প্রাকৃতিক
পশুর জন্য নিরাপদ উপায়ে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
পশুর জন্য নিরাপদ উপায়ে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগাদা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে আমাদের প্রাণিজ খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। তবে এ উৎপাদন বৃদ্ধি হতে হবে পরিবেশসম্মতভাবে। পশু খাদ্যের প্রকৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। আধুনিক পদ্ধতিতে পশু খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: কাপ্তাই লেকের যৌবন ফেরাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে ইউএসডিএ (ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার) এবং এসিডিআই/ভোকার (এগ্রিকালচারাল কোঅপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল/ভলেন্টিয়ারস ইন ওভারসিজ কোঅপারেটিভ অ্যাসিস্ট্যান্স) যৌথ উদ্যোগে গৃহীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট স্মার্ট লাইভস্টক প্রকল্প আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ তাগাদা দেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিকভাবে গো খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানো গেলে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ কমে আসবে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে এসময় উল্লেখ করেন।
একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে তিনি এসময় মন্তব্য করেন।
পশুর খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনার জন্য খামারিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের গবাদিপশুর শুধু উৎপাদন বাড়ালেই হবে না। বরং পরিবেশসম্মতভাবে তা বাড়াতে হবে।
এক্ষেত্রে গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য ঘাসের উৎপাদন বাড়ানোর উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন এবং ঘাস চাষের উপর জোর দেওয়ার জন্য খামারিদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আরও বলেন, পশু থেকে যে বর্জ্য বের হয় তা কীভাবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে আমাদের গবেষণা করতে হবে। গোবর থেকে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় তা সঠিকভাবে কাজে লাগানোর উপায় বের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি এসময় আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ সব জালের ব্যবহার বন্ধ করা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
৬ মাস আগে
প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সব দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ প্রতিরোধী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে। আমরা দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম…আমাদের এটি বজায় রাখতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন:অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করুন, দুর্যোগ এড়ান: ফারাক্কা কমিটি
এসময় তিনি ২৫টি জেলায় ত্রাণ গুদাম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৮০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৫০টি মুজিব কিল্লা বা বন্যার সময় জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য নির্মিত স্থাপনা উদ্বোধন করেন।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিড়ে বিএনপির দায়িত্বহীনতার সমালোচনা করে, ভবিষ্যতে যাতে বিএনপির মতো শক্তি আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য দেশের জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন,তার দল যখন সংসদে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপি সরকারের গাফিলতির কথা তুলে ধরেছিল, তখন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দাবি করেছিলেন যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল তাতে খুব বেশি মানুষ মারা যায়নি।
শেখ হাসিনা বলেন,এ ধরনের মন্তব্য করে বিএনপি তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ এড়াতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
১৯৯০ সালের শেষ দিকে এইচএম এরশাদের পতনের পর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি দেশের ক্ষমতায় আসে এবং খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৯১ সালের এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আনুমানিক এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং প্রায় এক কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। সামগ্রিক সম্পত্তির আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল বিলিয়ন ডলারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান যে এটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে মারাত্মক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে একটি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারের সাফল্য ও পদক্ষেপের প্রতি আলোকপাত করে তিনি বলেন,বাঙালি জাতিকে কেউ আর অবমূল্যায়ন করতে পারবে না।
তিনি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্রদের রাজনৈতিক সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগই নয়, বাংলাদেশ অগ্নিসংযোগের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগেরও সম্মুখীন হয়।’
তিনি বলেন, দেশকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোনো কিছুই বাধা দিতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন,‘আমরা সব ধরণের দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব – হোক সেটা প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ডিজাইন করেছে এবং এটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় তার সরকার সব সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সতর্ক থাকে। ‘রাস্তা,সেতু ও স্কুল নির্মাণের সময় আমরা বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানির চ্যানেল করার প্রক্রিয়াটি অন্তর্ভুক্ত করা বিষয়েও সজাগ থাকি।’
তিনি আরও বলেন, পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে সরকার খাল-বিল ও অন্যান্য জলাশয় পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি নদীগুলো ড্রেজিং করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নদীভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন,সরকার দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস,প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫) প্রণয়ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সারাদেশে মোট চার হাজার ২০০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৬৬টি ত্রাণ গোডাউন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করেছে তার সরকার।
এছাড়া সরকার প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হওয়ার মতো কার্বন নিঃসরণ করে না বাংলাদেশ, তবুও আমাদের দেশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি বলেন,উন্নত দেশগুলো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে জলবায়ু তহবিল প্রদানে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে দুর্ভাগ্যজনক যে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো তাদের (উন্নত দেশের) প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খুব কমই তহবিল পায়।
আসলে আমাদের নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করতে উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ এলাকা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দেশে ‘দুর্যোগের জন্য প্রাথমিক সতর্কতা, সবার জন্য পদক্ষেপ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন দিবস-২০২২ উদযাপিত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসান।
অনুষ্ঠানে সাইক্লোন প্রিপারেডনেস প্রোগ্রামের (সিপিপি) আওতায় দুইজন সেরা স্বেচ্ছাসেবক- লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার জয়শ্রী রানী দাস এবং ভোলার লালমোহনের মো. জসিম উদ্দিনকে পুরস্কৃত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ডা. এনামুর রহমান তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
ভবিষ্যতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক আয় বৃদ্ধিতে কৃষিপণ্য বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সামনের কঠিন দিনগুলো মোকাবিলা করার জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ান: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে