতে যে দলটি চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবে না, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন অনেকে। তবে চেষ্টা চালালেও ধারহীন ফিনিশিংয়ে সাফল্য পায়নি দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।
বুধবার রিয়াদ এয়ার মেত্রোপলিতানোয় কোপা দেল রের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনার কাছে ১-০ গোলে হেরেছে লস রোহিব্লাঙ্কোসরা।
২৭তম মিনিটে ম্যাচের এক মাত্র গোলটি করেন ফেররান তোরেস। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে একবার জালে বল পাঠান আতলেতিকোর অলেকসান্দার সোরলথ, কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি আর গোনায় ধরা হয়নি। ফলে ৫-৪ অগ্রগামিতায় ফাইনাল নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন: ৮ গোলের রোমাঞ্চকর লড়াই ড্র করেও ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
ম্যাচজুড়ে এদিন বেশ কয়েকবার বার্সেলোনার ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করলেও একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি আতলেতিকো মাদ্রিদ। তাদের নেওয়া মোট ৬টি শটের পাঁচটি ছিল পোস্টের বাইরে, অন্যটি রক্ষণে কাটা পড়ে। অপরদিকে, বার্সেলোনার ১৪টি শটের পাঁচটি লক্ষ্যে ছিল।
গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম লেগের ম্যাচে শুরুর ৬ মিনিটের মধ্যে ২ গোল খেয়ে বসা বার্সেলোনা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৮৩ মিনিট পর্যন্ত ৪-২ গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু শেষ দিকে দুই গোল করে ম্যাচটি ৪-৪ গোলের সমতায় শেষ করে আতলেতিকো। ফলে ফিরতি এই লেগের ওপরই নির্ভর করছিল সেমিফাইনালের ভাগ্য। তাতে শেষ হাসি ফুটল কাতালান জায়ান্টদের মুখে।
এই জয়ে ২০২৫ সালে অপরাজেয় যাত্রা অব্যাহত রইল বার্সেলোনার। নতুন বছরে ২১টি ম্যাচ খেলে এখনও হারের মুখ দেখেনি দলটি। এর মধ্যে মাত্র দুটি ম্যাচ ড্র করেছে তারা, বাকি সবগুলোতে পেয়েছে জয়ের দেখা।
এছাড়া অবসর থেকে ফেরার পর বার্সেলোনার জার্সি গায়ে জড়িয়ে ১৯ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন গোলরক্ষক ভয়চিয়েখ স্টান্সনি, যার ১৭ জিতেছেন এবং দুটি ম্যাচ ড্র হয়। এর মধ্যে ১০ ম্যাচে ক্লিনশিট ধরে রেখেছেন এই পোলিশ গোলরক্ষক।
১৪ দিন আগে
৮ গোলের রোমাঞ্চকর লড়াই ড্র করেও ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
বারবার এগিয়ে গিয়েও পা হড়কাতে বসা রিয়াল মাদ্রিদ প্রত্যাবর্তনের আরও একটি গল্প লিখে যখন ফাইনালের পথ ধরেছে, তখন যোগ করা সময়ে ফের গোল করে আরও একবার ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন মিকেল ওইয়ারসাবাল। তবে অতিরিক্ত সময় শেষে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে এগোচ্ছে, তখন শেষ গোলটি করে রিয়ালকে ফাইনালে পৌঁছে দিলেন আন্টোনিও রুয়েডিগার।
অতি সংক্ষেপে কোপা দেল রের প্রথম সেমিফাইনালের ফিরতি লেগের বর্ণনা মোটামুটি এমনই। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাতে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ৪-৪ গোলে ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান হয়ে থাকল প্রথম লেগে রিয়ালের করা একমাত্র গোলটি। ওই গোলের সুবাদে অগ্রগামিতায় ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে সোসিয়েদাদকে চেপে ধরে অগ্রগামিতায় দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ষোড়শ মিনিটে দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণে উঠে ঘরের মাঠের সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন আন্দের বারেনেচিয়া।
পাবলো মারিনের হেডারে বাড়ানো পাস ধরে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে গিয়ে ওয়ান-অন-ওয়ানে আন্দ্রেই লুনিনকে পরাস্ত করেন এই স্প্যানিশ। ফলে রিয়ালের প্রথম লেগের অগ্রগামিতা ফিরতি লেগের শুরুতেই মিলিয়ে যায়।
তবে ৩০তম মিনিটে এন্দ্রিকের একক নৈপুণ্যে উল্লাসে মাতে বের্নাবেউ। ফলে আবারও লিড নেয় রিয়াল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে কোনোভাবেই আর এগিয়ে যাওয়া হয়ে উঠছিল না স্বাগতিকদের। অন্যদিকে, চাপে কোণঠাসা লা রিয়াল সমতায় ফেরার কথা যেন ভুলেই গিয়েছিল। এর মাঝে আক্রমণে ধার বাড়াতে এন্দ্রিককে উঠিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নামান আনচেলত্তি। তবে ৭২তম মিনিটে উল্টো এক আত্মঘাতী গোল খেয়ে বসে রিয়াল মাদ্রিদ।
আরও পড়ুন: আট গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি আতলেতিকো মাদ্রিদের
প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে দূরের পোস্টের দিকে শট নেন মারিন। গোলমুখ থেকে তা ক্লিয়ার করতে গেলে ডাভিড আলাবার পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। ফলে অগ্রগামিতায় ২-২-এ সমতায় ফিরে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায় সোসিয়েদাদ।
দ্বিতীয়বার সমতায় ফেরার আট মিনিট পর গোল করে লা রিয়ালকে জয়ের বন্দর দেখান ওইয়ারসাবাল। এবারও দুর্ভাগা আলাবার পায়ে লেগে ঠিকানা খুঁজে নেয় ওইয়ারসাবালের শট।
ম্যাচের তখন আর মিনিট দশেক বাকি। এ সময় প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় ইমানোলের শিষ্যরা। তবে অবিশ্বাস্যভাবে চার মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচভাগ্য নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নেয় মাদ্রিদ।
৮২তম মিনিটে বেলিংহ্যাম ও ৮৬তম মিনিটে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি গোল করে চকিতে রিয়ালকে এগিয়ে নেন। অগ্রগামিতায় ফল তখন রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষে, ৪-৩।
কিন্তু না! যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ফের সোসিয়েদাদের ত্রাতা হয়ে ওঠেন ওইয়ারসাবাল। ফলে ৪-৩ গোলে সোসিয়েদাদ ম্যাচে এগিয়ে থাকলেও ৪-৪ অগ্রগামিতায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা।
আরও পড়ুন: কোপা দেল রে: আরও একটি এল ক্লাসিকো ফাইনালের সম্ভাবনা
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে কেউ গোল না পাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও সেই ধারা অব্যাহত থাকে। শেষে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে গড়াচ্ছে, তখনই গর্জন করে ওঠে বের্নাবেউ।
১১৫তম মিনিটে কর্নার থেকে আর্দা গুলেরের নেওয়া ক্রসে হেড দিয়ে রিয়ালকে কাঙ্ক্ষিত জয়সূচক গোলটি এনে দেন রুয়েডিগার। এরপর আর সোসিয়েদাদের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে ফাইনালে পা রাখে রিয়াল মাদ্রিদ। আর মাদ্রিদ জায়ান্টদের তাদের মাঠে এসে চার গোল দিয়েও হতাশা নিয়ে ঘরে ফিরতে হয় সোসিয়েদাদকে।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বুধবার রাতে মাঠে নামবে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। প্রথম লেগে এই দুই দলের লড়াই শেষ হয় ৪-৪ ড্রয়ে। ফলে ফিরতি লেগে জয়ী দলই ফাইনালে রিয়ালের মুখোমুখি হবে।
১৫ দিন আগে
২৫ বছর পর প্রতিশোধ নিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরল ভারত
সেই ২০০০ সালে তৎকালীন আইসিসি নক-আউট ট্রফির ফাইনালে ভারতকে চার উইকেটে হারিয়ে প্রথম এবং ওই একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ২৫ বছর পর আরও একবার ফাইনালের দেখায় সেই নিউজিল্যান্ডকে একই ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে ভারত।
রবিবার (৯ মার্চ) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে কিউইদের চার উইকেটে হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
এর ফলে টুর্নামেন্টের ইতিহাসের এক মাত্র দল হিসেবে সর্বোচ্চ তিনবার সেরাদের এই শিরোপা ঘরে তোলার গৌরব অর্জন করল ভারত।
এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে এক ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় টিম ইন্ডিয়া।
ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে ইনিংস-সর্বোচ্চ ৭৬ রান করে ভারতের জয়ে ভিত্তি গড়ে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এছাড়া প্রথম ইনিংসে বোলারদের সঠিকভাবে ব্যবহার করে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস বড় হতে না দেওয়ার পেছনেও দারুণ ভূমিকা ছিল তার নেতৃত্বের। ফলে ফাইনালের ম্যাচসেরার পুরস্কারটি তার হাতেই উঠেছে।
তিনি ছাড়াও মিডল অর্ডারে দলের হাল ধরেন শ্রেয়াস আইয়ার (৪৮) ও অক্ষর প্যাটেল (২৯)। এরপর শেষের দিকে বাকি কাজটুকু সারেন লোকেশ রাহুল (৩৪*)।
অন্যদিকে, দশ ওভার বোলিং করে একটি মেইডেনসহ মাত্র ২৬ রানের খরচায় দুই উইকেট তুলে নিলেও দলকে জেতাতে পারেননি মিচেল ব্রেসওয়েল।
৩৮ দিন আগে
ফাইনালে ভারতের সামনে নিউজিল্যান্ডের লড়াকু পুঁজি
শুরুতে রাচিন রবীন্দ্রর উড়ন্ত শুরুর পর ভারতের স্পিনারদের দাপট, এরপর শেষের দিকে ফের কিউই ব্যাটারদের ঘুরে দাঁড়ানোয় লড়াকু পুঁজি পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।
রবিবার (৯ মার্চ) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক মিচেল সান্টনার। এরপর ড্যারিল মিচেলের ধৈর্যশীল ইনিংস ও মিচেল ব্রেসওয়েলের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করেছে দলটি।
দুবাইয়ের এই পিচে যে আড়াই শ বা তার আশপাশে তোলা সংগ্রহ প্রতিপক্ষের জন্য ভালো একটি চ্যালেঞ্জ, তা এই টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত অন্যান্য ম্যাচগুলো থেকেই স্পষ্ট। এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে আড়ই শ-ও করতে ব্যর্থ হয় ভারত (২৪৯)। এমনকি ওই রান করেও কিউইদের বিপক্ষে ৪৪ রানে জেতে তারা।
আরও পড়ুন: কোহলির সেঞ্চুরি, পাকিস্তানকে বিপদে ঠেলে সেমির পথে ভারত
এদিন পুরো ম্যাচজুড়ে দেখা গেছে ভারতীয় স্পিনারদের দাপট। দুই পেসার— মোহাম্মদ শামি ও হার্দিক পান্ডিয়া যেখানে ১২ ওভার বোলিং করে এক উইকেটের বিনিময়ে গড়ে ৮.৬৭ রান রেটে ১০৪ রান দিয়েছেন, সেখানে ৩৮ ওভারে ১৪৭ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেট তুলে নেন স্পিনাররা। তাদের ইকোনমিক রেটও চোখে পড়ার মতো; ৩৮ ওভারে গড়ে ৩.৮৭ রান রেটে বোলিং করেছেন কুলদীপ, বরুণ, অক্ষর ও জাদেজারা।
ফাইনাল ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন রাচিন, আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন অপর ওপেনার উইল ইয়াং। এই দুই ব্যাটারের কল্যাণে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার কোনো দল প্রথম উইকেটজুটিতে ৫০ বা তার বেশি রান করতে সক্ষম হয়।
এরপর অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে বরুণ চক্রবর্তীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ইয়াং। ফেরার আগে ২৩ বলে ১৫ রান করেন তিনি।
ইয়াং ফিরে গেলে কেইন উইলিয়ামসনকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে ৬৯ রান তোলেন রাচিন। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৮ ও ২৯ রানে পরপর দুবার জীবন পেয়েও ইনিংস খুব বেশি লম্বা করতে পারেননি তিনি। পাওয়ার প্লের পর প্রথম ডেলিভারিতেই কুলদীপের বলে বোল্ড হয়ে যান এই ব্যাটার। ২৯ বলে একটি ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে ৩৭ রান করে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আসে আরেক ধাক্কা, ত্রয়োদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপের কাছে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান উইলিয়ামসনও।
পটাপট দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড, আর এই সুযোগে স্পিন অ্যাটাক দিয়ে দলটির ব্যাটারদের কাবু করে ফেলেন রোহিত শর্মা।
এ সময় টম ল্যাথামকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন ড্যারিল মিচেল। তবে দলীয় ১০৮ রানের মাথায় ৩০ বলে মাত্র ১৪ রান করে ফিরে যেতে হয় ল্যাথামকেও। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তাকে বধ করেন রবীন্দ্র জাদেজা।
পরে গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়েন মিচেল। তবে ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৪.৩ ওভার থেকে আসে ওই রান। মূলত প্রথম পাওয়ার প্লের পর থেকেই নিউজিল্যান্ডের রানের গতি একেবারে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ফাইনালে ভারত
দলীয় ১৬৫ রানে বরুণের বলে ফিলিপসও বোল্ড হয়ে গেলে ক্রিজে আসেন মিচেল ব্রেসওয়েল। তাকে নিয়ে ভালো সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকেন ড্যারিল মিচেল। দুই ব্যাটারই এ সময় রান তোলায় মনোযোগী হন। তবে ব্রেসওয়েলের সঙ্গে বেশিক্ষণ থাকা হয়নি মিচেলের। ইনিংসের ২৬ বল বাকি থাকতে তাকে ফেরান শামি। আর এর মধ্য দিয়ে ১০১ বলে ৬৩ রানের ধৈর্যশীল একটি ইনিংসের পরিসমাপ্তি হয়।
পরবর্তীতে ব্রেসওয়েলের ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংসে ২৫১ রান তুলে বিরতিতে যায় নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ২৫১/৭ (মিচেল ৬৩, ব্রেসওয়েল ৫৩*, রাচিন ৩৭; কুলদীপ ২/৪০, বরুণ ২/৪৫)।
৩৯ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ফাইনালে ভারত
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়ায় ভারতীয় ক্রিকেটের সমর্থকদের। তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে উঠে এতদিন পর সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে চার উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত।
এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করে ইনিংসের তিন বল বাকি থাকতেই ২৬৪ রান তুলে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ৯৬ বলে ৭৩ রান করে দলটির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এছাড়া মিডল অর্ডারে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি করেন ৬১ রান।
ভারতের হয়ে দশ ওভারে মাত্র ৪৮ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ শামি। এছাড়া দুই স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন দুটি করে উইকেট।
২৬৫ রানের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারালেও ১১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত।
তিনে ব্যাট করতে নামা বিরাট কোহলিই এদিন ভারতের জয়ের ভীত গড়ে দেন। ৯৮ বলে ৮৪ রান করার পথে শ্রেয়াস আইয়ার (৪৫), অক্ষর প্যাটেল (২৭) ও লোকেশ রাহুলের (৪২*) সঙ্গে গড়েন যথাক্রমে ৯১, ৪৪ ও ৪৭ রানের জুটি।
পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই যখন জয়ের সুবাতাস পেতে শুরু করেছে ভারত, ঠিক তখনই একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আউট হন ২৪ বলে ২৮ রান করা হার্দিক পান্ডিয়া। পরে জাদেজাকে নিয়ে ভারতীয়দের জাহাজ জয়ের বন্দরে নোঙর করেন রাহুল।
এদিন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পেলেও কার্যকর সময়ে ভারতীয় ব্যাটারদের প্যাভিলিয়নে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিকেই কেবল ভারতকে রুখে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় দলটি। পরে সময় যত গড়িয়েছে, জয়ের পাল্লা ভারতের দিকেই তত ভারী হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে নাথান এলিস ৪৯ রান খরচ করে এবং অ্যাডাম জ্যাম্পা ৬০ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের আসরে মাত্র একটি ম্যাচ হেরেই বিদায় নিতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচটি জিতলেও বৃষ্টির কারণে পরের দুই ম্যাচ পণ্ড হয়। ফলে ওই এক ম্যাচ জিতেও অপরাজিত থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে দুবারের শিরোপাধারীরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ২৬৪/১০ (৪৯.৩ ওভার) (স্মিথ ৭৩, ক্যারি ৬১, হেড ৩৯; শামি ৩/৪৮, জাদেজা ২/৪০, চক্রবর্তী ২/৪৯)।
ভারত: ২৬৭/৬ (৪৮.১ ওভার) (কোহলি ৮৪, আইয়ার ৪৫, রাহুল ৪২*; এলিস ২/৪৯, জ্যাম্পা ২/৬০)।
ফলাফল: ভারত চার উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিরাট কোহলি।
৪৩ দিন আগে
ইমন, খাওয়াজার ব্যাটে ফাইনালে পাহাড়সম লক্ষ্য পেল বরিশাল
ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নেমেই সেই যে মারমুখী ব্যাটিং শুরু করল চিটাগাংয়ের ব্যাটাররা, শেষ পর্যন্ত ধরে রাখল তার ধারা। আর এতেই টপ-অর্ডার ব্যাটারদের কল্যাণে গতবারের চ্যাম্পিয়ন বরিশালকে বড় লক্ষ্য দিয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনের দল।
প্রথম শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে বিপিএলের ফাইনালে শুরুতে ব্যাটিং করে তিন উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করেছে চিটাগাং কিংস। বিপিএলের ফাইনালে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ রান। ফলে শিরোপা ধরে রাখতে ফরচুন বরিশালকে রেকর্ড গড়তে হবে।
দলের হয়ে ৪৯ বলে চারটি ছক্কা ও ৬টি চারে সর্বোচ্চ ৭৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। এছাড়া অপর ওপেনার খাওয়াজা নাফের ব্যাট থেকে আসে ৬৬ রান (৪৪ বলে) এবং তিনে নেমে ২৩ বলে তিনটি ছক্কা ও দুটি চারে ৪৪ রান করেন গ্রাহাম ক্লার্ক।
অপরদিকে, বরিশালের বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আলি ছাড়া আর সবাই ছিলেন খরুচে। আলি ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন।
টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুই ওভার একটু দেখেশুনে খেললেও তৃতীয় ওভার থেকে বোলারদের ওপর চড়াও হন চিটাগাংয়ের দুই ওপেনার। এর ধারাবাহিকতায় প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৫৭ রান সংগ্রহ করে কিংস।
একপর্যায়ে ৩০ বলে ইমন ও ৩১ বলে নিজের অর্ধশত পূরণ করেন নাফে। এরপর ১২.৪তম ওভারে ইবাদত হোসেনের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ঠিকমতো ব্যাটের সংযোগ ঘটাতে না পেরে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় নাফেকে। এতে করে ভাঙে ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি।
তারপর ক্রিজে এসে ইমনের সঙ্গে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন ক্লার্কও। ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে ৪০ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়ে রান আউট হয়ে এই ইংলিশ ব্যাটার যখন ফিরে যাচ্ছেন, চিটাগাংয়ের স্কোর তখন ১৯১। এর পরের চার ওভারে শামীম হোসেন আউট এবং তিনটি রান হয়। ফলে বরিশালের জন্য ১৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে মাঠ ছাড়েন ইমন ও তালাত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগাং কিংস: ১৯৪/৩ (ইমন ৭৮*, নাফে ৬৬, ক্লার্ক ৪৪; মোহাম্মদ আলি ১/২১, ইবাদত ১/৩৫)।
৬৯ দিন আগে
সহজ জয়ে সুপার কাপের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
ধীরগতির ফুটবল ম্যাচে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই অনুমিত জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর ফলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে উঠল গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। পাশাপাশি আরও একটি এল ক্লাসিকো ফাইনাল দেখার সুযোগ মিলল ফুটবলভক্তদের।
সৌদি আরবে স্প্যানিশ সুপার কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মায়োর্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাড়েমেড়ে প্রথমার্ধ শেষে দ্বিতীয়ার্ধেও তেমন কোনো উত্তেজনা ছড়াতে পারেনি দুই দল। তবে তিনটি গোলই হয়েছে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে।
৬৩তম মিনিটে খানিকটা ভাগ্যের জোরে রিয়ালের গোলের খাতা খোলেন জুড বেলিংহ্যাম। ডান পাশ দিয়ে চমৎকার এক আক্রমণে উঠে মায়োর্কার বক্সে ঢুকে পেনাল্টি স্পটের দিকে ব্যাক পাস দেন ভিনিসিয়ুস। তা থেকে দূরের পোস্টে শট নিলে রদ্রিগোর সেই শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গোলে শট নেন এমবাপে, তবে দারুণ ক্ষিপ্রতায় মায়োর্কা গোলরক্ষক তা ফিরিয়ে দিলে সামনে থাকা বেলিংহ্যাম পেয়ে যান। এরপর ঠান্ডা মাথায় গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের মাঝ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ফলে হতাশ হয় মায়োর্কা।
গোল খাওয়ার পরও সমতায় ফিরতে তেমন জোর চেষ্টা ছিল না দলটির। এর মাঝে সুযোগ তৈরি অব্যাহত রাখে রিয়াল মাদ্রিদ। আর তা প্রতিহত করতেই সময় যায় মায়োর্কার খেলোয়াড়দের।
আরও পড়ুন: বিলবাওকে হারিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনা
এমতাবস্থায় নির্ধারিত নব্বই মিনিটের খেলা শেষ হলে ১-০ গোলেই ম্যাচ শেষ হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। তবে অতিরিক্ত যোগ করা ৬ মিনিটের তৃতীয় মিনিটে এমবাপের শট প্রতিহত করতে গিয়ে বলের দিক পরিবর্তন করে দেন মায়োর্কা ডিফেন্ডার মার্তিন ভালিয়েন্ত। আর বল জালে জড়িয়ে গেলে আত্মঘাতী গোলের গ্লানিতে পুড়তে হয় তাকে।
এর দুই মিনিট পর গোল পেয়ে যান রদ্রিগোও। লুকাস ভাসকেসের বাড়ানো বল থেকে গোল আদায় করে নিয়ে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলেন তিনি। এতে দলকে ফাইনালে নেওয়ার পাশাপাশি গোল করে নিজের জন্মদিন উদযাপন করেন এই ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড।
আগামী রবিবার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। সেদিন জিতলে সুপার কাপ জয়ের হিসাবে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের পাশে বসবে রিয়াল (১৩)।
গত মৌসুমেও সুপার কাপে এল ক্লাসিকো ফাইনাল দেখেছিল ফুটবল বিশ্ব। সেবার বার্সাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বর্তমান লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপাধারীরা। টানা দ্বিতীয়বার ফের ফিরতে চলেছে সেই একই ফাইনাল।
৯৭ দিন আগে
বিলবাওকে হারিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনা
হান্সি ফ্লিকের অধীনে দুর্দান্তভাবে মৌসুম শুরু করলেও বছরের শেষদিকে এসে খেই হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে পুরনো ক্লেশ ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে ফের জয়যাত্রা শুরু করেছে দলটি।
শনিবার কোপা দেল রের ম্যাচে চতুর্থ স্তরের দল বারবাস্ত্রোকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বছর শুরু করা বার্সেলোনার সামনে দ্বিতীয় ম্যাচেই ছিল শক্ত প্রতিপক্ষ— আথলেতিক বিলবাও। তবে সেই পরীক্ষাতেও সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন বছরে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে নানা সমস্যায় জর্জরিত কাতালানরা।
বুধবার রাতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম সেমিফাইনালে বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
ম্যাচের ১৭তম মিনিটে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন গাভি। অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করার মাঝে ৫২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন লামিন ইয়ামাল। সুযোগ পেয়েছিলেন বিলবাওয়ের খেলোয়াড়রাও তবে বার্সার অফসাইডের ফাঁদ আর নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে দলটির।
আরও পড়ুন: হেরে ১২৬তম বছর শুরু বার্সেলোনার
এদিন ম্যাচের প্রথম থেকেই বিলবাওয়ের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে বার্সেলোনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চতুর্থ মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে উঠে পরপর দুটি সুযোগ তৈরি করেন জুল কুন্দে-রাফিনিয়ারা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে দুটিই মাঠে মারা যায়।
ম্যাচের প্রথম দশ মিনিট ৭০ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে মাঠে একক আধিপত্য বিস্তার করে বার্সেলোনা। তবে এর পর খানিকটা ঝিমিয়ে যায় তারা। এ সময় সুযোগ কাজে লাগানোর পরিবর্তে ধীর লয়ে খেলতে থাকে বিলবাও-ও। ফলে ম্যাচের গতি বেশ পড়ে যায়। অবশ্য এর মধ্যেই ম্যাচর সপ্তদশ মিনিটে চকিতে আক্রমণে উঠে গোল আদায় করে নেয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
পেদ্রির লং পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে বিলবাওয়ের ডিফেন্স চিরে ছয় গজ বক্সের মধ্যে নিচু ক্রস দেন আলেহান্দ্রো বালদে। আর দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে তা থেকে গোল আদায় করে দলকে এগিয়ে নেন গাভি।
গোল পাওয়ার পর ফের উজ্জীবীত ফুটবলে ফেরে বার্সেলোনা। আরও পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে মনোযোগী হয় এরনেস্তো ভালভের্দের শিষ্যরাও। ফলে আবারও জমে ওঠে ম্যাচ।
ম্যাচের ২৩তম মিনিটে বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমোনকে একা পেয়েও ফিনিশিংয়ের অভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন রাফিনিয়া। তবে রাফিনিয়ার শট সিমোন ঠেকিয়ে দিলে তা চলে যায় পেছনে থাকা লামিনের কাছে। তিনি দুর্বল শট নিলে সেটিও প্রতিহত করে দলকে বিপদমুক্ত করেন সিমোন।
প্রথমার্ধের শেষের মিনিট দশেক সমতায় ফিরতে জোর চেষ্টা চালায় বিলবাও। একের পর এক আক্রমণেও ওঠে তারা। তবে ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতা আর বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের আর গোলের মুখ দেখা হয়ে ওঠেনি। ফলে ব্যবধানে ধরে রেখেই বিরতিতে যায় কাতালানরা।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
প্রথমার্ধে ৫৩ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে ৬টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার চারটিই লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় তারা। অপরদিকে, বিলবাও পাঁচটি শট নিলেও তার মাত্র একটি লক্ষ্যে ছিল।
৯৮ দিন আগে
ফাইনালের আগে যে ভয় পাচ্ছেন স্পেন কোচ
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা, এরপরই ইউরোপসেরার শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে স্পেন ও ইংল্যান্ডের কোনো একটি দল। টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠলেও প্রতিপক্ষকে যথেষ্ট সমীহ করছেন স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে।
তবে মাঠে সেরাটা বের করে আনতে নিজেদের পরিচয়ের দিকেই মনোযোগ দিতে চান ৬৩ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ কোচ। তিনি মনে করেন, আক্রমণাত্মক ও নান্দনিক ফুটবল খেলে যে আত্মপরিচয় তৈরি করেছে তার দল, ফাইনালেও তা ধরে রাখতে পারলে শিরোপাজয় সহজ হবে।
দলীয় পারফরম্যান্সে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে টানা ৬ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে দে লা ফুয়েন্তের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া স্পেন। তবে সেমিফাইনালে একাদশের বেশ কয়েকজন ফুটবলারের অনুপস্থিতিতে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে তারা। ফলে শক্তি ও প্রতিভায় ভরা ফ্রান্সের সামনে বেশ ভুগতে হয় দলটির। ফাইনালে আবার যেন শিষ্যরা খেই হারিয়ে না বসে, সেই ভয়টাই পাচ্ছেন দে লা ফুয়েন্তে।
ফাইনালের চাপ, প্রত্যাশা ও নানা সমীকরণে মাঠের খেলায় বদলে যায় অনেক কিছুই। তবে নিজেদের হারিয়ে বসলেই বিপদ বলে মনে করছেন দে লা ফুয়েন্তে। তার আশা, নিজেদের পরিচিত ফুটবলই যেন খেলে শিষ্যরা।
আরও পড়ুন: সুন্দর ফুটবলের মধ্যে দিয়েই জিততে চায় স্পেন: দে লা ফুয়েন্তে
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা যদি স্পেন হয়ে উঠতে না পারি, তাহলে কোনো সুযোগই নেই। নিজেদের উন্নতি করতে আমরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। রবিবারেও সে ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। তবে অবশ্যই নিজেদের পরিচয় ধরে রেখে।’
‘ফুটবলে বিভিন্ন কৌশল আছে, আছে শৈলীও। আমাদের সামনে প্রতিপক্ষও কোনো একটি কৌশলে খেলবে। তবে আমাদের পরিকল্পনা দৃঢ়, নিজেদের ফুটবলই খেলতে হবে।’
তবে মাঠের পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে, তাও মাথায় আছে দে লা ফুয়েন্তের।
‘আমরা অবশ্যই আমাদের সহজাত ফুটবল খেলব। তবে যদি (কৌশলে) কোনো পরিবর্তন আসে, তা খেলার বিশেষ কোনো পরিস্থিতির কারণে আসবে। এর মানে এই নয় যে, আমরা কৌশল পাল্টে ফাইনাল খেলছি।’
আরও পড়ুন: দলীয় ঐক্য ও তারুণ্যের চমকে ফ্রান্সকে বিদায় করে ফাইনালে স্পেন
চলতি ইউরো আসরে স্পেনই একমাত্র দল, যারা সবগুলো ম্যাচ জিতেছে। জয়ের এই ধারায় আক্রমণাত্মক, ছন্দময়, কার্যকর ও গতিময় আধুনিক ফুটবল উপহার দিয়েছে দর্শককে। ‘হাই প্রেসিং’ ও ‘ওয়ান টাচ’ ফুটবলে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্রমণে ওঠে দলটি। লুইস আরাগোনেস ও ভিসেন্তে দেল বস্কের পর লুইস দে লা ফুয়েন্তের হাত ধরে ফের এমন নান্দনিক ফুটবল উপহার দিচ্ছে স্পেন।
এই আসরে ছয় ম্যাচে মোট ১০৮টি শট নিয়েছে স্পেন, যার ৩৭টি ছিল লক্ষ্যে। এ থেকে গোল পেয়েছে ১৩টি। এর সবগুলো সংখ্যাই যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে, টুর্নামেন্টজুড়ে ইংল্যান্ডের মোট ৬৬টি শটের ১৯টি ছিল লক্ষ্যে।
পরিসংখ্যান থেকে দলদুটির কৌশল বিপরীতমুখী এবং ইংল্যান্ডকে কিছুটা দুর্বল বলে মনে হলেও নিজেদের ফেভারিট মানতে নারাজ দে লা ফুয়েন্তে।
‘আমরা জানি, ফাইনালে কোনো ফেভারিট নেই। দুই দলের ভারসাম্যই সঠিকভাবে আছে। কে ফেভারিট তা জুয়াড়িরাই নির্ধারণ করুক।’
‘কারণ আমরা জানি, যদি নিজেদের সেরাটা না খেলতে পারি, তাহলে এতদিনের পরিশ্রম মূল্যহীন হয়ে যাবে। তবে আমি এও জানি যে, ছেলেরা সবাই জানে- মাঠে কী করতে হবে। আর তারা সেটাই করবে।’
আরও পড়ুন: ইয়ামালের ইতিহাস গড়ার রাতে স্পেনে বিধ্বস্ত ক্রোয়েশিয়া
দারুণ ফুটবল খেলে এতদূর আসতে পেরে খুশি দে লা ফুয়েন্তে। দলকে ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দিতে চান তিনি।
‘যেভাবে আমরা ফাইনালে উঠেছি, তাতে আমি গর্বিত। এখানে পৌঁছাতে কেউই আমাদের ছেড়ে কথা বলেনি। তাই গর্ববোধ করার অধিকার আমাদের আছে।’
ভালো ফুটবল খেললেও এই দলটি এখনও কিছু জিতে দেখাতে পারেনি। তাই ফাইনালকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন কোচ।
‘অসাধারণ একটি প্রজন্ম এটি। আমাদের বর্তমান আলোকিত, ভবিষ্যতও উজ্জ্বল। আমরা ইতিহাস গড়তে চাই। জাতীয় দলের সবাই যখন দেশের প্রতি নিবেদিত থাকে, তখন ব্যাপারটি দারুণ হয়। স্পেনকে ইউরোর ইতিহাসের সেরা দলে পরিণত করার সুযোগ আছে এই দলের সামনে।’
ইতোমধ্যে তিনটি শিরোপা জিতে জার্মানির সঙ্গে সর্বোচ্চ ইউরো জয়ের রেকর্ড ভাগাভাগি করছে স্পেন। রবিবারের ফাইনাল জিতলে চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ডটি নিজেদের করে নেবে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।
অপরদিকে, ফুটবলের আঁতুরঘর হলেও ইউরোপসেরার মুকুট কখনও পরা হয়নি ইংল্যান্ডের। গতবার ইতালির কাছে ফাইনালে টাইব্রেকারে হেরে তীরে গিয়েও তরী ডোবে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যদের।
তবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এবারও ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। গতবারের ভুলভ্রান্তি ঘুচিয়ে তাই এবার ইউরো শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে চাইবে তারাও।
২৭৭ দিন আগে